আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, তাপমাত্রা নামতে পারে হিমাঙ্কের নিচে ৫০ ডিগ্রি পর্যন্ত৷ নষ্ট হতে পারে ক্রিসমাসের আনন্দ৷
ছবি: John Haeger/Standard-Speaker/AP/dpa/picture alliance
বিজ্ঞাপন
যুক্তরাষ্ট্রের বহু জায়গাতেই বরফ পড়তে শুরু করেছে৷ কিন্তু আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, আগামী কয়েকদিনের মধ্যে বম্ব সাইক্লোন আসছে দেশে৷ যার ফলেতাপমাত্রা এক ধাক্কায় অনেকটা নিচে নেমে যাবে৷ প্রবল তুষারপাত হবে৷ যার জেরে জনজীবন বিঘ্ন ঘটতে পারে৷ মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন হোয়াইট হাউসে সাংবাদিকদের ডেকে সতর্ক করে দিয়েছেন৷ জানিয়েছেন, এই বরফপাত প্রতি ক্রিসামাসের মতো নয়, যা নিয়ে শিশুর সঙ্গে খেলা যায়৷ ভয়াবহ তুষারপাত হতে চলেছে৷
জলবায়ু পরিবর্তনে পর্যটনকেন্দ্রগুলোর ঝুঁকি
তীব্র তাপদাহ, ধ্বংসাত্মক ঝড়, গলতে থাকা বরফ, শীর্ণকায় হয়ে আসা সৈকত; জলবায়ু পরিবর্তনে পর্যটক আকৃষ্ট করার মতো স্থানগুলো দিনকে দিন বদলে যাচ্ছে৷ জনপ্রিয় পর্যটন কেন্দ্রগুলোতে এর কী প্রভাব পড়ছে দেখুন ছবিঘরে৷
ছবি: Augst/Eibner-Pressefoto/picture alliance
সৈকত সরু হচ্ছে
ঘুরতে এসে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব টের পেতে চান? চলে যেতে পারেন স্পেনর মায়োর্কার এস ট্রেঙ্কে৷ ২০ শতকের মধ্যভাগে স্বৈরাচারী ফ্রান্সিসকো ফ্রাঙ্কোর শাসনামলে এখানে বিশালাকৃতির কংক্রিটের বাঙ্কার তৈরি হয়েছিল, যা এতদিন লুকানো ছিল বালিয়াড়ির নীচে৷ এখন সেগুলো উপকূলজুড়ে অনাবৃত পড়ে আছে৷ সমুদ্র পৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধি ক্রমশ সৈকতকে গ্রাস করছে৷ বিশেজ্ঞদের হিসাবে আগের চেয়ে সৈকতটি ৪০ মিটার ছোট হয়ে গেছে৷
ছবি: Jonas Martiny/DW
তবুও পর্যটকের ঢল
বিজ্ঞানীদের আশঙ্কা জলবায়ু পরিবর্তনের ধাক্কায় একদিন মায়োর্কার মতো পর্যটন আকর্ষণীয় তীরগুলো একদিন সমুদ্রগর্ভে বিলীন হতে পারে৷ তবে এখনও এর প্রভাব পড়েনি পর্যটনে৷ বরং এই গ্রীষ্মে মায়োর্কাতে রেকর্ড পর্যটকের ঢল নেমেছে৷ জার্মানির জলবায়ু বিশেষজ্ঞ থমাস ডভোরাকের মতে, ‘‘জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে মানুষ ঘোরাঘুরির অভ্যাস বদলেছেন এমন প্রমাণ খুব একটা পাওয়া যায় না৷’’
ছবি: Augst/Eibner-Pressefoto/picture alliance
প্রভাব পড়েছে যেখানে
ইউরোপে প্রভাব না পড়লেও বিশ্বের অনেক দেশে জলবায়ু পরিবর্তনে পর্যটনে নেতিবাচক প্রভাব ঠিকই পড়তে শুরু করেছে৷ যেমন ক্যারিবীয় দ্বীপ বাহামা৷ ২০১৯ সালের সেপ্টেম্বরে ঘূর্ণিঝড় ডরিয়ানের আঘাতে দ্বীপটি বিধ্বস্ত হওয়ার পাশাপাশি পর্যটন খাতেও ধস নামে৷ উষ্ণতা বৃদ্ধির কারণে বরফ গলায় কিছু অঞ্চলে স্কি রিসোর্টেও বিপর্যয় দেখা দিয়েছে৷
ছবি: Ramon Espinosa/AP Photo/picture alliance
কৃত্রিম বরফ দিয়ে স্কি
আলপাইন অঞ্চলের স্কি রিসোর্টগুলো জলবায়ু পরিবর্তনের অন্যতম ভুক্তভোগী৷ অনেক রিসোর্ট তাই কামানের সাহায্যে কৃত্রিম বরফ ছিটিয়ে ঘাটতি মেটানোর চেষ্টা করছে৷ কৃত্রিম বরফ ইটালির উত্তরাঞ্চলের পর্যটনকে টিকিয়ে রেখেছে বলে উল্লেখ করেছেন সেখানকার পর্যটনমন্ত্রী আর্নল্ড শুলার৷ কিন্তু এরজন্যেও অবশ্য একটি নির্দিষ্ট মাত্রার স্বল্পতাপ প্রয়োজন যা অনেক জায়গাতেই পাওয়া যাচ্ছে না বলে জানান শুলার৷
ছবি: Bildagentur-online/Fischer/picture alliance
গন্তব্য বদলে পর্যটকরা
খরা আর তীব্র তাপদাহও অনেক জায়গায় পর্যটন শিল্পকে ক্ষতিগ্রস্ত করছে৷ সেইসঙ্গে দাবানল, নতুন নতুন সংক্রামক রোগ, বিলীয়মান জীববৈচিত্র্যের মতো সংকটগুলো সামনের দিনে জনপ্রিয় পর্যটনকেন্দ্রগুলোর জন্য আশঙ্কার কারণ হয়ে উঠতে পারে৷ তবে এর ফলে উত্তরাঞ্চলের অপেক্ষাকৃত শীতল দেশগুলোতে পর্যটন বাড়তে পারে৷ এরইমধ্যে তীব্র গরমে পর্যটকরা ভূমধ্যসাগর এড়ানোর চেষ্টা করছেন৷
ছবি: Enrique Calvo/Reuters
মানিয়ে নেয়ার সময়
বিশেষজ্ঞদের মতে পর্যটন নির্ভর অঞ্চলগুলোকে এখন থেকেই জলবায়ু পরিবর্তনের ধাক্কার সঙে মানিয়ে নেয়ার প্রস্তুতি নিতে হবে৷ এজন্য সহজে বলে দেয়ার মতো কোন সমাধান কারো হাতে নেই৷ প্রকৃতি অনুযায়ী এক এক অঞ্চলকে নিজেদের উপায় নিজেরাই বের করতে হবে৷ কোন কোন ক্ষেত্রে স্থানীয়দের এই শিল্পের উপর নির্ভরতা কমিয়ে অন্য খাতে মনযোগ দিতে হবে৷ আবার যেমন ইটালি গ্রীষ্মের বদলে পর্যটকদের বসন্ত বা শরতে আসার জন্য উৎসাহিত করতে পারে৷
ছবি: Luca Bruno/AP/dpa/picture alliance
6 ছবি1 | 6
আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, মাত্র কয়েক ঘণ্টার মধ্যে দুই থেকে চার ফুট পর্যন্ত বরফ পড়তে পারে৷ ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারেন ১৯ কোটি অ্যামেরিকাবাসী৷ বস্তুত, যুক্তরাষ্ট্রের মোট জনসংখ্যা ৩৩ কোটি ৫০ লাখ৷ অর্থাৎ, প্রায় অর্ধেক মার্কিননিবাসী আক্রান্ত হবেন বম্ব সাইক্লোনে৷
আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, অ্যামেরিকা-ক্যানাডা সীমান্ত অঞ্চল এই সাইক্লোনের ফলে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে৷ মনটানা, ডাকোটাস, নেবরাস্কার মতো অঞ্চলে ঝড়ের প্রভাব সবচেয়ে বেশি থাকবে৷ ওই অঞ্চলগুলিতে ভয়াবহ ঠান্ডা পড়তে শুরু করে দিয়েছে৷ মধ্য-পশ্চিম অঞ্চল, গ্রেট লেক অঞ্চল, উত্তর-পূর্বাঞ্চলেও শনিবার প্রবল বরফপাত হতে পারে৷
প্রশাসনজানিয়েছে, আচমকাই এই প্রবল ঠান্ডায় ফ্রস্টবাইট পর্যন্ত হতে পারে৷ ফলে সকলকে অত্যন্ত সাবধান থাকতে হবে৷ প্রয়োজন ছাড়া বাড়ির বাইরে না বেরনোই ভালো৷ প্রশাসন পরিস্থিতির দিকে নজর রেখেছে বলেও জানানো হয়েছে৷
বিশ্ব উষ্ণায়নের জেরে চলতি বছরেই তাপপ্রবাহ দেখেছে অ্যামেরিকা৷ এবার দেখবে শৈত্যপ্রবাহ৷ একধাক্কায় এতটা তাপমাত্রা নেমে যাওয়ার ঘটনা আগে কখনো হয়নি বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা৷