1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ভয়ের সমাজ, নাকি মুক্তমত: বাংলাদেশের সামনে কোন পথ?

সঞ্জয় দে
সঞ্জয় দে
৯ মে ২০২৫

অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতা নেয়ার প্রায় ১০ মাসে বাংলাদেশে মত প্রকাশের স্বাধীনতা কতটা প্রতিষ্ঠিত হয়েছে সে প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে।

মামলার পাশাপাশি সংস্কৃতি অঙ্গনে নানাভাবে নিয়ন্ত্রণ আরোপের চেষ্টার অভিযোগও আছেছবি: Elias Ahmed/DW

নির্বিচারের মামলায় অগণিত আসামি, কালাকানুনের আবাধ প্রয়োগ, মবের দাপট, বাহ্যিক ও অভ্যন্তরীণ নানান চাপে সংবাদমাধ্যমে বাড়তি সতর্কতা, অজস্র চাকরিচ্যুতি বাংলাদেশের সামনে তৈরি করেছে এক নতুন বাস্তবতা।

সরকারের পক্ষ থেকে অবশ্য নিয়মিত দাবি করা হচ্ছে, এসবের কোনো কিছুর সঙ্গেই তাদের যোগসূত্র নেই। তবে এসব ঘটনায় জড়িত বলে যাদের নাম সামনে আসছে, তাদের কারো বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়ার দৃশ্যমান কোনো উদাহরণ বিগত মাসগুলোতে দেখা যায়নি। আবার সরকার-সমর্থকদের সরাসরি সংশ্লিষ্টতাও দেখা গেছে বিভিন্ন ঘটনায়। ফলে সব মিলিয়ে তৈরি হয়েছে এক ভয়ের আবহ, যা সংকটের মুখে ফেলছে মত প্রকাশের স্বাধীনতাকে।

 

ভিন্নমত দমনের জন্য ব্যক্তি ও গোষ্ঠীগত পর্যায়থেকে নানান তৎপরতা অতীতেও দেখা গেছে। তবে বর্তমান অন্তর্বতী সরকারের সময়ে এসব ঘটনায় আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর নিশ্চুপ ভূমিকা এক কথায় নজিরবিহীন। আওয়ামী লীগ সরকারের পতন পরবর্তী নতুন সরকারের ‘হানিমুন পিরিয়ড' শেষ হয়েছে আরো প্রায় ৬ মাস আগে। তবে বেআইনিভাবে প্রতিপক্ষকে দমনের জন্য বিভিন্ন গোষ্ঠীর তৎপরতায় লাগাম পরানোয় সরকারের আন্তরিকতা দৃশ্যমান নয়।

এর ফলে কেবল রাজনৈতিক প্রতিপক্ষই নন, আক্রান্ত হচ্ছেন নানান মত ও পথের মানুষ। ধর্ম, লিঙ্গ, জাতিগত, এমনকি পেশাগত ভিন্নমতের কারণেও মানুষকে আক্রান্ত হতে দেখা যাচ্ছে। কুড়িগ্রামে সম্প্রতি কলেজের এক নারী শিক্ষককে ভরা মজলিসে সালিশের মুখোমুখি হতে দেখা গেছে। ওই ঘটনার ফেসবুক লাইভও হয়েছে। সালিশকারীদের বক্তব্য থেকে জানা যাচ্ছে, স্থানীয় থানার ওসিও বিষয়টি অবগত। সে ক্ষেত্রে স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন ওঠে অভিযুক্ত নারী শিক্ষক যদি অন্যায় কিছু করেও থাকেন, সেটির বিচার ও শাস্তি কীভাবে হবে? আবার ঘটনাটি ফেসবুকে ভাইরাল হওয়ার পরেও এ বিষয় মুখ বন্ধ রেখেছে সরকার ও প্রশাসন। ফলে তৈরি হয়েছে এ ধরনের ‘গণবিচারের' ন্যায্যতার সংস্কৃতি। কুড়িগ্রামের ঘটনা গত কয়েক মাস ধরে চলা অসংখ্য ঘটনায় একটি নতুন সংযোজন মাত্র।

আবার টাঙ্গাইলের ধনবাড়ীতে এপ্রিলের শেষ দিকে ‘ধর্মবিরোধী' অভিযোগ তুলে পাঠাগার থেকে নজরুল, রবীন্দ্রনাথের লেখা বইসহ পাঁচ শতাধিক বই নিয়ে যাওয়ার ঘটনা দেখা গেছে। সংবাদ মাধ্যমের প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, বিষয়টিতে কারো বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়নি প্রশাসন। পাঠাগারে বই ফেরাতে ঘটনায় জড়িতদের সঙ্গে শেষ পর্যন্ত ‘সমঝোতা'র পথে হেঁটেছে তারা। এ ধরনের বেশ কিছু ‘সমঝোতা'র উদ্যোগ গত কয়েক মাসে সংবাদমাধ্যমে এসেছে। এমনকি মাদারীপুরে শতবর্ষী বট গাছ কেটে ফেলায় অভিযুক্তদেরও বিরুদ্ধেও নেয়া হয়নি ব্যবস্থা। উলটো প্রশাসনের পক্ষ থেকে তাদের ডেকে গাছ কাটার কারণ জানতে চাওয়ার তথ্য এসেছে পত্রিকায়। এসব ঘটনায় স্পষ্ট, বিশেষ কিছু ক্ষেত্রে পরিষ্কার অভিযোগ থাকলেও ব্যবস্থা নিতে অনীহা রয়েছে প্রশাসনের।

আবার দেখা যাচ্ছে, বিশেষ কিছু ক্ষেত্রে খুবই দ্রুত গতিতে কঠোর পদক্ষেপ নিচ্ছে সরকার ও মাঠ প্রশাসন। সরকার সমর্থক হিসেবে পরিচিতদের কোনো দাবিই অপূর্ণ থাকছে না। রাস্তাঘাটেমব ভায়োলেন্সের শিকার ব্যক্তিকে দ্রুত কারাগারে পাঠাতে পুলিশের তৎপরতা দৃশ্যমান। অথচ খুব কম ক্ষেত্রেই

মবে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার কথা জানা গেছে। এসব ঘটনায় অনেকটাই স্পষ্ট- রাষ্ট্র ও সমাজের একটি অংশের দাবি অন্যায্য হলেও সেগুলো খুব সহজেই পূরণ হবে। আর বাকিরা ন্যূনতম সাংবিধানিক ও আইনি অধিকার থেকেও বঞ্চিত থাকবেন। সরকার ও রাষ্ট্রের পক্ষ থেকে এই বিভাজনের নীতি অব্যাহত থাকলে বাংলাদেশে ভিন্ন মত ও মুক্ত চিন্তা বিকাশের স্বপ্ন স্বপ্নই থেকে যাবে।

তথ্য উপদেষ্টা মাহফুজ আলম গত তিন মাসে বেশ কয়েকবার মবের বিরুদ্ধে কঠোর হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। গত ফেব্রুয়ারিতে ফেসবুক পোস্টে তিনি বলেন, মবের সঙ্গে জড়িতদেরও ডেভিল হিসেবে ট্রিট করা হবে। আবার মার্চে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, ‘‘জনগণকে জানাতে চাই, যেখানেই মব জাস্টিস পরিস্থিতি হবে, সে যে–ই হোন না কেন, যে ধর্মের, লিঙ্গের, বর্ণের, জাতের হোন না কেন, আমরা এখন থেকে কঠোর ভূমিকায় অবতীর্ণ হবো।''

অন্যদিকে গত এপ্রিলের শেষভাগেও মবের বিরুদ্ধে কঠোর বার্তা দেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। তিনি বলেন, ‘‘মব জাস্টিস আর অ্যালাউ করা যাবে না। অনেক হয়েছে। কারো কোনো কিছু বলার থাকলে আইনের আশ্রয় নেবে।‘‘

তবে এ ধরনের হুঁশিয়ারি ও বার্তার মাঠে প্রয়োগ ঘটানোর ইচ্ছা আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর পক্ষ থেকে দেখা যাচ্ছে না। উল্টো চিত্র হলো, মবের শিকার ব্যক্তিদেরও কোনো না কোনো মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে পাঠানো হচ্ছে কারাগারে। অতি সম্প্রতি ঢাকায় অভিনেতা সিদ্দিক থেকে শুরু করে স্বাধীনতা হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসক পরিষদ বগুড়া জেলা শাখার সভাপতি এস এম মিল্লাতের ক্ষেত্রেও দেখা গেছে একই দৃশ্য। সেক্ষেত্রে সরকারের বিপরীতে একটি ‘স্বাধীন মব ব্যবস্থা' গড়ে উঠেছে কিনা- সে প্রশ্ন উঠছে।

এমন একটি ব্যবস্থা সামগ্রিকভাবে মত প্রকাশের স্বাধীনতাকে নতুন হুমকিতে ফেলেছে। বিশ্ব মুক্ত সংবাদমাধ্যম দিবসে দেশের জ্যেষ্ঠ সাংবাদিকদের বক্তব্য থেকেও এটি পরিষ্কার। জাতীয় প্রেসক্লাবে ৪ মে সম্পাদক পরিষদ আয়োজিত সভায় দৈনিক মানবজমিনের প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী ‘প্রশ্ন করার জন্য' সাংবাদিকের চাকরি যাওয়ার ঘটনা উল্লেখ করে আক্ষেপ প্রকাশ করেন। একই সভায় ডেইলি স্টার সম্পাদক মাহফুজ আনাম ২৬৬ জন সাংবাদিকের বিরুদ্ধে হত্যা অথবা সহিংসতা সংক্রান্ত অপরাধের অভিযোগে মামলা নিয়ে প্রচণ্ড উদ্বেগ জানিয়েছেন।

এই দুই জ্যেষ্ঠ সাংবাদিকের বক্তব্যে পরিষ্কার, বিশ্ব মুক্ত সংবাদ মাধ্যম সূচকে বাংলাদেশের ১৬ ধাপ উন্নতি হলেও মাঠের পরিস্থিতি খুব একটা ভালো নয়। সবচেয়ে আশংকার দিক হলো, এখনকার সংকটের দায় কার কাঁধে বর্তাবে সেটিও পরিষ্কার নয়। বিশ্ব মুক্ত সংবাদমাধ্যম দিবসের ঠিক পরদিন দৈনিক জনকণ্ঠ কার্যালয়ে ঢুকে হামলা করে একদল ‘বহিরাগত'। চাকরিচ্যুত করা হয় সাত জন সাংবাদিককে। হামলার শিকার সাংবাদিকদের অভিযোগ, পুলিশ ঘটনাস্থলে গেলেও হামলাকারীদের ‘রাজনৈতিক পরিচয়' জানার পর কোনো ব্যবস্থা না নিয়েই ফিরে যায়।

এর আগে সংস্কৃতি উপদেষ্টাকে প্রশ্ন করার জের ধরে স্যোশাল মিডিয়ায় ব্যাপক ক্যাম্পেইন এবং তিনটি টেলিভিশন কার্যালয় অভিমুখে মার্চের ঘোষণার জেরে চাকরি হারান মোট চারজন সাংবাদিক। এ ঘটনায় সরকারের পক্ষ থেকে দায় অস্বীকার করা হলেও মবের হুমকির সঙ্গে জড়িতদের বিষয়ে কোনো বক্তব্য বা ব্যবস্থা নেয়ার কথা শোনা যায়নি। এভাবেই পেশাগত ক্ষেত্রে ‘অস্পষ্ট এক ভৌতিক শক্তি'র মুখোমুখি হচ্ছেন সংবাদকর্মীরা। তাদের ঠেকানোর শক্তি বা ইচ্ছা সরকার বা রাষ্ট্রের আছে বলে মনে হয় না।

সংবাদমাধ্যমের পাশাপাশি মুক্তচিন্তার বিভিন্ন ক্ষেত্রও সংকুচিত হওয়ার অভিযোগ আছে। তবে সেখানেও একচ্ছত্র দায়মুক্তি দাবি করছে সরকার। নির্বিচারে মামলায় হাজার হাজার আসামি গত কয়েক মাসে অনেকটা স্বাভাবিক ঘটনায় পরিণত হয়েছে। সাম্প্রতিক নতুন প্রবণতা হলো, এসব মামলায় আওয়ামী লীগ

সংশ্লিষ্টদের বাইরেও অনেকে আসামি হচ্ছেন। এমনকি জুলাই-আগস্টে আওয়ামী লীগ সরকারের প্রবল বিরোধীরাও হচ্ছেন হত্যা মামলার আসামি।

জুলাই গণঅভ্যুত্থানে রাজধানীর মিরপুরে গুলিতে নিহত বিএনপি কর্মী মাহফুজ আলম শ্রাবণ হত্যার অভিযোগে করা মামলায় আসামি হয়েছেন অভিনেতা ইরেশ যাকের। অথচ গত বছরের জুলাই-আগস্টে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সঙ্গে সক্রিয়ভাবে যুক্ত ছিলেন তিনি। আবার হত্যাচেষ্টার একটি মামলায় আসামি হয়েছেন নাট্যজন মামুনুর রশীদ। ইরেশ যাকের ও মামুনুর রশীদ দুজনেই ছাত্রদের আন্দোলনে সংহতি জানিয়ে গত বছরের ১ আগস্ট ঢাকার ফার্মগেটে শিল্পীদের অবস্থান কর্মসূচিতে অংশ নেন। বিস্ময়কর দিক হলো, অন্তর্বর্তী সরকারের সময়ে তারাও শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে হওয়া মামলার আসামির দীর্ঘ তালিকায় যোগ হয়েছেন।

এভাবে গত প্রায় ১০ মাসে শিল্পাঙ্গনের আরো অনেকের নামে হয়েছে হত্যা বা হত্যাচেষ্টা মামলা। এ ধরনের ঘটনায় আতংক ছড়িয়ে পড়েছে শিল্পীদের মধ্যে। অভিনয়শিল্পী সংঘের সভাপতি আজাদ আবুল কালাম সংবাদমাধ্যমকে বলেছেন, ‘ঢালাওভাবে হত্যা মামলা হচ্ছে। দেখে মনে হচ্ছে, সবাইকে মামলার মধ্যে ফেলতে হবে। ৩০০-৪০০ জন মামলার আসামি, এটা অবাস্তব একটা অবস্থা।'

সরকারের পক্ষ থেকেমামলায় গণআসামি না করার বিষয়ে নানা পদক্ষেপের কথা জানানো হলেও তার বাস্তবায়ন দেখা যায়নি। অন্যদিকে, গণমামলায় গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তিদের জামিন পাওয়ার ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতা তৈরির অভিযোগও উঠছে। সম্প্রতি সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার জ্যোতির্ময় বড়ুয়া এক অনুষ্ঠানে বলেন, বিচার বিভাগের ওপর পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণ চাপিয়ে রেখেছে সরকার। ফলে বিচারিক আদালতের অবস্থা আঁৎকে ওঠার মতো। বিচারিক আদালত জামিন দেয়া প্রায় বন্ধ রেখেছে, আবার কোনো কোনো ক্ষেত্রে জামিন দেয়া হলেও মুক্তি পাচ্ছেন না আসামি। নতুন কোনো মামলায় তাকে আসামি করা হচ্ছে। আদালতের বিচারকেরাও ভীতিমুক্ত হয়ে বিচার করতে পারছেন না বলেও অভিযোগ করেন ব্যারিস্টার জ্যোতির্ময় বড়ুয়া। এই অভিযোগ আংশিক সত্যি হলেও বিচার প্রক্রিয়ার ওপর ভয়ঙ্কর নিয়ন্ত্রণের বিষয়টি অনুমেয়।

মামলার পাশাপাশি সংস্কৃতি অঙ্গনে নানাভাবে নিয়ন্ত্রণ আরোপের চেষ্টার অভিযোগও আছে। গত নভেম্বরে শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় নাট্যশালায় মবের হুমকির মুখে বন্ধ হয়ে যায় ‘দেশ নাটকের' ‘নিত্যপুরাণ'-এর মঞ্চায়ন। ঘটনা সেখানেই থেমে থাকেনি। এরপর আরণ্যক প্রযোজিত 'রাঢ়াঙ' নাটকের আগে অভিনেতা মামুনুর রশীদকে মঞ্চে ওঠার ‘পরামর্শ দিয়ে' বিতর্কিত হন শিল্পকলা একাডেমির তখনকার মহাপরিচালক সৈয়দ জামিল আহমেদ। এ নিয়ে অনেক সমালোচনা হলেও সিদ্ধান্ত বদল হয়নি। ফেব্রুয়ারিতে মহিলা সমিতি মিলনায়তনে একদল ব্যক্তির হুমকির মুখে স্থগিত হয় ‘ঢাকা মহানগর নাট্যোৎসব'। পরে রোজার মাসে মহিলা সমিতি কর্তৃপক্ষ কোনো নাট্যদলকে মিলনায়তনে বরাদ্দ দেয়নি। সবশেষ পহেলা বৈশাখে ‘তৌহিদী জনতা'র হুমকিতে বন্ধ করে দেয়া হয় ‘শেষের কবিতা' নাটকের প্রদর্শনী।

অন্তর্বর্তী সরকারের সময়ে বিভিন্ন কালাকানুনের প্রয়োগ নিয়েও উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। এমনকি আওয়ামী লীগ আমলেও যে আইনের প্রয়োগ করা হয়নি,তাও এখন ব্যবহার করা হচ্ছে। ‘কালো আইন' হিসেবে সবচেয়ে আলোচিত ১৯৭৪ সালের বিশেষ ক্ষমতা আইন নিয়ে নতুন আলোচনা শুরু হয়েছে ১৫ বছর পরে। সম্প্রতি এ আইনে মডেল মেঘনা আলম এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থীকে আটকাদেশ দেয়া হয়।

একইভাবে প্রয়োগ হচ্ছে ২০০৯ পাস করা সন্ত্রাসবিরোধী আইন। অন্তর্বর্তী সরকার এ আইনকে নিবর্তনমূলক দাবি করে একদিকে আওয়ামী লীগ আমলে হওয়া সব মামলা পরীক্ষার নির্দেশ দিচ্ছে, অন্যদিকে একই আইনে হচ্ছে নির্বিচারে নতুন মামলা। এতে প্রশ্ন উঠেছে, সরকার আদৌ কি এসব আইনের প্রয়োগ বন্ধে প্রতিশ্রতিবদ্ধ?

সব মিলিয়ে এক দিকে দায় অস্বীকার, অন্যদিকে ক্ষমতার প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ প্রয়োগের নজিরবিহীন কৌশল দেখা যাচ্ছে গত কয়েক মাসে। এতে ধীরে ধীরে সংকুচিত হচ্ছে মত ও ভিন্নমতের অধিকার। মবের দাপট ছড়িয়ে গেছে তৃণমূল পর্যায়েও। এর শিকার এখন আর শুধু আওয়ামী লীগ সমর্থকেরাই হচ্ছেন না, আক্রান্ত হচ্ছেন এক সসময়ে অন্তর্বর্তী সরকারের সমর্থকেরা।

ঢাকার রাস্তায় ভাস্কর রাশার ওপর হামলাসহ সাম্প্রতিক আরও কয়েকটি ঘটনার উদাহরণ দিয়ে অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ ফেসবুকে লিখেছেন, ‘‘এই সব খবরেই মন খারাপ হয়, বিক্ষুব্ধ হয়। ঘৃণা আর বিদ্বেষভরা নির্বোধ আর সন্ত্রাসীদের দাপট সমাজে।নারী, শিল্পী, শিক্ষকদের অপমান হেনস্থা। সরকার এখানে নাই। শুধু আছে শ্রমিক দমনে, বাগাড়ম্বরে আর মামলার তামাশায়। বরাবরের মত মানুষকেই ঘন হয়ে দাঁড়াতে হবে এসব অত্যাচারের বিরুদ্ধে।''

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ