1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ভয় দেখাতে হামলা, রিমান্ড, গ্রেপ্তার?

১ মার্চ ২০২১

কারাগারে লেখক মুশতাক আহমেদের মৃত্যুর পর প্রতিবাদী সমাবেশের বিরুদ্ধে পুলিশের আচরণ বেপরোয়া৷ লাঠিপেটা ও গ্রেপ্তারই শুধু নয়, কারাগারে আটক কার্টুনিস্ট কিশোর অসুস্থ হওয়ার পরও তার রিমান্ড চায় পুলিশ৷ এর কারণ কী?

বিএনপির মিছিলে পুলিশের হামলা
ছবি: Sony Ramany/AFP

বৃহস্পতিবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) কাশিমপুর কারাগারে মারা যান ‘রাষ্ট্রদ্রোহের’ অভিযোগে ডিজিটাল আইনে গ্রেপ্তার লেখক মুশতাক আহমেদ৷ মারা যাওয়ার পর রাতেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও শাহবাগ এলকায় বিক্ষোভ হয়৷ পরদিন শুক্রবার সন্ধ্যায় শাহবাগে বাম ছাত্র সংঠনগুলোর মশাল মিছিলে হামলা চালায় পুলিশ৷ তাদের লাঠিপেটায় কমপক্ষে ১৫ জন আহত হন৷ এখানেই শেষ নয় এই ঘটনায় আটক সাত জনের বিরুদ্ধে মামলাও করে পুলিশ৷

রোববার প্রেসক্লাবের সামনে ছাত্রদলের প্রতিবাদ সমাবেশ পুলিশ হামলা চালিয়ে পন্ড করে দেয়৷ কয়েকজনকে আটকও করে৷

এদিকে লেখক মুশতাকের মৃত্যুর ঘটনায় ফেসবুকে পোস্ট দেয়ায়  শুক্রবার খুলনায় আটক করা হয় শ্রমিক-কৃষক-ছাত্র-জনতা ঐক্য পরিষদের সমন্বয়ক রুহুল আমিনকে ৷ তার বিরুদ্ধে জিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করা হয়েছে৷

অবশ্য সোমবার বাম ছাত্র জোটের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ঘেরাও কর্মসূচিতে সচিবালয়ের সামনের রাস্তায় পুলিশ তাদের আটকে দিলেও কাউকে আটক বা লাঠিপেটা করেনি৷

পুলিশের এই ‘আগ্রাসী’ মনোভাবের সবচেয়ে বড় পরিচয় পাওয়া গেছে এখনো কারাগারে আটক কার্টুনিস্ট আহমেদ কবির কিশোরের রিমান্ড আবেদনের মধ্য দিয়ে৷ কার্টুনিস্ট কিশোর ও লেখক মুশতাক আহমেদকে গ্রেপ্তার করা হয় গত বছরের ৫ মে৷ ‘রাষ্ট্রদ্রোহের’ অভিযোগে তাদের বিরুদ্ধে র‌্যাব ডিজিটাল আইনে মামলা করে৷ রমনা থানা পুলিশ তদন্ত শেষে এই বছরের ১৩ জানুয়ারি চার্জশিট দেয় সাইবার ক্রাইম ট্রাইবুন্যালে৷ চার্জশিটে মুশতাক, কিশোর ও দিদারকে আসামি করা হলেও আট জনকে বাদ দেয়া হয়৷ তাদের ঠিকানা নিশ্চিত না হওয়ায় তাদের বাদ দেয়া হয়৷ কিন্তু রাষ্ট্রপক্ষ তাদের নাম ঠিকানা নিশ্চিত করতে  এই মামলার অধিকতর তদন্ত দাবি করলে আদালত তা মঞ্জুর করেন৷

মামলার তদন্ত নতুন করে দেয়া হয় পুলিশের কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) ইউনিটের ওপর৷ মামলার নতুন তদন্ত কর্মকর্তা এসআই মো. আফছর আহমেদ গত ২৩ ফেব্রুয়ারি কার্টুনিস্ট কিশোর ও লেখক মুশতাক আহমেদের তিন দিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করেন৷ ২৫ ফেব্রুয়ারি মুশতাক মারা যান৷ তারপরও ২৮ ফেব্রুয়ারি আদলাতে  শুনানি করে কিশোরকে রিমান্ডে নিতে চায় পুলিশ৷ যদিও আদালত তাদের রিমান্ড আবেদন নাকোচ করে দেন৷

সাইবার ক্রাইম ট্রাইবুন্যালের পিপি নজরুল ইসলাম শামীম বলেন, ‘‘আমরাই অধিকতর তদন্ত চেয়েছি৷ আর সে কারণেই রিমান্ডের আবেদন হয়েছে৷’’

তার ডান কানের পর্দা ফেটে গেছে: কিশোরের ভাই আহসান কবির

This browser does not support the audio element.

কিন্তু কিশোরের আইনজীবী অ্যাডভোকেট হাসনাত কাইউম বলেন, ‘‘একবার চার্জশিট হয়ে গেলে সেই মামলার অধিকতর তদন্তে আসামিদের  আবার রিমান্ডে নেয়া যায় না৷ ১০ ফেব্রুয়ারি আবার শুনানি আছে৷ সেখানে আমরা আইনগত দিক তুলে ধরব৷ কিন্তু আইনের কত দিক তখন আবার হয়ে যায় তা বলা যায় না৷’’

কিশোরের ভাই সাংবাদিক আহসান কবির জানান, কাশিমপুর কারাগারে আটক কিশোরের শারীরিক অবস্থা এখন খুবই খারাপ৷ তাকে এর আগে ২৩ ফেব্রুয়ারি আদালতে হাজির করা হলেও ২৮ ফেব্রুয়ারি হাজির করা হয়নি৷ তিনি অভিযোগ করেন, ‘‘আটকের পর কিশোরকে নির্যাতন করা হয়৷ তার পায়ের গোড়ালিতে এখনো ব্যাথা৷ সে খুঁড়িয়ে হাঁটে, কয়েক কদম যাওয়ার পর তাকে অন্যের সহায়তা নিতে হয়৷ পায়ে ইনফেকশন হয়ে গেছে৷ তার ডান কানের পর্দা ফেটে গেছে৷ ডায়াবেটিস-এর কারণে সে চোখে ঠিকমত দেখতে পারে না৷’’

তার কথা এই পরিস্থতিতে কিশোরের রিমান্ড আবেদন, ‘‘ভয় দেখানো ও ভিন্ন উদ্দেশ্য ছাড়া আর কোনো কারণেই হতে পারে না৷’’

কারা হেফাজতে মৃত্যুর দায় রাষ্ট্রের, সরকারের: অধ্যাপক ড. মিজানুর রহমান

This browser does not support the audio element.

রিমান্ড আবদনের শুনানির দিন কিশোরের জামিন আবেদন করা হয়নি৷ কারণ ওই তারিখটি গোপন রাখা হয়েছিল বলে জাানান আহসান কবির ৷ তাই সোমবার হাইকোর্টে কিশোরের জামিন অবেদনের শুনানি হয়েছে৷ ৩ মার্চ আদালত এব্যাপারে আদেশ দেবেন৷ওই দিন রাষ্ট্রপক্ষ আবারও শুনানি করবে৷

মানবাধিকার কশিনের সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মিজানুর রহমান মনে করেন, লেখক মুশতাক কারাগারে মারা যাওয়ার পর পরিস্থতি সামাল দিতে এখন প্রতিবাদকারীদের ওপর পুলিশি হামলা, মামলা ও রিমান্ডের আশ্রয় নেয়া হচ্ছে৷ এর মাধ্যমে ভয় সৃষ্টি করে সাময়িক উপশমের পথ খুঁজছে সরকার৷ তিনি বলেন, ‘‘কারা হেফাজতে মৃত্যুর দায় রাষ্ট্রের, সরকারের৷ সরকারের কাজ হলো একটি নিরপেক্ষ তদন্ত করে সঠিক কারণ জানানো৷ কিন্তু তা না করে তারা এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি করতে চাইছে যাতে মানুষ ভয় পায়৷ যে প্রতিবাদ তৈরি হচ্ছে তা যেন হতে না পারে৷ কিন্তু এটা কোনো সঠিক পথ নয়৷ এতে জনরোষ বাড়ে৷’’

তিনি বলেন, ‘‘কিশোরকে যে আবার রিমান্ডে নেয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে এটাও ভয় দেখানোর জন্য৷ রাষ্ট্রের এই অসুর শক্তি প্রদর্শন কোনোভাবেই একটি গণতান্ত্রিক সমাজে গ্রহণযোগ্য নয়৷’’

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ