সাইবেরিয়ার সুবিখ্যাত ‘তাইগা’ বনভূমির সূচনা উত্তর মঙ্গোলিয়ার সেলেঙ্গে পর্বতমালায়৷ জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে তাইগা বনভূমি ক্রমেই আরো বেশি সংকুচিত হচ্ছে৷ তা রোধে করতে এবার মাঠে নেমেছেন মঙ্গোলিয়ার বন বিভাগের শিক্ষার্থীরা৷
বিজ্ঞাপন
সাইবেরিয়ার সুবিখ্যাত ‘তাইগা' বনভূমির সূচনা উত্তর মঙ্গোলিয়ার সেলেঙ্গে পর্বতমালায়৷ জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে তাইগা বনভূমি ক্রমেই আরো বেশি সংকুচিত হচ্ছে৷ তা রোধে করতে এবার মাঠে নেমেছেন মঙ্গোলিয়ার বন বিভাগের শিক্ষার্থীরা৷
হরিণ, ভাল্লুক, নেকড়ে, নানান জীবজন্তু তাদের আবাস হারাচ্ছে৷ আর সেই সঙ্গে হারাচ্ছে তাইগার মনোরম সৌন্দর্য৷ শিক্ষার্থীরা গত এক সপ্তাহ ধরে শিখছেন, কী ভাবে গাছ কাটতে হয়, কী ভাবে এক পর্যায় গাছ কেটে জঙ্গলে অগ্নিপ্রতিরোধের ব্যবস্থা করা যায়, কী ভাবে জঙ্গল থেকে কাঠ সংগ্রহ করা যায়৷ ২৭ বছর বয়সি এংখসায়া এনখবাৎ বললেন: ‘‘বাইরে খোলা জায়গায় কাজ করতে আমার সত্যিই ভালো লাগে৷ যান্ত্রিক করাত দিয়ে গাছ কাটা আদৌ শক্ত নয়৷ তার চেয়ে অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ হলো: কচি গাছগুলোর যেন কোনো ক্ষতি না হয়৷ অধিকাংশ লোকে ভাবেন, এ সব কাজ পুরুষদের জন্য৷ কিন্তু আমি দেখছি, বন বিভাগের কাজ মহিলাদের পক্ষেও খুব যুৎসই হতে পারে৷ কারণ কাজটা তো আসলে গাছ কাটা নয়, বরং জঙ্গলটাকে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখা৷''
অন্নপূর্ণা চলনবিল
বছরের প্রায় ছয়মাস চলনবিল পানিতে ডুবে থাকে৷ তবে শীতকালে শুকানোর পর সেই বিলের জমিতে বোরো আবাদ করেন কৃষকরা৷ কদিন আগে ধান ঘরে তুলেছেন তাঁরা৷ চলনবিলে ধান কাটার উৎসব নিয়ে আমাদের ছবিঘর৷
ছবি: DW/M. Mamun
ব্যস্ত কৃষক
বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় বিল চলনবিলে বোরো ধান কাটায় ব্যস্ত কৃষক৷ গ্রামে ধান কাটায় এখনো আধুনিক যন্ত্রপাতির ব্যবহার খুব একটা দেখা যায় না৷ ছবিটি সিরাজগঞ্জের তাড়াশ উপজেলার বিল নাদুয়া থেকে তোলা৷
ছবি: DW/M. Mamun
মাঠেই সকালের খাবার
চলনবিলে ফসল কাটার মাঝে সকালের খাবার খাচ্ছেন কৃষকরা৷ সাধারণত সূর্য ওঠার আগে থেকেই এখানে ধান কাটা শুরু হয়৷ তাই কৃষকরা সকাল আর দুপুরের খাবার সঙ্গে নিয়ে আসেন৷ কাজের ফাঁকে মাঠেই সেরে ফেলেন খাবার পর্ব৷
ছবি: DW/M. Mamun
মহিষের গাড়ির কদর বেশি
চলনবিলের রাস্তাঘাট এখনো খুবই অনুন্নত৷ একটু বৃষ্টি হলেই হাঁটু কাদায় ভরে যায় কাঁচা সড়কগুলো৷ এ অঞ্চলে মাঠ থেকে ধান আনার জন্য তাই মহিষের গাড়ির কদর বেশি৷
ছবি: DW/M. Mamun
কাটা ধান নিয়ে বাড়ি ফেরা
চলনবিলের ভেতর থেকে মহিষের গাড়ি বোঝাই কাটা ধান নিয়ে বাড়ি ফিরছেন মজুররা৷ ফসল তোলার সময় এসব মজুররা ধান কাটার জন্য আসেন চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ ও রাজশাহীর গোদাগাড়ী অঞ্চল থেকে৷ সঙ্গে নিয়ে আসেন নিজেদের মহিষের গাড়িও৷ সাধারণত এক বিঘা জমির ধান কেটে কৃষকের বাড়ি পৌঁছে দিলে এসব মজুররা দেড়মন ধান পেয়ে থাকেন৷
ছবি: DW/M. Mamun
পরিবেশবান্ধব বাহন
চলনবিলে ধান বহনের জন্য মহিষের গাড়ি ব্যবহারের অন্যতম আরেকটি কারণ হলো এ বাহনটিতে অনেক বেশি মাল বোঝাই করা যায় এবং এতে কোনো জ্বালানি খরচ নাই৷ মোটের উপর পরিবেশবান্ধব এক বাহন এটি৷ অধিকন্তু কাঠের চাকা হওয়ায় যে-কোনো দুর্গম রাস্তাতেই চলতে সক্ষম এ বাহন৷
ছবি: DW/M. Mamun
মাথায় নিয়েই ফেরা
ধানের মাঠ থেকে যে কৃষকদের বাড়ি অপেক্ষাকৃত কম দূরত্বে তাঁরা মাথায় করেই নিয়ে আসেন কাটা ধান৷
ছবি: DW/M. Mamun
বাড়ির আঙিনায় মাড়াই
চলনবিলে ধান কাটার পর মাড়াই পর্বটা সম্পন্ন হয় বাড়ির আঙিনাতেই৷ এ কাজে বাড়ির পুরুষদের পাশাপাশি নারী সদস্যদের ভূমিকাও থাকে অনেক বেশি৷ আগে এ অঞ্চলে গরু কিংবা হাত দিয়েই মাড়াই করা হতো৷ কিন্তু বর্তমানে স্থানীয় পর্যায়ে তৈরি যন্ত্র দিয়ে ফসল মাড়াই করা হয়৷
ছবি: DW/M. Mamun
নারীর ভূমিকা
মাড়াই শেষে ধান থেকে ময়লা সরাচ্ছেন চলনবিলের গৃহিনীরা৷ মাঠ থেকে ধান কেটে আনার পর চাল তৈরি পর্যন্ত সবকটি পর্যায়েই নারী সদস্যদের ভূমিকা থাকে বেশি৷
ছবি: DW/M. Mamun
ধান সিদ্ধ
ধান মাড়াই শেষে সিদ্ধ করছেন চলনবিলের গৃহিনীরা৷ এ কাজটিও মূলত বর্তায় গৃহিনীদের উপরই৷ ধান সিদ্ধ করার কাজে ব্যবহৃত জ্বালানিও আসে ধান থেকেই৷ এক্ষেত্রে ব্যবহৃত হয় ধানের খড় কিংবা তুষ৷
ছবি: DW/M. Mamun
অবশেষে চাল
সবশেষে ধান ভাঙানোর কাজ চলছে চলনবিলের একটি বাড়িতে৷ ফসল কাটার মৌসুমে ধান ভাঙানোর ভ্রাম্যমাণ কল নিয়ে বাড়িতেই হাজির হন অনেকে৷ এক মন ধান ভাঙাতে কৃষকদের গুনতে হয় ২০-২৫ টাকা৷
ছবি: DW/M. Mamun
10 ছবি1 | 10
মঙ্গোলিয়ার রাজধানী উলান বাটোর থেকে ২০০ কিলোমিটার উত্তরে সেলেঙ্গে প্রদেশ৷ সেখানে নানা ধরনের ফার, পাইন, বার্চ ও লার্চ গাছের একটি জঙ্গল৷ কয়েক মাস পর পর কাছের স্যুঞ্চারা শহর থেকে হবু বনরক্ষীরা এখানে কাজ শিখতে আসেন৷
‘তাইগা' উধাও হচ্ছে
সেলেঙ্গের পর্বতমালা থেকেই সাইবেরিয়ার ‘তাইগা' নামধারী কনিফার বনভূমির সূচনা৷ কিন্তু এই সীমানা ক্রমেই আরো উত্তরে উঠে আসছে, ‘তাইগা' ক্রমেই আরো ছোট হয়ে যাচ্ছে৷ ধীরে ধীরে গোটা জঙ্গলটাই নিশ্চিহ্ন হচ্ছে৷
তার একটি মূল কারণ জলবায়ুর পরিবর্তন৷ একটানা তাপমাত্রা বৃদ্ধির ফলে মাটির ভিতরে জমা বরফ বা পার্মাফ্রস্ট গলে যাচ্ছে৷ জমিতে অত্যধিক আর্দ্রতার ফলে গাছের শিকড় পচে গাছগুলো মরে যাচ্ছে৷ অথচ তাইগার সৌন্দর্য আজও অম্লান৷ যেমন এংখসায়া এনখবাৎ বললেন: ‘‘মঙ্গোলিয়ার জঙ্গল মুগ্ধ হবার মতো, কেননা তা মানুষের হাতে তৈরি নয়, প্রকৃতির হাতে গড়া৷ নানা ধরনের গাছপালা, জন্তু-জানোয়ারের বাস এখানে৷ মঙ্গোলিয়ার অপূর্ব সব প্রাকৃতিক দৃশ্য৷ আমার এখানে থাকতেই ভালো লাগে, আমি শহরে থাকতে চাই না৷ এমনকি দেশ বেড়ানোর সুযোগ থাকলেও আমি কখনো শহরে যেতে চাইব না, বরং মঙ্গোলিয়ার সব অরণ্য ঘুরে দেখতে চাইব৷ আমি কোনোদিনই শহরে সুখি হতে পারব না৷''
বাংলাদেশে বনানি কমছে উদ্বেগজনক হারে
বিজ্ঞানীরা বলছেন, বাংলাদেশের ৯০ শতাংশ বনানি উধাও হয়েছে৷ এই হারে চললে বাকি দশ শতাংশ উধাও হতেও বেশি সময় লাগবে না৷
ছবি: AP
বিশ্বের একটি সম্পদ বিপন্ন
সুন্দরবনের ম্যানগ্রোভ ফরেস্ট কিংবা গাজীপুরের শালবন, সবই বিপন্ন৷ অথচ ঠিক তার ফলেই জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব ইতিমধ্যেই মারাত্মক হয়ে পড়েছে৷
ছবি: Tareq Onu
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিভীষিকা
২০১৩ সালের ২৩শে মার্চের সেই টর্নেডো তার ধ্বংসলীলা দেখাতে পেরেছিল – সেটাও কি বনানি নিধনের কারণে নয়?
ছবি: Reuters
প্রকৃতির কোপ – আর মানুষের দোষ?
আইলা ঘূর্ণিঝড়ই হোক অথবা উপকূলীয় প্লাবনই হোক, তার বিধ্বংসী শক্তি রোখার জন্য বনানির প্রয়োজন৷
ছবি: Reuters
রয়াল বেঙ্গল টাইগার
সাগরের জল বেড়ে বিশ্বের ভয়াবহতম ও সুন্দরতম প্রাণীগুলির মধ্যে একটি সুন্দরবন থেকে উধাও হতে পারে!
ছবি: AP
শহরে যখন এলো প্লাবন
অতিবৃষ্টি-অনাবৃষ্টি, এমনকি নিয়মিত বাৎসরিক বন্যার সঙ্গেও বনানি নিধনের সংযোগ আছে৷ আজকাল তো প্রতি বছরই বন্যা হচ্ছে বাংলাদেশে, এমনকি জার্মানিতেও৷
ছবি: REUTERS
খাদ্য চাই, তাই চাই জমিও
বনানি ধ্বংসের একটি কারণ জনসংখ্যার চাপ, এবং তা শুধু কৃষিজমির খোঁজেই নয়৷
ছবি: AP
6 ছবি1 | 6
শহর বলতে এংখসায়া বোঝান রাজধানী উলান বাটোরকে, যেখানে মঙ্গোলিয়ার ২৮ লাখ নাগরিকদের অর্ধেকের বাস৷ তাঁদের সকলেরই দরকার কাঠের: যেমন বাড়ি তৈরি করতে, তেমন বাড়ি গরম রাখতে৷ মঙ্গোলিয়ার অর্থনীতি বেশ কয়েক বছর ধরে গরমাগরম৷
সোনার কোম্পানিগুলি পাথর ধুয়ে সোনা বের করতে বিপুল পরিমাণ পানি অপচয় করে, কেননা সেই পানির একটা বড় অংশ বাষ্পীভূত হয় এবং নদীতে ফেরত যায় না৷ কাজেই তাইগার অন্তর্ধানের দ্বিতীয় কারণ হলো: মানুষ৷