ঠাণ্ডা বিয়ারের সাথে আলু ভাজা, চিকেন ফ্রাই – এ ধরনের ভাজা পোড়া চলতেই পারে৷ কিন্তু পানীয়ের সাথে বিড়ালের মাংস যদি থাকে কেমন হবে ব্যাপারটা? ভিয়েতনামে কিন্তু এটা কোনো ব্যাপার না৷
বিজ্ঞাপন
তবে সম্প্রতি সেখানে বাঘের এই মাসিকে নিয়ে দেখা দিয়েছে বিপত্তি৷ আনুষ্ঠানিকভাবে বিড়াল খাওয়া ভিয়েতনামে নিষিদ্ধ হলেও রেস্তোরাঁয় অবিরাম চলছে বিড়াল রান্না৷ তাই যারা বিড়াল পোষেন তারা আছেন আতঙ্কে৷ হ্যানয়ে একটি রেস্তোরাঁতে রসুন দিয়ে বিড়াল ভেজে দেয়া হচ্ছে, যা নাকি দারুণ সুস্বাদু ও মচমচে৷ রেস্তোরাঁর ম্যানেজার বললেন, ‘‘অনেক মানুষ বিড়ালের মাংস পছন্দ করেন৷ তারা এখানে এসেই বিড়ালের মাংসের জন্য আবদার করেন৷''
পোকামাকড় দিয়ে করুন সকালের নাস্তা!
পোকামাকড়ে অনেক আমিষ রয়েছে এবং এগুলো চাষ করাও সহজ৷ ফলে ভবিষ্যতে খাবারের চাহিদা মেটাতে এই পোকামাকড়ের কাছেই যেতে হতে পারে, বলছেন বিজ্ঞানীরা৷
ছবি: picture-alliance/dpa
খেতে সুস্বাদু
পোকামাকড় খেতে সুস্বাদু৷ গরু, ছাগল, ভেড়ার চেয়ে এগুলো পালতে খরচ যেমন কম পড়ে, তেমনি পরিশ্রমও হয় কম৷ এছাড়া এরা গ্রিনহাউস গ্যাসও কম উৎপাদন করে৷ তাহলে আমরা বেশি করে পোকামাকড় খাই না কেন?
ছবি: picture-alliance
পুষ্টিমানেও সেরা!
বিয়ারের সঙ্গে ভাজা তেলোপোকা আর বিচ্ছু৷ আর কি চাই! এশিয়ার অনেক দেশের মানুষের প্রিয় খাবার এটি৷ সেই সঙ্গে এই খাবার স্বাস্থ্যকরও৷ পোকো, বিশেষ করে লার্ভা বা শূককীটগুলো, একেকটি যেন আমিষের স্বর্গ! যেমন একশো গ্রাম উইপোকায় রয়েছে ৬১০ ক্যালরি – যা একটি চকলেটের চেয়ে বেশি৷ এছাড়াও এতে আছে ৩৮ গ্রাম আমিষ ও ৪৬ গ্রাম চর্বি৷
ছবি: picture-alliance/Christoph Mohr
আরও গুণ
শুধু আমিষ নয়, পোকামাকড়ে রয়েছে ফ্যাটি অ্যাসিড, আয়রন, ভিটামিন ও খনিজ, জানিয়েছে স্বয়ং বিশ্ব খাদ্য ও কৃষি সংস্থা, এফএও৷ সংস্থাটি সারা বিশ্বে খাবার হিসেবে পোকার জনপ্রিয়তা বাড়াতে চাইছে৷
ছবি: picture-alliance/Wildlife
সারা বিশ্বেই জনপ্রিয়
পোকার কদর সারা বিশ্বেই৷ তবে এশিয়া, আফ্রিকা ও দক্ষিণ অ্যামেরিকার মানুষের কাছে একটু যেন বেশিই প্রিয়৷ ছবিতে শুঁয়াপোকার একটি মেনু দেখা যাচ্ছে৷ আফ্রিকার দক্ষিণাঞ্চলের জনপ্রিয় একটি খাবার এটি৷
ছবি: picture-alliance/africamediaon
জার্মানিতেও রেস্টুরেন্টে পোকার আগমন
ছবিটি মেক্সিকোর একটি রেস্তরাঁর৷ পোকার এই স্ন্যাকটি সবার খুব পছন্দের৷ তবে জার্মানিতেও নতুন চালু হওয়া অনেক রেস্তরাঁয় ঘাসফড়িং, শুঁয়াপোকা ইত্যাদি পাওয়া যাচ্ছে৷
ছবি: AP
পোকা ভাজা
কড়া করে ভাজা গুবরে পোকা, শূককীট ও পঙ্গপালের এই মেনুটি কলম্বিয়ায় একটি জনপ্রিয় খাবার৷
ছবি: picture-alliance/dpa
ফড়িংয়ের গ্রিল
ফ্রান্সের একটি নামকরা খাবার কোম্পানি গ্রিল করা ফড়িংয়ের এই মেনুটি অনলাইনে বিক্রি করছে৷ প্রতি ৩০-গ্রামের একটি বোতলের দাম নয় ইউরো বা ৯০০ টাকা!
ছবি: Ynsect
আহারযোগ্য এক হাজার পোকা
বিশ্বে প্রায় এক হাজার রকমের পোকা রয়েছে যেগুলো আহারযোগ্য৷ এর বেশিরভাগই যেমন সুস্বাদু, তেমনি পুষ্টিকর৷ তাই পোকা কিভাবে আরও বেশি পরিমাণে খাওয়ার যোগ্য করা যায় সে চিন্তা করার আহ্বান জানিয়েছে বিশ্ব খাদ্য ও কৃষি সংস্থা৷
ছবি: picture-alliance/dpa
8 ছবি1 | 8
রাজধানীর ইঁদুরের সংখ্যা নিয়ন্ত্রণে রাখতে বিড়াল নিধনের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিল কর্তৃপক্ষ৷ কিন্তু এরপরও হ্যানয়ের বহু রেস্তোরাঁয় চলছে বিড়ালের মাংস ভক্ষণ৷ রাস্তায় রাস্তায় এখন বিড়াল দেখাই যায় না৷ আর বিড়াল মালিকরাও তাদের বিড়ালকে বন্দি করে রাখছেন ঘরে, তবে তারপরও শান্তি নেই৷ চোররা যদি চুরি করে নিয়ে যায় সেই ভয়ও আছে৷
চাহিদা মেটাতে থাইল্যান্ড ও লাওস থেকে চোরাপথে আমদানি করা হচ্ছে বিড়াল৷ ব্যস্ততম দিনে রেস্তোরাঁটি ১০০ ক্রেতাকে বিড়ালের মাংস পরিবেশন করে থাকে৷ ঐ রেস্তোঁরার এক ক্রেতা জানালেন, ‘‘আমরা জানি যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যে বিড়ালের মাংস খাওয়া হয় না৷ কিন্তু এখানে আমরা খাই৷'' তিনি যখন একথা বলছিলেন তখন তার হাতে ছিল বিড়ালের মাংসের মচমচে একটি টুকরা৷
হ্যানয়ের এক পশু চিকিৎসক সংবাদ সংস্থা এএফপিকে জানায়, ‘‘একসময় দেশটি খুব গরিব ছিল এবং দীর্ঘ যুদ্ধের মধ্য দিয়ে যেতে হয়েছে আমাদের৷ বেঁচে থাকার জন্য যা পাওয়া যেত তাই খাওয়া হত৷ কুকুর, বিড়াল, পোকামাকড়, ইঁদুর কোনো কিছুই তখন বাদ যায়নি৷ পরে এটা একটা অভ্যাসে পরিণত হয়েছিল৷'' তবে কেউই নিজের পোষা প্রাণীটিকে মেরে খায় না বলে জানান তিনি৷ বলেন, রেস্তোরাঁয় যারা বিড়াল রান্না করে বেশিরভাগই অবৈধ পথে বা চুরি করে নিয়ে আসা৷
আকার ও স্বাস্থ্য ভেদে এবং কিভাবে রান্না করা হয় তার উপর নির্ভর করে এক একটি বিড়ালের দাম গড়ে ৫০ থেকে ৭০ ডলার পর্যন্ত হয়ে থাকে৷