উত্তেজনা ছিল। ফের মণিপুরে দুই গোষ্ঠীর মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়েছে। মঙ্গলবার নয়জনের মৃত্যু হয়েছে।
বিজ্ঞাপন
কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ঘুরে এসেছেন। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, পরিস্থিতি ক্রমশ স্বাভাবিক হচ্ছে। কিন্তু বাস্তবের চিত্র অন্যরকম। মণিপুরে মেইতেই এবং কুকি জনগোষ্ঠীর মধ্যে লড়াই অব্যাহত।
স্থানীয় সংবাদমাধ্যম জানিযেছে, রাজধানী ইম্ফলের কাছে কাংপোকপি এবং পূর্ব ইম্ফল সীমানায় গত ২৪ ঘণ্টায় তীব্র লড়াই হয়েছে। ঘটনায় নারী-সহ নয় জন নিহত হন। ইম্ফলের হাসপাতালে নিয়ে গেলে তাদের মৃত বলে ঘোষণা করা হয়। তাদের সকলের শরীরেই গভীর ক্ষতের দাগ আছে। ধারালো অস্ত্র দিয়ে তাদের কুপিয়ে মারা হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে।
না পালালে জীবন্ত জ্বালিয়ে দিত: মণিপুরী উদ্বাস্তু
মণিপুর থেকে পালিয়ে আসামে উদ্বাস্তু ক্যাম্পে আশ্রয় নিয়েছেন বহু মানুষ। তাদের সঙ্গে কথা বলেছে ডিডাব্লিউ।
ছবি: Viswakalyan Purokayastha/DW
অভিশপ্ত রাত
৫ মে এখনো চোখের সামনে জ্বলজ্বল করছে তাদের। হামলাকারীরা এসে একের পর এক ঘরে আগুন লাগাতে থাকে। ঘরের ভিতর এই মানুষগুলিকেও পুড়িয়ে মারার চেষ্টা হয়েছিল। বাচ্চাদের সঙ্গে নিয়ে কোনোক্রমে পালিয়েছেন তারা।
ছবি: Viswakalyan Purokayastha/DW
সারা রাত পাহাড়ি রাস্তায়
গোটা রাত পাহাড়ি রাস্তা দিয়ে হেঁটে আসামের কাছাড় জেলায় পৌঁছেছেন এই উদ্বাস্তুরা। জীবন ছাড়া আর সব পুড়ে গেছে তাদের।
ছবি: Viswakalyan Purokayastha/DW
সব মিলিয়ে আটটি ক্যাম্প
কাছাড় জেলার লখিপুরে আটটি ক্যাম্পে প্রায় আড়াই হাজার উদ্বাস্তু বসবাস করছেন। এ ছাড়াও পার্শ্ববর্তী অঞ্চলে কয়েকটি ক্যাম্প তৈরি হয়েছে। বহু উদ্বাস্তু মিজোরামেও গেছেন। সেখানেও এমনই আরো ক্যাম্প তৈরি হয়েছে।
ছবি: Viswakalyan Purokayastha/DW
কারা করল এমন!
কারা এই ঘটনার সঙ্গে যুক্ত তা জানলেও প্রকাশ্যে বলতে চাইছেন না উদ্বাস্তুরা। বার বার একটাই কথা বলছেন, ঘরবাড়ি, চার্চ সব পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।
ছবি: Viswakalyan Purokayastha/DW
নদী পথে পলায়ন
নদী পথেও অনেকে পালিয়েছেন। পালানোর সময় তাদের ক্যামেরাতেই উঠেছে এমন ছবি।
ছবি: Viswakalyan Purokayastha/DW
পুলিশি প্রহরা
ক্যাম্পগুলিতে পুলিশি প্রহরার ব্যবস্থা করা হয়েছে। স্থানীয় মানুষেরাও মণিপুরী উদ্বাস্তুদের পাশে দাঁড়িয়েছেন।
ছবি: Viswakalyan Purokayastha/DW
মুখ্যমন্ত্রীর আশ্বাস
মণিপুরের মুখ্যমন্ত্রী বীরেন সিং বলেছেন, প্রায় তিরিশ হাজার উদ্বাস্তু রাজ্য ছেড়ে পালাতে বাধ্য হয়েছেন। দ্রুত তাদের ফিরিয়ে আনা হবে। আক্রমণকারীদের বিরুদ্ধে কঠোরতম শাস্তির ব্যবস্থা হবে।
ছবি: Viswakalyan Purokayastha/DW
ফিরতে ভয়
উদ্বাস্তুরা বলছেন, বউ-বাচ্চা নিয়ে গ্রামে ফিরতে ভয় পাচ্ছেন তারা। মৃত্যুর মুখ থেকে তারা ফিরে এসেছেন। আবার সেই ভয়াবহ রাত ফিরে আসবে না তো!
ছবি: Viswakalyan Purokayastha/DW
8 ছবি1 | 8
প্রশাসন অবশ্য সাম্প্রতিক লড়াই নিয়ে এখনো কোনো বিবৃতি দেয়নি। কোন গোষ্ঠীর মানুষ নিহত হয়েছেন, তা-ও এখনো স্পষ্ট নয়। এদিকে গত মাসে সংঘর্ষ শুরু হওয়ার পর বিপুল পরিমাণ মানুষ ঘর ছেড়ে ছিলেন। অনেকের ঘর জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছিল। প্রায় ৩০ হাজার উদ্বাস্তু এখনো প্রতিবেশী রাজ্যগুলিতে আশ্রয় শিবিরে দিন কাটাচ্ছেন।
মণিপুরে সংখ্যাগুরু মেইতেই সম্প্রদায়ের সঙ্গে সংখ্যালঘু কুকি সম্প্রদায়ের সংঘর্ষ চলছে। মেইতেই উপজাতির মর্যাদা চায়। কিন্তু কুকি তা চায় না। এই নিয়েই সংঘাতের সূত্রপাত। দুই গোষ্ঠীর সংঘর্ষে এখনো পর্যন্ত শখানেক মানুষের মৃত্যু হয়েছে। আহত বহু। মণিপুরের বিস্তীর্ণ অঞ্চলজুড়ে কারফিউ জারি রাখা হয়েছে। ইন্টারনেট বন্ধ। সেনা টহল দিচ্ছে। কিন্তু তা সত্ত্বেও লড়াই বন্ধ হচ্ছে না।