1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

মণিপুরে কেন শান্তি ফেরাতে পারছে না ভারত?

১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪

কয়েক মাস বিরতির পর ভারতের মণিপুর রাজ্যে সমতলের মেইতেইদের সঙ্গে পাহাড়ি এলাকায় বসবাসরত কুকিদের আবারও সংঘর্ষ শুরু হয়েছে৷

মণিপুরে বিক্ষোভকারীদের দিকে স্মোক বোম্ব ছুড়ছেন এক পুলিশ সদস্য
সরকারি তথ্য অনুযায়ী সংঘাতে এ পর্যন্ত ২২৫ জনের প্রাণহানি হয়েছে, ৬০ হাজারের বেশি মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছেনছবি: REUTERS

এক বছরেরও বেশি আগে শুরু হওয়া এই সংঘর্ষের দুই পক্ষকে এক করতে না পারায় সরকারের সমালোচনা হচ্ছে৷
এক বছর ধরে চলা সংঘর্ষে ২২৫ জন মারা গেছেন বলে সরকারি তথ্য বলছে৷ ৬০ হাজারের বেশি মানুষ এখনো ঘর ছাড়া৷

নতুন করে সংঘর্ষ শুরু হয় ১ সেপ্টেম্বর৷ মণিপুরের পুলিশ বলছে, কুকিরা মেইতেইদের এলাকায় ড্রোন হামলা করেছে৷ তবে কুকিদের দাবি, মেইতেইরা ড্রোন ব্যবহার করেছে৷ 

এই সংঘর্ষে এবারই প্রথমবার ড্রোন ব্যবহারের কথা শোনা গেল৷ এছাড়া রকেটও ব্যবহার হয়েছে বলে জানা গেছে৷
মেইতেইরা মূলত হিন্দু৷ তারা রাজ্যের রাজধানী ইম্ফলের আশেপাশে থাকেন৷ আর কুকিরা মূলত খ্রিষ্টান৷ তারা থাকেন পাহাড়ি এলাকায়৷

রাষ্ট্রের নিষ্ক্রিয়তা?

পরিস্থিতি শান্ত করতে রাষ্ট্রের উদ্যোগ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন অ্যাক্টিভিস্টরা৷ প্রধানমন্ত্রী মোদীর এখনো মণিপুর সফর না করার বিষয়টিও সামনে আনছেন অনেকে৷ ‘‘মণিপুরে জনগণের জানমাল রক্ষার দায়িত্ব সম্পূর্ণভাবে অগ্রাহ্য করা হয়েছে এবং সে কারণেই মণিপুরীদের ক্ষোভ গভীর হচ্ছে,’’ বলে ডিডাব্লিউকে জানান নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক এক মণিপুরী অ্যাক্টিভিস্ট৷

মানবাধিকার কর্মী বিনালক্ষ্মী নিপ্রাম বর্তমান সময়কে মণিপুরের ইতিহাসের ‘সবচেয়ে অন্ধকার অধ্যায়’ বলে আখ্যায়িত করেছেন৷ ডিডাব্লিউকে তিনি বলেন, নাগরিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা রাষ্ট্রের দায়িত্ব৷ ‘‘পরিস্থিতি শান্ত করতে ভারতীয় নিরাপত্তা বাহিনীর ৬০ থেকে ৭০ হাজার সদস্যকে উড়িয়ে আনা হয়েছে৷ কিন্তু দুঃখজনক হলো তারা কিছুই করেনি,’’  বলেন নিপ্রাম৷ 

‘‘মণিপুরের মানুষ একেবারেই হতবাক৷ ভারত কীভাবে তার অত্যাধুনিক অস্ত্র, গোয়েন্দা ও প্রযুক্তি দিয়ে দেশের একটি ক্ষুদ্র অংশের পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে পারছে না? ১৬ মাস ধরে এমনটা চলছে৷ প্রত্যেক মণিপুরী এই প্রশ্নটাই করছেন,’’ যোগ করেন তিনি৷

কুকি বাংকারে ছাত্রদের হাতে বন্দুক

05:35

This browser does not support the video element.

উত্তেজনার কারণ

কুকি শিক্ষার্থীদের নেতা তেলাং লেতমিনলেন হাওকিপ বলছেন, কয়েক দশক ধরে তার সম্প্রদায়ের লোকজন বৈষম্যের শিকার হচ্ছেন৷

‘‘আমরা অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিকভাবে শোষিত হয়েছি৷ পাহাড়ে ও সমতলে বসবাসকারীদের মধ্যে বিশাল অবিশ্বাস রয়েছে৷ পাহাড়ে খুব কমই উন্নয়নমূলক কাজ হয়৷ সমতলে ভালো সব অবকাঠামো রয়েছে,’’ বলেন তিনি৷
৪০ বছর বয়সি মেইতেই সম্প্রদায়ের সদস্য সুরজিৎ* জাতিগত বিভাজনকে ‘টিকিং টাইম বোমা, যা বিস্ফোরিত হয়েছে’’ বলে আখ্যায়িত করেছেন৷

তিনি বলেন, মেইতেইদের পাহাড়ে জমি কিনতে দেওয়া হচ্ছে না৷ কুকিরা মিয়ানমার থেকে অবৈধভাবে এসেছেন এবং তারা পপি চাষ ও মাদকপাচারের সঙ্গেও জড়িত বলে অভিযোগ করেন তিনি৷ 

অতীত সরকারগুলোর ব্যর্থতা

১৯৪৯ সালে মণিপুর ভারতের অংশ হয়৷ কয়েক দশক ধরে সেখানে বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠীর মধ্যে সংঘাত ও বিচ্ছিন্নতাবাদী কার্যক্রম চলে আসছে৷

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, অতীতের সরকারগুলো সংঘাতের মূল কারণটির সমাধান করতে ব্যর্থ হয়েছে৷ নতুন দিল্লিতে ক্ষমতায় থাকা শাসকেরা ঐতিহাসিকভাবে বিষয়টিকে নিয়ে অবহেলা করে এসেছে৷

মানবাধিকার সংগঠনগুলো বলছে, মণিপুরে শান্তি প্রচেষ্টার মারাত্মক অভাব রয়েছে৷

নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক মণিপুরী অ্যাক্টিভিস্ট বলেন, ‘‘শান্তি প্রচেষ্টা বিষয়ে সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোকে আলোচনার টেবিলে বসার আনুষ্ঠানিক আহ্বান ছাড়া আর কিছু ঘটতে দেখিনি৷’’

মানবাধিকার কর্মী নিপ্রাম বলেন, গত এক বছরে কোনো শান্তি আলোচনা না হওয়াটা ‘দুঃখজনক’৷

‘‘ভারত সরকারের উচিত ছিল বিভিন্ন জাতিকে একত্রিত করা এবং নিশ্চিত করা যে সেখানে আস্থা তৈরির ব্যবস্থা রয়েছে৷ আমাদের ড্রোনের দরকার নেই, আমাদের সংলাপ দরকার৷ আমাদের রকেট লঞ্চার দরকার নেই, আমাদের পুনর্মিলন দরকার৷ আমাদের মধ্যস্থতা দরকার, মারপিট নয়,’’ বলেন তিনি৷

ধারভি বৈদ, নতুন দিল্লি/জেডএইচ

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য
স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ