1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

মণিপুর, আদানি, ওয়াকফ নিয়ে উত্তাল শীতকালীন অধিবেশন

২৫ নভেম্বর ২০২৪

সোমবারই শুরু হয়েছে পার্লামেন্টের শীতকালীন অধিবেশন। প্রথম দিনই বুধবার পর্যন্ত মুলতুবি অধিবেশন।

ভারতের নতুন পার্লামেন্টের সামনে নরেন্দ্র মোদী
ভারতীয় পার্লামেন্টছবি: Arvind Yadav/Hindustan Times/Sipa USA/picture alliance

সোমবার থেকে শুরু হয়েছে ভারতীয় পার্লামেন্টের শীতকালীন অধিবেশন। আগামী ২০ ডিসেম্বর পর্যন্ত পার্লামেন্ট চলার কথা। কিন্তু অধিবেশনের প্রথম দিনেই বুধবার পর্যন্ত মুলতুবি করে দেওয়া হলো পার্লামেন্টের দুইকক্ষের অধিবেশন। বিরোধীরা এদিন প্রথম থেকেই পার্লামেন্টে হইচই শুরু করেন একাধিক বিষয়ে সরকারের অবস্থান জানার জন্য এবং তা নিয়ে আলোচনার জন্য। এই পরিস্থিতিতেই মুলতুবি করে দেওয়া হয় অধিবেশন।

এদিনের অধিবেশনে মূলত তিনটি বিষয় নিয়ে সরব ছিলেন বিরোধীরা। মণিপুর পরিস্থিতি, ওয়াকফ বিল এবং আদানি প্রসঙ্গে।

তবে অধিবেশন শুরু হওয়ার আগে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী একটি ছোট ভাষণ দেন। সেখানে তিনি সরাসরি নিশানা করেছেন কংগ্রেসকে। বিরোধী এমপি-দের নিয়ে তার মন্তব্য, পার্লামেন্ট যাতে চলতে না পারে, তার জন্য তারা অধিবেশনের মধ্যে ঝামেলা সৃষ্টি করেন। যে কারণে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে আলোচনা করা যায় না বলে অভিযোগ করেন মোদী।

মহারাষ্ট্র-হরিয়ানার ফলাফল

উল্লেখ্য, সম্প্রতি মহারাষ্ট্র এবং ঝাড়খণ্ডের নির্বাচনের ফলাফল প্রকাশিত হয়েছে। ঝাড়খণ্ডে বিজেপি শেষ পর্যন্ত সরকার গড়তে না পারলেও মহারাষ্ট্রে তারা বিরোধীদের কার্যত উড়িয়ে দিয়েছে। গত লোকসভা নির্বাচনে মহারাষ্ট্রে বিজেপি যথেষ্ট ভালো ফলাফল করতে পারেনি। ফলে বিরোধীদের অনেকেই ভেবেছিলেন, বিধানসভা ভোটে বিজেপি সেখানে হারবে। কিন্তু বাস্তবে ফল হয়েছে ঠিক তার উল্টো। কিছুদিন আগে হরিয়ানাতেও সরকার গড়েছে বিজেপি। সেখানেও লোকসভা ভোটে তাদের ফলাফল আশাপ্রদ ছিল না। ফলে বিশেষজ্ঞদের অনেকেই মনে করছেন, মহারাষ্ট্র এবং হরিয়ানায় শক্তি বাড়িয়ে এবারের লোকসভা অধিবেশনে বিজেপি অনেক বেশি সরব থাকবে। প্রধানমন্ত্রীর প্রথম দিনের ভাষণেও তার ইঙ্গিত পাওয়া গিয়েছে।

মনিপুর প্রসঙ্গ

গত এক বছরেরও বেশি সময় ধরে অশান্ত মনিপুর। সম্প্রতি নতুন করে গোলমাল শুরু হয়েছে সেখানে। আসাম লাগোয়া জিরিবামে একই পরিবারের একাধিক সদস্যের মৃতদেহ উদ্ধার হয়েছে। মেইতেই পরিবারের দুই বছরের শিশুর দেহেও বুলেটের ক্ষত মিলেছে। তার চোখ উপড়ে নেওয়া হয়েছিল বলে ময়নাতদন্তের রিপোর্টে বলা হয়েছে। মনিপুরে বিজেপির নেতৃত্বে বীরেন সিংয়ের সরকার চলছে। লোকসভার আগের অধিবেশনেও বিরোধীরা বার বার মনিপুর প্রসঙ্গ উত্থাপন করেছে। এবছরের অধিবেশনের প্রথম দিনেই বিরোধীরা বুঝিয়ে দিয়েছে, চলতি অধিবেশনেও মনিপুর নিয়ে তারা সরব থাকবে।

আদানি প্রসঙ্গ

শিল্পপতি গৌতম আদানি বর্তমান বিজেপি সরকারের ঘনিষ্ঠ বলে দীর্ঘদিন ধরে অভিযোগ করছেন বিরোধীরা। এবিষয়ে সবচেয়ে বেশি সরব কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী। নরেন্দ্র মোদী এবং অমিত শাহ আদানিকে অনৈতিকভাবে সাহায্য করেন বলে একাধিকবার অভিযোগ করেছেন তিনি। সম্প্রতি একটি মার্কিন রিপোর্টে আদানির বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ তোলা হয়েছে। বলা হয়েছে ঘুষ এবং জালিয়াতির সঙ্গে যুক্ত আদানি। তার বিরুদ্ধে বিস্ফোরক অভিযোগ তোলা হয়েছে ওই রিপোর্টে। পার্লামেন্টে এই বিষয়েও বিরোধীরা সরব হবেন বলে মনে করা হচ্ছে। এদিন পার্লামেন্ট শুরু হওয়ার আগে বিরোধী জোটের বৈঠকে এই বিষয়ে আলোচনা হয়েছে বলে পার্লামেন্টের সূত্র ডিডাব্লিউকে জানিয়েছেন। সরকারকে আদানি প্রসঙ্গে কোণঠাসা করার চেষ্টা হবে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

ওয়াকফ এবং এক দেশ এক ভোট বিল

এবারের অধিবেশনে বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ বিল পেশ হতে পারে পার্লামেন্টে। তার মধ্যে অন্যতম ওয়াকফ বিল। এই বিল আইন হলে দীর্ঘদিন ধরে চলে আসা ওয়াকফ সম্পত্তির ধারণাটিই বদলে যাবে। ভারতের প্রথম সারির মুসলিম সংগঠনগুলি গত কয়েকমাস ধরে এই নিয়ে সরব। তারা জানিয়ে দিয়েছেন, কোনোভাবেই নতুন বিল তারা মেনে নেবে না। পার্লামেন্টে ওয়াকফ বিল নিয়েও তীব্র বিতর্ক হতে পারে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

পার্লামেন্টের বিশেষ সূত্র জানিয়েছে, এবারের অধিবেশনে এক দেশ এক ভোটের বিলও প্রস্তাব আকারে পেশ হতে পারে। অর্থাৎ লোকসভা এবং বিভিন্ন রাজ্যের বিধানসভা ভোট একসঙ্গে হওয়ার প্রস্তাব। বিরোধীরা গোড়া থেকেই এই নীতির বিরোধিতা করছেন। এই বিলটি উত্থাপিত হলেও প্রবল বিতর্ক হওয়ার আশঙ্কা আছে। তবে শাসক গোষ্ঠী শেষ পর্যন্ত এবারের অধিবেশনে বিলটি পেশ করবে কি না, তা এখনো স্পষ্ট নয়।

সাংবাদিক জয়ন্ত রায়চৌধুরী ডয়চে ভেলেকে বলেছেন, ''গত লোকসভা ভোটে বিজেপির ফলাফল আশানরূপ হয়নি। ফলে বিরোধীরা খানিকটা অক্সিজেন পেয়েছিল। লোকসভাতেও তার প্রতিফলন দেখা গেছিল। কিন্তু কয়েকটি রাজ্যে জিতে বিজেপি আবার নতুন করে শক্তি অর্জন করেছে। এবারের লোকসভার অধিবেশনে তা-ই দুই পক্ষই নিজেদের শক্তি আরো বাড়ানোর চেষ্টা করবে।''

এসজি/জিএইচ (পিটিআই, এএনআই)

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ