ভারতে আইনি জটিলতা
৭ মার্চ ২০১৩যৌন অপরাধের বিরুদ্ধে কড়া আইন আনতে ফৌজদারি আইন সংশোধনী বিল আনতে বিলম্বের কারণ ঐকমত্যের অভাব৷ মহিলাদের বিরুদ্ধে অপরাধের মোকাবিলায় ধর্ষণ-বিরোধী কড়া আইন আনার সরকারি প্রতিশ্রুতি তাই ঝুলে রইলো৷ এই সংক্রান্ত বিলটি নিয়ে আলোচনার জন্য কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভায় পেশ করার কথা ছিল, কিন্তু পেশ করা হয়নি৷ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সংশোধনী প্রস্তাবে আইন মন্ত্রণালয় বেঁকে বসে৷
আপাত বিতর্ক বিলের কয়েকটি শব্দবন্ধ নিয়ে৷ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক যেখানে ধর্ষণ কথাটি রাখতে চেয়েছে, আইন মন্ত্রক তার জায়গায় যৌন নিগ্রহ শব্দটি ব্যবহারের পক্ষপাতী৷ কেন্দ্রীয় মন্ত্রী মনিশ তেওয়ারি বলেন, আসলে আমরা অর্ডিন্যান্স এনে দেখাতে চেয়েছি মহিলাদের নিরাপত্তায় আমরা কৃতসংকল্প৷ মন্ত্রিসভায় কেন বিলটি অনুমোদনের জন্য তোলা হলো না, তা বলতে পারবে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়৷
জাতীয় মহিলা কমিশনের দাবি প্রস্তাবিত অ্যান্টি-রেপ আইনে যৌন নিগ্রহের সঙ্গে ধর্ষণ কথাটিও যুক্ত রাখতে হবে যাতে আইনটি লিঙ্গ-নিরপেক্ষ হয়৷ প্রস্তাবিত বিলে সম্মতি-সূচক যৌন সম্পর্কের ক্ষেত্রে বয়সসীমা ১৮ থেকে কমিয়ে ১৬ বছর করার বিষয়েও ঐকমত্য হয়নি৷ সামাজিক সংগঠনগুলির একাংশ মনে করে, সম্মতিসূচক যৌন সম্পর্কের ক্ষেত্রে নিরাপত্তার কথা মাথায় রেখে ন্যূনতম বয়স থাকা উচিত ১৮ বছর৷ তবে জুভেনাইল জাস্টিসের ক্ষেত্রে বয়সসীমা ১৮ বছর থেকে কমিয়ে ১৬ বছর করা যেতে পারে৷
বিলে অন্যান্য সংস্থানগুলির মধ্যে আছে ধর্ষিতাকে চিকিৎসার জন্য সরকারি হাসপাতালের পরিবর্তে নিকটবর্তী বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করতে হবে৷ কর্তৃপক্ষের স্তরে কেউ যদি যৌন অপরাধে দোষী হয়, তাহলে সর্বোচ্চ শাস্তি যাবজ্জীবন কারাদণ্ড৷ কর্তৃপক্ষ বলতে ধরা হবে পুলিশ, ডাক্তার, হাসপাতাল কর্মী, কারা অফিসার প্রমুখ৷ বিচারপতি ভার্মা কমিটির সুপারিশ সত্ত্বেও বিলের সংশোধনীতে উপদ্রুত এলাকায় যেখানে সেনাবাহিনীর বিশেষ ক্ষমতা আইন আছে, সেখানে এবং বিবাহিত দম্পতির ক্ষেত্রে ধর্ষণের অপরাধ এই আইনের বাইরে রাখা হয়েছে৷
ধর্ষণ-বিরোধী খসড়া বিল সম্পর্কে অভিভাবক এবং তরুণীদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া৷ তাঁরাও চান যৌন নিগ্রহের পরিবর্তে ধর্ষণ শব্দবন্ধটি রাখতে৷ উল্লেখ্য, গত বছর ১৬ই ডিসেম্বর দিল্লির একটি চলন্ত বাসে ২৩ বছরের এক মেডিক্যাল ছাত্রীর গণধর্ষণের ঘটনা গোটা দেশকে কাঁপিয়ে দিয়েছিল৷ ধর্ষিতা পরে সিঙ্গাপুরে এক হাসপাতালে মারা যায়৷