1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

আবহাওয়ার কারণে স্বাস্থ্যসংকট

শীর্ষ বন্দ্যোপাধ্যায়, কলকাতা১৮ জানুয়ারি ২০১৪

সকালে হাড়কাঁপানো ঠান্ডা হাওয়া তো দুপুরে চিড়বিড়ে গরম৷ আবহাওয়ার এই তারতম্য রাস্তা করে দিচ্ছে নানা ধরণের রোগজীবাণুকে৷

Indien Gesundheitssystem Ausstellung von Rezepten Krankenhaus
ছবি: DW/P. Tewari

দক্ষিণ কলকাতার একটি নামি রক্ত পরীক্ষা কেন্দ্রে দম ফেলার সময় পাচ্ছেন না কর্মীরা৷ কারণ এই শীতকালে যেন হঠাৎই বেড়ে গিয়েছে ভাইরাল জ্বরের সংক্রমণ৷ অধিকাংশ ক্ষেত্রেই আক্রান্ত হচ্ছে বাচ্চারা এবং সমস্যা হচ্ছে, অনেক সময়ই রক্ত পরীক্ষা করেও জ্বরের কারণ বা ভাইরাসের প্রকৃতি শনাক্ত করা যাচ্ছে না৷ তবু সাবধানতার খাতিরে ডাক্তারবাবুরা বারবার রক্ত পরীক্ষা করাচ্ছেন৷ কারণ, নেহাতই সাধারণ ভাইরাল জ্বর হঠাৎ বিপজ্জনক হয়ে উঠেছে, এমন উদাহরণও প্রচুর৷ যেমন কিছুদিন আগেই শহরের এক নামি বেসরকারি হাসপাতালের এমার্জেন্সিতে নিয়ে আসতে হয়েছিল ১৩ বছরের এক কিশোরীকে, অজানা ভাইরাল জ্বরের প্রকোপে যে হঠাৎই জ্ঞান হারিয়েছিল৷ ওই এমার্জেন্সি বিভাগের দায়িত্বে থাকা ডাক্তার এ বোস জানালেন, নানা ধরনের পরীক্ষা করে ধরা পড়েছিল, কিশোরীটি ম্যানিংগো এনসেফেলাইটিস রোগের শিকার, যা একেবারেই ভাইরাসবাহিত রোগ৷

স্কুল অফ ট্রপিকাল মেডিসিনের অভিজ্ঞ চিকিৎসক গবেষকদের বক্তব্য, ভাইরাসের সংক্রমণ যে কোনো সময়ই হতে পারে, তবে এ ধরনের প্রকোপ সবথেকে বেশি দেখা যায় মরশুমি আবহাওয়ার বদলের সময়৷ যদি কোনো কারণে কম সময়ের মধ্যে তাপমাত্রা দ্রুত হারে ওঠানামা করে এবং আবহাওয়ার ব্যাপক তারতম্য দেখা দেয়, তা হলেও নানান ধরনের ভাইরাস ছড়ায় ব্যাপক হারে৷ এবং সব থেকে উদ্বেগজনক ব্যাপার হল, এ সমস্ত ভাইরাসের গতি-প্রকৃতি অধিকাংশ ক্ষেত্রেই অজানা হওয়ায়, চিকিৎসার পথও কার্যত হয় অজানা, বললেন ডা. অজিত ব্যানার্জি৷ জেনারেল প্র্যাক্টিশনার বা জিপি হিসেবে দীর্ঘদিন এদেশে এবং ইংল্যান্ডে কাজ করার অভিজ্ঞতা রয়েছে ডা. ব্যানার্জির৷ তিনি খোলাখুলি জানালেন, অনেক সময়ই রোগীর শারীরিক অবস্থা ঘড়ির কাঁটা ধরে মনিটর করা ছাড়া আর কিছুই প্রায় করার থাকে না ডাক্তারদের৷ নিয়মিত রক্ত পরীক্ষা করে শরীরের সব গুরুত্বপূর্ণ লক্ষণগুলোকে নজরে রাখতে হয় এবং আশা রাখতে হয় যে, ভাইরাস ক্রমশ দূর্বল হয়ে পড়বে৷ তবে এই শক্তিক্ষয়ের সময়টা কারও ক্ষেত্রে যেমন ছ'দিন হয়, তেমন আবার কারও ক্ষেত্রে ছমাসও হতে পারে৷

কিন্তু আবহাওয়ার এমন মতিচ্ছন্ন দশারই বা কারণ কী! আলিপুরের আবহাওয়া দপ্তরের বক্তব্য, এটা যে শুধু কলকাতায়, পশ্চিমবঙ্গে বা ভারতে হচ্ছে, তা তো নয়৷ বরং সারা পৃথিবী জুড়েই আবহাওয়ার মতিগতি এখন বোঝা ভার৷ এই মরশুমেই যেমন শীত আসি আসি করেও আসতে পারছিল না, তার কারণ, প্রথমবার উত্তুরে হাওয়ার পথ আটকেছিল অসময়ে বইতে থাকা গরম দখিন হাওয়া৷ আর তার পরের বার পূব দিক থেকে বাতাস বইতে শুরু করায় শীতের হিমেল হাওয়া আটকে গিয়েছিল৷এছাড়া বঙ্গোপসাগরে হঠাৎ হঠাৎ ঘনিয়ে ওঠা নিম্নচাপ তো আছেই৷ এবং আবহাওয়া দপ্তরের আশঙ্কা, বসন্তের আয়ু উপমহাদেশের এই অঞ্চলে প্রতিবছরই যেভাবে কমছে, শীতের পর বেমক্কা গরম পড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা এবারও বেশ প্রবল৷

সুতরাং সাবধান থাকতে হবে, বলছেন ডাক্তারবাবুরা৷ এমনিতেই মরশুম বদল হওয়ার সময় অনেকেই, বিশেষ করে ঠান্ডা-গরমে চট করে সর্দি-কাশি হয়ে যাওয়ার ধাত যাঁদের, তাঁরা সাবধান থাকেন৷ এই মতিচ্ছন্ন আবহাওয়ার দিকে খেয়াল রেখে তাঁদেরকে আরও বেশি সতর্ক থাকতে হবে, বলছেন ডা. অজিত ব্যানার্জি৷ জামা-কাপড় থেকে শুরু করে খাদাভ্যাস, সবকিছুই প্রয়োজনে বদলে ফেলতে হবে আবহাওয়ার তারতম্য অনুযায়ী৷ তবে এটাও উদ্বেগের বিষয় যে ভাইরাস সংক্রমণ সবসময় জানা উৎস থেকে হয় না, স্বীকার করছেন ডা. ব্যানার্জি৷ তবে তাঁর ভরসা রয়েছে চিকিৎসা বিজ্ঞানের নিত্যনতুন অগ্রগতির ওপর৷ বললেন, ভাইরাসের কাছে অত সহজে হার স্বীকার করতে রাজি নন চিকিৎসকেরা৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ