1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

মতুয়ারা কি এবার ভোট দিতে পারবেন?

১১ ডিসেম্বর ২০২৫

ভোটার তালিকার বিশেষ নিবিড় সংশোধনের পর্ব শেষে মতুয়ারা ভোট দিতে পারবেন কি না, তা নিয়ে অনিশ্চয়তা কাটেনি। সুপ্রিম কোর্ট কি তাদের স্বস্তি দিল?

বিএলও-রা ভোটার তালিকার নিবিড় সংশোধনের কাজ করছেন পশ্চিমবঙ্গে। তারা বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভোটদাতাদের সঙ্গে কথা বলছেন।
পশ্চিমবঙ্গে ভোটার তালিকার নিবিড় সংশোধনের কাজ চলছে। সংশোদিত তালিকায় কি মতুয়াদের নাম থাকবে?ছবি: Prabhakar Mani Tewari/DW

পশ্চিমবঙ্গ-সহ ভিন্ন রাজ্যে চলছে ভোটার তালিকার নিবিড় সংশোধন। এই রাজ্যে বসবাসকারী বিপুল সংখ্যক মতুয়া জনগোষ্ঠীর ভোটাধিকারে প্রশ্নচিহ্ন পড়েছে। এই সংক্রান্ত মামলার শুনানি চলছে সুপ্রিম কোর্টে।

শীর্ষ আদালতে মামলা

সুপ্রিম কোর্টের পর্যবেক্ষণ অনুযায়ী, নাগরিকত্ব নিশ্চিত না হলে ভোটাধিকার পাওয়া যাবে না। সিএএ-তে নাগরিকত্বের আবেদন করা মতুয়া-সহ বাংলার বহু আবেদনকারীর ভোটাধিকার এখন অনিশ্চিত। 

নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন অনুযায়ী যোগ্য হলেও যাদের আবেদন এখনও বিবেচনায় রয়েছে, তাদের ভোটদানের সুযোগ দিতে স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা আত্মদীপ শীর্ষ আদালতে আবেদন করেছিল। এসআইআরের পরে প্রকাশিত সংশোধিত ভোটার তালিকায় তাদের নাম অন্তর্ভুক্ত করারও অনুরোধ জানানো হয়। নাগরিকত্ব যাচাইয়ের প্রক্রিয়া দ্রুত শেষ করার জন্য কেন্দ্রকে নির্দেশ দেয়ারও আর্জি ছিল সংস্থাটির।

আত্মদীপের পক্ষে আইনজীবী করুণা নন্দী সওয়াল করলেও আদালত ভোটাধিকার নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে নির্দেশ দিতে রাজি হয়নি। প্রধান বিচারপতি সূর্যকান্ত ও বিচারপতি জয়মাল্য বাগচীর বেঞ্চ জানিয়ে দেয়, নাগরিকত্ব মঞ্জুর হওয়ার আগে ভোটাধিকার সম্ভব নয়। আবেদন বিচারাধীন থাকা মানেই আবেদনকারী এখনো ভারতীয় নাগরিক নন। ফলে ভোটার তালিকায় তাদের নাম ওঠার প্রশ্নই নেই।

জাতীয় নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকেও জানানো হয়, নাগরিকত্ব নিয়ে সন্দেহ থাকলে কেউই ভোটার তালিকায় থাকতে পারেন না। কমিশনের আইনজীবী রাকেশ দ্বিবেদী বলেন, নাগরিকত্ব নির্ধারণে নির্বাচন কমিশনের কোনও ভূমিকা নেই। সিদ্ধান্ত নেবে কেন্দ্রীয় সরকার। কেন্দ্রকে এক সপ্তাহের মধ্যে মত জানাতে নোটিস দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। আগামী সপ্তাহেই শুনানি হবে। 
এই পরিস্থিতিতে কেন্দ্র যদি দ্রুত নাগরিকত্ব প্রদান প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে এবং তা ফেব্রুয়ারির মধ্যেই শেষ হয়, তবে আবেদনকারী নাগরিকত্ব পাওয়ার পরে ভোট দিতে পারবেন। তবে তার জন্য নাগরিকত্ব নিশ্চিত হওয়াই প্রধান শর্ত।

কত নাম বাদের আশঙ্কা

তফসিলি জাতি-উপজাতি ও মতুয়া মিলিয়ে রাজ্যের প্রায় ৩০–৪০ লক্ষ মানুষের নাম ভোটার তালিকা থেকে বাদ পড়তে পারে বলে আশঙ্কা করেছে শিডিউল কাস্ট ফেডারেশন, মতুয়া ধর্ম মহাসংঘ। তাদের দাবি, দেশভাগের সময়ে ও পরে উৎপীড়নের কারণে ওপার বাংলা থেকে আসা বহু মানুষের কাছে বৈধ নথি নেই। সেই নথি ছাড়া এসআইআরের ফর্ম জমা দেয়া সম্ভব নয়। ফলে বিপুল সংখ্যক মানুষের ভোটাধিকার সংকটে পড়তে পারে।

সংগঠনের সভাপতি মৃত্যুঞ্জয় মল্লিক সাংবাদিক বৈঠকে জানিয়েছেন, ২০০২ থেকে ২০২৫ পর্যন্ত যারা ভোট দিয়ে সরকার গঠন করেছেন, তাদের ভোট সুরক্ষিত রাখতে হবে। পরিবারের অন্য সদস্যের নাম তালিকায় থাকলেও সেই ভোটারকে অযোগ্য চিহ্নিত করা উচিত নয়। নির্বাচন কমিশনের দাবি মতো ১২টি নথি অনেকেরই নেই। নদী ভাঙন-সহ নানা কারণে বহু মানুষ নথিপত্র হারিয়েছেন। তাদের বক্তব্য, শরণার্থীদের মধ্যে অনেককে মাওবাদী এলাকা বা অন্য রাজ্যে পুনর্বাসন দেওয়া হয়েছিল। তাদের অনেকেরই নথি অসম্পূর্ণ।

নাগরিকত্ব নিয়ে চূড়ান্ত সংশয়ে মতুয়ারা

09:05

This browser does not support the video element.

মতুয়াদের নিয়ে রাজনীতি

সাম্প্রতিক অতীতের একাধিক নির্বাচনে মতুয়াদের সমর্থন বিজেপির পক্ষে গিয়েছে বলে ভোট বিশ্লেষকদের মত। বিভিন্ন এলাকায় মতুয়াদের উপস্থিতি ও ভোটের ফল বিশ্লেষণ করে অনেকে এই সিদ্ধান্তে পৌঁছেছেন।

২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচন থেকে বিজেপির দিকে ঝুঁকে পড়েন মতুয়ারা। ফলাফল বিশ্লেষণ করলে এটাই উঠে আসে। মতুয়াপ্রধান লোকসভা কেন্দ্র উত্তর ২৪ পরগনার বনগাঁ ও নদিয়ার রানাঘাটে বড় ব্যবধানে জিতেছিল বিজেপি। বনগাঁয় শান্তনু ঠাকুর জেতেন এক লক্ষের বেশি ভোটে। রানাঘাটে জগন্নাথ সরকারের জয়ের ব্যবধান ছিল দু’লক্ষেরও বেশি। 

বিধানসভা নির্বাচনে বনগাঁ ও রানাঘাট লোকসভার অধীন ১৪টি বিধানসভা কেন্দ্রে মতুয়া ভোট নির্ণায়ক। এ ছাড়াও উত্তর ২৪ পরগনার অশোকনগর, হাবরা, সন্দেশখালি, পূর্ব বর্ধমানের জামালপুর, কালনা, রায়নাতেও এই জনগোষ্ঠীর মানুষরাই ফলাফল ঠিক করে দেন। রাজ্যে এমন আসন সংখ্যা কমবেশি ৩০। সীমিত হলেও উত্তরবঙ্গের কয়েকটি আসনে মতুয়াদের প্রভাব আছে।

তাই মতুয়াদের মন পেতে প্রধান দুই শিবিরের চেষ্টার অন্ত নেই। ইতিমধ্যে এসআইআর নিয়ে তৃণমূল সাংসদ মমতাবালা ঠাকুর আমরণ অনশন কর্মসূচিতে নেতৃত্ব দিয়েছেন। ঠাকুরবাড়ির আর এক সন্তান, বিজেপি নেতা ও কেন্দ্রীয় মন্ত্রী শান্তনু ঠাকুরের অভিযোগ, এটি ভোটব্যাঙ্কের রাজনীতি এবং অনশন মঞ্চে প্রকৃত মতুয়া নয়, অন্য সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিরা বেশি সংখ্যায় উপস্থিত ছিলেন। এই মঞ্চে দেখা গিয়েছে কংগ্রেস নেতা অধীর চৌধুরীকেও।

চলতি নিবিড় সংশোধনের প্রক্রিয়াকে জোরালো সমর্থন জানিয়েছে বিজেপি। কিন্তু এই প্রক্রিয়ায় যদি মতুয়ারা ভোটদানে বঞ্চিত হয়, তাহলে বিজেপি চাপে পড়তে পারে বলে অনেক পর্যবেক্ষকের মত।

সাংবাদিক সুমন ভট্টাচার্য ডিডাব্লিউকে বলেন, " মতুয়ারা কোনোমতেই ভোট দিতে পারবেন না। এবার মতুয়ারা যদি সিএএ ফর্মে অ্যাপ্লাই করেন, তাহলে ওরা মুক্ত থাকবেন নাকি অসমের মতো ওদের বিজেপি জেলে ভরবে, সেটা আমরা এখনো জানি না। এটা পরিষ্কার হয়ে গেল যে, মতুয়াদের নিয়ে বিজেপি যা যা বলেছে এখন অবধি, সেটা সম্পূর্ণ ভুল। যদি কেউ সিএএ ফর্মের প্রথম ধারাটা দেখেন, সেখানে লেখা আছে যে "আমি নিজেকে অবৈধ বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারী হিসেবে ঘোষণা করছি"। এই ঘোষণা করে দেওয়ার পরে, কেন্দ্রের বর্তমান সরকার আমাকে জেলে পাঠাবে, না বাইরে রাখবে, এর কোনো নিশ্চয়তা নেই। অন্তত অসমের অভিজ্ঞতা থেকে নেই। এটা মতুয়াদের সঙ্গে এক ধরনের প্রতারণা।"

বিজেপি নেতা, রাজনৈতিক বিশ্লেষক বিমলশঙ্কর নন্দ ডিডাব্লিউকে বলেন, "দীর্ঘদিন ধরে মতুয়ারা দাবি করেছিল, ওদের বৈধ নাগরিকত্ব দিতে হবে। এ দেশে আসা এবং নাগরিক হয়ে ভোটার লিস্টে নাম তোলা বৈধ নাগরিকত্ব নয়। বৈধ নাগরিকত্ব তখনই হয়, যখন আইনগত প্রক্রিয়ার মাধ্যমে তাকে নাগরিক হতে হয়। মতুয়ারা দীর্ঘদিন ধরে এই দাবি করে আসছিলেন। সেটা নিয়ে বড়মা বীণাপাণি দেবী একবার ধর্মতলায় বড় সভাও ডেকেছিলেন। সব রাজনৈতিক দল গিয়ে তাকে কথা দিয়ে এসেছিল যে, নাগরিকত্বের জন্য সবাই চেষ্টা করবে। কোনো রাজনৈতিক দল কথা রাখেনি, বিজেপি কথা রেখেছে।’ 

নাগরিকত্বের পরে ভোট?

১৯৫৫-র নাগরিকত্ব আইনে সংশোধন আনা হয়েছে ২০১৯ সালে। সেই অনুযায়ী ২০১৪-র ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে ভারতে যে হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান, জৈন, ইত্যাদি অ-মুসলিম ধর্মের মানুষ ভারতে এসেছিলেন, তাদের প্রত্যেককে নাগরিকত্ব দেওয়া হবে। সেই প্রক্রিয়া চললেও আবেদনকারীরা কি ভোটাধিকার পাবেন, এ প্রশ্ন উঠছে।

সুমনের মতে, "তর্কের খাতিরে ধরে নেওয়া যাক, ভোটাধিকার নিয়ে পরে চর্চা হবে, আপাতত মতুয়ারা সিএএ পাবে। ধরে নেওয়া যাক, অবনীচন্দ্র দাস কলকাতা থেকে সিএএ–তে অ্যাপ্লাই করলেন, তার ছেলে গুয়াহাটিতে একটা চাকরি পেলেন। হিমন্ত বিশ্ব শর্মা কি কোনো বাংলাদেশ থেকে ঢুকে আসা হিন্দু উদ্বাস্তুকে নাগরিক হিসেবে স্বীকার করবেন? অসম তো বলেই দিয়েছে তারা সিএএ মানে না। সেই বাঙালিকে তো কোথাও যেতে হবে। যাবেন কোথায়? অন্য রাজ্যে গিয়ে যদি গ্রেপ্তার হয়ে যান, তার দায়িত্ব কে নেবে? অসমের অভিজ্ঞতা এটাই। মেঘালয়, অরুণাচলের মুখ্যমন্ত্রীও বলে দিয়েছেন সিএএ মানবেন না।"

সুমনের বক্তব্যের বিরোধিতা করে বিমলশঙ্কর বলেন, "সিএএ আবেদনের ফর্মে অবৈধ শব্দটা দেখিনি। বাংলাদেশ থেকে আসা মানুষদের ক্ষেত্রে এটা প্রযোজ্য। সেখানে অবৈধ শব্দ নেই। পশ্চিমবঙ্গের শাসক দল ভুল বোঝানোয় এ নিয়ে অনেকে ভুল বুঝেছিলেন, তারা কেউ কেউ হয়তো সিএএ–তে আবেদন জানাননি। পরবর্তীকালে তারা বুঝতে পেরেছেন যে কাজটা ভুল হয়ে গিয়েছে, শাসক দল তাদের ভালো চায় না, ভালো করতে চায় না। তারা চায় ওদের চিরদিনের জন্য একটা ভয়ে রেখে ভোট ব্যাঙ্ক হিসেবে ব্যবহার করতে।"

সুমনের বক্তব্য, ‘ছ’বছর আগে সিএএ কার্যকর হয়েছে। এখনো অবধি মাত্র আটজন এই আইন অনুযায়ী ভারতের নাগরিকত্ব পেয়েছেন। আরটিআই করে এটাই জানা গিয়েছে। তাহলে কতজন ভারতের নাগরিকত্ব পাচ্ছেন সিএএ আইনে? এটা তো কেন্দ্রীয় সরকারকে বলতে হবে। মতুয়াদের সিদ্ধান্ত নিতে হবে যে তারা কাকে ভোট দেবে। অন্তত বিজেপিকে ভোট দেওয়া উচিত নয়, এটা পরিষ্কার। ভুলে যাবেন না যে, শান্তনু ঠাকুরের দেওয়া পরিচয়পত্র নিয়ে যারা মহারাষ্ট্রে গিয়েছিলেন, তারা সে রাজ্যের জেলে আছেন। শান্তনু সপরিবার লন্ডন বেড়াচ্ছেন।"

বিমলশঙ্করের মতে, "নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনের মাধ্যমে তারা এখন একে একে নাগরিকত্ব অর্জন করছেন। অসংখ্য কেন্দ্র তৈরি করা হয়েছে যার মাধ্যমে তারা আবেদন করতে পারছেন। এবং অতি দ্রুত তারা সিটিজেনশিপ সার্টিফিকেট পেয়েও যাচ্ছেন। যদি তাই, মানে, তাদের ভয় পাওয়ার কোন কারণ নেই। তারা অবশ্যই ভোট দিতে পারবেন এবং সেইটা দেখিয়ে ভোটার লিস্টে নাম তুলতে পারবেন। চলতি প্রক্রিয়ায় তাদেরই সমস্যা হবে, যাদের নাম ২০০২ সালের ভোটার তালিকায় ছিল না। তারা নাম তুলতে গেলে ফর্ম ফিল আপ করবেন। কাউকে যদি ডাকে, তখন তারা সিটিজেনশিপ সার্টিফিকেট দেখাবেন। তারপরে ভোটার তালিকায় নাম উঠবে। সুতরাং, নিজেকে অবৈধ ঘোষণা করার প্রশ্নটাই বা আসছে কোথায়? পশ্চিমবঙ্গের শাসক দল এখনো কেন মিথ্যাচার করে যাচ্ছে?"

লাভ কি তৃণমূলের

রাজনৈতিক বিশ্লেষক, অধ্যাপক রবীন্দ্রনাথ ভট্টাচার্যের মন্তব্য, "মতুয়াদের যদি আগে থেকে ভোটার তালিকায় নাম না থাকে, তাহলে তাদের প্রমাণ করতে হবে যে তারা এ দেশের নাগরিক। সেটা প্রমাণ করতে গেলে সিএএ-র অধীনে তাদের আবেদন করতে হবে। এক্ষেত্রে সুপ্রিম কোর্ট সঠিক কথা বলেছে, কেস-টু-কেস দেখতে হবে। অর্থাৎ একজনকে নাগরিকত্ব দিয়ে দিলাম প্রভিশনাল, এরকম তো হয় না। নাগরিকত্ব প্রভিশনাল হয় না। নাগরিকত্ব যাচাই করতে হবে। আবেদনকারী কতদিন ভারতে আছেন, তিনি আদৌ বাংলাদেশ থেকে এসেছেন কিনা, অন্য কোন জায়গা থেকে এসেছেন, কবে এসেছেন —এগুলো খতিয়ে না দেখে সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনের অধীনে একজনকে প্রভিশনাল নাগরিকত্ব দেওয়া যায় না। তাহলে নাগরিকত্ব নির্ধারণ করবার জন্য প্রত্যেকটা ইউনিক কেসে একটা শুনানি করতে হবে। সেটা চূড়ান্ত হতে যে সময় লাগবে, তার মধ্যে ভোট হয়ে যাওয়ার কথা। অন্তত ভোটার তালিকা চূড়ান্ত হয়ে যাওয়ার কথা। ফলে সন্দেহের জায়গা থেকেই যাচ্ছে।"

তিনি বলেন, "একসঙ্গে বসলাম আর ৫০ হাজার লোকের একটা শুনানি নিয়ে তাদের প্রত্যেককে নাগরিকত্ব দিলাম, এটা তো হতে পারে না। সুতরাং সুপ্রিম কোর্ট যেটা বলেছে, সেটা ঠিক কথা— কেস বাই কেস ভেরিফিকেশন করতে হবে, শুনানি করতে হবে, তারপর স্থির করতে হবে। প্রভিশনাল নাগরিকত্ব নয়, স্থায়ী নাগরিকত্ব দিলে তবেই একমাত্র কেউ ভোটাধিকার পাবেন। কেন্দ্রীয় সরকারের সিটিজেনশিপ ডিপার্টমেন্ট, হোম ডিপার্টমেন্টের একটা বিরাট বেঞ্চ বসিয়ে শুনানি যদি করিয়ে নিতে পারে, তাহলে হতে পারে। আর যদি সেটা না করতে পারে, তাহলে ১৬ ফেব্রুয়ারি চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ করার আগে, এই দুই মাসের মধ্যে কী করে হবে, এটা বুঝতেই পারছি না।"

এই নাগরিকত্ব, ভোটাধিকার নিয়ে তৃণমূল-বিজেপি যে লড়াই করছে, তাতে আখেরে ফায়দা কার হবে?

​অধ্যাপক ভট্টাচার্য ব্যাখ্যা করেন, "আখেরে ফায়দা হবে তৃণমূলের। কারণ মতুয়াগড়টা অনেকটাই বিজেপির হাতে চলে গেছে। সেই জায়গাতে দাঁড়িয়ে তৃণমূল এবার বোঝাতে সক্ষম হবে যে এসআইআর করা, মতুয়াদের বারবার করে সিএএ-র অধীনে নাগরিকত্বের জন্য আবেদন করতে বলা, এর মধ্যে আসলে অভিসন্ধি হচ্ছে এদের বাদ দেওয়ার। এই বিষয়টা নিয়ে বহুদিন আগে থেকেই বিজেপির সতর্ক হওয়া উচিত ছিল। কেন্দ্রীয় সরকারকে তাদের বলা উচিত ছিল যে, এখানে তাদের যে গড়, সেইখানে যারা এখনো নাগরিকত্ব পাননি, তাদের কোনোভাবে নাগরিকত্ব দেওয়ার ব্যবস্থা করা। সেটা যখন করেনি, তখন লাভ তো আখেরে তৃণমূলের হবে।"

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ