শাল্লায় সংখ্যালঘুদের বাড়িতে হামলাও বুঝিয়ে দিলো ‘মত প্রকাশের স্বাধীনতা' একটি ‘ঋতুভিত্তিক' পছন্দনীয় দাবি এবং এ দাবি অনেক ক্ষেত্রেই নিভৃতে কাঁদে৷
বিজ্ঞাপন
তবে অনেকে নিজের প্রয়োজনে এ দাবিতে সোচ্চার হয়ে অন্যের বেলায় তা বেমালুম ভুলে গেলেও দাবিটির গুরুত্ব চিরকাল থাকবে৷
শাল্লায় মত প্রকাশের স্বাধীনতার দাবি শুধু নিভৃতে কাঁদেনি, প্রথমে বৃহত্তর স্বার্থে স্বেচ্ছাবন্দিত্ব বরণ করেছে, তারপর আগুনে পুড়েছে, রাম দার কোপও খেয়েছে৷ এক যুবক একটি স্ট্যাটাস দিয়েছিলেন, সেই স্ট্যাটাসে বিক্ষুব্ধ হয়ে শত শত মানুষ আগের রাতেই হামলা চালাতে গিয়েছিল৷ সুনামগঞ্জের সেই গ্রামের সংখ্যালঘুরা স্ট্যাটাসদাতার পক্ষ থেকে ক্ষমা চেয়ে, বুঝিয়েসুঝিয়ে হামলায় উদ্যত মানুষদের ফেরত পাঠিয়েছিলেন৷ তখন গ্রামবাসীর পক্ষ থেকে কথা দেয়া হয়েছিল যে, স্ট্যাটাস দেয়া যুবককে পুলিশের হাতে তুলে দেয়া হবে৷
যুবকটিকে পুলিশের হাতে তুলে দেয়া হয় সেই রাতেই৷
সংবাদ মাধ্যমের খবর অনুযায়ী, তখনও তার বিরুদ্ধে কোনো মামলা হয়নি৷ কেউ থানায় গিয়ে অভিযোগও জানায়নি৷ তবু একজনের একটি মত প্রকাশের ‘অপরাধে’ শত মানুষের ‘শাস্তি’ এড়াতে, মাইকে ঘোষণা দিয়ে হামলা চালাতে যাওয়া মানুষগুলোর হাত থেকে নিজেদের বাঁচাতে গ্রামবাসী সেই রাতেই যুবকটিকে থানায় পৌঁছে দিয়েছিল৷ নিষ্ক্রিয় পুলিশ যুবকটিকে গ্রেপ্তারও করেছিল৷
কিন্তু এত করেও লাভ হয়নি৷ পরের দিন ঠিকই হামলা হয়েছে সংখ্যালঘুদের গ্রামে৷ যার স্ট্যাটাসে ক্ষুব্ধ হওয়ার কথা বলে রাতে হামলার চেষ্টা হয়েছিল, তাকে পুলিশের হাতে তুলে দিয়েও প্রাণ আর সামান্য মান ছাড়া বলতে গেলে কিছুই রক্ষা করতে পারেনি সংখ্যালঘুরা৷ রাত পোহাতেই লাঠিসোঠা, রামদা নিয়ে ছুটে গিয়ে কিছু মানুষ ভীত-সন্ত্রস্ত ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের বাড়ি-ঘরে লাঠি, রামদা আর লুটপাট চালিয়েছে৷ আর আমরা দেখেছি বাংলাদেশে গ্রেপ্তার হতে, এমনকি হামলার শিকার হতেও প্রধানমন্ত্রী বা সরকারি দলের কোনো নেতার বিরুদ্ধে স্ট্যাটাস না দিলেও চলে৷
ফেসবুক যখন সহিংসতার উৎস
বাংলাদেশে মাঝেমাঝেই ফেসবুক পোস্টকে কেন্দ্র করে সহিংসতা এবং প্রাণহানির ঘটনা ঘটছে৷ কখনো কখনো রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে কুৎসা রটাতেও পরিকল্পিতভাবে ব্যবহৃত হচ্ছে এই মাধ্যম৷ ছবিঘরে থাকছে সেরকম কয়েকটি ঘটনার কথা৷
ছবি: bdnews24.com
ফেসবুক বার্তার জেরে তাণ্ডব
ফেসবুকে ইসলাম ধর্ম এবং মহানবীকে নিয়ে কথিত কটূক্তির জের ধরে বাংলাদেশে একাধিকবার সহিংস পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে৷ ভোলার বোরহানউদ্দিন উপজেলায় এক হিন্দু যুবকের ফেসবুক ম্যাসেজের জের ধরে ২০১৯ সালের ২০ অক্টোবর সৃষ্ট তাণ্ডবে পুলিশের গুলিতে প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত চারজন৷ সেই যুবক আগেই থানায় তার ফেসবুক একাউন্ট হ্যাক হওয়ার কথা জানিয়ে থানায় জিডি করেছিলেন৷ পুলিশও জানিয়েছে, সেই যুবকের একাউন্টটি হ্যাকড হয়েছিল৷
ছবি: bdnews24
ফেসবুকে সমালোচনা, পিটিয়ে হত্যা
ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের কিছু চুক্তির সমালোচনা করে ফেসবুকে একটি পোস্ট দিয়েছিলেন বুয়েটের শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদ৷ আর তাতেই ছাত্রলীগের বুয়েট শাখার কয়েক সদস্য ২০১৯ সালের সাত অক্টোবর তাকে পিটিয়ে হত্যা করে৷ আবরার হত্যাকাণ্ডের পর উত্তপ্ত হয়ে ওঠে বুয়েট৷ ইতোমধ্যে অবশ্য আসামীদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে এবং সেখানে ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধ করা হয়েছে৷
ছবি: Reuters/M. Ponir Hossain
পদ্মা ‘সেতুর জন্য মাথার’ গুজব
২০১৯ সালের জুন-জুলাই মাসের দিকে ‘পদ্মা সেতুতে মানুষের মাথা লাগবে’ বলে এক গুজব ফেসবুকের মাধ্যমে সারাদেশে ছড়িয়ে পড়ে৷ সেসময় ছেলেধরা সন্দেহে কয়েকজনকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনা ঘটেছে৷
ছবি: bdnews24.com
খালেদাকে নিয়ে গুজব, নিষিদ্ধ ফেসবুক একাউন্ট
বাংলাদেশের সর্বশেষ জাতীয় নির্বাচনের আগে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে নিয়ে একাধিক ভুয়া খবর ফেসবুকের মাধ্যমে ব্যাপক আকারে ছড়ানোর চেষ্টা করা হয়েছিল৷ নিজস্ব তদন্তের ভিত্তিতে ফেসবুক সেসব খবরের প্রচার রোধে একাধিক একাউন্ট এবং পাতা নিষিদ্ধ করে৷ বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কয়েকজন এসব গুজব ছড়াচ্ছিল বলেও জানায় প্রতিষ্ঠানটি৷
ছবি: Bdnews24.com
শিক্ষার্থী ধর্ষণের গুজবে সংঘর্ষ
২০১৮ সালের আগস্ট মাসে নিরাপদ সড়কের দাবিতে স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের একপর্যায়ে ঢাকার জিগাতলায় ছাত্রলীগের সঙ্গে শিক্ষার্থীরা সংঘাতে জড়িয়ে পড়ে৷ সেসময় সেখানে শিক্ষার্থী নিহত এবং ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে বলে গুজব ছড়িয়ে পড়লে পরিস্থিতি আরো উত্তপ্ত হয়ে ওঠে৷ পরবর্তীতে অবশ্য প্রাণহানি বা গুজবের কোন সত্যতা মেলেনি৷
ছবি: Reuters/M. Ponir Hossain
রংপুরে দাঙ্গা
ইসলামের মহানবীকে নিয়ে ফেসবুকে এক হিন্দু যুবকের পোস্টকে কেন্দ্র করে রংপুরের গঙ্গাচড়ায় হিন্দু পাড়ায় হামলার ঘটনা ঘটে৷ ২০১৭ সালের দশ নভেম্বরের সেই ঘটনায় এক ব্যক্তির মৃত্যুও হয়৷
ছবি: bdnews24.com
ফেসবুকে ছবি, তাণ্ডব
এক হিন্দু যুবক ফেসবুকে উস্কানিমূলক ছবি পোস্ট করার ঘটনাকে কেন্দ্র করে ২০১৬ সালের ত্রিশ অক্টোবর ব্রাক্ষণবাড়িয়ার নাসিরনগরে তাণ্ডব চালায় একদল বিক্ষুব্ধ মুসলমান৷ সেসময় সেখানে হিন্দু সম্প্রদায়ের বাড়িঘর ও মন্দির ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে৷
ছবি: Khukon Singha
ফেসবুকে গুজব, বৌদ্ধ পল্লিতে হামলা
২০১২ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর কক্সবাজারের রামুতে ১৯টি বৌদ্ধ মন্দির ভাঙচুর করে উত্তেজিত মুসলমানরা৷ উত্তম কুমার নামের এক তরুণ ফেসবুকে ইসলাম ধর্ম অবমাননাকর পোস্ট দিয়েছেন এমন গুজবের ভিত্তিতে সেই হামলা চালানো হয়েছিল৷ তবে, পরবর্তীতে সেই তরুণের খোঁজ আর পাওয়া যায়নি৷
ছবি: AFP/Getty Images
8 ছবি1 | 8
এমন অবশ্য অতীতেও ঘটেছে৷ ভোলায় এক সংখ্যালঘু যুবকের ফেসবুক অ্যাকাউন্ট হ্যাক করে (পুলিশের তদন্তে প্রমাণিত) তার হয়ে স্ট্যাটাস দিয়ে দিকে দিকে ছড়িয়ে দেয়া, সেই যুবক থানায় হাজির হয়ে বিষয়টি জানানো এবং গ্রেপ্তার হওয়ার পরও হামলা, সংঘর্ষ এবং হতাহতের ঘটনা তো সামান্য পুরোনো!
কিন্তু মুশকিল হলো সংখ্যালঘুদের ওপর হামলার প্রতিটি ঘটনায় শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত চলে শুধু দায় এড়ানো আর নিজেদের সাধুসন্ত প্রমাণের প্রতিযোগিতা৷
এবারও তাই হচ্ছে৷ মাইকের ঘোষণা শুনেও সক্রিয় না হয়ে পুলিশ যে হামলা হতে দিয়েছে তা স্বীকার করার বিন্দুমাত্র সদিচ্ছাও তাই দেখা যায়নি৷ হামলাকারীদের অনেকেই যে হেফাজতের সমর্থক, তা স্বীকার করার সামান্যতম সৎসাহসও দেখায়নি হেফাজতে ইসলামী কর্তৃপক্ষ৷ অথচ এক যুবক হেফাজতের নেতা মামুনুল হকের বিরুদ্ধে স্ট্যাটাস দেয়ার কারণেই আগের রাতে শত শত মানুষ হামলা চালাতে গিয়েছিল৷ তাদের অনেকের মাথার ব্যাজ, মুখের স্লোগান- সবই ছিল হেফাজতের পক্ষে৷
পুলিশ হামলাকারীদের বিরুদ্ধে অভিযান, এক যুবলীগ নেতাসহ কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করলেও তাতে প্রকৃত অপরাধীদের শাস্তি নিশ্চিত হবে- এমনটি আশা করা যাচ্ছে না৷
প্রথমত, মামলা হয়েছে দুটি৷ একটির বাদি হবিবপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান বিবেকানন্দ মজুমদার বকুল৷ ৮০ জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাতপরিচয় আরো ১০০ জনকে আসামি করে মামলা করেছেন তিনি৷ অন্য মামলাটি করেছে পুলিশ৷ সেখানে ‘অজ্ঞাতপরিচয়’ দেড় হাজার জনকে আসামি করা হয়েছে৷ পুলিশের মামলাটিতে নিরপরাধ ব্যক্তিদেরও গ্রেপ্তারের আশঙ্কা অনেক বেশি৷
সংখ্যালঘুদের ওপর অতীতের সব হামলার মতো এই হামলারও বিচার না হওয়ার আশঙ্কা জাগাচ্ছে সমাজের বাদবাকিদের অধিকাংশের সাবধানী প্রতিবাদ কিংবা সুকৌশলে ঘটনাকে হাল্কা করে দেয়ার চেষ্টা৷
কয়েকজনকে গ্রেপ্তার দেখিয়েই পুলিশ বা সরকার যেমন ‘সব দায়িত্ব পালিত’- এমন বার্তা দিতে পারে না, অন্যরাও তেমনি এক যুবলীগ নেতা গ্রেপ্তার হয়েছে বলেই সব দায় শুধু যুবলীগ বা সরকারি দলের- এমন যুক্তিতে নির্মোহ, নিঃস্বার্থ সব মানুষের সমর্থন আশা করতে পারে না৷
তাতে বড় জোর নিজেদের অতি চালাক এবং জনগণকে অতি বোকা ভাবার চেষ্টা করা হয়৷
জনগণ এবং বিশ্ববাসী কিন্তু এত বোকা নয়৷
বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের সম্পত্তি দখল বা তাদের ওপর হামলায় যে সব দলেরই কম-বেশি অংশগ্রহণ থাকে, সরকারের ‘আপোষ' ছাড়া এসব যে যুগ যুগ ধরে চলতে পারে না এবং হেফাজতে যে বেশ কয়েকটি দলের নেতারাও আছেন- এসব কিন্তু অনেকেই জানেন!
সাম্প্রদায়িকতা কীভাবে দূর করা যায়?
এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে বাংলাদেশ ও পশ্চিমবঙ্গের আট নাগরিকদের সঙ্গে কথা বলেছে ডয়চে ভেলে৷ ছবিঘরে থাকছে তাঁদের কথা৷
ছবি: AFP/Getty Images
সাদেকা হালিম, অধ্যাপক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে লড়াই করতে হলে সমাজ এবং রাষ্ট্রের প্রতিটি স্তরকে ঢেলে সাজাতে হবে৷ শিক্ষা ব্যবস্থাকেও ঢেলে সাজাতে হবে৷ এছাড়া দেশের প্রতিটি মানুষকে যার যার অবস্থান থেকে একসঙ্গে কাজ করলে অসাম্প্রদায়িক কল্যাণমুখী রাষ্ট্র গড়ে তোলা সম্ভব৷ এ ব্যাপারে গণমাধ্যমেরও ভূমিকা আছে৷ আরেকটি বিষয় হলো, সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে লড়াই করতে হলে সকল ধর্মের সবাই মিলে যার যার অবস্থান থেকে একযোগে কাজ করতে হবে৷
ছবি: DW/M.M.Rahman
গোলাম কুদ্দুস, সভাপতি, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট
কোনো ধর্মই মানুষের অকল্যাণের কথা বলে না৷ পৃথিবীর সব ধর্মই মানুষের কল্যাণের কথা বলে৷ তাই সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে লড়াই করতে হলে কেউ যাতে ধর্মের অপব্যাখ্যা করে তাকে রাজনৈতিক স্বার্থে ব্যবহার করতে না পারে সেদিকে নজর দিতে হবে৷ দেশের প্রতিটি মানুষকে যদি প্রকৃত শিক্ষায় শিক্ষিত করা যায় তাহলেও দেশ থেকে সাম্প্রদায়িকতা দূর হবে৷
ছবি: DW/M.M.Rahman
আইনুন নাহার সিদ্দিকা, আইনজীবী
সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে লড়াই করতে হলে সব রকমের রাজনৈতিক উস্কানি বন্ধ করতে হবে৷ আমরা যেন এক ধর্মের মানুষ আরেক ধর্মের পেছনে কখনো না লাগি৷ সবাই সবার ধর্মকে সম্মান করি৷
ছবি: DW/M.M.Rahman
শেখ শাফায়াতুর রহমান, গ্রুপ থিয়েটার ফেডারেশন
সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে কখনো শক্তি আর অস্ত্র দিয়ে লড়াই করা যাবে না৷ আমাদেরকে আমাদের বুদ্ধি আর মেধা দিয়ে লড়াই করতে হবে৷ গ্রামে-গঞ্জে আমাদের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যকে ছড়িয়ে দিতে হবে৷
ছবি: DW/M.M.Rahman
রেখা শাহা, বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ
সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে লড়াই করতে হলে দেশের সর্বত্র সকল ধর্মের উৎসব নির্বিঘ্নে পালন করার পরিবেশ তৈরি করতে হবে৷ সবাই যেন সবার ধর্মীয় উৎসবগুলোতে অংশ নিতে পারেন, সে পরিবেশ তৈরি করতে হবে৷ এছাড়া সবাই মিলে একটি দুর্নীতি, অন্যায়, অত্যাচারমুক্ত বাংলাদেশ গড়তে পারলে সাম্প্রদায়িকতাও দেশ থেকে দূর হবে৷
ছবি: DW/M.M.Rahman
খরাজ মুখোপাধ্যায়, অভিনেতা, পশ্চিমবঙ্গ
আমাদের ইন্ডাস্ট্রিতে ৮৫ শতাংশ মেকআপ আর্টিস্টই সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের৷ কই, আমাদের তো সমস্যা হয় না! আমরা মন থেকে কোনও বিভেদে বিশ্বাস রাখি না৷ তাই নিজেদের মধ্যেও বিভেদ জন্মায় না৷ মনের অন্ধকার দূর করাটাই সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে লড়াইয়ের বড় হাতিয়ার৷
সত্যিকারের জ্ঞান মনের সংকীর্ণতা দূর করে৷ তাই শুধু ডিগ্রি দিয়ে লাভ নেই৷ জ্ঞানের আলো জ্বালাতে প্রথাগত শিক্ষার সঙ্গে প্রকৃত শিক্ষার প্রসার ঘটাতে হবে৷ সেটাই হবে আদর্শ জ্ঞাননির্ভর সমাজ৷ সেই সমাজ এমন মানুষ তৈরি করবে, যার মধ্যে উগ্রতা থাকবে না৷
ছবি: DW/P. Samanta
পতিতপাবন রায়, পিয়ারলেস, পশ্চিমবঙ্গ
ব্যক্তিগতস্তরে ধর্মীয় অনুশাসন মানতে অসুবিধে নেই৷ কিন্তু সমষ্টিগতস্তরে মানতে হবে রাষ্ট্রীয় অনুশাসন৷ দেওয়ানি বিধির অধীনে সবাইকে রাখতে হবে৷ রাজনীতির অনুপ্রবেশ রুখে সবার জন্য সমান আইন প্রণয়ন দরকার৷ তবেই রাস্তা আটকে নামাজ পড়া বা মণ্ডপ তৈরি নিয়ে দাঙ্গা হবে না বা রক্তও ঝরবে না৷