1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

‘দমন-পীড়নের শিকার হচ্ছেন বিরোধীরা’

হারুন উর রশীদ স্বপন ঢাকা
১৩ জানুয়ারি ২০১৭

বাংলাদেশে বিরোধীরা দমন-নির্যাতনের শিকার হচ্ছেন, সংকুচিত হচ্ছে মত প্রকাশের স্বাধীনতাও৷ এমনটাই দাবি আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠন ‘হিউম্যান রাইটস ওয়াচ’-এর৷ তাদের কথায়, এর পাশাপাশি বিচারবহির্ভূত হত্যা ও গুমের ঘটনাও ঘটছে৷

বাংলাদেশের মিডিয়াগুলোর ওপর দমন-পীড়ন চলছে বলে দাবি করেছে এইচআরডাব্লিউ
বাংলাদেশের মিডিয়াগুলোর ওপর দমন-পীড়ন চলছে বলে দাবি করেছে এইচআরডাব্লিউছবি: Getty Images/AFP

হিউম্যান রাইটস ওয়াচ বা এইচআরডাব্লিউ ২০১৬ সালের বিশ্ব মানবাধিকার পরিস্থিতি পর্যালোচনার ভিত্তিতে ওয়ার্ল্ড রিপোর্ট-২০১৭ নামে যে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে, তাতে বাংলাদেশের ব্যাপারে এ সমস্ত কথা বলা হয়েছে৷ সংগঠনটির ৬৮৭ পৃষ্ঠার এই প্রতিবেদনে ৯০টিরও বেশি দেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি পর্যালোচনা করা হয়৷

রিপোর্টে বলা হয়, বাংলাদেশের পুলিশ ইচ্ছে করেই বিরোধী দলের সদস্য ও সমর্থকদের পায়ে গুলি চালাচ্ছে৷ তাদের কথায় গুলিবিদ্ধদের অভিযোগ, পুলিশি হেফাজতেই তাদেরকে গুলি করা হয় এবং পুলিশ একে আত্মরক্ষামূলক বলে মিথ্যা ব্যাখ্যা দিয়ে থাকে৷ আর এ জন্যই বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর অনেক সমর্থক ও সদস্য আত্মগোপনে চলে গেছেন৷ অনেককে অপরাধের দায়ে অভিযুক্ত করা হয়েছে, আবার কেউ কেউ কারাভোগ করছেন কিংবা গুম হয়েছেন৷

২০১৬ সালে বাংলাদেশে ব্লগার, শিক্ষাবিদ, সমকামী অধিকার কর্মী, বিদেশি নাগরিক এবং ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের ওপর বেশ কিছু হামলা হয়৷ বেশিরভাগ হামলার ক্ষেত্রেই মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক জঙ্গি সংগঠন ইসলামিক স্টেট বা আইএস-এর পক্ষ থেকে দায় স্বীকার করা হলেও, বাংলাদেশ সরকার অভ্যন্তরীণ জঙ্গি গোষ্ঠীগুলিকেই এর জন্য দায়ী করে৷ শুধু তাই নয়, এদের কারও কারও সঙ্গে বিরোধী রাজনীতিবিদদের সংযোগ রয়েছে বলেও দাবি করে সরকার৷ জঙ্গি সংগঠনগুলোর সন্দেহভাজন সদস্য কিংবা সমর্থকরা বিভিন্ন কথিত বন্দুকযুদ্ধে নিহত হয়৷

প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, বাংলাদেশের নিরাপত্তা বাহিনীর বিধিবহির্ভূত গ্রেপ্তার, গুম ও বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড চালানোর দীর্ঘ ইতিহাস রয়েছে৷ লেখক, সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের নেতা এবং অ্যাক্টিভিস্টদের ওপর হামলায় সন্দেহভাজন হিসেবে নিরাপত্তা বাহিনীগুলো ২০১৬ সালের জুন মাসে প্রায় ১৫ হাজার মানুষকে গ্রেপ্তার করেছে বলেও জানানো হয় প্রতিবেদনে৷

সংবাদমাধ্যমে এক ধরনের ‘সেল্ফ সেন্সরশিপ’ চলছে

This browser does not support the audio element.

এছাড়া বাংলাদেশের মিডিয়াগুলোর ওপরও দমন-পীড়ন চলছে বলে দাবি করে এইচআরডাব্লিউ৷ বলা বাহুল্য, দু’টি শীর্ষস্থানীয় দৈনিকের সম্পাদকের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহসহ বিভিন্ন অভিযোগে মামলা হয়েছে বাংলাদেশে৷ এনজিওগুলোর কর্মকাণ্ডের ওপরও নিয়ন্ত্রণ আরোপের জন্য বিশেষ আইন পাস করা হয়েছে৷ ঐ আইনের আওতায় মত প্রকাশের স্বাধীনতার ওপর বিধিনিষেধ আরোপের জন্য ২০১৬ সালে বাংলাদেশে বেশ কয়েকটি আইন পাসের প্রস্তাব করা হয়েছে বলেও দাবি করে এইচআরডাব্লিউ৷

এই প্রতিবেদনের সঙ্গে অনেকটাই একমত প্রকাশ করেছেন বাংলাদেশের মানবাধিকার সংগঠন আইন ও সালিশ কেন্দ্র বা আসক-এর ভারপ্রাপ্ত নির্বাহী পরিচালক নূর খান৷ তিনি ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘আমরা গত সপ্তাহে দেখেছি যে, বিএনপি সমাবেশের অনুমতি পায়নি৷ কিন্তু শাসক দল এবং তার অঙ্গ সংগঠন সমাবেশের অনুমতি পেয়েছে৷ তাছাড়া সংবাদ প্রকাশের জন্য আইসিটি অ্যাক্টে মামলা হচ্ছে৷ অনলাইন এবং ইন্টারনেট ভিত্তিক সংবাদমাধ্যমও চাপের মুখে রয়েছে বাংলাদেশে৷’’

তাঁর কথায়, ‘‘আমরা দেখছি সংবাদমাধ্যমে এক ধরনের ‘সেল্ফ সেন্সরশিপ’ চলছে৷ আমার মতে, ভয়ার্ত পরিবেশের কারণেই এটা হচ্ছে বা দেশে একটি ভয়ার্ত পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে৷’’

তিনি আরো বলেন, ‘‘বাংলাদেশে হত্যা, গুম, বিচারবহির্ভূত হত্যা নেই – সেটা বলা যাবে না৷ আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে বেআইনিভাবে আটক, নির্যাতন এখনো লেগেই রয়েছে৷ আর এর প্রধান শিকার হচ্ছেন বিরোধীরা৷’’

প্রিয় পাঠক, আপনি কি এইচআরডাব্লিউর প্রতিবেদনের সঙ্গে একমত? জানান নীচে মন্তব্যের ঘরে লিখুন৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ