মদ, মিষ্টি পানীয়র উপর বেশি কর চায় বিশ্ব স্বাস্থ্যসংস্থা
৬ ডিসেম্বর ২০২৩
বিশ্বের সব দেশের সরকারের কাছে বিশ্ব স্বাস্থ্যসংস্থার আবেদন, এই কর বসালে অনেক মানুষকে বঁচানো সম্ভব হবে।
বিজ্ঞাপন
সব দেশের করের হার পরীক্ষা করার পর বিশ্ব স্বাস্থ্যসংস্থা মঙ্গলবার জানিয়েছে, এই অস্বাস্থ্যকর পানীয়র উপর করের হার খুবই কম। কিছু ইউরোপীয় দেশে ওয়াইনের উপর তো কোনো করই নেই।
কর বসালে মৃত্যুর সংখ্যা কমবে?
বিশ্ব স্বাস্থ্যসংস্থার হিসাব হলো, মদ্যপানের কারণে প্রতিবছর ২৬ লাখ মানুষ এবং অস্বাস্থ্যকর খাবার খেয়ে ৮০ লাখ মানুষ প্রতিবছর মারা যান।
বেশি কর বসালে মানুষ এই সব খাদ্য ও পানীয় খাওয়া কম করে দেবে। তাছাড়া স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়া নিয়েও প্রচার করতে হবে, মানুষকে সচেতন করতে হবে।
‘নেশামুক্ত’ হতে পারেন যেভাবে
মদ, মাদকদব্য ও নানারকম ওষুধের নেশায় অনেকে এতটাই আসক্ত যে সেই সব ছাড়া তাঁদের একটি দিনও কাটে না৷ তবে থেরাপির মাধ্যমে নেশামুক্ত হওয়া সম্ভব৷ তারই কিছু উপায় জানাচ্ছেন একজন জার্মান বিশেষজ্ঞ৷
ছবি: milkovasa/Fotolia
শুরুতে খুব ভালো লাগে বটে, তবে....
হতাশা বা কোনো কিছু ভুলে থাকা বা যে কোনো কারণেই হোক না কেন, মদ বা যে কোনো নেশাদ্রব্য প্রথম প্রথম খারাপ লাগে না৷ আর এই ভালো লাগাটাই মস্তিষ্ক অতি সাবধানে সংরক্ষণ করে রাখে৷ কিন্তু একটা সময় সংরক্ষণ করাও থেমে যায় এবং তার সঙ্গে কমে আসে ভালো লাগাটাও৷
ছবি: Fotolia/runzelkorn
জার্মানিতে নেশায় আসক্ত যাঁরা
জার্মানিতে প্রায় ২০ লাখ মানুষ মদ্যপানে আসক্ত৷ এছাড়াও আরো ১৪ লাখ মানুষ আসক্ত ডিপ্রেশন, ব্যথা কমানোর অথবা বিভান্ন ধরনের ঘুমের ওষুধে৷ এঁরা এ সব ছাড়া একটি দিনও নাকি কাটাতে পারেন না৷ এ কথা জানান জার্মানির লিন্ডোসালুস ক্লিনিক-এর আসক্তি বিভাগের প্রধান প্রফেসার ইয়োহানেস লিন্ডেনমায়ার৷
ছবি: Fotolia/lassedesignen
শুরু হয় প্রতিক্রিয়া
তখন শুরু হয় কাঁপুনি বা ঝাঁকুনির মতো কিছু সমস্যা৷ এক্ষেত্রে বিভিন্ন নেশায় আসক্ত ব্যক্তিকে কেবলমাত্র পেশাদার থেরাপিস্টই সাহায্য করতে পারেন৷
ছবি: dapd
স্বাস্থ্যবীমা কোম্পানি দায়িত্ব গ্রহণ করে
হাসপাতালের এই চিকিৎসার খরচ জার্মানিতে সাধারণত স্বাস্থ্যবীমা কোম্পানিগুলোই গ্রহণ করে থাকে৷
ছবি: Colourbox
বেশি মদ্যপান করেন যাঁরা
তবে মদ্যপানে যাঁরা বেশি আসক্ত, তাঁদের ক্ষেত্রে নিরাময় কেন্দ্র বা হাসপাতালে কিছুদিন থেকে চিকিৎসা করাই যুক্তিসঙ্গত৷ এঁদের ক্ষেত্রে অ্যালকোহল পুরোপুরি বন্ধ করে দিয়ে আলাদা ওষুধ সেবনের মাধ্যমে নেশামুক্ত হওয়া যায়৷
ছবি: Fotolia/runzelkorn
ওষুধে আসক্তদের ক্ষেত্রে বেশ কঠিন
কিন্তু যাঁরা ব্যথা, ঘুমের ওষুধ বা ডিপ্রেশনের মতো বিভিন্ন ওষুধে আসক্ত, তাঁদের ক্ষেত্রে নেশামুক্ত হতে প্রয়োজন হয় অনেক বেশি সময়ের৷ কারণ এ রকম রোগীকে ওষুধের মাধ্যমে চিকিৎসা করা সম্ভব নয় বলে জানান প্রফেসার ইয়োহানেস লিন্ডেনমায়ার৷
ছবি: picture alliance/dpa Themendienst
দূর্ভাগ্যজনক হলেও সত্যি
নেশামুক্ত হওয়ার পর কিন্তু আবারও নেশায় আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা থাকে৷ এই আশঙ্কা মদ্যপানের ক্ষেত্রে শতকরা ৫০ ভাগ আর ওষুধে আসক্তদের ক্ষেত্রে শতকরা ৬০ ভাগ৷ এর জন্য অবশ্য সচেতনতা এবং শক্ত মনোবলের প্রয়োজন সবচেয়ে বেশি৷
ছবি: picture alliance/JOKER
7 ছবি1 | 7
বিশ্ব স্বাস্থ্যসংস্থার হেলথ প্রমোশন ডিরেক্টর বলেছেন, ''অস্বাস্থ্যকর খাদ্য-পানীয়র উপর কর বসালে মানুষ স্বাস্থ্যকর খাবার খায়। এর একটা ইতিবাচক প্রভাব সমাজে পড়ে। অসুখ কম হয়। সরকারের রাজস্ব বাড়ে। তা দিয়ে মানুষকে পরিষেবা দেয়া সম্ভব হয়। অ্যালকোহলের উপর বেশি কর বসালে সহিংসতা ও রাস্তায় দুর্ঘটনার সংখ্যাও কমবে।''
বিশ্ব স্বাস্থ্যসংস্থা জানিয়েছে, ১৯৪টি দেশের মধ্যে ১০৮টি দেশ চিনি দিয়ে মিষ্টি করা পানীয়র উপর কিছু কর বসিয়েছে। কিন্তু অনেকে আবার পানীয় জলের উপরেও কর বসিয়েছে, যা তারা একেবারেই অনুমোদন করেন না।
তাদের মতে, মদের একটা ন্যূনতম দাম ঠিক করে দিতে হবে এবং কর বসাতে হবে। তাহলে মদ খাওয়া কমবে, মদের সঙ্গে জড়িত মৃত্যুর সংখ্যা কমবে, সহিংসতা ও ট্রাফিক সংক্রান্ত সমস্যা কমবে। সমীক্ষায় দেখা গেছে, যারা খুব বেশি পান করেন, তাদের সস্তা মদ খাওয়ার প্রবণতা বেশি থাকে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সহকারী ডিজি জানিয়েছেন, যত দিন যাচ্ছে, ততই মানুষের মদ কিনে খাওয়ার সামর্থ বাড়ছে। এরজন্যই কর বসানো এবং দাম নির্ধারণ করাটা খুবই জরুরি।