ফলে মধ্যপ্রাচ্যের সংকট ভারতীয় বাজারে উদ্বেগের অন্যতম কারণ হয়ে উঠেছে।
ইরানের পরমাণু কেন্দ্রে যেদিন অ্যামেরিকা বিমান হামলা চালায়, তার দেড় দিন বাদে গত সোমবার ভারতের শেয়ার বাজার ভয়ংকর ধসের মুখোমুখি হয়। সেনসেক্স ৬০০ পয়েন্ট নেমে যায়। নিফটি পৌঁছে যায় লালের ঘরে। বস্তুত, ইউক্রেন যুদ্ধের সময় থেকেই বার বার আশঙ্কার ধস দেখেছে ভারতের শেয়ার বাজার। ইসরায়েল-ইরান যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর শেয়ার বাজার ক্রমশ নীচের দিকে নামতে থেকেছে। এর মূল কারণ, পশ্চিম এশিয়া বা মধ্য প্রাচ্যের সঙ্গে ভারতের বাণিজ্য সম্পর্ক সুপ্রাচীন এবং বিপুল।
প্রথমেই কয়েকটি সংখ্যার হিসেব দেওয়া যাক। ২০২৫ অর্থবর্ষে শুধুমাত্র ইরানে ভারতের মোট রপ্তানির পরিমাণ এক দশমিক ২৪ বিলিয়ন ডলার। ওই অর্থবর্ষে ইরান থেকে ভারত আমদানি করেছে ৪৪১ দশমিক আট বিলিয়ন ডলারের পণ্য। এই আমদানির সিংহভাগই হলো তেল। অন্যদিকে, ভারত ইরানকে রপ্তানি করে বাসমতি চাল, কলা, সোয়াবিন, ডাল এবং প্রায় ২৬ মিলিয়ন ডলারের চা।
ইসরায়েলে ভারত রপ্তানি করে দুই দশমিক এক বিলিয়ন ডলারের পণ্য। অন্যদিকে ইসরায়েল থেকে ভারত আমদানি করে এক দশমিক ছয় বিলিয়ন ডলারের পণ্য।
মধ্যপ্রাচ্যের এই দুই দেশ ছাড়াও ভারতের সঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্যিক সম্পর্ক আছে ইরাক, জর্ডান, লেবানন, সিরিয়া, ইয়েমেন এবং আরব আমিরাতের সঙ্গে। এসব দেশে ভারত রপ্তানি করে প্রায় আট দশমিক ছয় বিলিয়ন ডলারের পণ্য। আমদানি করে ৩৩ দশমিক এক বিলিয়ন ডলারের পণ্য। এই অঞ্চলে ভারত বিপুল টাকার মশলা রপ্তানি করে।
মধ্যপ্রাচ্যে সংকট শুরু হওয়ার পর ভারতের এই বিশাল বাণিজ্যে নানা বাধা আসতে শুরু করেছে। খেয়াল রাখতে হবে, ইউরোপের সঙ্গে ভারতের বাণিজ্যেও মধ্যপ্রাচ্য একটি গুরুত্বপূর্ণ পথ। পাকিস্তানকে বাইপাস করে ভারত যে বাণিজ্য পথ ব্যবহার করে সেখানে ইরানের ভৌগোলিক অবস্থান অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ইরানের চাবাহার বন্দরের সঙ্গে ভারতের দীর্ঘদিনের কৌশলগত চুক্তি আছে। পাকিস্তানকে পাশ কাটিয়ে ইরানের এই পোর্টের মাধ্যমে ভারত মধ্যপ্রাচ্য এবং ইউরোপে বাণিজ্য করে।
ইসরায়েলের সঙ্গে হামাসের সংঘাত শুরু হওয়ার পর থেকেই ভারতের এই অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্য পথে নানা সমস্যা শুরু হয়েছে। হুতি বিদ্রোহীরা এই পথে আক্রমণ চালিয়েছে। ফলে ভারতের বহু জাহাজ রাস্তা বদলে আফ্রিকা ঘুরে কেপ অফ গুড হোপ প্রণালী হয়ে জিনিসপত্র আনা-নেওয়া করেছে। এবার ইরান সংলগ্ন অঞ্চলেও উত্তেজনা তৈরি হওয়ার ফলে জাহাজ যাতায়াতে সমস্যা হচ্ছে। এর সরাসরি প্রভাব ইতিমধ্যেই পড়তে শুরু করেছে ভারতের বাজারে। বিশেষজ্ঞেরা মনে করছেন, তেলের দাম লাফিয়ে বাড়তে পারে। অন্যান্য পণ্যের দামও বাড়তে শুরু করবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। উল্লেখ্য, ২০২৪-২৫ অর্থবর্ষে ভারতের সার্বিক রপ্তানি ছয় শতাংশ বেড়ে ৮২৫ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছেছিল। চলতি অর্থবর্ষে মনে করা হয়েছিল তা বেড়ে ৯০০ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছাবে। কিন্তু গত দুই মাসে দুই দশমিক এক সাত শতাংশ ক্ষতি হয়েছে। অর্থাৎ, প্রায় ৩৯ বিলিয়ন ডলারের ক্ষতি।
বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য
দীর্ঘদিন ভারত এবং মধ্যপ্রাচ্যের ট্রেড প্রোমোশনের ডিরেক্টর ছিলেন সুমিত দত্ত মজুমদার। ডয়চে ভেলেকে তিনি বলেছেন, "ভারতের সঙ্গে মধ্যপ্রাচ্যের সম্পর্ক সেই সিন্ধু সভ্যতার সময় থেকে। হরমুজ প্রণালী মধ্যপ্রাচ্য এবং ইউরোপে বাণিজ্যের ক্ষেত্রে ভারতের প্রধান দরজা বলা যেতে পারে। ফলে এই রাস্তায় সমস্যা তৈরি হলে ভারতের বাণিজ্য বিপুলভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে।" সুমিত জানিয়েছেন, এর ফলে একদিকে ভারতের রপ্তানি বাণিজ্য মার খেতে শুরু করেছে, অন্যদিকে ভারতে তেল এবং প্রাকৃতিক গ্যাসের সরবরাহে বিঘ্ন ঘটছে। এর ফলে দেশে তেলের দাম বাড়তে শুরু করতে পারে। আি জের গোটা বাজারের উপর পড়ার আশঙ্কা আছে।
মুম্বইয়ের ব্যবসায়ী এবং টেকনোক্রাফট ইন্ডাস্ট্রির চেয়ারম্যান শরদ কুমার সরফ সংবাদমাধ্যম মিন্টকে বলেছেন, ''মধ্যপ্রাচ্যের বর্তমান পরিস্থিতি ভারতের জন্য অত্যন্ত উদ্বেগের। এর দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব পড়বে ভারতের বাণিজ্যে। তেলবাহী জাহাজগুলি ইতিমধ্যেই নতুন পথে আসতে শুরু করেছে। কিছুদিনের মধ্যেই এর প্রভাব তেলের দামে পড়তে পারে।''
গ্লোবাল ট্রেড রিসার্চ ইনিশিয়েটিভ (জিটিআরআই)-র প্রধান অজয় শ্রীবাস্তব জানিয়েছেন, ''বাণিজ্য জাহাজের পথ পরিবর্তন মানে একাধিক অঙ্কের পরিবর্তন। এর ফলে পণ্য সরবরাহে সময় লাগবে বেশি। বদলে যাবে বিমার অর্থের পরিমাণ। সবচেয়ে বড় কথা সাপ্লাই চেনে নতুন নতুন সংস্থাকে যুক্ত করতে হবে। অতিরিক্ত এই অর্থের বোঝা চাপবে বাজারের উপর।'' অজয়ের মতে, ইরাক, জর্ডান, লেবানন, সিরিয়া-সহ সমগ্র পশ্চিম এশিয়ার বাণিজ্য সম্পর্ক এর ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
বস্তুত, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলের সঙ্গে হামাসের সংঘাত শুরু হওয়ার পর লোহিত সাগর দিয়ে ভারতের জাহাজ চলাচলে বিঘ্ন ঘটতে শুরু করে। দিল্লির একটি থিংক ট্যাংকের হিসেব অনুযায়ী, ইউরোপ এবং ভারতের মধ্যে বাণিজ্যের ৮০ শতাংশ এই রাস্তা দিয়ে হয়। লোহিত সাগর হয়ে ইরানের পাশ দিয়ে জাহাজ ভারতের বন্দরে পৌঁছায়। অ্যামেরিকার সঙ্গে বাণিজ্যেও ভারত এই রাস্তা ব্যবহার করে। ভারতের সার্বিক আমদানির ৩৪ শতাংশ পণ্য এই রাস্তা দিয়ে আসে। ফলে মধ্যপ্রাচ্যের সংকট না কাটলে ভারত ভয়াবহভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
যেভাবে ‘বন্ধু’ থেকে পরস্পরের ‘শত্রু’ হলো ইসরায়েল ও ইরান
মধ্যপ্রাচ্যের দুই দেশ ইসরায়েল ও ইরানের সাম্প্রতিক যুদ্ধ বৈরি সম্পর্কেরই পরিষ্কার বহিঃপ্রকাশ৷ কিন্তু দেশ দুটোর সম্পর্ক কি সবসময় এমন ছিল? জেনে নিন ছবিঘরে...
ছবি: MENAHEM KAHANA/AFP/Getty Images
ইসরায়েল রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা
১৯৪৫ সালে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শেষ হওয়ার পর ১৯৪৮ সালের ১৪ মে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে ইসরায়েল৷ নতুন রাষ্ট্রটির প্রতিবেশী হয়ে ওঠে ফিলিস্তিন ভূখণ্ড, মিশর, জর্ডান, সিরিয়া এবং লেবানন৷ বিশ্বযুদ্ধ পরবর্তী সময়ে নতুন রাষ্ট্র ইসরায়েলের বিষয়ে আরব বিশ্বের দেশগুলোর মধ্যে ছিল দ্বিধা-দ্বন্দ্ব৷ ৭ দশক পরেও অনেক আরব রাষ্ট্রের মধ্যে ইসরায়েলের বিষয়ে সেই ‘সংকট’ রয়ে গেছে৷
ছবি: Ahmad Gharabli/AFP
তখনকার ইরান
ইসরায়েল রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার সময়ে ইরানের মসনদে ছিলেন দেশটির শাহ বংশের সবশেষ শাসক মোহাম্মদ রেজা শাহ পাহলভি৷ বাবা ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ চলার সময়, ১৯৪১ সালে মাত্র ২২ বছর বয়সে ক্ষমতায় আসেন পশ্চিমা শিক্ষায় শিক্ষিত রেজা শাহ৷ সেই থেকে ইরানের ইসলামি বিপ্লব পর্যন্ত ক্ষমতায় ছিলেন তিনি৷
ছবি: PA Wire/picture alliance
ইসরায়েলকে স্বীকৃতি
মধ্যপ্রাচ্যে নতুন গঠিত সার্বভৌম রাষ্ট্র ইসলায়েলের তখন আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি প্রয়োজন৷ সেই সময়ে বন্ধুত্বের হাত বাড়িয়ে দেয় ইরান৷ মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর মধ্যে সর্বপ্রথম ইসরায়েলকে স্বীকৃতি দেয় ইরানের শাহ সরকার৷
ছবি: Juergen Schwenkenbecher/picture-alliance
বন্ধুত্বের শুরু
স্বীকৃতি প্রদানের মধ্য দিয়ে পার্সিয়ান সভ্যতার দেশ ইরান আর নতুন জন্ম নেওয়া ইসরায়েলের হাতে হাত রেখে পথচলা শুরু হয়৷ এমন সম্পর্কের মধ্যে দিয়ে দুই রাষ্ট্রই নিজ নিজ সুবিধা আদায় করে নিতে চেয়েছে৷ ইসরায়েল চেয়েছে, এই অঞ্চলে নিজেদের অবস্থান শক্তিশালী করতে আর ইরান চেয়েছে এর মধ্য দিয়ে পশ্চিমা দেশগুলোর সাথে সম্পর্কোন্নয়ন করতে৷
ছবি: Bildagentur-online/Schöning/picture alliance
পারস্পরিক সহযোগিতা
নতুন জন্ম নেওয়া ইসরায়েলের তখন জ্বালানি নিরাপত্তাও প্রয়োজন৷ তেলসমৃদ্ধ ইরান নতুন দেশটিকে জ্বালানি সরবরাহে এগিয়ে আসে৷ বিনিময়ে ইরানের নিরাপত্তাবাহিনী গঠন এবং এর আধুনিকায়নে সহযোগিতা করে ইসরায়েল৷ বলা হয়ে থাকে, রেজা শাহ পাহলভির আমলে ইরানের আর্মড ফোর্সেস তৈরিতে সহযোগিতা করে ইসরায়েল৷ তাছাড়া দুদেশের মধ্যে পারস্পরিক বাণিজ্যও বাড়তে থাকে৷
ছবি: Fars/Dehdari
ইরানে ইহুদি সম্প্রদায়
পরিসংখ্যান বলছে, এক সময় ইরানে ইসরায়েলের পর সবচেয়ে বেশি ইহুদি সম্প্রদায়ের মানুষ বসবাস করতেন৷ ইরানে ইসলামি বিপ্লবের পর এই সংখ্যা কমতে থাকে৷ তবে এখনো দেশটিতে প্রায় ২০ হাজার ইহুদি বাস করেন৷
ছবি: dapd
ইরানের ইসলামি বিপ্লব এবং সম্পর্কে ভিন্ন মোড়
১৯৭৯ সালে ইরানের বিল্পবের মাধ্যমে মোহাম্মদ রেজা শাহ পাহলভি ক্ষমতাচ্যুত হলে ইরানের দায়িত্বে আসেন আয়াতুল্লাহ রুহোল্লাহ খোমেনি৷ এরপর থেকেই ইসরায়েলের সাথে ইরানের সম্পর্ক ভিন্ন দিকে মোড় নিতে থাকে৷ ইসরায়েল রাষ্ট্রকে এই অঞ্চলের জন্য হুমকি মনে করে ইরানের নতুন নেতৃত্ব৷ এমনকি ইসরায়েলকে মুছে ফেলার হুমকিও দেয় তারা৷ সেইসাথে ফিলিস্তিন ভূখণ্ডের বিষয়ে ইসরায়েলের অবস্থানের তীব্র সমালোচনা করে ইরান৷
ছবি: FY/AP Photo/picture alliance
ইরানের প্রক্সি গ্রুপ
এরমধ্যে নিজেদের ইসরায়েলবিরোধী অবস্থান শক্তিশালী করতে থাকে ইরানের নতুন নেতৃ্ত্ব৷ অভিযোগ আছে, ইসরায়েলের প্রভাব ঠেকাতে আশির দশকের পর প্রতিবেশী দেশগুলোতে বেশকিছু জঙ্গিগোষ্ঠি তৈরি করে ইরান৷ এরমধ্যে রয়েছে লেবাননের হিজবুল্লাহ, ফিলিস্তিনের হামাস এবং ইয়েমেনে হুতি গোষ্ঠী৷ এই গোষ্ঠীগুলোকে অস্ত্র ও অর্থ সরবরাহ করে ইরান৷ এমন অভিযোগের পর ইসরাযেল-ইরান সম্পর্ক চরম অবনতির দিকে যায়৷
ছবি: AP Photo/picture alliance
ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি এবং ইসরায়েলের প্রতিক্রিয়া
১৯৬৮ সালে পারমাণবিক অস্ত্রের বিস্তার নিয়ন্ত্রণ চুক্তিতে সাক্ষর করলেও ইসলামি বিপ্লবের পর থেকে গোপনে পরমাণু সমৃদ্ধকরণের কাজ চালিয়ে যাচ্ছে বলে অভিযোগ রয়েছে৷ এই পরমাণু কর্মসূচি ইসরায়েলের অস্তিত্ব সংকটের মুখে ফেলতে পারে- এই আশঙ্কা থেকে এর বিরোধিতা করে আসছে ইসরায়েল৷ ১৩ জুন ইরানে হামলা চালানো তারই চূড়ান্ত পরিণতি৷ ইসরায়েলের দাবি, পারমাণবিক বোমা তৈরি থেকে মাত্র কয়েক সপ্তাহ দূরে অবস্থান করছে ইরান৷
ছবি: UGC/AFP
ইরানের আঞ্চলিক সহযোগীদের ওপর হামলা
দীর্ঘদিন ধরে ইরানের বিরুদ্ধে পরমাণু সমৃদ্ধকরণের কাজ চালিয়ে যাওয়ার অভিযোগে করে আসছে ইসরায়েল৷ প্রতিবেশী দেশগুলোতে থাকা জঙ্গি গোষ্ঠীগুলোকে মদদ দেওয়ার অভিযোগেও ইরানের সঙ্গে বৈরি সম্পর্ক ইসরায়েলর৷ এর প্রতিক্রিয়ায় ২০১৯ সালে সিরিয়া, লেবানন এবং ইরাকে হামলা করে ইসরায়েল৷ ইসরায়েলের দাবি জঙ্গি গোষ্ঠীগুলোর কাছে ইরানের অস্ত্র সরবরাহ বন্ধ করতে এই হামলা চালানো হয়েছে৷
ছবি: Ayal Margolinc/ JINIPIX/AP/picture alliance
সেনাপ্রধান, বিজ্ঞানী হত্যা
২০১৯ সালে ইরাক সফরকালে গুপ্ত হামলায় নিহত হন ইরানের সেইসময়ের সেনাপ্রধান কাসেম সোলাইমানি৷ এই হত্যাকাণ্ডের জন্য ইসরায়েলেকে দায়ী করে ইরান৷ ২০২২ সালে পরমাণু বিজ্ঞানী মোহসেন ফাখরিজাদেহ ছাড়াও ইরানের এক প্রকৌশলী এবং এক ভূতত্ত্ববিদ হত্যার পেছনেও ইসরায়েল দায়ী বলে ইরানের অভিযোগ৷ এসকল হত্যাকাণ্ডের কোনো কোনোটিতে নিজেদের ভূমিকার কথা পরবর্তীতে স্বীকার করে ইসরায়েল৷
ছবি: Vahid Salemi/AP Photo/picture alliance
সাগরে ছায়াযুদ্ধ
সাগরেও পরোক্ষভাবে সংঘর্ষে জড়িয়েছে ইরান এবং ইসরায়েল৷ ২০২১ সালে ভূমধ্যসাগরে ইসরায়েল উপকূল থেকে ৫০ মাইল দূরে থাকা এক ইরানি জাহাজে বিস্ফোরণ ঘটে৷ এ ঘটনার পেছনে ইসরায়েলের সম্পৃক্ততার অভিযোগ আনে ইরান৷ পরবর্তীতে ওমান উপকূল থেকে রওয়ানা দিয়ে আরব সাগরে আসা এক জাহাজে বিস্ফোরণের জন্য ইরানকে দায়ী করে ইসরায়েল৷ ২০১৯ সাল থেকেই লোহিত সাগর এবং ভূমধ্যসাগরে ইরানের তেল ও অস্ত্রবাহী জাহাজে হামলা করে আসছিল ইসরায়েল৷
ছবি: Katsumi Yamamoto/AP Photo/picture alliance
৭ অক্টোবর, ২০২৪ হামাসের হামলা
২০২৪ সালের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামাসের ভয়াবহ হামলার পেছনেও ইরানের উসকানি রয়েছে বলে অভিযোগ করে ইসরায়েল৷ এই অভিযোগ অবশ্য বরাবরাই অস্বীকার করে আসছে ইরান৷ হামাসের হামলায় ইসরায়েলে ১২শ মানুষ নিহত হওয়ার প্রতিক্রিয়ায় গাজায় অভিযান শুরু করে ইসরায়েল৷ ইসরায়েলে এই অভিযানে এখন পর্যন্ত অন্তত ৫৫ হাজারের ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন৷