1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

মধ্যপ্রাচ্য সংকটের শিকার ফিলিস্তিনি বিভক্ত পরিবারগুলি

২৫ জুলাই ২০১১

আইনি জটিলতার কারণে অনেক ফিলিস্তিনি পরিবারকে পূর্ব জেরুজালেম ও পশ্চিম তীরের মধ্যে যেকোনো একটি এলাকা বেছে নিতে হচ্ছে৷

পূর্ব জেরুজালেমে ফিলিস্তিনি বিক্ষোভছবি: AP

১৩ বছর আগে পশ্চিম তীরের হেব্রন শহরের মেয়ে সানার বিয়ে হয়৷ পাত্র পূর্ব জেরুজালেমের মহম্মদ৷ বিবাহ-বন্ধনে আবদ্ধ হওয়ার সময় তারা বাকি যেকোনো দম্পতির মতোই নিজেদের উজ্জ্বল ভবিষ্যতের স্বপ্ন দেখেছিল৷ কিন্তু মধ্যপ্রাচ্যের জটিল সংকট যে তাদের ছোট্ট সংসারে এমন কঠিন সমস্যার সৃষ্টি করবে, তারা সেটা ভাবতে পারে নি৷ প্রথম সমস্যা দেখা দিল তাদের পরিচয়পত্র নিয়ে৷ সানার রেসিডেন্স পার্মিটে লেখা আছে, সে পশ্চিম তীরের বাসিন্দা৷ মহম্মদের পার্মিটে উল্লেখ রয়েছে, সে জেরুজালেমের বাসিন্দা৷ বিয়ের পর সানাও পূর্ব জেরুজালেমে বসবাসের সাময়িক পার্মিট পেয়ে গেল৷ পশ্চিম তীরে বাপের বাড়ি যেতেও তার কোনো সমস্যা হতো না৷

পূর্ব জেরুজালেমের পথে ফিলিস্তিনি নারীছবি: AP

এরপর এল ২০০০ সালে দ্বিতীয় ফিলিস্তিনি ইন্তিফাদা বা বিপ্লব৷ ২০০৩ সালে জেরুজালেম ও পশ্চিম তীরের মধ্যে যাতায়াতের উপর নিয়ন্ত্রণ আরও বেড়ে গেল৷ ইসরায়েল পশ্চিম তীরের বাসিন্দাদের পূর্ব জেরুজালেমে পার্মিট দেওয়া কার্যত বন্ধ করে দিল৷ ফলে সানা ও মহম্মদের পরিবার পড়ল চরম বিপাকে৷ ইসরায়েলি পার্মিট ছাড়া সানা তার স্বামী ও সন্তানদের নিয়ে জেরুজালেম ত্যাগ করতে পারে না৷ অন্যদিকে মহম্মদ যদি পশ্চিম তীরে বসবাস শুরু করে, তাহলে জেরুজালেমে তার জন্মভিটের সঙ্গে সব সম্পর্ক ছিন্ন করতে হবে৷ রাজনীতির জটিল প্যাঁচে এভাবেই অনেক ফিলিস্তিনি পরিবার বেশ কিছু কঠিন সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হচ্ছে৷ যাই হোক, এই অবস্থায় ২০০৫ সালে জেরুজালেমে সানার রেসিডেন্স পার্মিটের মেয়াদ শেষ হয়ে গেল৷ তার হাতে তুলে দেওয়া হল শহর ছেড়ে চলে যাবার সরকারি অর্ডার৷ কিছুদিনের জন্য শহর ছেড়ে চলে গেলেও বাস্তব ঝুঁকি উপেক্ষা করে সানা গোপনে স্বামীর বাড়িতে ফিরে সন্তানদের নিয়ে বে-আইনি ভাবে জেরুজালেমেই বসবাস করতে লাগলো৷ আজ তার বয়স ৩১৷ কিন্তু আতঙ্ক তার পেছন ছাড়ে নি৷ কারণ সানা বিলক্ষণ জানে, বিষয়টা জানাজানি হয়ে গেলেই যে কোনো মুহূর্তে তাকে শহর থেকে তাড়িয়ে দেওয়া হতে পারে৷ হয়তো সন্তানদের থেকেও চিরকালের জন্য বিচ্ছিন্ন হয়ে যেতে হবে তাকে৷ ফলে সানা বাড়ি ছেড়ে একেবারেই পথে বেরোয় না বললে চলে৷ একমাত্র ডাক্তার বা সন্তানদের শিক্ষকদের সঙ্গে দেখা করতে হলে তখনই সানা বাধ্য হয়ে বাড়ি থেকে বোরোয়৷ পুলিশ বা সৈন্যদের দেখলে ভয়ে বুক কেঁপে ওঠে সানার৷ সেইসঙ্গে মনে আশঙ্কা রয়ে গেছে যে কখনো পুলিশ তাদের এলাকায় তল্লাশি চালালে ও সবার পরিচয়পত্র দেখতে চাইলে সানা ধরা পড়ে যাবে৷

হেব্রন শহরে ফিলিস্তিনি চেকপয়েন্টছবি: DW

সানা একা নয়৷ অনেক ফিলিস্তিনি বাধ্য হয়ে এমন আতঙ্কের সঙ্গে দিন কাটাচ্ছে৷ ‘আদালাহ' নামের এক আরব-ইসরায়েলি সংস্থা তাদের নাগরিক অধিকারের জন্য লড়াই করছে৷ তারা ইসরায়েলের আদালতেরও দ্বারস্থ হয়েছে৷ বিভক্ত পরিবারের সদস্যদের একত্র করতে তারা সমাজের সব স্তরের সমর্থনের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে৷

প্রতিবেদন: সঞ্জীব বর্মন

সম্পাদনা: আব্দুল্লাহ আল ফারূক

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ