অনশন উঠছে না জুনিয়র চিকিৎসকদের। মধ্যরাত পর্যন্ত মুখ্যসচিবের সঙ্গে বৈঠক হয় আন্দোলনকারীদের। কিন্তু সমাধানসূত্র মেলেনি।
বিজ্ঞাপন
একের পর এক নাটকীয় ঘটনার সাক্ষী থাকল ষষ্ঠীর কলকাতা। বুধবার দুপুরে আন্দোলনকারীদের মিছিল আটকালো পুলিশ। প্যান্ডেলে উঠল 'উই ওয়ান্ট জাস্টিস' স্লোগান। যার পরিপ্রেক্ষিতে ত্রিধারা সম্মিলনীর মণ্ডপ থেকে আন্দোলনকারীদের আটক করল পুলিশ। তার প্রতিবাদে ঘেরাও করা হলো লালবাজার। অন্যদিকে, আন্দোলনকারীদের হঠাৎই ইমেল করে বৈঠকে ডাকলেন মুখ্যসচিব। মধ্যরাত পর্যন্ত বৈঠক হলো স্বাস্থ্যভবনে কিন্তু সমাধানসূত্র মিলল না। চুম্বকে এই হলো ষষ্ঠীর কলকাতার ছবি।
বুধবার সন্ধে সাড়ে ছটা নাগাদ মুখ্যসচিব ইমেল করে আন্দোলনকারী জুনিয়র ডাক্তারদের বৈঠকে আহ্বান জানান। স্বাস্থ্যভবনে পৌনে আটার সময় তাদের বৈঠকে ডাকা হয়। এর কিছুক্ষণের মধ্যেই ধর্মতলায় অনশন মঞ্চে পৌঁছান অপর্না সেন। তার কিছুক্ষণের মধ্যে সেখানে যান রাজ্যপাল। নিজেদের মধ্যে আলোচনার পর রাত সাড়ে আটটা নাগাদ স্বাস্থ্যভবনে রওনা হন জুনিয়র চিকিৎসকদের প্রতিনিধি দল। স্বাস্থ্যভবনে বৈঠক শুরু হয় রাত পৌনে দশটায়।
এদিনের বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন মুখ্যসচিব, স্বরাষ্ট্রসচিব, রাজ্য পুলিশের ডিজি, স্বাস্থ্যসচিব। এছাড়াও বিভিন্ন মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষদের এই বৈঠকে ডাকা হয়েছিল। রাত পৌনে দশটা থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত চলে বৈঠক। বৈঠক শেষে সরকারের তরফে বলা হয়, ইতিবাচক বৈঠক হয়েছে। মুখ্যসচিবের বক্তব্য, ''আমরা ওদের কাজের অগ্রগতির কথা জানিয়েছি। অনশন প্রত্যাহার করার আর্জি জানিয়েছি।'' জুনিয়র ডাক্তাররা সাংবাদিক বৈঠক করেন রাত তিনটে নাগাদ। সেখানে তারা জানান, বৈঠক থেকে কোনো সমাধানসূত্র উঠে আসেনি। তাদের অভিযোগ, এর আগে সাংবাদিক সম্মেলন করে মুখ্যসচিব ঠিক যা যা কথা বলেছিলেন, এদিনও ডাক্তারদের সেই কথাগুলিই বলেছেন তিনি। অর্থাৎ, নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে রাজ্য কী কী কাজ শেষ করবে।
ধর্মতলায় 'আমরণ অনশন' জুনিয়র ডাক্তারদের
ধর্মতলায় মেট্রো চ্যানেলের সামনে অস্থায়ী ভাবে মঞ্চ তৈরি করেছেন জুনিয়র ডাক্তারেরা। ‘আমরণ’ অনশনে ছয় ডাক্তার।
ছবি: Subrata Goswami/DW
কর্মবিরতি প্রত্যাহার করে
শুক্রবার রাতে সংবাদিক বৈঠক করে জুনিয়র ডাক্তারেরা ঘোষণা করেছিলেন, কর্মবিরতি তুলে নিলেও যত দিন পর্যন্ত না তাদের সব দাবি পূরণ হচ্ছে, তত দিন অবস্থান চালিয়ে যাবেন। একই সঙ্গে এও জানান, ২৪ ঘণ্টার মধ্যে সরকারকে দাবি না মানলে তাঁরা আমরণ অনশন শুরু করবেন।
ছবি: Subrata Goswami/DW
দাবি মানা হলো না, অনশন শুরু
শনিবার রাতে ঘোষণা করা হল, সেদিন থেকেই আমরণ অনশনে বসবেন তারা। জানালেন, তারা কাজে ফিরছেন কিন্তু খাবার খাবেন না। জানানো হলো, অনশনে বসছেন ছয় জন। ছবিতে দেখা যাচ্ছে অনশনকারী জুনিয়র ডাক্তার পুলস্ত্য আচার্যকে।
ছবি: Subrata Goswami/DW
কারা অনশনে
কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের অনুষ্টুপ মুখোপাধ্যায়, স্নিগ্ধা হাজরা, তনয়া পাঁজা, এসএসকেএমের অর্ণব মুখোপাধ্যায়, কেপিসি মেডিক্যাল কলেজের সায়ন্তনী ঘোষ হাজরা এবং এনআরএস মেডিক্যাল কলেজের পুলস্ত্য আচার্য।
ছবি: Subrata Goswami/DW
যুক্ত হলো আরজি কর
প্রথমে আরজি করের কেউ এই অনশনে ছিলেন না। রবিবার সন্ধ্যায় অনশনে যোগ দেন আরজি করের জুনিয়র ডাক্তার অনিকেত মাহাতো। জুনিয়র ডাক্তারেরা বলেন, ‘‘দাবি পূরণ না হলে বা মৃত্যু না হলে অনশন চলবে। যাঁরা অনশনে বসছেন, তাঁরা নিজেদের উপর আত্মবিশ্বাসী। তবে তাঁদের কিছু হলে দায় রাজ্য সরকারের। ছবিতে দেখা যাচ্ছে জুনিয়র ডাক্তার তনয়া পাঁজাকে।
ছবি: Subrata Goswami/DW
সাধারণ মানুষের সমর্থন
জুনিয়র ডাক্তার সাহস জোগাতে শহর বা শহরতলির বিভিন্ন জায়গা থেকে এসে জরো হচ্ছেন মানুষ। ডানকুনি থেকে এসেছেন কুমকুম গঙ্গোপাধ্যায় ও তাঁর প্রতিবেশী। তাঁদের আবাসনের ছেলে অনুষ্টুপ অনশনে শামিল।
ছবি: Subrata Goswami/DW
আসছেন তারকারাও
মনোবল বাড়াতে উপস্থিত হয়েছেন চিত্রতারকা বাদশা মৈত্র।
ছবি: Subrata Goswami/DW
পুজোর বেড়ানো বাতিল করে
পুজোয় সপরিবার বেড়াতে যাওয়ার কথা ছিল টালিগঞ্জের বিজয়েন্দ্র চক্রবর্তীর। জয়নগর কুলতলির ধর্ষণ আর জুনিয়র ডাক্তারদের অনশন, এই দুই ঘটনার পর বেড়ানো বাতিল করে অনশন মঞ্চে দাঁড়িয়েছেন পোস্টার হাতে।
ছবি: Subrata Goswami/DW
সিনিয়র ডাক্তাররাও আসছেন
আর জি কর থেকেই ১৯৮০ সালে ডাক্তারি পাশ করেছিলেন শিবপ্রসাদ রায় চৌধুরী। সন্তানের বয়সিরা অনশনে বসেছে। বাড়িতে বসে থাকতে পারলেন না। বললেন, “ সরকারি তরফে একজন সেক্রেটারি লেভেলের কেউ এসে অন্তত কথা বলতে পারতেন। বড় হৃদয়হীন এই সরকার।”
ছবি: Subrata Goswami/DW
প্রশাসনের বাধা
এই মঞ্চ বাঁধতেও বাধা দেওয়া হয়েছে প্রশাসনের তরফ থেকে। যে ডেকোরেটরের লোকজন এই মঞ্চ বাঁধতে এসেছিলেন, তাঁদের হুমকি দিয়ে দরিয়ে দেওয়া হয় বলে খবর। এরপর আন্দোলনকারীরা নিজেরাই মঞ্চ বেঁধে নেন। জানালের ডাক্তার সোহম পাল। অনশনকারীরা ছাড়াও মঞ্চে রয়েছেন অসংখ্য জুনিয়র ডাক্তার। সোহম তাঁদেরই একজন।
ছবি: Subrata Goswami/DW
বায়ো টয়লেটেও বাধা
বায়ো টয়লেট বসাতেও দেওয়া হয়নি প্রশাসনের পক্ষ থেকে। উলুবেরিয়া মেডিক্যাল কলেজের জুনিয়র ডাক্তার ঊর্মিমালা ভট্টাচার্য বললেন, “আমরা সরকারকে দিতে বলছি না, আমাদের সিনিয়রেরাই আমাদের জন্য বায়ো টয়লেট-এর বন্দোবস্ত করে দিয়েছিলেন, কিন্তু এখানকার পুলিশ সেই অস্থায়ী টয়লেট নামাতে দেয়নি গাড়ি থেকে।”
ছবি: Subrata Goswami/DW
নিজেরাই বানালেন
জুনিয়র ডাক্তাররা তারপর নিজেরাই বায়ো টয়লেট বানান। ধর্মতলায় অনশন মঞ্চের কাছে কয়েকজন এই বায়ো টয়লেট তৈরির কাজে ব্যস্ত।
ছবি: Subrata Goswami/DW
কথা বলে
অনশনকারী ডাক্তারদের শারীরিক পরীক্ষা চলছে ধর্মতলার মঞ্চে। কেউ বসে আছেন। কেউ ঘুমোচ্ছেন। কেউ বাকিদের সঙ্গে গল্প করে সময় কাটাচ্ছেন। ছবিতে দেখা যাচ্ছে অনশনকারী এসএসকেএমের জুনিয়র ডাক্তার অর্ণব মুখোপাধ্যায়কে।
ছবি: Subrata Goswami/DW
প্রতীকী মূর্তি
সিনিয়র ডাক্তারেরাও অনশনে বসার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। রবিবার জয়েন্ট প্ল্যাটফর্ম অফ ডক্টর্সের তরফে তা ঘোষণা করা হয়েছে। রিলে অনশন করবেন তাঁরা। জুনিয়রদের পাশে দাঁড়াতেই এই সিদ্ধান্ত। কবে থেকে এই কর্মসূচি শুরু হবে, তা আলোচনার মাধ্যমে স্থির করা হবে। ছবিতে অনশন মঞ্চে বসানো নির্যাতিতার প্রতীকী মূর্তি।
ছবি: Subrata Goswami/DW
প্রচুর পুলিশ
পুলিশ চিকিৎসকদের জানিয়েছিল, ওখানে বসা যাবে না। কিন্তু চিকিৎসকরা ততক্ষণে বিক্ষোভ শুরু করে দিয়েছেন। এরপর অনশনের ২৪ ঘণ্টা পেরিয়ে গেলেও প্রশাসনের তরফে কেউ যোগাযোগ করেনি।
ছবি: Subrata Goswami/DW
14 ছবি1 | 14
জুনিয়র ডাক্তারদের অন্যতম নেতা দেবাশিস হালদারের অভিযোগ, রাজ্য যে কাজগুলি করার কথা বলছে, তা ভিত্তিহীন। তাদের সঙ্গে আলোচনার ভিত্তিতে রাজ্যের ওই কাজগুলি করার কথা ছিল। এবিষয়ে জুনিয়র ডাক্তাররা রাজ্যকে ইমেল করেছিলেন। কিন্তু রাজ্য তার কোনো জবাব দেয়নি। যে প্রক্রিয়ায় রাজ্য কাজ করছে, তা সন্তোষজনক নয় বলেই মনে করছেন জুনিয়র ডাক্তাররা।
শুধু তা-ই নয়, এদিন আবার রাজ্যজুড়ে মেডিক্যাল কলেজগুলিতে নির্বাচনের কথা বলা হয়েছে। কিন্তু রাজ্যের প্রতিনিধিরা এবিষয়ে তাদের আশ্বস্ত করতে পারেনি বলেই অভিযোগ ডাক্তার প্রতিনিধিদের। দেবাশিসের কথায়, ''ওরা আমাদের বিভিন্ন কমিটিতে যোগ দেওয়ার কথা বলছেন। ঠিক যেভাবে সন্দীপ ঘোষদের নিয়োগ করা হয়েছিল। ওরা কী করে জানছেন যে আমরাও এক একজন সন্দীপ ঘোষ বা বীরুপাক্ষ নই! কেন নির্বাচনের মাধ্যমে এই নিয়োগ হবে না?''
জুনিয়র ডাক্তারদের অভিযোগ, এদিনের বৈঠকে একটি বিষয়ই বার বার বলার চেষ্টা করেছেন রাজ্যের প্রতিনিধিরা। যা হওয়ার পুজোর পরে হবে। তার আগে অনশন তুলে নেওয়া হোক। কিন্তু জুনিয়র ডাক্তাররা স্পষ্ট জানিয়েছেন, আপাতত অনশন উঠবে না। বস্তুত, বৃহস্পতিবার সপ্তমীর দিন পঞ্চম দিনে পড়ল নয় জুনিয়র চিকিৎসকের আমরণ অনশন। এর মধ্যে সাতজন কলকাতায় এবং দু'জন উত্তরবঙ্গে অনশন করছেন।
গণ ইস্তফা অব্যাহত
মঙ্গলবার আরজি করে মেডিক্যাল কলেজের সিনিয়র চিকিৎসকেরা গণ ইস্তফার পথে হেঁটেছিলেন। মঙ্গলবার বিকেলে এবং বুধবার দিনভর বিভিন্ন মেডিক্যাল কলেজের সিনিয়র চিকিৎসকেরা গণ ইস্তফা দিয়েছেন। এর মধ্যে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ, কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ আছে। সব মিলিয়ে দুশ জনেরও বেশি চিকিৎসক এখনো পর্যন্ত গণ ইস্তফা দিয়েছেন। তারা সকলেই মিছিল করে ধর্মতলায় অনশনমঞ্চে গিয়ে জুনিয়র ডাক্তারদের প্রতি সংহতি জানিয়েছেন। সাগর দত্ত মেডিক্যাল কলেজের চিকিৎসকেরা সময় বেঁধে দিয়েছেন। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে সমস্যার সুরাহা না হলে তারাও গণ ইস্তফা দেবেন বলে জানিয়েছেন।
আরজি করের ঘটনার পর বারবার ওসি ও সন্দীপ ঘোষের ফোনে কথা
আরজি করে ধর্ষণ ও হত্যার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে সন্দীপ ঘোষ ও টালার ওসি অভিজিৎ মণ্ডলকে গ্রেপ্তার করেছে সিবিআই।
ছবি: Subrata Goswami/DW
বারবার ফোনে কথা
সিবিআই কল রেকর্ডস থেকে জানতে পেরেছে, গত ৯ অগাস্ট তরুণী চিকিৎসকের ধর্ষণ ও হত্যার পর বারবার সাবেক অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষ ও টালা থানার ওসি অভিজিৎ মণ্ডলের মধ্যে ফোনে কথা হয়েছে। দুজনে যে একই জায়গায় ছিলেন সেই তথ্যও টাওয়ার লোকেশন থেকে পাওয়া গেছে। ৯ থেকে ১৪ অগাস্ট অভিজিৎ বারবার আরজি করে গেছেন।
ছবি: Satyajit Shaw/DW
দীর্ঘ জেরা
সন্দীপ ঘোষকে প্রায় দুইশ ঘণ্টা জেরা করেছে সিবিআই। আর অভিজিৎ মণ্ডলকে জেরা করা হয়েছে প্রায় ৪০ ঘণ্টা ধরে। তাছাড়া মামলার তদন্তকারী অফিসারকেও জিজ্ঞাসাবাদ করেছে সিবিআই।
ছবি: Subrata Goswami/DW
সেমিনার হলের ঘটনা
সেমিনার হলে তরুণী চিকিৎসকের দেহ উদ্ধারের পর অভিজিৎ ও পুলিশ কর্মীরা সেখানে যান। তারপর সেখানে প্রচুর মানুষকে যেতে দেখা যায়। তদন্তকারীদের মতে, ক্রাইম সিন অক্ষত রাখার কোনো চেষ্টা করা হয়নি। ফলে তথ্যপ্রমাণ নষ্ট হয়েছে। সুপ্রিম কোর্টেও সিবিআই জানিয়েছে, তারা পাঁচদিন পরে তদন্ত শুরু করে, ততক্ষণে অনেক প্রমাণ নষ্ট হয়ে গেছে।
ছবি: Satyajit Shaw/DW
সাবেক ওসি-র বিরুদ্ধে আরো অভিযোগ
টালা থানার সাবেক ওসির বিরুদ্ধে আরো অভিযোগ হলো, তিনি দ্রুত দেহ সৎকার করার জন্য চাপ দিয়েছিলেন। অভিযোগ, তিনি মূল অভিযুক্তকে আড়াল করার চেষ্টা করেছেন, তিনি সিসিটিভি ফুটেজ রক্ষার ক্ষেত্রেও অবহেলা দেখিয়েছেন।
ছবি: Satyajit Shaw/DW
জুনিয়র ডাক্তারদের বিশাল মিছিল
জুনিয়র ডাক্তারদের সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রীর বৈঠক ভেস্তে যাওয়ার পর রোববার বিশাল মিছিল বের করেন জুনিয়র ডাক্তাররা। সেখানে জুনিয়র ডাক্তারদের পাশাপাশি সাধারণ মানুষও ছিলেন। শনিবার মুখ্যমন্ত্রীর বাড়ির আলোচনা ভেস্তে যাওয়ার পর আন্দোলনস্থলে জুনিয়র ডাক্তাররা উজ্জীবিত হয়ে পড়েন। সারা রাত ধরে প্রতিবাদ চলতে থাকে। প্রচুর মানুষ যোগ দেন।
ছবি: Subrata Goswami/DW
ভাষাবদল
সেই মিছিলে দেখা যায় স্লোগানের ভাষাবদল হয়েছে। সেখানে বলা হচ্ছে, 'উই ডিম্যান্ড জাস্টিস, নট জাস্ট আইস'। অর্থাৎ, জুনিয়র ডাক্তাররা ন্যায়বিচার চান, তাদের দাবি ঠাণ্ডা ঘরে পাঠানোর চেষ্টা তারা মানবেন না।
ছবি: Subrata Goswami/DW
'আর্জি নয়, দাবি কর'
এটাও বলা হয়েছে, 'আর্জি নয়, দাবি কর'। অর্থাৎ, আরজি কর নিয়ে নিছক আর্জি করছেন না, তারা দাবি জানাচ্ছেন ন্য়ায়বিচারের। যত দিন যাচ্ছে, ততই অবস্থান কঠোর করছেন জুনিয়র ডাক্তাররা।
ছবি: Subrata Goswami/DW
বৃষ্টির মধ্যে
বৃষ্টির মধ্যেই চলছে জুনিয়র ডাক্তারদের অবস্থান-বিক্ষোভ। বৃষ্টির হাত থেকে বাঁচতে বিক্ষোভস্থলে প্লাস্টিকের শিট লাগিয়ে দেয়া হয়েছে। রাস্তায় পেতে দেয়া হয়েছে প্লাস্টিকের চাদর। এর মধ্যে দিনরাত বসে জুনিয়র ডাক্তাররা আন্দোলন করছেন।
ছবি: Subrata Goswami/DW
ছাতা মাথায়
নিম্নচাপের কারণে কলকাতায় আরো কয়েকদিন বৃষ্টি হবে। বৃষ্টির তীব্রতা বাড়তে পারে। ছাতা মাথায় বিক্ষোভস্থলে ঘুরছেন তারা। বেশি বৃষ্টি হলে তারা প্লাস্টিকের তলায় চলে যাচ্ছেন।
ছবি: Subrata Goswami/DW
9 ছবি1 | 9
এদিকে বেসরকারি হাসপাতাল কলকাতা অ্যাপোলোর কনসালটেন্ট চিকিৎসকেরাও কর্মবিরতির ডাক দিয়েছেন। চিঠিতে তারা লিখেছেন, জুনিয়র ডাক্তারদের আন্দোলনকে সমর্থন জানিয়ে তারা এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। এমার্জেন্সি চিকিৎসা এবং গুরুত্বপূর্ণ অপারেশন ছাড়া আর কোনো কাজ করবেন না তারা।
পুজো প্যান্ডেলে বিক্ষোভ, আটক
এদিকে এদিন গোটা শহরজুড়ে একের পর এক মিছিল হয়েছে। সর্বত্রই পুলিশ মিছিল আটকানোর চেষ্টা করেছে। আন্দোলনকারীরা একটি মিনিডোরে করে অভয়া পরিক্রমা শুরু করেছিলেন। চাদনি চকের কাছে পুলিশ সেই মিনিডোরের চাবি কেড়ে নেয়। এরপর আন্দোলনকারীরা মিছিল করে পরিক্রমা করতে গেলেও তাদের বাধা দেওয়া হয়।
অন্যদিকে একদল ছাত্রছাত্রী বিভিন্ন পুজো প্যান্ডেলে গিয়ে জাস্টিসের স্লোগান দেন। ম্যাডক্স স্কোয়্যারে কোনো সমস্যা না হলেও ত্রিধারা সম্মিলনীর পুজো প্যান্ডেলের বাইরে আচমকাই তাদের পুলিশ ধরপাকড় শুরু করে। সব মিলিয়ে ২৯ জনকে আটক করে লাবাজার নিয়ে যাওয়া হয়। এর প্রতিবাদে ধর্মতলা থেকে আন্দোলনকারীরা লালবাজারের সামনে পৌঁছে যান। মধ্যরাত পর্যন্ত লালবাজারের সামনে দু'টি রাস্তা অবরুদ্ধ করে তারা বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন। আন্দোলনকারীদের একটি প্রতিনিধি দল পুলিশের সঙ্গে আলোচনায় বসে। মাঝ রাতেই অধিকাংশ আন্দোলনকারীকে পুলিশ ছেড়ে দিয়েছে বলে জানা গেছে। তবে নয় জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। বৃহস্পতিবার সকালে তাদের আদালতে পেশ করা হবে। আন্দোলনকারীরা এই রিপোর্ট লেখার সময়েও লাবাজারের সামনে অবস্থান বিক্ষোভ করছেন। 'সহযোদ্ধা'দের না ছাড়া পর্যন্ত তারা অবস্থান তুলবেন না বলে জানিয়ে দিয়েছেন।
আন্দোলনকারীরা জানিয়েছেন, সাধারণ মানুষের অসুবিধা না করে বৃহস্পতিবার, সপ্তমীতেও শহরের বিভিন্ন প্রান্তে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়া হবে। তবে জুনিয়র ডাক্তাররা জানিয়েছেন, তাদের যে সহযোদ্ধারা অনশন করছেন, তাদের শরীর ক্রমশ খারাপ হচ্ছে। কিন্তু কোনোভাবেই তারা অনশন বন্ধ করতে রাজি হচ্ছেন না।