আতশবাজি প্রতিযোগিতা এবং তা থেকে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের সূত্রপাত হয় ভারতের এক মন্দিরে৷ শনিবার রাতের এ দুর্ঘটনায় এ পর্যন্ত ১০৯ জন মারা গেছেন৷ ঘটনার সঙ্গে জড়িত ছ'জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছে পুলিশ৷
বিজ্ঞাপন
ভারতের বিভিন্ন রাজ্যেই এখন চলছে নববর্ষ উদযাপনের প্রস্তুতিমূলক নানা ধরণের অনুষ্ঠান৷ কেরালাতেও চলছে ‘ভিষু' উৎসবকে সামনে রেখে নানা আয়োজনের হিড়িক৷ শনিবার গভীর রাতে কেরালা রাজ্যের কোল্লাম জেলার মন্দিরটিও ছিল উৎসবের আমেজে৷ ভিষু, অর্থাৎ কেরালার ঐতিহ্যবাহী নববর্ষ উৎসব উদযাপনের প্রাক প্রস্তুতি হিসেবেই মন্দিরে আয়োজন করা হয় আতশবাজি প্রতিযোগিতা৷ সেই প্রতিযোগিতাই কেড়ে নিলো শতাধিক প্রাণ৷
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, স্থানীয়ভাবেই আয়োজন করা হয়েছিল আতশবাজি প্রতিযোগিতা৷ প্রতিযোগিতার বেশিরভাগ আতশবাজিও স্থানীয়ভাবেই তৈরি৷ কোনো কোনো ব্যাপকহারে গানপাউডারও ব্যবহার করা হয়৷ পুলিশ জানিয়েছে, প্রতিযোগিতার জন্য অনুমতি চেয়ে প্রত্যাখ্যাত হওয়ার পরও আয়োজকরা প্রতিযোগিতার আয়োজন করে৷
আতশবাজি শুরুর কিছুক্ষণ পরই আকাশে ছুড়ে মারা একটি বাজির আগুন এসে মন্দিরে পড়ে৷ সঙ্গে সঙ্গেই দাউ দাউ করে জ্বলে ওঠে আগুন৷ সারা মন্দিরে আগুনের লেলিহান শিখা ছড়িয়ে পড়ায় ওপর থেকে ছাদ ভেঙে পড়তে শুরু করে৷ খুব তাড়াতাড়ি মন্দির সংলগ্ন কয়েকটি ভবনেও ছড়িয়ে পড়ে আগুন৷ একাধিক ভবন পুরোপুরি ধসে পড়েছে বলেও জানা গেছে৷
পুলিশ জানায়, অবৈধ, অর্থাৎ যেসব আতশবাজি অনেক বেশি ঝুঁকিপূর্ণ সেগুলোও প্রতিযোগিতায় ব্যবহার করা হয়েছে৷ হতাহতদের বেশির ভাগই তরুণ এবং তাদের অনেকেই সেই মুহূর্তে সবচেয়ে আকর্ষণীয় আতশবাজি প্রদর্শন করে প্রতিযোগিতায় অংশ নিচ্ছিলেন৷
এ পর্যন্ত ছ'জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছে কেরালা পুলিশ৷ ছ'জনের মধ্যে তিনজন মন্দির পরিচালনা কমিটির সদস্য, বাকিরা আতশবাজি প্রতিযোগিতার আয়োজক৷ অভিযোগ দায়ের করলেও অভিযুক্তদের একজন হাসপাতালে চিকিৎসারত এবং বাকিরা পলাতক বলে এখনো কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ৷
বর্ষবরণ, অন্য ধরন
শহরের গোলমালে হাজার হাজার মানুষের ভিড়ে বর্ষবরণ উৎসব? অ্যাম্বুলেন্সের সাইরেন আর বাজির ধোঁয়া? না, সঠিক বর্ষবরণ করতে গেলে যেতে হবে প্রকৃতির কাছে...৷
ছবি: picture-alliance/dpa
অন্য ধরনের আতশবাজি
ইউরোপের উত্তরে আকাশে এক ধরনের আলো দেখা যায়, যাকে বলা হয় নর্দার্ন লাইটস৷ বাংলায় উদীচী উষা বা সুমেরু প্রভা৷ ল্যাপল্যান্ডে নববর্ষ কাটাতে গেলে ফ্রি-তে পাবেন শুকনো খটখটে, হিমশীতল বাতাস আর শুভ্র তুষার৷
ছবি: picture-alliance/dpa/R. Flyktman
বরফ ঠান্ডা
সুইডেনের ইয়ুকাসইয়ার্ভি বরফের হোটেলে প্রায় একশো অতিথি ধরে৷ গোটা হোটেলটি বরফ দিয়ে তৈরি৷ হোটেলের ভেতরে তাপমাত্রা হল পাঁচ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড, হোটেলের বাইরে কিন্তু একটা ‘সওনা’ আছে৷ আন্তর্জাতিক শিল্পীরা হোটেলের প্রতিটি ঘরের জন্য একক সব তুষার ভাস্কর্য সৃষ্টি করেছেন৷
ছবি: Reuters/I. Kalnins
মরুপ্রান্তর
উটের পীঠে চড়ে ঘোরা, অথবা স্যান্ডবোর্ডিং, অথবা সুবিশাল কোনো বালিয়াড়ির ওপর বসে সাহারায় সূর্যাস্ত দেখা – মরক্কোর পূর্ব সীমান্তে অবস্থিত এর্গ চেবিতে এ সবই সম্ভব৷
ছবি: picture-alliance/dpa
রংফানুস
থাইল্যান্ডের চিয়াং মাই শহরে মানুষজন বাজি পোড়ানোর বদলে ফানুস উড়িয়ে বর্ষবরণ করেন৷ ঘুড়ির কাগজ দিয়ে তৈরি ফানুসগুলো ধীরে ধীরে আকাশে ওঠে, রাতের আকাশ ভরে যায় যেন শত শত লণ্ঠনে...৷
ছবি: picture-alliance/AP Photo
পেরুর পাহাড়ের গায়ে বাদুড়ের মতো ঝুলে থাকা
অ্যাডভেঞ্চার আর কা-কে বলে! মাটি থেকে চোদ্দ’শ লোহার ধাপযুক্ত মই বেয়ে, কিংবা জিপলাইন ধরে ওপরে রম্বাসের আকারের স্বচ্ছ ‘পড’-টিতে পৌঁছাতে হয়৷ এটাই হলো আপনার হোটেলের কামরা! আন্দিজ পর্বতমালার একটি খাড়া পাথরের ঢালের গায়ে ঝোলানো৷ এই কামরা থেকে উরুবাম্বা উপত্যকার একটা চমৎকার ভিউ পাবেন৷
ছবি: Natura Vive
রূপকথার গুহায় শীতনিদ্রা
একটি গুহায় লুকিয়ে থেকে বর্ষবদল করতে চান? তাহলে তুরস্কের কাপাদোকিয়া অঞ্চল আপনার ভালো লাগবে৷ এই এলাকার আগ্নেয় লাভা পাথর এতই নরম যে, যুগ যুগ ধরে মানুষজন এই পাথর কুঁদে বাড়িঘর, গির্জা, মঠ ইত্যাদি কত কী বানিয়েছেন৷ তবে কাপাদোকিয়ার বিশ্বজোড়া নাম তার হবিট-সুলভ গুহাগুলির জন্যে৷
ছবি: picture-alliance/blickwinkel/U. Brunbauer
মাউন্ট কিলিমাঞ্জারোর মাথায় চড়লে কেমন হয়?
মাউন্ট কিলির ওপর চড়তে হলে মাঝরাতে উঠে হাইকিং শুরু করতে হয়৷ তবে শেষ অবধি যাঁরা টিঁকে থাকেন, তাঁরা দেখতে পান আফ্রিকার সবচেয়ে উঁচু পর্বতশিখর থেকে এক অবিস্মরণীয় সূর্যোদয়...৷
ছবি: picture-alliance/dpa
সমুদ্রসৈকতে নাচগান
প্রকৃতি মানেই যে পার্টি নয়, সে-কথাই বা কে বলেছে? বিশ্বাস না হয়, চলুন ভারতের গোয়ায় নিউ ইয়ারের পার্টি করতে, যা কিনা সারা বিশ্বে ‘ফেমাস’৷ গোয়া এককালে ছিল হিপিদের স্বর্গ৷ এখন আবার ধীরে ধীরে পর্যটকদের কাছে আকর্ষণীয় হয়ে উঠছে৷
ছবি: Colourbox
অথবা ফিরে আসুন জার্মানিতে...
বছরের প্রথম দিনে সাগরের হিমঠান্ডা জলে একবার ডুব দিলে কেমন হয়? গতরাতের খোঁয়াড়ি কাটতে এক মিনিটও সময় লাগবে না৷ ধরুন সিল্ট দ্বীপের সামনে সাগরের পানির তাপমাত্রা হবে বড়জোর পাঁচ থেকে সাত ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড৷ হোটেল থেকে বেরুলেন আর ঠান্ডা পানিতে ঝাঁপ খেলেন৷ এর পর আর ভয় কিসে?