পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরীফ সম্প্রতি পাঞ্জাবে হিন্দু মন্দির পরিদর্শন করেছেন৷ ইসলামিক রাষ্ট্রে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বাড়ানো ও আন্তর্জাতিক অঙ্গণে দেশের ভাবমূর্তি উন্নয়নই এর লক্ষ্য বলে জানিয়েছেন নওয়াজের মুখপাত্র৷
বিজ্ঞাপন
১১ জানুয়ারি পাঞ্জাবে ৯০০ বছরের পুরোনো কাটাস রাজ মন্দির সফর করেন নওয়াজ৷ দক্ষিণ এশিয়ার হিন্দুদের কাছে এই মন্দিরটি অন্যতম তীর্থ স্থান৷ এই মন্দির পরিদর্শনকে প্রতিবেশী দেশ ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নের ইঙ্গিত হিসেবে দেখছেন অনেকে৷ সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ধর্মবিশ্বাসের প্রতি আঘাত না আসে, সে ব্যাপারে সরকারের মনোভাব আরও সুস্পষ্ট করতেই এ সফর বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরীফের মুখপাত্র৷ তবে, সমাজ পরিবর্তনে সরকারের এই মনোভাবে রুষ্ট হয়েছেন কট্টরপন্থিরা৷
তারা যথারীতি এর বিরোধিতা করেছে৷ মন্দিরে আনুষ্ঠানিক পূজা হওয়ার পর বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে নওয়াজ বলেন, ‘‘আমার দৃষ্টিভঙ্গিতে মুসলমান, হিন্দু, শিখ, খ্রিষ্টান এবং যারা অণ্য ধর্মাবলম্বী-সবাই সমান, সবাই এক৷'' রাজধানী ইসলামাবাদ থেকে মন্দিরটির অবস্থান ১১০ কিলোমিটার দূরে কাটাস গ্রামে৷
অনুষ্ঠানে খ্রিষ্টান, শিখ এবং হিন্দু ধর্মীয় নেতারা উপস্থিত ছিলেন৷ সেখানে নওয়াজ মুসলিম ধর্মীয় কট্টরপন্থিরা অন্য ধর্মের প্রতি বিদ্বেষ ছড়ানোর অভিযোগ তোলেন৷
তিনি বলেন, ‘‘আমি বিশ্বাস করি এটা কোন নীতির মধ্যে পড়ে না৷ এমন দৃষ্টান্ত বা শিক্ষা কারোরই উপস্থাপন করা উচিত নয়৷'' তবে সমালোচকরা বলছেন, কট্টরপন্থিদের সামাল দিতে নজওয়াজ সরকার তেমন কোনো পদক্ষেপই নিচ্ছে না৷ এসব কট্টপন্থিদের মধ্যে কারো কারো সঙ্গে ইসলামি জঙ্গিদের সংশ্লিষ্টতা রয়েছে বলে ধারণা করা হয়৷
ধর্ম নিয়ে রাজনীতি
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, নওয়াজের কাটাস রাজ মন্দির পরিদর্শন আসলে সংখ্যালঘুদের ভোটের প্রত্যাশায়৷ কেননা ২০১৮ সালে পাকিস্তানে সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে৷ তাই নিজের অসাম্প্রদায়িক ভাবমূর্তিকে প্রতিষ্ঠা করার লক্ষ্যেই তার এই সফর৷ যদিও পাকিস্তানে সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠী মোট জনগোষ্ঠীর মাত্র ৩ ভাগ৷ তবে পাঞ্জাব ও সিন্ধু প্রদেশে সংখ্যালঘুদের ভোট নির্বাচনে প্রভাব বিস্তার করে৷
এপিবি/ডিজি (এপি, রয়টার্স)
বিষয়টি নিয়ে আপনার কিছু বলার থাকলে লিখুন নীচের ঘরে৷
ন্যাড়া হচ্ছেন ভক্তরা, ব্যবসা করছে মন্দির
ভারতের অন্ধ্র প্রদেশের তিরুপতি শহরের ভেঙ্কটেশ্বর মন্দির পরিদর্শনে যাওয়া ভক্তরা দেবতার কৃপা পেতে মাথার সব চুল কেটে ফেলেন৷ সেই চুল দিয়ে ব্যবসা করছে মন্দির৷
ছবি: Getty Images/A.Joyce
শতাব্দী পুরনো প্রথা
ভক্তদের বিশ্বাস, মাথার সব চুল কেটে ফেললে হয়ত দেবতা খুশি হবেন৷ ফলে তাঁরা যা চান, দেবতা তা করে দিতে পারেন৷ সেই আশায় ভারতের অন্ধ্র প্রদেশের তিরুপতি শহরের ভেঙ্কটেশ্বর মন্দির পরিদর্শনে যাওয়া ভক্তদের অনেকে ন্যাড়া হন৷
ছবি: Getty Images/A.Joyce
দিনে ৩৫ হাজার!
হ্যাঁ ঠিকই পড়েছেন৷ সংখ্যাটি ৩৫ হাজারই৷ সৌভাগ্যের আশায় প্রতিদিন গড়ে প্রায় ঐ সংখ্যক ভক্ত চুল কেটে ন্যাড়া হচ্ছেন৷ সব বয়সি মানুষই যোগ দেন এতে৷
ছবি: Getty Images/A.Joyce
উৎসবের সময়
অক্টোবর মাসে নয় দিনব্যাপী ব্রাহ্মোৎসবের সময় চুল কাটা ভক্তের সংখ্যা প্রতিদিন গড়ে প্রায় ৪৫ হাজারে গিয়ে ঠেকে৷ ২০১৬ সালে ন্যাড়া হয়েছেন প্রায় ৩৪ লক্ষ ভক্ত৷ এর মধ্যে নারী ছিলেন ১৭ লাখ৷ নাপিত ছিলেন প্রায় দেড় হাজার৷ এর মধ্য নারী নাপিতের সংখ্যা ছিল ২৭৭ জন৷
ছবি: Getty Images/A.Joyce
সংখ্যা বাড়ছে
দেবতাকে খুশি করতে চুলত্যাগী ভক্তের সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে৷ মন্দির ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, ‘‘২০১৬ মরসুমে এমন ভক্তের সংখ্যা বেড়েছে প্রায় ৪৫ শতাংশ৷’’
ছবি: Getty Images/A.Joyce
কর্পোরেট রূপ দান
বিশ্বব্যাপী মানুষের চুলের ব্যাপক চাহিদার কথা ভেবে বছর দুয়েক আগে পুরো বিষয়টিকে ব্যবসায়িক রূপ দেয়ার পরিকল্পনা করা হয়৷
ছবি: Getty Images/A.Joyce
বছরে আয়
পরিকল্পনা অনুযায়ী কাজ করায় ২০১৫-১৬ অর্থবছরে চুল বিক্রি থেকে ২০০ কোটি রূপি আয় করে মন্দির কর্তৃপক্ষ, যা মোট আয়ের ১৫-১৮ শতাংশ৷
ছবি: Getty Images/A.Joyce
ভক্তদের জন্য আরামের ব্যবস্থা
চুল কাটার স্থান শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত করা হয়েছে৷ এছাড়া ভক্তিমূলক সংগীত শোনা ও টিভিতে এ ধরণের মুভি দেখানো হয়৷
ছবি: Getty Images/A.Joyce
চুল রপ্তানি
এই খাতে ভারত বিশ্বের অন্যতম শীর্ষস্থানীয় রপ্তানিকারক৷ বছরে প্রায় ৮০০ মিলিয়ন ডলার আয় করে দেশটি৷ মানুষের চুলের সবচেয়ে বড় আমদানিকারক চীন৷ তারপর আছে ব্রাজিল, হংকং, ইটালি আর যুক্তরাষ্ট্র৷
ছবি: Getty Images/A.Joyce
তিরুপতির চুলের চাহিদা
ভারতের ইকোনমিকস টাইমস বলছে, তিরুপতির মন্দিরে পাওয়া চুলের মান ভালো হওয়ায় বিশ্বব্যাপী এর চাহিদা রয়েছে৷ পরচুলাসহ অন্যান্য জিনিস তৈরিতে এই চুল ব্যবহার করা হয়৷