1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

মন্দের ভালো পদ্ধতিতে এসএসসি ও এইচএসসি

সমীর কুমার দে ঢাকা
২৯ সেপ্টেম্বর ২০২১

করোনা মহামারির কারণে গেল বছর এইচএসসি পরীক্ষা নেওয়া যায়নি। তবে এবার নভেম্বর ও ডিসেম্বরে এসএসসি এবং এইচএসসি পরীক্ষা নেওয়ার ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।

Bangladesch I Schulen öffnen nach Corona-Lockdown
ছবি: Mortuza Rashed/DW

ইতিমধ্যে পরীক্ষার রুটিনও প্রকাশ করা হয়েছে। এবার আবশ্যিক বিষয়গুলো বাদ দিয়ে শুধুমাত্র নৈর্বাচনিক তিন বিষয়ে পরীক্ষা নিয়ে ফলাফল দেওয়া হবে। পরীক্ষার এই প্রক্রিয়াটিকে মন্দের ভালো বলছেন শিক্ষাবিদেরা। শিক্ষকেরাও বলছেন, এই মুহুর্তে এর চেয়ে ভালো পদ্ধতি আর নেই।

প্রায় সাত মাস অপেক্ষার পর এসএসসি পরীক্ষার্থীরা পরীক্ষার রুটিন পেয়েছেন। রুটিন অনুসারে আগামী ১৪ নভেম্বর শুরু হবে পরীক্ষা। চলবে ২৩ নভেম্বর পর্যন্ত। আর পাঁচ মাস অপেক্ষার পর রুটিন অনুযায়ী এইচএসসি পরীক্ষা শুরু হবে ২ ডিসেম্বর। চলবে ৩০ ডিসেম্বর পর্যন্ত। দুটি পরীক্ষাই হবে শুধু নৈর্বাচনিক বিষয়ে। অন্যান্য আবশ্যিক বিষয়ে আগের পাবলিক পরীক্ষার সাবজেক্ট ম্যাপিং করে মূল্যায়নের মাধ্যমে নম্বর দেওয়া হবে। 

জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তব বোর্ডের (এনসিটিবি) কারিকুলাম বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ড. মশিউজ্জামান ডয়চে ভেলেকে বলেন, "সব বিষয়ে পরীক্ষা নিতে হবে এমন কোন কথা নেই। তবে নিতে পারলে ভাল। যেহেতু একটা ভিন্ন পরিস্থিতিতে পরীক্ষা নিতে হচ্ছে, ফলে এই পদ্ধতি খারাপ না। ডেনমার্কেও আমরা দেখেছি, ওরা সারা বছর কাস নেয়, পরীক্ষার দুই মাস আগে বলে তিনটি বিষয়ে পরীক্ষা নেবে। কোন তিনটি বিষয়ে পরীক্ষা হবে, সেটা আগে বলে না। আর সারা বছরই যেহেতু শিক্ষার্থীরা পড়ার মধ্যে থাকে, ফলে এভাবে মূল্যায়নে সমস্যা হওয়ার কথা না।” 

রেবেকা সুলতানা

This browser does not support the audio element.

এবার এসএসসি ও এইচএসসি উভয় ক্ষেত্রেই গ্রুপভিত্তিক তিনটি নৈর্বাচনিক বিষয়ে ছয়টি সংক্ষিপ্ত পরীক্ষা নেওয়া হবে। অর্থাৎ এইচএসসিতে যদি কোনো শিক্ষার্থীর নৈর্বাচনিক বিষয় পদার্থ, রসায়ন ও উচ্চতর গণিত থাকে, তাহলে তাকে এই তিন বিষয়ের ছয়টি পত্রে পরীক্ষা দিতে হবে। তিন ঘণ্টার পরীক্ষা হবে দেড় ঘণ্টায়। রচনামূলক অংশে নম্বর থাকবে ৩৫ ও এমসিকিউ (মাল্টিপল চয়েজ কোয়েশ্চেন) থাকবে ১৫ নম্বরের। তবে প্রশ্নপত্র এখন যেভাবে হয়, সেভাবেই হবে। ফলে শিক্ষার্থীদের প্রশ্ন বাছাই করার ক্ষেত্রে বেশি সুযোগ থাকবে। আগে যেখানে ১০টি প্রশ্নের মধ্য থেকে আটটির উত্তর দিতে হতো, সেখানে এবার সেই ১০টি প্রশ্নই থাকবে। তবে এর মধ্যে চারটির উত্তর দিতে হবে। অর্থাৎ শিক্ষার্থীদের প্রশ্ন বেছে নেওয়ার সুযোগ বাড়বে। প্রতি বিষয়ে ১০০ নম্বরের বদলে ৫০ নম্বরের পরীক্ষা হবে। তবে ৫০ নম্বরকে ১০০ নম্বরে রূপান্তর করে পরীক্ষার ফল দেওয়া হবে।  

আন্তঃশিক্ষা বোর্ডের সভাপতি ও ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক নেহাল আহমেদ ডয়চে ভেলেকে বলেন, "আমরা যেভাবেই হোক পরীক্ষা নিতে চাই। ইতিমধ্যে পরীক্ষার রুটিন প্রকাশ করা হয়েছে। প্রশ্ন ছাপার কাজও চলছে। সংক্ষিপ্ত সিলেবাসে যে পরীক্ষা নেওয়ার কথা, সেভাবেই প্রশ্ন করা হয়েছে।” এবার পরীক্ষার্থীর সংখ্যা কত? আগের চেয়ে কী কমেছে না বেড়েছে? জানতে চাইলে অধ্যাপক আহমেদ বলেন, "এবার এসএসসি পরীক্ষা দেবে ২৩ লাখ এবং এইচএসসি পরীক্ষা দেবে ১৪ লাখের মতো শিক্ষার্থী। যারা ফরম ফিলাপ করেছে তারা সবাই পরীক্ষায় অংশ নেবে বলে আমরা আশা করছি। ফরম ফিলাপের ক্ষেত্রে যদি বলি ঝড়ে পড়ার হার একজনও না। তবে কতজন পরীক্ষার হলে আসবে সেটা তো এখনই বলা যাবে না।”

নেহাল আহমেদ

This browser does not support the audio element.

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, এবার আবশ্যিক বিষয় বাংলা, ইংরেজি, সাধারণ গণিত, আইসিটি, ধর্ম এবং চতুর্থ বিষয়ের পরীক্ষা নেওয়া হবে না। এসব বিষয়ে পরীক্ষার্থীদের আগের পাবলিক পরীক্ষার সাবজেক্ট ম্যাপিং করে মূল্যায়নের মাধ্যমে নম্বর দেওয়া হবে। এসএসসির ক্ষেত্রে জেএসসি এবং এইচএসসির ক্ষেত্রে জেএসসি ও এসএসসির ফল মূল্যায়ন করা হবে। এসএসসি ভোকেশনাল এর ক্ষেত্রে জেএসসি ও নবম শ্রেণি এবং এইচএসসি ভোকেশনাল এর ক্ষেত্রে এসএসসি ও একাদশের ফল মূল্যায়ন করা হবে।

তেজগাঁও সরকারী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা রেবেকা সুলতানা ডয়চে ভেলেকে বলেন, "এখন যে সিদ্ধান্তটা এসেছে সেটা, একটা কঠিন পরিস্থিতির পর এসেছে। ফলে আমরা সামনে যে অল্প সময় পাচ্ছি, তাতে যে বিষয়ে পরীক্ষা হবে সেগুলোই পড়াচ্ছি। আর যেসব শিক্ষার্থী নিজেদের সামনের দিনে গড়ে তুলতে চান তারা পরীক্ষার বিষয় বাদ দিয়েও অন্য বিষয়গুলো পড়ছে। আমার পাশেই একজন শিক্ষার্থী থাকে। তার অভিভাবক আমাকে বলছিলেন, তার সন্তানকে তিনি আবশ্যিক বিষয়গুলোও পড়াচ্ছেন। কারণ কলেজে গিয়ে তাকে ওই বিষয়গুলোও পড়তে হবে। যারা এগুলো পড়বে না তারা পিছিয়ে পড়বে। সবকিছু মিলিয়ে আমরা যে পরীক্ষা নিতে পারছি, সেটাই বড় কথা। শিক্ষার্থীরাও পরীক্ষা দিতে চায়।” 

ঢাকা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক নেহাল আহমেদ বলেন, এবার যেহেতু নৈর্বাচনিক বিষয়ের পরীক্ষা হবে, তাই কেন্দ্রসংখ্যা বাড়ানোর কোনো পরিকল্পনা নেই। প্রতি বেঞ্চে একজন করে শিক্ষার্থী বসিয়ে পরীক্ষা নেওয়া হবে। উদাহরণ দিয়ে তিনি বলেন, একটা স্কুল বা কলেজে যদি তিন হাজার শিক্ষার্থী থাকে সেখানে আবশ্যিক বিষয় বাদ দিয়ে শুধু নৈর্বাচনিক বিষয়ে পরীক্ষা হয় তাহলে তিন ভাগের একভাগ শিক্ষার্থীকে আসতে হবে। ফলে স্বাস্থ্যবিধি মেনে পরীক্ষা নেওয়া সম্ভব। আর একটা স্কুলে যখন শিক্ষার্থীরা আসে তখন তারা স্বাস্থ্যবিধি মানে। কিন্তু স্কুল গেটের বাইরে অভিভাবকেরাই অনেক সময় স্বাস্থ্যবিধি মানতে চান না।

জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তব বোর্ডের (এনসিটিবি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক নারায়ন চন্দ্র সাহা ডয়চে ভেলেকে বলেন, "অনেক গবেষণার পর বর্তমান পরীক্ষা পদ্ধতি বের করা হয়েছে। এই মুহুর্তে এর চেয়ে ভালো কোন বিকল্প নেই। পঞ্চম শ্রেণির প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী (পিইসি) পরীক্ষা এবার কেন্দ্রীয়ভাবে নেওয়া হবে না। মন্ত্রণালয় থেকে বলা হয়েছে, আগে যেভাবে প্রতিটি স্কুলে বার্ষিক পরীক্ষা নেওয়া হত, এবার সেভাবেই নেওয়া হবে। অর্থাৎ বার্ষিক পরীক্ষা হবে। সবকিছুই হবে সংক্ষিপ্ত সিলেবাসে।”   

প্রসঙ্গত, শিক্ষা মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, সরকারি স্কুল-কলেজের প্রায় শতভাগ শিক্ষকই টিকা নিয়েছেন। মধ্য আগষ্ট পর্যন্ত বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের তিন লাখ ৬৩ হাজার ২২২ শিক্ষক-কর্মচারীর মধ্যে টিকা নিয়েছেন দুই লাখ ৭৮ হাজার ৪২৬ জন। ফলে নভেম্বরে এসএসসি পরীক্ষা শুরুর আগেই সবাই টিকার আওতায় চলে আসবেন।

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ