বাংলাদেশ-ভারত
২৩ ফেব্রুয়ারি ২০১২
গতকালের বৈঠকে তিনটি ইস্যুতেই পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মন রাখলেন প্রধানমন্ত্রী ড. মনমোহন সিং৷ প্রথমটি হলো রাজ্যে জাতীয় সন্ত্রাস দমন কেন্দ্র সংক্ষেপে এন সি টি সি স্থাপন নিয়ে৷ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বক্তব্য, এটা দেশের যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোর পরিপন্থী৷ এতে রাজ্য সরকারকে না জানিয়ে যে কোন ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করতে পারে বা যে কোন স্থানে তল্লাশি চালাতে পারে৷ প্রধানমন্ত্রী আশ্বাস দেন, এবিষয়ে রাজ্যগুলির সঙ্গে আলোচনা করে এবং তাদের সঙ্গে নিয়েই চলতে চায় কেন্দ্র৷
এবিষয়ে তৃণমূল কংগ্রেসের শীর্ষ নেত্রী সাংসদ কাকলি ঘোষদস্তিদার ডয়চে ভেলেকে বললেন, সন্ত্রাস দমনের বিরোধিতার প্রশ্ন নয়, প্রশ্নটা হলো কার্যপদ্ধতির৷ কেন্দ্র যদি সন্ত্রাস সম্পর্কে কোন খবর বা তথ্যপ্রমাণ রাজ্য সরকারকে না জানায় তাতে কাজটা যথাযথভাবে করা যাবেনা৷ রাজ্যকে অন্ধকারে রেখে করতে গেলে তা ঠিকমত ভাবে হবেনা৷ তাতে কেন্দ্র ও রাজ্য উভয়েরই ক্ষতি৷
ফরাক্কা ব্যারেজ সম্পর্কে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রধানমন্ত্রীকে বলেন যে, ব্যারেজের দুটি স্লুইস গেট ভেঙে যাওয়ায় এ রাজ্যের প্রাপ্য জল বেরিয়ে যাচ্ছে৷ বাংলাদেশের সঙ্গে চুক্তি অনুযায়ী যেখানে ৩৩ হাজার কিউসেক জল যাবার কথা, সেখানে যাচ্ছে ৭০ থেকে ৮০ হাজার কিউসেক৷ ফলে হুগলি নদীর জলস্তর নেমে যাচ্ছে৷ জাহাজ চলাচল ব্যাহত হচ্ছে৷ সেচ ও পানীয় জলের সঙ্কটের আশঙ্কা দেখা দিচ্ছে৷ প্রধানমন্ত্রীর আশ্বাস, কেন্দ্রীয় জলসম্পদ বিভাগ মার্চের মধ্যেই স্লুইস গেট মেরামত কোরে দেবে৷
এই প্রসঙ্গে কাকলি ঘোষদস্তিদার বলেন, জল সব কৃষকেরই দরকার৷ ফরাক্কা চুক্তিতে যে জলটা রাজ্যের প্রাপ্য তার থেকে যদি বেশি বেরিয়ে যায়,সেটা মেনে নেয়া যায়না৷
টেকনিক্যাল কারণে যদি সেটা হয়, তাহলে তা মেরামত করতে হবে৷ তিস্তার জল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বাংলাদেশকে দেবেন না বলেননি৷ বলেছেন যথাযথ আলোচনার ভিত্তিতে যে জলটা বইছে, তার অনুপাতে ভাগ হোক৷
গোর্খাল্যান্ড আঞ্চলিক প্রশাসন সংক্ষেপে জিটিএ বিল নিয়ে কেন্দ্রের গড়িমসির অভিযোগ নিরসনে প্রধানমন্ত্রীর আশ্বাস, ২/১ দিনের মধ্যে প্রশাসনিক কাজ সম্পূর্ণ কোরে রাষ্ট্রপতির কাছে পাঠানো হবে অনুমোদনের জন্য৷ এই বিল নিয়ে মমতার উদ্বেগের অন্ত ছিলনা৷ বিল বিলম্বিত হবার কারণে গোর্খা জন মুক্তি মোর্চা আবার পাহাড়ে আন্দোলনের হুমকি দিয়ে রেখেছে৷
প্রতিবেদন: অনিল চট্টোপাধ্যায়, নতুনদিল্লি
সম্পাদনা: সঞ্জীব বর্মন