1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

মমতার রাজ্যে ‘দমবন্ধ' হওয়ার পরিস্থিতি, দায়িত্ব ছাড়লেন শাঁওলি

শীর্ষ বন্দ্যোপাধ্যায় কলকাতা
৮ জানুয়ারি ২০১৮

পশ্চিমবঙ্গ বাংলা অ্যাকাডেমির সভাপতির পদ থেকে ইস্তফা দিলেন শাঁওলি মিত্র৷ বললেন, এক ‘‌দমবন্ধ করা ‌পরিস্থিতি'‌র কথা৷ বর্তমান সরকারের বিরুদ্ধে যে অভিযোগ এই প্রথম নয়৷

Indien Westbengalen | Nandan, Filminstitut
ছবি: DW/P. Samanta

২০১১ সালে পশ্চিমবঙ্গে ৩৪ বছরের বামফ্রন্ট সরকারকে হটিয়ে পরিবর্তন আনার পক্ষে রাস্তায় নেমেছিলেন যেসব বুদ্ধিজীবী, শাঁওলি মিত্র তাঁদের অন্যতম৷ শাঁওলির প্রয়াত পিতা, বাংলা থিয়েটারের প্রবাদপ্রতিম ব্যক্তিত্ব শম্ভু মিত্র তাঁর আইপিটিএ–র দিনগুলিতে বামপন্থি সংযোগ বাদ দিলে, চিরকাল প্রকাশ্য রাজনীতি এড়িয়েই চলেছেন৷ সেখানে তাঁর কন্যার ঘোষিতভাবে বামবিরোধী রাজনৈতিক অবস্থান নেওয়া এবং মমতা ব্যানার্জি ও তাঁর তৃণমূল কংগ্রেসের পক্ষে মিটিং মিছিল করা এক অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ইঙ্গিত ছিল৷ পশ্চিমবঙ্গে ক্ষমতাসীন বামপন্থিদের ব্যাপারে সাংস্কৃতিক কর্মীদের শুধু মোহভঙ্গই নয়, কী পরিমান বিদ্বেষও জমা হয়েছে, তা স্পষ্ট বোঝা গিয়েছিল কবি, লেখক, শিল্পী, নাট্যকর্মী এবং বিদ্বদজনেদের পরিবর্তনের পক্ষে পথে নামায়৷

সেসময় তাঁরা অভিযোগ তুলেছিলেন, রাজ্যে সুস্থ সংস্কৃতি চর্চার পরিবেশ বজায় রাখেনি শাসকদল৷ সর্বত্র রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ হচ্ছে৷ সৃজনশীল মানুষের জন্য এক দমবন্ধকরা পরিবেশ তৈরি হয়েছে৷ নতুন কিছু সৃষ্টি করার যে স্বাধীন পরিসর, তা নেই৷

ইতিহাসের পুনরাবৃত্তিই বলতে হবে, পাঁচ বছরেরও বেশি সময় রাজ্য বাংলা অ্যাকাডেমির প্রধান দায়িত্বে থাকার পর ইস্তফাপত্র জমা দেওয়ার সময় শাঁওলি মিত্র অবিকল সেই অভিযোগই তুললেন৷ দমবন্ধ পরিস্থিতি এবং স্বাধীনতার অভাব৷

‘ভবিষ্যতে এরকম আরও অনেকেই সরে আসবেন’

This browser does not support the audio element.

শাঁওলি মিত্র বাংলা অ্যাকাডেমির দায়িত্ব পেয়েছিলেন ২০১২ সালে৷ তারপর থেকে নজরে পড়ার মতো বেশ কিছু কাজ করেছে অ্যাকাডেমি৷ অনেকগুলি বই ছাপা হয়েছে৷ কিন্তু এবার, কলকাতা আন্তর্জাতিক বইমেলা যখন সামনে, বাংলা অ্যাকাডেমির কোনও নতুন বই নেই বলে শোনা যাচ্ছে৷ অ্যাকাডেমির কিছু নিয়োগেও রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ ছিল বলে শোনা যাচ্ছে, যা নিয়ে শাঁওলি মিত্রর আপত্তি ছিল৷এবং স্বাধীনভাবে কাজ করার সুযোগ নেই, পরিবর্তনের সরকারের বিরুদ্ধে এই অভিযোগ প্রথম উঠছে না৷

এর আগে রাজ্য চারুকলা পর্ষদের সভাপতির পদ থেকে ঠিক একই কারণে ইস্তফা দিয়েছেন শিল্পী সমীর আইচ৷

শাঁওলি মিত্রের মতো তিনিও থাকতেন পরিবর্তনের দাবিতে বুদ্ধিজীবীদের মিছিলের একেবারে সামনের সারিতে৷ সেসময় বিভিন্ন টিভি বিতর্কে জোর গলায় সওয়াল করতেন মমতা ব্যানার্জিই যে আদর্শ বিকল্প, সেই মত প্রতিষ্ঠায়৷ সমীর আইচকে আজকাল আর টিভি বিতর্কে দেখা যায় না৷ চারুকলা পর্ষদের সরকারি পদও তিনি আগেই ছেড়েছেন৷ ডয়চে ভেলেকে সমীরবাবু জানালেন, তিনি আশা করেছিলেন, শাঁওলি মিত্র আরও আগেই দায়িত্ব ছাড়বেন৷ যেভাবে তিনি ছেড়েছিলেন, বা যেভাবে নাট্যজগতের একাধিক ব্যক্তিত্ব দূরত্ব তৈরি করেছেন বর্তমান সরকারের সঙ্গে৷ কারণ, কাজ করার স্বাধীনতা নেই৷

রাজ্য চারুকলা পর্ষদের দায়িত্ব সমীর আইচ বিনা পারিশ্রমিকে পালন করেছেন ভবিষ্যৎ প্রজন্মের শিল্পীদের মুখ চেয়ে৷ কিন্তু শেষ পর্যন্ত মানিয়ে নেওয়া সম্ভব হয়নি৷ এবং সমীরবাবু ডয়চে ভেলেকে স্পষ্টই জানালেন, সম্ভবত শাঁওলি মিত্রই শেষ লোক নন, যিনি হতাশ হয়ে দায়িত্ব ছাড়লেন৷ ভবিষ্যতে এরকম আরও অনেকেই সরে আসবেন এই সরকারের সংস্পর্শ থেকে!‌

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য
স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ