1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

মরক্কোর বিরল বানর

মাবেল গুন্ডলাখ/এসবি১০ আগস্ট ২০১৬

বিরল, লুপ্তপ্রায় প্রাণীর সাক্ষাৎ পাওয়া ভাগ্যের বিষয়৷ মরক্কোর এমন এক বিরল প্রজাতির বানরের সন্ধানে বেরিয়ে তাদের সমস্যা সম্পর্কে অনেক কিছু জানা গেল৷ তারা আবার একজন মানুষের প্রতি বিশেষ আস্থা দেখায়৷

Rhesusaffe Nahaufnahme
ছবি: AP

ডয়চে ভেলের মাবেল গুন্ডলাখ তাঁর অভিযানের কাহিনি নিজেই শোনালেন৷

আমরা বেশ আরামে ‘বানর বাস'-এ করে চলেছি৷ একমাত্র এভাবেই জংলি বারবারি এপ দেখার সম্ভাবনা রয়েছে৷ ওয়েলস-এর সিয়ান ওয়াটার্স-এর নেতৃত্বে এক টিম কয়েক মাস ধরে এই লুপ্তপ্রায় বানর প্রজাতি পর্যবেক্ষণ করছে৷ মরক্কোর উত্তরে রিফ পর্বতশ্রেণিতে তাদের দেখা যায়৷ তিনি বলেন, ‘‘জংলি বারবারি এপ বা ম্যাকাক-দের আচরণ পর্যবেক্ষণ করতে মরক্কোর কিছু এলাকায়, যেমন মিডল অ্যাটলাস-এ একটি গবেষণা প্রকল্প চলছে৷ গবেষণার স্বার্থে তাদের মানুষের সান্নিধ্য মেনে নিতে অভ্যস্ত করা হয়েছে৷ এখানে তারা মোটেই মানুষ দেখে না, দেখলেই পালায়৷ তাদের অনুসরণ করা অসম্ভব৷''

এই বানর প্রজাতির বিচরণের এলাকা হুমকির মুখে পড়েছে৷ রিফ পর্বতশ্রেণিতে চাষের জমির স্বার্থে জঙ্গল সাফ করা হয়েছে৷ এমনকি বুহাশম-এর জঙ্গলও পুরোপুরি রক্ষা পায়নি৷ আমরা যেখান দিয়ে যাচ্ছি, সেখানে অবশ্য জঙ্গল অক্ষত রয়েছে৷ সিয়ান ওয়াটার্স আমাকে জানালেন, সেই জায়গায় বানররা ভালোভাবে বসবাস করছে৷ অর্থাৎ তাদের দেখা পাবার আশা রয়েছে৷ ৪ দিন ধরে গবেষক দলের সঙ্গে ঘুরেও সফল হইনি৷

ছোট টিম, ১০ জনেরও কম সদস্য৷ তবে তাদের আন্তরিকতার অভাব নেই৷ তাঁদের মধ্যে আছেন মহম্মদ চিতওয়ান৷ তিনিই বানরদের সবচেয়ে কাছে যেতে পারেন৷ প্রায়ই তিনি একা পর্যবেক্ষণ করতে বের হন৷

তিনি সারা জীবন ধরে এই জঙ্গল চেনেন৷ দিনরাত সেখানে থেকেছেন৷ কোথায় বানররা থাকে, সেটাও তিনি জানেন৷ তারা সঙ্ঘবদ্ধভাবে বসবাস করে৷ এক একটা দলে ৪০ থেকে ৬০ জন করে বানর থাকে৷ তবে গাছের পাতা আর পাথরের মাঝে তাদের চেনা কঠিন৷ চিতওয়ান বলেন, ‘‘বানররা আমাকে সঙ্গ দেয়৷ তাই রাতে কখনো ভয় করে না৷ সকালে উঠেও দেখি, তারা আমার সামনে বসে আছে৷ সন্ধ্যায় ঘুমাতে যাবার আগে পর্যন্তও তাই৷ আমরা বন্ধুর মতো পরস্পরকে সুরক্ষা দেই৷''

বুয়াশেম-এর জঙ্গলে অনেক মেষপালক বানরদের বন্ধু ছিল না৷ বানর শিকার করে বিক্রি করা হতো৷ তবে তাদের মধ্যে অনেককে এই কাজ বন্ধ করতে রাজি করানো গেছে৷ প্রায়ই মেষপালকদের কুকুররা বানর শিকারে মেতে ওঠে৷ মেষপালক ইয়ুনুস অবশ্য বলেন, যে তাঁর কুকুররা শুধু গবাদি পশুর সুরক্ষা নিয়েই ব্যস্ত৷ কিন্তু প্রায়ই বানরদের উপর কুকুরের হামলা ও বানর-হত্যার ঘটনা ঘটে৷

পরের দিন আবহাওয়া এতই খারাপ, যে বানরের সন্ধান করার কোনো অর্থই হয় না৷ তাই আমরা সেই ভবনটি দেখতে গেলাম, যেখানে পশু সুরক্ষা কর্মীরা ভবিষ্যতে এক সুরক্ষা ও শিক্ষাকেন্দ্র গড়ে তুলতে চান৷ ভেতরে সিয়ান আমাকে বানর নিয়ে অবৈধ বাণিজ্যের দৃষ্টান্তের কিছু ছবি দেখালেন৷ তিনি বলেন, প্রায়ই তাদের গৃহপালিত পশু হিসেবে বিক্রি করা হয়৷ অথবা পর্যটকদের সঙ্গে ছবি তোলানোর জন্য অপব্যবহার হয়৷ এমন সব প্রাণীদের এখানে সাময়িক আশ্রয় দেওয়া হবে৷

ওয়াটার্স বলেন, ‘‘বে-আইনি ভাবে আটক বানরদের বাজেয়াপ্ত করতে আমরা বন বিভাগের কর্মীদের সঙ্গে আগেই কাজ করেছি৷ কয়েকটি বানরকে আমরা ভালোভাবে দেখে বোঝার চেষ্টা করি, তাদের আবার জঙ্গলে ছেড়ে দেওয়া যায় কিনা৷ তাদের আচরণ, তাদের মুক্তির সম্ভাবনা খতিয়ে দেখতে এখানে খুব সাধারণ একটি ভবন পেলে ভালো হয়৷ তখন পুরো কাজটা সহজ হয়ে যাবে৷ এই মুহূর্তে আমাদের সেই সুযোগ নেই৷''

নিজের চোখে জংলি বারবারি এপ দেখার আশা এখনো ছাড়িনি৷ পরের দিন আবার রওয়ানা হলাম৷ মহম্মদের সঙ্গে দেখা হলো৷ তিনি অন্য দিনের মতো একাই জঙ্গলে ঘুরছেন৷ তিনি বলেন, বানরদের দুটি দল দেখা গেছে৷ একটি দলের বানররা কোনো কারণে বিচলিত৷ আমরা তাই অন্য দলটির খোঁজ শুরু করলাম৷ অবশেষে ভাগ্য সদয় হলো৷ বিশ থেকে ত্রিশ মিটার দূর থেকে আমরা বেশ কয়েকটি বানর দেখতে পেলাম৷ তাদের শান্ত রাখতে আমরা এই দূরত্ব বজায় রাখলাম৷ একাধিক পরীক্ষা চালিয়ে দেখা গেছে, যে জংলি বারবারি এপ আরও স্বাস্থ্যবান হয়, ভালোভাবে বংশবৃদ্ধি করতে পারে৷ মানুষের সান্নিধ্যে এলে তাদের সেই ক্ষমতা কমে যায়৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য
স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ