1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

মরু-‌রাজ্যের নির্বাচন

রাজীব চক্রবর্তী নতুন দিল্লি
২৪ এপ্রিল ২০১৯

ভারতে এখন যে কোনো প্রান্তে কান পাতলেই শোনা যায় পাটিগণিতের হিসেব-‌নিকেশ৷ নির্বাচনি অঙ্ক৷ সাধারণ নির্বাচনে কার দখলে কতগুলি আসন৷ একদিকে নরেন্দ্র মোদী ও তাঁর ভারতীয় জনতা পার্টি, অন্যদিকে কংগ্রেস ও তাদের নেতা রাহুল গান্ধী৷

Indien Schmuggel RInder
ছবি: Shaikh Azizur Rahman.

দিল্লির মসনদ কার দখলে, এই প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে গোটা ভারত জুড়ে৷ গাঁ-‌গঞ্জে, হাটে-‌বাজারে সবাই ব্যস্ত দাঁড়িপাল্লায় যুযুধান বিজেপি ও কংগ্রেসের ওজন মাপতে৷ এবার সাধারণ নির্বাচনে কৃষি সমস্যা ও বেকারত্বের ইস্যু যেমন আছে তেমনই হিন্দু-‌মুসলিম, দেশপ্রেমেই ইস্যুও রয়েছে৷ সাধারণের হিসেব বলছে, এবার বিজেপির দুর্গ হিসেবে পরিচিত রাজ্য গুলিতে সবচেয়ে বেশি ধস নামার আশঙ্কা রয়েছে৷ এরমধ্যে রয়েছে উত্তরপ্রদেশ, রাজস্থান, মধ্যপ্রদেশ, ছত্তিশগড় ইত্যাদি৷ ডয়চে ভেলে ঘুরে দেখল মরু-‌রাজ্য রাজস্থানের বিভিন্ন শহরের অলিগলি৷

মোদী ভাষণ দেওয়া ছাড়া কোনও কাজ করেননি: দেবীলাল

01:53

This browser does not support the video element.

রাজস্থানের উদয়পুর শহর থেকে ২০ কিলোমিটার দূরে সিসারমা গ্রাম৷ তপশিলি উপজাতি সম্প্রদায়ের দেবীলাল অন্যের ক্ষেতে দিনমজুরি করে স্ত্রী ও দুই সন্তান নিয়ে দিন গুজরান করেন৷ তিনি জানালেন, গতবার (‌২০১৪ সাল)‌ তিনি নরেন্দ্র মোদীর ঝড়ে ভেসে গিয়ে বিজেপিকে ভোট দিয়েছিলেন৷ এবার কী করবেন?‌ জানতে চাইতেই অকপটে জানিয়ে দিলেন, ‘‌‘‌এবার কংগ্রেসের হাত চিহ্নে৷ কারণ মোদী ভাষণ দেওয়া ছাড়া কোনও কাজ করেননি৷''

রাজস্থানে গতবার ২৫টি আসনের সবকটিতেই জিতেছিল বিজেপি৷ এবার কী হবে?‌ শোনা যাচ্ছে, রাজস্থানে ‌২৫-‌এ ২৫ আর জুটবে না বিজেপির ভাগ্যে৷ খেলা শেষ হতে পারে ১৩-‌১২তে৷ কংগ্রেসের অভ্যন্তরীণ গণিত বলছে, তারা এবার পেতে পারে ১২টি৷ বিজেপি ১৩টি আসন৷ আবার রাজ্যের জুয়াড়িরা বিজেপিকে এগিয়ে রাখছে৷ ১৫-‌১০-‌এর হিসেবে মোটা টাকার জুয়া চলছে৷ সে যাই হোক, মোটের ওপর বোঝা গেল, পাঁচ বছর আগের ‘‌মোদী লহর' আর নেই৷ তবে তা শূন্যও হয়ে যায়নি৷ বিজেপি সরকারের বিগত পাঁচ বছরের সাফল্যের থেকে অনেক বেশি করে তুলে ধরছে নরেন্দ্র মোদীকে৷ স্বভাবতই মোদীর সযত্নে গড়েতোলা ভাবমূর্তিতে ভর করে এবারও নির্বাচনি বৈতরণী পার হওয়ার স্বপ্ন দেখছে শাসক দল৷

দুই ধর্মের মাতব্বররা হিংসা ছড়ানোর মতো ভাষণ দেন: মোতিলাল

02:01

This browser does not support the video element.

উলটোদিকে, মোদী সরকারের দুর্নীতি, বেকারত্ব ও কৃষি সমস্যাকে সামনে রেখে কংগ্রেস ক্ষমতায় এলে কী কী করবে, তা নিয়ে দেশজুড়ে প্রচারে ঝাঁপিয়ে পড়েছেন শতাব্দী প্রাচীন কংগ্রেস দলের সভাপতি রাহুল গান্ধী৷

রাজস্থানে জাত-‌পাতের হিসেবে ভোট হয় আজও৷ পাহাড়ের কোল ঘেঁষা গাঁ লাখাবলি৷ মুদির দোকান চালান মোতিলাল প্রজাপত৷ প্রজাপতরা পেশায় কুমোর৷ তাতে পেট ভরে না৷ তাই চাষাবাদ ও দিনমজুরিই ভরসা৷ মোড়ল গোছের মানুষ৷

এই রাজ্যে গো-‌রক্ষার নামে দলিত সম্প্রদায়ের মানুষদের পিটিয়ে খুন করার ঘটনা ঘটেছে৷ সেই প্রসঙ্গ তুলতেই মোতিলাল বলতে শুরু করলেন, ‘‌‘নিজেদের রাজনৈতিক স্বার্থে ‌হিন্দু-‌মুসলিমদের মধ্যে উত্তেজনা ছড়ানোর কাজ করেন রাজনীতিকরা৷ এছাড়া দুই ধর্মের মাতব্বররা হিংসা ছড়ানোর মতো ভাষণ দেন৷ আমরা হিন্দু-‌মুসলিম গ্রামে মিলেমিশে থাকতেই পছন্দ করি৷'' 

মোদীকে আরও পাঁচটা বছর সময় দেওয়া উচিত: হিতেশ

01:28

This browser does not support the video element.

আর এক শহর যোধপুর যাওয়ার পথে সিসোরমা গ্রামে পেয়ারা বাগান পরিচর্যা করছিলেন বাগানের মালিক নারায়নলাল ও তাঁর ছেলে হিতেশ নাগদা৷ বহুযুগ আগে বসবাসের জন্য এই গ্রামটি ব্রাহ্মণদের উপহার দিয়েছিলেন মহারাণা উদয় সিং৷ তিন বিঘা পেয়ারা বাগানের মালিক সপরিবারে কট্টর বিজেপি সমর্থক৷

কয়েক মাস আগে রাজ্যের পরাজিত মুখ্যমন্ত্রী বসুন্ধরা রাজে সিন্ধিয়ার নাম শুনেই ক্ষেপে উঠলেন হিতেশ৷ তবে মোদীর নামে বেশ নরম ওঁরা৷ হিতেশের কথায়, ‘‘‌মোদীকে আরও পাঁচটা বছর সময় দেওয়া উচিত৷'‌'‌ তাঁর দাবি, ‘‌‘‌কৃষিতে আর লাভ নেই৷ শিক্ষিতরা চাষাবাদের পাশাপশি অন্য কাজ খুঁজে নিচ্ছেন৷ শুধু চাষের ভরসায় থাকলে অর্ধাহারে, অনাহারে বেঁচে থাকা ছাড়া উপায় নেই৷''

রাজ্যে রাজনৈতিক হাওয়া আর আগের মতোও শুধুই বিজেপিমুখি নেই৷ তপসিলি জাতি ও উপজাতি ভোটারের প্রাধান্য রয়েছে রাজ্যে৷ গত পাঁচ বছরে বিজেপি সরকারের নোটবন্দি, জিএসটি ইত্যাদি পদক্ষেপের নিন্দায় সরব মহম্মদ হানিফ৷

কালোটাকা ও দুর্নীতি রোধের নামে গরিবের অস্বস্তি বাড়িয়েছেন মোদী: হানিফ

02:44

This browser does not support the video element.

তাঁর মতে, কালোটাকা ও দুর্নীতি রোধের নামে গরিবের অস্বস্তি বাড়িয়েছেন মোদী৷ ধনীর গায়ে আঁচ লাগেনি পর্যন্ত৷ ওদিকে, রাহুল গান্ধীর ইশতেহারে ‘‌ন্যায়'‌ যোজনার নাম শুনেছেন৷ বিস্তারিত জানেন না তিনি৷রাজস্থানে ভোটের লড়াই বিজেপি বনাম কংগ্রেসের৷ কয়েক মাস আগেই রাজ্যে  বিজেপির বসুন্ধরা রাজে সিন্ধিয়ার রাজ্য সরকারকে উপড়ে ফেলেছে এখানকার জনতা৷ প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বসুন্ধরা সম্পর্কে সাধারণ মানুষের ধারণা ছিল, ‘‌এইট পিএম, নো সিএম৷'‌ বিজেপি মনে করছে, বসুন্ধরার ওপর রাগ ঝেড়ে ফেলে ভোটার অনেকটাই হাল্কা হয়েছে৷ তাই এবার সাধারণ নির্বাচনে কেন্দ্রে সরকার গঠনে মোদীকেই এগিয়ে রাখবে রাজস্থান৷ যদিও মরুভূমের তপ্ত মাটির বাসিন্দারা বলছে, ক্রমশ জমি হারাচ্ছে বিজেপি৷

প্রতিবেদনটি সম্পর্কে আপনার মতামত জানান, লিখুন নীচের ঘরে৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

আরো সংবাদ দেখান
স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ