কক্সবাজারের টেকনাফ উপজেলার লালদিয়া সীমান্তে মিয়ানমার থেকে আবারও থেমে থেমে মর্টার ও গুলির শব্দ শোনা যাচ্ছে। এলাকাটি হ্নীলা ইউনিয়নের মধ্যে পড়েছে। ওই এলাকায় বসবাসরত মানুষ আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন।
বিজ্ঞাপন
ভোররাত তিনটা থেকে সকাল সাড়ে আটটা পর্যন্ত সীমান্তের ওপারে মিয়ানমারের রাখাইনে মর্টার শেল নিক্ষেপ ও গোলাগুলির ঘটনা ঘটে। তবে আগের দিন মঙ্গলবার কোনো ধরনের শব্দ শোনা যায়নি।
গত বছর থেকে কক্সবাজার ও বান্দরবান সীমান্তে বিদ্রোহী আরাকান আর্মির (এএ) সঙ্গে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী ও দেশটির সীমান্তরক্ষী বর্ডার গার্ড পুলিশের (বিজিপি) গোলাগুলির ঘটনা ঘটে আসছে। সীমান্ত এলাকার বাসিন্দারা এর সঙ্গে অভ্যস্ত হয়ে পড়েছেন। যদিও গোলাগুলি হলে সবাই আতঙ্কিত হয়ে পড়েন।
টেকনাফ-২ বিজিবির অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. মহিউদ্দিন আহমেদ প্রথম আলোকে জানিয়েছেন, হঠাৎ করে মিয়ানমারের বিভিন্ন সীমান্তে মর্টার ও গুলির শব্দ ভেসে আসছে। এটি তাদের দেশেরঅভ্যন্তরীণ সমস্যা। তবে টেকনাফ সীমান্তে বিজিবি কঠোর অবস্থানে রয়েছে। যাতে এ সমস্যাকে কেন্দ্র করে নতুন করে কোনো ধরনের রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ না ঘটে।
নিজেদের কথা শোনাতে লড়ছে রোহিঙ্গা নারীরা
15:35
ইউপি সদস্য মোহাম্মদ আলী বলেন, ‘আমি রাতে কক্সবাজারে ছিলাম, কিন্তু ভোররাত ৩টা থেকে সকাল সাড়ে ৮টা পর্যন্ত লালদিয়া সীমান্তের বিপরীতে মিয়ানমারের জামবনিয়া, রাইম্মবিল, পেরাংপুরু ও কাইনবন্যা এলাকায় থেমে থেমে মর্টার শেল নিক্ষেপ ও গোলাগুলি হয়েছে। স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানতে পেরেছি, মিয়ানমারের সীমান্তে ২৮টি মর্টার শেল ও হাজারের বেশি গুলি ছোড়া হয়েছে। এতে করে সীমান্তের এ পারে বসবাসরত লোকজন আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন।'
প্রতিনিয়ত খুনোখুনি, হত্যা, অপহরণ, মুক্তিপণ, মাদক-চোরাচালানসহ বিভিন্ন ধরনের অপরাধে যুক্ত রোহিঙ্গারা। এর সঙ্গে আবার যুক্ত হয়েছে সীমান্তের ওই পারে মর্টার শেল ও গুলির শব্দ। স্থানীয়দের নির্ঘুম রাত কাটাতে হচ্ছে। মিয়ানমারের অভ্যন্তরের মর্টার শেল ও গুলি এ পারে এসে পড়ে কি না, সে আতঙ্কে ভুগছেন টেকনাফের স্থানীয় বাসিন্দারা।
এপিবি/এসিবি (দৈনিক প্রথম আলো)
রোহিঙ্গা আগমন বাড়ায় বিরক্ত ইন্দোনেশিয়ার মানুষ
চলতি বছর নৌকায় করে রোহিঙ্গাদের মিয়ানমার থেকে ইন্দোনেশিয়া যাওয়ার সংখ্যা বেড়েছে৷ এতে বিরক্তি প্রকাশ করেছেন সেখানকার স্থানীয় বাসিন্দারা৷
ছবি: Rahmat Mirza/AP/picture alliance
রোহিঙ্গার সংখ্যা
জাতিসংঘের শরণার্থী সংখ্যার হিসাবে নভেম্বরের শুরু থেকে এখন পর্যন্ত এক হাজার ২০০ এর বেশি রোহিঙ্গা নৌকায় করে মিয়ানমার থেকে ইন্দোনেশিয়া পৌঁছেছে৷ তারা দেশটির আচেহ প্রদেশে ঢুকেছে৷
ছবি: Rahmat Mirza/AP/picture alliance
একসময় সহানুভূতি ছিল
আচেহ প্রদেশে কিছু বিষয়ে ইসলামি শরিয়া আইন কার্যকর আছে৷ সেখানকার মানুষেরা একসময় রোহিঙ্গা পুরুষ, নারী ও শিশুদের প্রতি সহানুভূতিশীল ছিলেন৷ কিন্তু এখন সেই পরিস্থিতি নেই৷
ছবি: Chaideer Mahyuddin/AFP/Getty Images
‘কেন তাদের নেব?’
আচেহর পিদি এলাকার ২৭ বছর বয়সি এলা সাপতিয়া রয়টার্সকে বলেন, ‘‘এখনও এখানে অনেক গরিব মানুষ আছেন৷ আমরা কেন হাজার হাজার রোহিঙ্গাদের নেব? তারা অনেক সমস্যা করে৷ তারা বিয়েবহির্ভূত যৌনমিলনে লিপ্ত হয়, মাদক সেবন করে৷
ছবি: Riska Munawarah/REUTERS
নৌকা ফিরিয়ে দেওয়ার হুমকি
চলতি বছর রোহিঙ্গারা স্থানীয়দের কাছ থেকে শত্রুতাপূর্ণ আচরণ পেয়েছে৷ এমনকি তাদের নৌকা ফিরিয়ে দেওয়ারও হুমকি দেওয়া হয়েছে৷ গত সপ্তাহে সাবাঙ এলাকায় রোহিঙ্গাদের জন্য তৈরি তাঁবু সরিয়ে ফেলেন স্থানীয়রা৷
ছবি: Riska Munawarah/REUTERS
আরও প্রতিক্রিয়া
আচেহতে এখন অনেক বেশি রোহিঙ্গা বলে মন্তব্য করেছেন ৩০ বছর বয়সি দেশি সিলভানা৷ ‘‘এ বছর কয়েকশ, না কয়েক হাজার এসেছেন৷’’ সামাজিক মাধ্যম এক্স-এ একজন লিখেছেন, ‘‘যদি রোহিঙ্গাদের জন্য ব্যবহার করা হয় তাহলে আমি কর দিতে চাই না৷’’ আরেকজন রোহিঙ্গাদের ‘পরজীবী’ বলে আখ্যায়িত করেছেন৷
ছবি: Riska Munawarah/REUTERS
নভেম্বর থেকে এপ্রিল
বছরের এই সময়টায় সাগর শান্ত থাকায় মিয়ানমার থেকে রোহিঙ্গারা নৌকা করে থাইল্যান্ড, মালয়েশিয়া ও ইন্দোনেশিয়া যাওয়ার চেষ্টা করেন৷
ছবি: Rahmat Mirza/AP/picture alliance
প্রেসিডেন্টের বিবৃতি
শুক্রবার এক বিবৃতিতে ইন্দোনেশিয়ার প্রেসিডেন্ট জকো উইদোদো বলেন, মানবপাচারকারীদের কারণে রোহিঙ্গাদের আগমন বেড়েছে৷ তাদের অস্থায়ীভাবে আশ্রয় দিতে আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর সঙ্গে কাজ করার অঙ্গীকার করেন তিনি৷