1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

মশা দমনে নতুন কৌশল – বিভ্রান্তিকর গন্ধ

২৩ আগস্ট ২০১১

মশারা যে শুধু বিরক্তিকর তাই নয়, ম্যালেরিয়া ও ডেঙ্গুর মতো অনেক মারাত্মক রোগের বাহকও৷ এজন্য মশাকে দমন করার ব্যাপারে নানারকম কৌশল বের করার চেষ্টা করছেন গবেষকরা৷

aufgenommen am 16. November 2010 in Bengaluru, Karnataka, Indien, geladen am 7.6.2011 Link: http://www.flickr.com/photos/somaskanda/5184047524/in/photostream/ Lizens: http://www.flickr.com/photos/somaskanda/5184047524/in/photostream/ Asian tiger mosquito, Die Asiatische Tigermücke ist erstmals 2008 in Deutschland aufgetaucht. Sie kann gefährliche Krankheiten, wie das Chikungunya-Fieber und andere leidvolle Erreger wie das West-Nil, Dengue- oder das Gelbfiebervirus übertragen. Schätzungsweise hat sie es über die Alpen nach Deutschland geschafft.
ছবি: CC/somaskanda

মশারা মানুষ ও জীবজন্তুর রক্ত খেয়ে বেঁচে থাকে৷ অ্যানোফেলিস এবং কিউলেক্স মশা ম্যালেরিয়া, ডেঙ্গু ও শ্লীপদের মতো মারাত্মক বহু অসুখের বাহকও৷ মশাদের ঘ্রাণ নেওয়ার ক্ষমতা খুব প্রখর৷ মানুষ ও জীবজন্তু নিঃশ্বাস প্রশ্বাসের সাথে যে কার্বন-ডাই-অক্সাইড নির্গত করে, তা অনুসরণ করে প্রাণীটির কাছে চলে যায় তারা এবং হুল ফুটিয়ে রক্ত পান করে৷ অ্যামেরিকার ক্যালিফোর্নিয়া ইউনিভার্সিটির গবেষক আনন্দ রায় মশার ঘ্রাণেন্দ্রিয় নিয়ে পরীক্ষা নিরীক্ষা করছেন৷ এই ইন্দ্রিয়টিকে দিকভ্রষ্ট করতে পারলে মশার হুল ফোটানোর হাত থেকেও রক্ষা পেতে পারে প্রাণীরা৷ মশাকে বিতাড়িত করার প্রচলিত সব পদ্ধতিই এর ঘ্রাণকে কেন্দ্র করে৷ গবেষক আনন্দ রায় এক্ষেত্রে আরো একটু গভীরে গিয়ে মশার কার্বন-ডাই-অক্সাইড শোঁকার ক্ষমতাটাকে ওলটপালট করে দিতে চান৷ এব্যাপারে ১০০ ধরনের অ্যালকোহল ও অ্যাসিড নিয়ে পরীক্ষা নিরীক্ষা করে সফল হয়েছেন তিনি৷ আনন্দ রায়ের ভাষায়, ‘‘আমরা তিন ধরনের গন্ধ খুঁজে পেয়েছি, যেগুলি কার্বন-ডাই-অক্সাইডের গন্ধ পাওয়ার ওপর প্রভাব রাখতে পারে৷ প্রথমটি ঘ্রাণ নেওয়ার অনুভূতিকে রুদ্ধ করে দেয়৷ মশারা আর কার্বন-ডাই-অক্সাইডের গন্ধ পায়না৷ দ্বিতীয়টি কার্বন-ডাই-অক্সাইড গ্যাসের মত কাজ করে, পতঙ্গগুলিকে কিছুটা ফাঁকি দিয়ে মনে করায় কোথাও বুঝি খাদ্য আছে৷ আর তৃতীয়টি আমাদের বিস্মিত করেছে৷ একবারে নতুন ধরনের৷''

ছবি: picture-alliance/dpa

মশার ঘ্রাণ ইন্দ্রিয়কে বিভ্রান্ত করা হয়

এই তৃতীয় ধরনটি মশার কার্বন-ডাই-অক্সাইডের ঘ্রাণ নেয়ার সংকেতকে বিভ্রান্ত করে ফেলতে পারে৷ সাধারণতঃ গন্ধ পাওয়ার সাথে সাথে সংকেতটা মস্তিষ্কে পৌঁছে যায়৷ নতুন ধরনের পদার্থ ঘ্রাণের সংবেদন কোষকে উত্তেজিত করে কয়েক মিনিট ধরে মস্তিষ্কে সংকেত পাঠাতে থাকে, গন্ধ উদ্দীপক বস্তুটি কাছে না থাকলেও৷ এই ভাবে মশাদের কার্বন-ডাই-অক্সাউডের গন্ধ শোঁকার অনুভূতিকে ওলটপালট করে ফেলা যায়৷ এ বিষয়টি নিয়ে গবেষণা করে দেখিয়েছেন আনন্দ রায়৷ এজন্য প্রয়োজন এক মিটার দীর্ঘ একটি নলের, যার ভেতরে দুটো ক্যামেরা দিয়ে পতঙ্গগুলিকে লক্ষ্য করা হয়৷ নলের এক প্রান্তে থাকে একটি কার্বন-ডাই-অক্সাইড গ্যাস উত্পাদক যন্ত্র এবং একটি বায়ু উত্পাদক জেনেরেটর, অন্য দিক দিয়ে মশাগুলিকে প্রবেশ করানো হয়৷ এ প্রসঙ্গে আনন্দ রায় জানান, ‘‘এর আগে আমরা মশাগুলিকে নতুন ধরনের গন্ধের সংস্পর্শে এনেছিলাম৷ তাই তাদের মাথা গুলিয়ে যায় এবং একই বৃত্তে ঘুরতে থাকে তারা৷ কার্বন-ডাই-অক্সাইডের উত্স খুঁজে পায়না৷''

অন্যদিকে নতুন ধরনের গন্ধের সংস্পর্শ ছাড়া মশাদের নলের মধ্যে ছেড়ে দিলে কয়েক সেকেন্ডের মধ্যেই কার্বন-ডাই-অক্সাইডের উত্তপত্তিস্থলে ছুটে যায় তারা৷ পার্থক্যটা বিস্ময়কর৷

নতুন কৌশলের সুফল দেখা গেছে বাস্তবেও

গবেষক আনন্দ রায় বাস্তব ক্ষেত্রে এই পদ্ধতির প্রয়োগ করে সুফল পেয়েছেন৷ কেনিয়ার এক গ্রামের কয়েকটি কুঁড়ে ঘরে কার্বন-ডাই-অক্সাইড উত্পাদক যন্ত্র রেখে পরীক্ষা নিরীক্ষা করেছেন তিনি, যেখানে চারপাশে ছিল মশার উপদ্রপ৷ কয়েকটি ঘরে ছাড়া হয় মশাকে বিভ্রান্ত করার গন্ধ৷ সারারাত ধরে মশাগুলি প্রবেশ করে ঘরগুলিতে৷ পরদিন দেখা গেল গন্ধহীনের চেয়ে গন্ধযুক্ত ঘরগুলিতে মাত্র অর্ধেক মশা রয়েছে৷ তবে এই পদ্ধতির মাধ্যমে মশাকে দমন করে সংক্রামক রোগ ব্যাধি দূর করা কতটা সফল হবে, তা এখনই বলা যায়না৷ কিন্তু এক্ষেত্রে পরীক্ষা নিরীক্ষার ফলাফল আশাব্যঞ্জক, মনে করেন মেরিল্যান্ডের ‘ন্যাশনাল ইন্সটিটিউট অব হেল্থের' পতঙ্গ গবেষক মার্ক স্টোপ্ফার৷ তাঁর ভাষায়, ‘‘গবেষকরা দেখিয়েছেন যে, তাঁদের অনুমান সঠিক৷ তাঁরা এমন এক পদ্ধতি বের করেছেন, যা মশা দমনে প্রচলিত কলা কৌশলের পরিপূরক হতে পারে৷''

মশা দমনের এই গন্ধ মানুষের জন্য ক্ষতিকর কিনা, সে বিষয়টি অবশ্য স্পষ্ট নয়৷ এছাড়া নতুন ধরনের মশা নিরোধক গন্ধের কোনো কোনোটি খুবই অস্বস্তিকর, যেমন পচা মাখনের মত৷ তাই আনন্দ রায় ও তাঁর সহকর্মীরা এখন এমন ধরনের গন্ধের অণু বের করার চেষ্টা করছেন, যেগুলি মানুষের জন্য ক্ষতিকর নয়, এটা নিশ্চিতভাবে বলা যায়৷

প্রতিবেদন: রায়হানা বেগম

সম্পাদনা: দেবারতি গুহ

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ