ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. জোবায়দুর রহমান ঢাকায় মশা বেড়ে চলার বেশ কিছু কারণ এবং মশা কমানোয় তাদের উদ্যোগ সম্পর্কে বিস্তারিত বলেছেন৷
বিজ্ঞাপন
ডয়চে ভেলে: এবার মশা মারার ক্র্যাশ প্রোগ্রামে নাকি নতুন কৌশল নিয়েছেন আপনারা? সেই কৌশলটা কী?
ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. জোবায়দুর রহমান: এবার পদ্ধতিতে পরিবর্তন এনেছি৷ আগে ঢাকা উত্তর সিটির (ডিএনসিসি) ১০ টি অঞ্চলে আমরা একবারে একই দিনে অভিযান চালাতাম৷ এবার তা না করে এক অঞ্চলে একদিন করে আমরা সব জনবল ও ইকুইপমেন্ট দিয়ে কাজ করছি৷
তাতে লাভ কী হবে?
আমাদের কীটতত্ত্ববিদরা বলেছেন এটা সুইপিং অপারেশনের মতো হবে৷ প্রত্যেক অঞ্চল আলাদাভাবে করে আমরা শেষ পর্যন্ত যেখান থেকে শুরু করেছি সেখানে ফিরে আসবো৷ আমরা পুরো জনবল এক অঞ্চলে নিয়োজিত করে লার্ভ সাইড এবং অ্যাডাল্ট সাইড ধংস করবো৷ এতে সুফল পাবো বলে আশা করছি৷
ঢাকায়দুই সিটিতেই মশার ঘনত্ব চারগুণ বেড়েছে৷ আর আপনারা গত জানুয়ারি থেকে অক্টোবর পর্যন্ত ১০ মাস অ্যাডাল্টি সাইড করেননি৷ তাহলে কী ধরনের কাজ করেছেন?
যারা বলছেন চারগুণ বেড়েছে, তারা তাদের মতো করে বলছেন৷ আমরাও বলছি, মশা বেড়েছে৷ কিন্তু চারগুণ বেড়েছে- ওভাবে আমরা বলছি না৷ তবে মশা অবশ্যই বেড়েছে৷ আর আমরা গত ১০ মাস অ্যাডাল্টি সাইড করিনি, এটা ঠিক না৷ প্রতিদিন বিকেল বেলায় আমরা যে ফগিং করি, সেটা কিন্তু অ্যাডাল্ট মশা নিয়ন্ত্রণের জন্য৷ এটা প্রতিদিনের জন্যই হচ্ছে৷ করোনার মধ্যেও এক বছরে আমরা ছয়টি চিরুনি অভিযান করেছি৷
‘করোনার মধ্যেও এক বছরে আমরা ছয়টি চিরুনি অভিযান করেছি’
‘নোভালুরণ’নামেএকটিকীটনাশকপ্রায়৪৬ লাখ টাকা খরচ করে চার মাস আগে মশারপ্রজননস্থলে ব্যবহার করেছিলেন৷ উদ্দেশ্য ছিল লার্ভা অবস্থায়ই মেরে ফেলা৷ লার্ভা তো সেই ওষুধে মরেনি বলে খবর প্রকাশ হয়েছে...
ওষুধটা কিন্তু কার্যকর৷ যারা বলছেন কাজ করেনি, তারা ধারণাপ্রসূত কথা বলছেন৷ আমাদের কীটতত্ত্ববিদরা ফিল্ডে প্রয়োগ করেছেন৷ আমরা ল্যাবরেটরিতে পরীক্ষা করেছি৷ আমরা শতভাগ কার্যকর পেয়েছি৷ তিন মাস পর্যন্ত কার্যকর থাকবে৷
মশারওষুধে নাকি মশা মরছেনা৷ আর মার্শাল কোম্পানির যে ওষুধ কিনেছিলেন তা কাজে আসছেনা বলে বাতিল করেছেন...
অবশ্যই মশা মরছে৷ আর ওষুধগুলো যে শতভাগ কার্যকর- সে বিষয়ে আমি শতভাগ নিশ্চিত৷ আমাদের কমিটিতে জনপ্রতিনিধিসহ নানা সেক্টরের লোক আছেন৷ কীটতত্ত্ববিদ আছেন৷ তাদের সামনেই ওষুধের কার্যকারিতা পরীক্ষা করা হয়৷ এরপর থেকে আমরা সাংবাদিকদের সামনেই এর কার্যকারিতা পরীক্ষা করবো৷
আপনারালার্ভাওঅ্যাডাল্টমশামারতেকী কৌশলে কাজ করেন?
লার্ভার জন্য স্প্রে করি৷ আর অ্যাডাল্ড মশা মারার জন্য ফগিং করি৷ আমরা সর্বাত্মকভাবে চেষ্টা করছি৷ তবে একটা জিনিস মনে রাখতে হবে, প্রাকৃতিক কারণে কোনো বছরে মশা বেশি হয়, কোনো বছরে কম হয়৷ এবার শুধু ঢাকা নয়, চট্টগ্রাম, রাজশাহী বড় বড় শহরে এবার মশা বেশি৷ শুধু বড় শহর নয়, সব এলকায়ই মশা বেশি৷
ঢাকায় মশার উপদ্রব ঠেকাতে অভিযান
মশা নিয়ন্ত্রণে ৮ মার্চ থেকে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন (ডিএনসিসি) মোট পাঁচটি অঞ্চলে দুই সপ্তাহের জরুরি কর্মসূচি শুরু করেছে, যা চলবে ১৬ মার্চ পর্যন্ত৷
ছবি: DNCC
সব জায়গায় মশা
রাজধানীর গুলশান, ধানমন্ডি, বনানীর মতো অভিজাত এলাকায় বসবাসকারীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, মশার কারণে তারা অতিষ্ঠ৷ গুলশান সোসাইটির মহাসচিব শুকলা সারওয়াত বলেন, ‘‘গুলশানের মতো অভিজাত এলাকাতেও মশার এই সাংঘাতিক উপদ্রব থেকে রেহাই পাচ্ছি না৷’’
ছবি: Mortuza Rashed/DW
পরিচ্ছন্নতা
বিশেষজ্ঞরা বলেন, মশার উপদ্রব থেকে রক্ষা পেতে পরিচ্ছন্নতা একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে৷ মশা যেসব জায়গায় বংশবিস্তার করতে পারে, সেসব স্থান নিয়মিত পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে৷ এক্ষেত্রে সরকারের পাশাপাশি সাধারণ নাগরিকদেরও ভূমিকা অনেক৷
ছবি: Mortuza Rashed/DW
গাছ কাটা কোনো সমাধান?
বৃহস্পতিবার গুলশান-বাড্ডা লেকপাড়ে ডিএনসিসির পরিছন্নতা অভিযান চলাকালে কিছু ফলজ গাছ কেটে ফেলা হয়৷ স্থানীয়রা ক্ষোভের সুরে বলেন, ‘‘উনারা গাছের গোড়ায় ওষুধ ছিটাতে পারতেন, কিন্তু গাছ কাটবেন কেন? এরকম হলে তো দেশে সব গাছই কেটে ফেলা উচিত৷’’
ছবি: Mortuza Rashed/DW
মশার রাজ্য
রাজধানীর গুলশান-বাড্ডা সংযোগ সড়কের গুদারাঘাটে লেকের পানিতে অসংখ্য মশা দেখা গেল৷ স্থানীয়রা জানালেন, দিনের বেলা মশাগুলো এখানে থাকলেও সন্ধ্যা হতে না হতেই বাসাবাড়িতে ছড়িয়ে পড়ে৷ তাদের দাবি, আশপাশের এলাকাগুলোর খাল এবং লেকেরও একই দশা৷
ছবি: Mortuza Rashed/DW
কিউলেক্স মশা বেড়েছে ৪ গুণ
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের শিক্ষক ড. কবিরুল বাশারের (ছবি) নেতৃত্বে করা এক গবেষণায় দেখা যায়, গত বছরের এই সময়ের তুলনায় এই বছর কিউলেক্স মশার ঘনত্ব বেড়েছে ৪ গুন৷ রাজধানীর খিলগাঁও, উত্তরা, শাঁখারিবাজারসহ মোট ছয়টি এলাকার তথ্য নিয়ে এ ফলাফল পাওয়া যায়৷
ছবি: Privat
শুধু কেরোসিনের গন্ধ
রাজধানীর গুদারাঘাট এলাকার বাসিন্দা আশরাফুল ইসলাম অভিযান চলাকালে বলেন, ‘‘ছোটবেলায় আমরা দেখতাম ফগার মেশিন দিয়ে একবার ওষুধ ছিটালে আর কোনো মশা থাকত না৷ আর এখন শুধু কেরোসিনের গন্ধ পাওয়া যায়৷”
ছবি: Mortuza Rashed/DW
মনিটরিং বড় চ্যালেঞ্জ
বৃহস্পতিবার গুলশান-বাড্ডা সংযোগ সড়কে সমন্বিত অভিযান পরিদর্শনকালে ডিএনসিসি মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম বলেন, ‘‘মশক নিধনে মনিটরিং কার্যক্রম খুবই গুরুত্বপূর্ণ৷ এজন্য ১২০০ মশক নিধন কর্মীকে বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে হাজিরা নিশ্চিতকরণ ও ট্র্যাকিং করা হবে৷ চতুর্থ প্রজন্মের এই যুগে মশকনিধনেও চালু করা হবে আধুনিক প্রযুক্তি৷’’
ছবি: Mortuza Rashed/DW
দাঁড়ানো যায় না একদণ্ড
দেশের সবচেয়ে বড় বিমানবন্দর হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে সন্ধ্যা না হতেই ঘিরে ধরে হাজার হাজার মশা৷ একটি আন্তর্জাতিক মানের বিমানবন্দরে এ চিত্র কীভাবে থাকতে পারে তা ভাবতেই পারছেন না বিদেশ ফেরত এবং বিদেশি গমনেচ্ছুদের অনেকে৷
ছবি: Mortuza Rashed/DW
কীটতত্ত্ববিদদের মতামত
একটানা ৫ বছর কোনো কীটের বিরুদ্ধে একই ওষুধ প্রয়োগ করলে প্রাকৃতিকভাবেই তা প্রতিরোধী হয়ে পড়ে বলে জানান বিশেষজ্ঞরা৷ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ড. মুর্শিদা বেগম জানান, মালয়েশিয়াসহ অনেক দেশে কীটনাশকের সাথে সাইনারজিস্ট ব্যবহার করে ভালো ফলাফল পাওয়া গেছে৷ সুতরাং আমার মনে হয় মশক নিধনে বাংলাদেশেও এ ধরনের কীটনাশক ব্যবহার করা যেতে পারে৷
ছবি: Mortuza Rashed/DW
‘কিউলেক্স মশায় নেই ভয়’
গত ৩ মার্চ এলজিআরডি মন্ত্রী মোঃ তাজুল ইসলাম বলেন, ‘‘এনোফিলিস ও কিউলেক্স মশা বিপদজনক নয়, এ মশা নিয়ে আতঙ্কের কিছু নেই৷’’ এ কথার প্রতিক্রিয়ায় স্থানীয় অধিবাসী লিটন সরকার মশার কামড়ের কারণে তার চর্মরোগ দেখিয়ে বলেন, ‘‘তাহলে কি আমরা এভাবে মশার কামড় খেতেই থাকবো?’’
ছবি: Mortuza Rashed/DW
মশা মারতে ড্রোন
ডিএনসিসির প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল জোবায়দুর রহমান বলেন, যেসব জায়গায় মানুষ পৌঁছাতে পারবে না, সেসব জায়গায় আমরা অত্যন্ত অল্প সময়ে ড্রোনের মাধ্যমে মশার ওষুধ ছিটাতে পারবো৷ ইতিমধ্যে পরীক্ষামূলকভাবে এই কার্যক্রম চলেছে৷ তবে এ ব্যাপারে আরো বিস্তর যাচাই-বাছাইয়ের মাধ্যমে আদৌ এ পদ্ধতি কার্যকর হবে কিনা সে বিষয়ে বিশেষজ্ঞদের পরাম,র্শ নেওয়া হবে৷
ছবি: Private
সমন্বিত কার্যক্রম
ডিএনসিসি কর্তৃক পরিচালিত দুই সপ্তাহব্যাপী ক্র্যাশ প্রোগ্রামের অংশ হিসেবে মশক নিধনের পাশাপাশি অবৈধ দখল উচ্ছেদেরও উদ্যোগ গ্রহণ করেছে কর্তৃপক্ষ৷ এরই অংশ হিসেবে মোহাম্মদপুর এলাকার রামচন্দ্রপুর খালে জনৈক বেলায়েত হোসেনের অবৈধভাবে দখলকৃত জায়গা মেয়রের নির্দেশে পুনরুদ্ধার করা হয়৷
ছবি: DNCC
12 ছবি1 | 12
কোন প্রাকৃতিক কারণে এবার মশা বেশি?
আমার কাজকে আমি জাস্টিফাই করছি না৷ তবে আমিও মাননীয় মেয়র থেকে সব কর্মকর্তা এবং কর্মীরা শতভাগ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি এই মশা নিয়ন্ত্রণের জন্য৷ কিন্তু সিটি কর্পোরেশনের একার পক্ষে সম্ভব নয়৷
সিটি কর্পোরেশনের মোবাইল কোর্ট কি লার্ভা নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে?
পাঁচটি মোবাইল কোর্ট কাজ করছে৷ লার্ভা পেলে আমরা প্রতিদিনই কোনো প্রতিষ্ঠানকে বা বাড়ির মালিককে অথবা দোকান মালিককে জরিমানা করছি৷ আজও (বুধবার) আমরা জরিমানা করেছি৷ মিল্কভিটা একটা সরকারি প্রতিষ্ঠান৷ সেখানে হাজার হাজার লার্ভা প্রতিনিয়ত জন্ম নিচ্ছে৷ তাদের বিরুদ্ধে আমরা নিয়মিত মামলা করেছি৷ জরিমানা করেছি৷
এবার এত মশা বাড়ার কারন কী?
একটা কারণ প্রাকৃতিক ও পরিবেশগত৷ দ্বিতীয়ত, গত বছরের নভেম্বর এবং ডিসেম্বরে বৃষ্টি হয়েছে৷ কিউলেক্স মশার সিজন নভেম্বর থেকে মার্চ-এপ্রিল-মে পর্যন্ত৷ ওই সময়ে বৃষ্টি হওয়ায় কিছু জলাবদ্ধতা তৈরি হয়েছে৷ মশা সৃষ্টির একটি ক্ষেত্র তৈরি হয়েছে৷ এছাড়া ওয়াসার যে খাল আছে, তাতে এহেন জিনিস নাই যে ফেলা হচ্ছে না৷ তাতে জলাবদ্ধতা তৈরি হয়েছে৷ বক্স কালভার্টেরও একই অবস্থা৷
যখন বৃষ্টি হলো তখন আপনারা কি কাজ করেননি? কাজ করলে তো এত মশা হতো না...
আমরা অবশ্যই খেয়াল করেছি এবং আমাদের কর্মতৎপরতা অব্যাহত আছে৷ আরেকটি বিষয়, আমি যদি প্রতিদিনই স্পেশাল এফোর্ট দিই সেটাই নর্মাল এফোর্ট হয়ে যায়৷
মশক নিধন কর্মীদের মধ্যে সমন্বয় নেই৷ তারা যে এলাকায় যাচ্ছেন, সেই এলাকা চেনেন না৷ আবার ফগিং মেশিনে ওষুধ কম দেয়ার অভিযোগও আছে...
না, আমরা ফগিং মেশিনের কন্টেইনার ফুল করে দিচ্ছি৷ ওষুধ সাপ্লাই নাই এটা ভুল তথ্য৷
প্রত্যেক বছরই তো একই অবস্থা হয়৷ আপনারা কাজ করেন, মশা মরে না৷ এটা কি আপনারা মূল্যায়ন করেন? কেন এমন হয়?
আমরা মূল্যায়ন করি৷ আমাদের পরামর্শক আছেন, কীটতত্ত্ববিদ আছেন৷ তাদের সাথে আলোচনা করি৷ তাদের পরিকল্পনায়ই কাজ করি৷
মশা মারতে দুই সিটি কর্পোরেশনের বছরে ১১৭ কোটি টাকা বাজেট৷ এই বাজেট কি কম?
না, বাজেট কম নয়৷ আমি বজেটকে দায়ী করতে চাই না৷ আপনাদের আরো কিছু জিনিস বুঝতে হবে৷ যেমন, ঢাকার অনেকগুলো জায়গা আছে, যা ছিটমহলের মতো৷ যেমন বসুন্ধরা৷ পুরো বসুন্ধরা কিন্তু সিটি কর্পোরেশনের মধ্যে নয়৷ কিন্তু সেখানে মশা জন্ম হচ্ছে৷ আবার এয়ারপোর্টের দায়িত্ব কিন্তু আমাদের নয়৷ আমরা তাদের মশা মারার মেশিন কিনে দিয়েছি৷ বলেছি, আপনারা মশা মারেন৷ আবার সিটি কর্পোরেশনের যেখানে শেষ, সেখানেও তো মশা হচ্ছে ৷ আমরা মারলাম, কিন্তু ওইসব জায়গা থেকে তো মশা উড়ে আসছে৷ সিটি কর্পোরেশনের বাইরে থেকে মশা আসছে৷ ওই মশা তো আমরা থামাতে পারছি না৷ কিন্তু আমাদের চেষ্টার কোনো কমতি নেই৷
মশা ও পোকামাকড় থেকে দূরে থাকার উপায়
ডেঙ্গু, চিকুনগুনিয়ার প্রকোপের পর মশা বা বিভিন্ন পোকামাকড়ের নাম শুনলেই কেমন যেন ভয় করে, তাই না? মশা, মৌমাছি বা এ জাতীয় পোকা থেকে নিজেকে দূরে রাখার কিছু সহজ উপায় থাকছে ছবিঘরে৷
ছবি: picture-alliance/dpa/J.Gathany
মিষ্টি খাবার দূরে রাখুন
‘মিষ্টি’ যে কোনো পোকামকড়কে কাছে টানে৷ বিশেষ করে মৌমাছিকে৷ তাই খাবার টেবিল থেকে মৌমাছিসহ অন্যান্য পোকাকে দূরে রাখতে এক গ্লাস মিষ্টি কোকাকোলা, ফান্টা বা মিষ্টি পানীয় দূরে কোথাও রেখে দিন৷ দেখবেন, পোকামাকড়ের অত্যাচার বা ঝামেলা ছাড়াই নিশ্চিন্তে খেতে পারছেন৷
ছবি: picture-alliance/dpa/R. Weihrauch
শান্ত থাকুন
মৌমাছি বা ভিমরুল আপনার কাছাকাছি ঘুরলে বা আপনাকে বিরক্ত করলে একদম চুপ বা শান্ত থাকুন৷ ওদের মারতে গেলে ওরা তখন আক্রমণাত্মক হয়ে ওঠে৷ কাজেই সাবধান!
ছবি: picture-alliance/blickwinkel/McPHOTO
মশার পছন্দ কালো পোশাক
মশার পছন্দ কালো বা গাঢ় রঙের পোশাক৷ তাই যেখানে মশা আছে, সেখানে হালকা রঙের পোশাক পরাই শ্রেয়৷ বিশেষ করে রাতের বেলায়৷ বাগানে বা বাইরে গরম হলেও ফুলপ্যান্ট এবং লম্বা হাতের জামা পরা উচিত৷ আর খোলা মাঠে ঘাসের ওপর বড় ছোট কেউ-ই খালি পায়ে একদম হাঁটবেন না৷
ছবি: Getty Images/S. Gosatti
পারফিউম মশাকে কাছে টানে
পারফিউম, হেয়ার স্প্রে বা সুগন্ধী প্রসাধনী ব্যবহার না করাই ভালো৷ কারণ, মানুষের মতো সুগন্ধী যে মশারও প্রিয়!
ছবি: picture-alliance/dpa/Ernesto Mastrascusa
দরজা-জানালায় নেট
দরজা-জানালায় নেট লাগিয়ে নিন৷ বিশেষকরে যেগুলো প্রায়ই খোলা থাকে সেসব দরজা-জানালায় নেট লাগাতে আর দেরি না করাই ভালো৷
ছবি: picture-alliance/dpa
টমেটো ও লেবু গাছ
দরজা বা জানালার কাছে সম্ভব হলে টমেটো গাছ ও লেবু গাছ লাগাতে পারেন, কারণ, এই গাছগুলো পোকামাকড়কে দূরে রাখে৷
ছবি: picture-alliance/dpa/A. Gebert
লবঙ্গ, ল্যাভেন্ডার
লবঙ্গ, ল্যাভেন্ডার বা লেবুযুক্ত তেল গায়ে মাখতে পারেন৷ যদিও এসবের স্থায়ীত্ব বেশিক্ষণ নয়, তারপরও কিছুটা কাজে লাগে৷
ছবি: picture-alliance/dpa/V. Tomas
যদি কামড় দিয়েই ফেলে
যদি মশা, মৌমাছি বা পোকামাকড় কামড় দেয় তাহলে সাথেসাথেই ভেজাকাপড় দিয়ে কামড়ের জায়গাটি মুছে নিয়ে সেখানে আয়োডিন লাগিয়ে নিন৷ ভালো হয় যদি একটি পেঁয়াজকে অর্ধেক করে তার একটি অংশ কামড়ের জায়গায় ভালো করে ঘষে দেন৷
ছবি: Fotolia/Africa Studio
মুখের ভেতর বা ঠোঁটে কামড়ালে
মশা বা পোকা যদি মুখের ভেতর বা ঠোঁটে কামড় দেয়, তাহলে তা ভয়ংকর আকার নিতে পারে৷ তাই এ সব জায়গায় কামড় দিলে ডাক্তারের কাছে যেতে হবে৷ তবে তার আগে বরফ শীতল পানি দিয়ে গার্গল করা এবং এক টুকরো বরফ মুখে পুরে লজেন্সের মতো চোষার পরামর্শও দিয়ে থাকেন বিশেষজ্ঞ৷
ছবি: picture-alliance/dpa/J.Gathany
চুলকাবেন না!
ব্যাকটেরিয়াজনিত সংক্রমণ এড়াতে কোনোভাবেই ক্ষতে চুলকাবেন না৷ কারণ, শুধুমাত্র চুলকানোর কারণেই হয়ত ক্ষতস্থান আরো ভয়ংকর আকার ধারণ করতে পারে৷