1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

মশা মারতে পুলিশ, ডেঙ্গু রুখতে হিমশিম পুরসভা

পায়েল সামন্ত কলকাতা
২৩ আগস্ট ২০২২

কলকাতা-সহ রাজ্যে ডেঙ্গুর চোখরাঙানি৷ ক্রমশ বাড়ছে মশাবাহিত রোগের প্রাদুর্ভাব৷ পুরকর্মীদের নামিয়েও হিমশিম খাচ্ছে পুরসভা৷ এ বার ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে নামানো হচ্ছে পুলিশ!

Indien Westbengalen Zunahme von Dengue-Fällen
ছবি: Payel Samanta/DW

নীরবে বাড়ছে ডেঙ্গু

কোভিডের দিকে যখন সবার নজর, তখন নীরবে বেড়েছে ডেঙ্গু৷ কলকাতা-সহ একাধিক জেলায় মশাবাহিত রোগে আক্রান্তের সংখ্যা দ্রুত বাড়ছে৷ কলকাতা শহরে আক্রান্তের সংখ্যা গতবারের তুলনায় সাত গুণ বেশি৷ গত বছর জানুয়ারি থেকে আগস্টের প্রথম সপ্তাহে মহানগরে ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ৪৫৭৷ চলতি বছরে একই সময়ে তা বেড়ে হয়েছে তিন হাজার ১০৪৷ কলকাতা পুরসভা এলাকার মধ্যে ছ'টি ওয়ার্ডে প্রকোপ বেশি৷ রাজ্যের ক্ষেত্রে আক্রান্তের সংখ্যা চার হাজারের উপরে৷ যদিও ডেঙ্গুর মরশুম সবে শুরু হয়েছে, চলবে আগামী দু'মাস৷ এখনই যদি এই পরিস্থিতি হয়, তা হলে আগামীতে কী হবে, এটা ভেবে ঘুম ছুটেছে প্রশাসনের৷

মশা মারতে কামান!

ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণ করতে পুরসভা আগে থেকেই কাজ শুরু করেছে৷ জল জমতে না দেওয়ার লক্ষ্যে নাগরিক সচেতনতার বাড়াতে প্রচার চলছে নিয়মিত৷ পড়ুয়াদেরও সচেতন করা হচ্ছে৷ পুরকর্মীরা বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে পরিস্থিতি খতিয়ে দেখছেন৷ তাতেও ডেঙ্গুর দাপট রোখা যাচ্ছে না৷ তাই পুরসভার সিদ্ধান্ত, পুলিশকে নামানো হবে ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে৷ পুলিশের সাহায্য নেওয়া হবে পুরসভার অভিযান চলাকালীন৷ কেন মশা মারতে পুলিশ ডাকতে হল? কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিমের বক্তব্য, ‘পুরনো বাড়ি যেখানে আছে, সেখানে ডেঙ্গুর প্রকোপ বেশি৷ এসব ক্ষেত্রে আইনি সমস্যা আছে৷ সেখানে পুরসভার কর্মীরা যেতে পারছেন না৷ তাদের বাধা দেওয়া হচ্ছে, ঠেলাঠেলি করা হয়েছে কর্মীদের৷ এই পরিস্থিতিতে আমরা পুলিশের সাহায্য নিতে চাইছি৷''

কেন হঠাৎ বৃদ্ধি?

ডেঙ্গু মোকাবিলায় মশার লার্ভা নিধন খুব গুরুত্বপূর্ণ একটি প্রক্রিয়া৷ চিরাচরিত পদ্ধতি নিধনের কাজ করার সঙ্গে লার্ভা চিহ্নিত করতে পুরসভা ড্রোনের সাহায্যও নিয়েছে৷ অনলাইনে নজরদারি করা হচ্ছে৷ তা সত্ত্বেও কেন ডেঙ্গু বাড়ছে? পুরসভার গাফিলতির দিকে আঙুল তুলছে বিরোধীরা৷ বিজেপি পুর ভবনের সামনে মশারি খাটিয়ে বিক্ষোভ দেখিয়েছে৷ পুরসভার গাফিলতির অভিযোগ খারিজ করে কলকাতার ডেপুটি মেয়র অতীন ঘোষের দাবি, আবহাওয়ার জন্য ডেঙ্গু বাড়ছে৷ এই বক্তব্য একেবারে উড়িয়ে দিচ্ছেন না চিকিৎসকরা৷ জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ডা. সুবর্ণ গোস্বামীর মন্তব্য, ‘‘বৃষ্টিপাতের ধরন বদলাচ্ছে৷ বর্ষায় বৃষ্টি কম হচ্ছে, সেপ্টেম্বর-অক্টোবরে বেশি হওয়ার সম্ভাবনা৷ ফলে যখন জল জমার কথা তখন জমছে না৷ আবার যে জায়গায় জমার কথা, অন্যত্র জমছে৷''

সুবর্ণ গোস্বামী

This browser does not support the audio element.

কোভিডের কলকাঠি

অনেক স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ গতবারের সঙ্গে চলতি বছরের আক্রান্তের সংখ্যাকে মিলিয়ে দেখতে রাজি নন৷ তাদের মতে, কোভিডের দাপট থাকায় অন্য রোগ নির্ণয় কম হয়েছে৷ জ্বর হলে সাধারণ মানুষ হাসপাতালের কাছে ঘেঁষেননি৷ দোকান থেকে ওষুধ খেয়ে সেরে উঠেছেন৷ রক্ত পরীক্ষা না হওয়ায় ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা ২০২০-২১ সালে যথেষ্ট কম ছিল৷ তাই তুলনা হওয়া দরকার ২০১৮-১৯ সালের সঙ্গে৷ ডেঙ্গুর জেরে হাসপাতালে ভর্তির সংখ্যাও এবার তেমন উল্লেখযোগ্য নয়৷ কিন্তু পরীক্ষা বেশি হওয়ায় আক্রান্তের সংখ্যা নিয়মিত বাড়ছে৷

প্রশাসনের গাফিলতি?

ইতিমধ্যে ডেঙ্গু মোকাবিলার জন্য জরুরি বৈঠক সেরেছে রাজ্য স্বাস্থ্য দপ্তর৷ এ বার বর্ষার বৃষ্টি বেশ কম হলেও গত কয়েকদিনে নিম্নচাপের বৃষ্টি ভালই হয়েছে বঙ্গে৷ জেলায় জেলায় দপ্তরের বার্তা, জল জমতে দেওয়া যাবে না৷ দ্রুত জল সরানোর উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে৷ তা হলে কি এই কাজে দেরিই হয়ে গিয়েছে? ভাইরোলজিস্ট, অধ্যাপক সিদ্ধার্থ জোয়ারদার বলেন, ‘‘কোন পকেটে জল জমে আছে, সেটা প্রশাসনকে দেখতে হবে ঠিকই৷ তবে মশার বাসস্থলে বদল হল কি না, সেই দিকটাও খতিয়ে দেখা দরকার৷ ভাইরাসের জিনগত কোনো পরিবর্তন হলেও আক্রান্তের সংখ্যা বেশি হতে পারে৷''

বর্গি গেল গ্রামে

ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব সাধারণভাবে কলকাতা ও তার আশপাশের জেলায় বেশি হতো৷ মূলত যেসব জায়গায় শহুরে জীবনযাত্রার ছোঁয়া রয়েছে৷ কিন্তু এখন প্রত্যন্ত গ্রামেও ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে৷ এর কারণ ব্যাখ্যায় সুবর্ণ গোস্বামী বলেন, ‘‘দ্রুত নগরায়ন হচ্ছে৷ এর ফলে শহরের জীবনযাত্রা গ্রামকে গ্রাস করছে৷ শহরে যে ধরনের পাত্র, বোতল ব্যবহার করা হয়, সেসব এখন গ্রামের দোকানেও মিলছে৷ এগুলি পরিত্যক্ত হলে জল জমছে৷ তাতে বাড়ছে মশা ও ডেঙ্গু৷ তাই শুধু প্রশাসনের কথা বললে হবে না, মানুষকে সজাগ হতে হবে৷''

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য
স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ