রাশিয়ার ছবি
৮ মার্চ ২০১৩সুড়ঙ্গপথগুলো জলে ভরে যাচ্ছে, হাজার হাজার মেট্রোযাত্রী আকুল হয়ে পালাবার পথ খুঁজছেন৷ এই ছবি মুক্তি পাবার পর প্রথম সপ্তাহান্তেই আর্নল্ড শোয়ারৎসেনেগারের ‘‘দ্য লাস্ট স্ট্যান্ড''-কে পর্যন্ত টপকে রাশিয়ার বক্স অফিস মাত করেছে৷ ১৩ মিলিয়ন ডলার বাজেটের ছবি ইতিমধ্যেই প্রায় ১০ মিলিয়ন ডলার তুলে ফেলেছে৷
মস্কো মেট্রো তৈরি হয় স্ট্যলিনের আমলে৷ আজও তা বছরে দুই বিলিয়ন, অর্থাৎ ২০০ কোটির বেশি যাত্রী বহন করে থাকে৷ মস্কো মেট্রো'কে ঘিরে কিংবদন্তির কোনো অভাব নেই৷ সেখানে নাকি রাতে বিরাট আকারের সব আরশোলা ঘোরাফেরা করে৷ মেট্রো থেকে ক্রেমলিন অবধি নাকি গুপ্ত লাইন পাতা আছে৷
মেট্রো স্টেশনগুলোর স্থাপত্য ও অলঙ্করণ নয়নাভিরাম৷ তার মধ্যে সবার আগে নাম করতে হয় মস্কোর কেন্দ্রে বিপ্লব চত্বর স্টেশনের ব্রোঞ্জের একটি কুকুরের মূর্তির, যার নাকে হাত বোলালে নাকি দিনটা ভালো যায়৷ তাই কুকুরটার নাক পেতলের মতো চকচকে৷
অপরদিকে এই মেট্রোর সঙ্গে মস্কোবাসীদের কিছু দুঃস্বপ্নও জড়িত: যেমন ২০০৪ এবং ২০১০ সালের আত্মঘাতী বোমা আক্রমণ, কিংবা ২০০৬ সালের একটি মারাত্মক দুর্ঘটনা৷ এছাড়া সব মিলিয়ে পলেস্তারা খসা সুড়ঙ্গগুলির অবস্থা খুব ভালো নয়৷ কাজেই ধনী মস্কোবাসীরা মাটির নীচে নামতে চান না, মাটির ওপর যানজট যতোই জটিল হোক না কেন৷
ছবির কাহিনি হল এই যে, মেট্রোর উপরে মস্কো নামের নদীটির জল লিক করে সুড়ঙ্গে ঢুকে পড়েছে৷ ফিল্মের দৃশ্যগুলি অবশ্য মস্কোয় নয়, ভল্গা নদীর তীরের সামারা শহরে তোলা৷ নয়তো সুড়ঙ্গের ন'টন পানি থেকে শুরু করে মেট্রোর নীল রঙের কামরা, এমনকি ট্রেনগুলোর অবস্থান নির্ধারণের জন্য মান্ধাতার আমলের যন্ত্রপাতি, সব কিছুই খুব বাস্তবসম্মত রাখা হয়েছে৷
রাশিয়ায় এ'ধরনের ‘বিপর্যয় ফিল্ম' তৈরি করার কোনো ঐতিহ্য নেই, এক সেই ১৯৭৯ সালে সোভিয়েত আমলে তৈরি ‘‘এয়ার ক্রু'' ছাড়া৷ সেই কারণেই হয়তো মেট্রো কর্তৃপক্ষ তাদের মেট্রোগুলোতে এই ছবি শুট করার অনুমতি দেননি৷ অপরদিকে ছবি তৈরির বাজেটের অর্ধেক এসেছে একটি সরকারি তহবিল থেকে, যার কাজ হল রুশ সিনেমাকে উৎসাহ দেওয়া৷
সব মিলিয়ে ‘‘মেট্রো'' রুশ সিনেমার পক্ষে একটি ‘ব্রেকথ্রু' বলেই স্বীকৃতি পাচ্ছে৷
এসি / এসবি (এএফপি)