মহাকাশে মানুষহীন ড্রোন পাঠিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের বিমান বাহিনী৷ রোববার অ্যাটলাস ভি রকেটে করে পাঠানো হয় এই ড্রোন৷
বিজ্ঞাপন
কেপ ক্যানাভেরাল থেকে পাঠানো ড্রোনটির নাম এক্স-৩৭বি৷ গত শনিবার হাইটেক এই ড্রোন নিয়ে অ্যাটলাস ভি-র মহাকাশে অবতরণ করার কথা ছিল৷ কিন্তু খারাপ আবহাওয়ার কারণে সেদিন তা সম্ভব হয়নি৷ রোববার সফল অবতরণের পর বিমান বাহিনীর উদ্দেশ্যে যুক্তরাষ্ট্রের ডিফেন্স সেক্রেটারি মার্ক এসপার এক টুইট বার্তায় বলেন, ‘‘আবার ব্যবহারযোগ্য খেয়াযান এক্স-৩৭বি-এর ষষ্ঠ মিশনের জন্য অভিনন্দন!’’
এদিকে বোয়িং কর্তৃপক্ষ এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, এই মিশনে কক্ষপথে গবেষণা করার জন্য ছোট একটা মহাকাশযান পাঠানো হবে৷
আগেও একবার মহাকাশে এক্স-৩৭বি পাঠিয়েছিল যুক্তরাষ্ট্র৷ সেবার মহাকাশে ৭৮০ দিন কাটানোর পর গত অক্টোবরে পৃথিবীতে ফিরে আসে এক্স-৩৭বি৷
এসিবি/কেএম (ডিপিআই)
গত নভেম্বরের ছবিঘরটি দেখুন...
চার দশক ধরে মহাকাশে ঘুরছে যারা
আমাদের মহাকাশ চষে বেড়াতে ১৯৭৭ সালের ২০ আগস্ট যাত্রা শুরু করেছিল মহাকাশযান ভয়েজার ২৷ সেই যাত্রার ষোল দিন পর ভয়েজার ১-ও মহাকাশের উদ্দেশ্যে যাত্রা করে৷ এখনও সক্রিয় আছে যান দু’টি, পাঠাচ্ছে নানা খবর৷
ছবি: picture-alliance/dpa/NASA JPL
দুই বোনের অনুসন্ধান
১৯৭৭ সালের ২০ আগস্ট ভয়েজার ২ মহাকাশযানকে মহাকাশে পাঠায় নাসা৷ সেটির যাত্রা এখনো চলছে৷ সেবছরেরই পাঁচ সেপ্টেম্বর ভয়েজার ১ একইভাবে মহাকাশে যাত্রা করে৷ এই দুই মহাকাশযানের প্রাথমিক লক্ষ্য ছিল বৃহস্পতি এবং শনিগ্রহণ সম্পর্কে যতটা সম্ভব্য তথ্য সংগ্রহ করা৷ তাদের যাত্রার শুরুর সময় অবধি গ্রহ দু’টো সম্পর্কে তেমন একটা জানা যায়নি৷ মহাকাশযান দু’টোতে দীর্ঘমেয়াদে ব্যবহার উপযোগী প্লুটোনিয়াম ব্যাটারি রয়েছে৷
ছবি: REUTERS/NASA/JPL-Caltech
এখনও তথ্য পাঠাচ্ছে তারা
পৃথিবীতে একেকটি ভয়েজারের ওজন ছিল ৮২৫ কেজি করে৷ নাসা এখন অবধি মহাকাশকেন্দ্রিক যে সব সাফল্য অর্জন করেছে সেগুলোর মধ্যে অন্যতম এই ভয়েজার অভিযান৷ সে দু’টি এখনো মহাকাশ থেকে নির্ভরযোগ্য তথ্য পাঠাচ্ছে৷ পৃথিবী থেকে ক্রমশ দূরে সরে যাওয়া যন্ত্র দু’টির সঙ্গে ২০৩০ সাল অবধি রেডিও যোগাযোগ অব্যাহত রাখার আশা করছে নাসা৷
ছবি: public domain
সৌরজগতের সীমানার বাইরে
২০১২ সালের ২৫ আগস্ট ভয়েজার ১ আমাদের সৌরজগতের একটি সীমানা ‘হিলিওপস’ অতিক্রম করে আকাশগঙ্গা ছায়াপথে পৌঁছে গেছে৷ এটি হচ্ছে মানুষের তৈরি একমাত্র যন্ত্র যা পৃথিবী থেকে বর্তমানে সবচেয়ে দূরে অবস্থান করছে৷
ছবি: picture-alliance/dpa
এগিয়ে যাচ্ছে ভয়েজার ২-ও
ভয়েজার ১-এর মতো ভয়েজার ২-ও সৌরজগতের একটি সীমানার বাইরে চলে গেছে৷ ২০১৮ সালের পাঁচ নভেম্বর এই যানটি ‘ইন্টার্স্টেলার স্পেসে’ প্রবেশ করে৷ এই যানে পাঠানো তথ্য অতীতের বিভিন্ন ধারণাকে ভুল প্রমাণ করেছে৷
ছবি: picture alliance/Jet Propulsion Lab via AP/dpa
‘স্পেস বাবল’-এর কিনারে
সৌরজগতের বিভিন্ন সীমানা রয়েছে৷ প্রথমটি হচ্ছে ‘টার্মিনেশন শক৷’ সেখানে সৌর বাতাস নাটকীয়ভাবে কমে যায়৷ ‘হিলিওস্পেয়ার’ এর পরে ‘হিলিওপস’ এর অবস্থান৷ আর এটি হচ্ছে ‘স্পেস বাবল’ এর কিনারা যেখানে সৌর শিখা ‘ইন্টারস্টেলার’ রশ্মি থেকে আমাদের রক্ষা করে৷ এখন অবধি ধারণা ছিল যে বাতাস ক্রমশ কমতে থাকে৷
ছবি: picture-alliance/dpa/NASA JPL
তবে, বোনরা জানাচ্ছে অন্য তথ্য
তবে দুই মহাকাশযানের তুলনামূলক পরিমাপ আমাদের জানাচ্ছে যে আমাদের সৌরজগতের অভ্যন্তরে একটি স্পষ্ট সীমান্ত রয়েছে৷ ‘ইন্টারস্টেলার মিডিয়াম’-এর তাপমাত্রাও আমাদের ধারণার চেয়ে বেশি৷
ছবি: picture alliance/dpa/Nasa
সব দিক থেকে বৃহস্পতিগ্রহ
‘ইন্টারস্টেলার’ বিষয়ক নানা উদ্ঘাটন ছাড়াও মহাকাশযান দু’টি আরো অনেক বিষয়ে তথ্য জানিয়েছে৷ ১৯৭৯ সালের পহেলা জানুয়ারি বৃহস্পতি গ্রহের ছবি পাঠায় ভয়েজার ১৷ যানটি গ্রহটি এবং সেটির চার চাঁদের মোট ১৭,৪৭৭টি ছবি পাঠিয়েছে৷ বৃহস্পতি গ্রহের চারপাশ ঘিরে যে পাতলা বৃত্ত রয়েছে, তার অস্তিত্ব এই ছবির মাধ্যমেই আমরা জেনেছি৷
ছবি: picture-alliance/dpa/NASA
সেকেন্ডে ১৬ কিলোমিটার গতি
বৃহস্পতিগ্রহ পার হওয়ার পর ভয়েজার ১ সেকেন্ডে ১৬ কিলোমিটার গতিতে পৌঁছায়৷
ছবি: picture-alliance/dpa/NASA
শনিগ্রহের শুরু, সম্ভবত
ভয়েজার ২ শনি গ্রহের এই রঙ্গিন ছবিটি পৃথিবীতে পাঠিয়েছে৷ ১৯৮১ সালে মহাকাশযানটি আমাদের সৌরশক্তির ষষ্ঠ গ্রহের কাছে পৌঁছায়৷ শনি গ্রহের ২১ মিলিয়ন কিলোমিটার দূর থেকে এই ছবিটি তোলা হয়েছে৷
ছবি: HO/AFP/Getty Images
সবকিছু নিয়ন্ত্রণে
মহাকাশযান দু’টিকে ক্যালিফোর্নিয়ার পাসাডিনা শহরের নিয়ন্ত্রণকেন্দ্র থেকে পর্যবেক্ষণ ও নিয়ন্ত্রণ করা হয়৷ নিয়ন্ত্রণকেন্দ্রের এই ছবিটি ১৯৮০ সালে তোলা৷ বর্তমানে অবশ্য নিয়ন্ত্রণকেন্দ্র অনেক আধুনিক করা হয়েছে৷
ছবি: NASA/Hulton Archive/Getty Images
এলিয়েনদের জন্য পৃথিবীর শব্দ
মহাকাশযান দু’টি যদি তাদের অন্তহীন যাত্রাপথে কোন প্রাণের সন্ধান পায়, তাহলে সেটিকে পৃথিবী সম্পর্কে ধারণা দিতে সক্ষম হবে৷ যান দু’টিতে রয়েছে এরকম কিছু উজ্জ্বল সোনালি ডিস্ক, যাতে পৃথিবীর ছবি এবং মানুষ, জীবজন্তু এ প্রকৃতির শব্দ রেকর্ড করা রয়েছে৷ এমনকি এগুলো বাজানোর ব্যবস্থাও রয়েছে ভয়েজার দু’টিতে৷