1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

মহাকাশে রাজত্ব করতে চায় চীন

৯ জানুয়ারি ২০১২

অ্যামেরিকার চেয়ে অনেক দিক দিয়েই এখন শীর্ষে চীন৷ এখন তারা চাইছে মহাকাশ গবেষণায়ও এগিয়ে যেতে৷ তবে ঐতিহাসিকভাবে এক্ষেত্রে সবার উপরে থাকা যুক্তরাষ্ট্রকে টপকাতে প্রয়োজন বৃহৎ পরিকল্পনা৷ সেটাই করছে চীন৷

মহাকাশে দুটি চীনা মহাকাশযানের সফল ডকিংছবি: picture-alliance/dpa

দুই হাজার সাল থেকে শুরু করে এ পর্যন্ত মহাকাশের উপর তিনটি পরিকল্পনা প্রকাশ করেছে চীন৷ এর শেষটি প্রকাশিত হলো গত সপ্তাহে৷ পরিকল্পনায় বলা হয়েছে, আগামীতে তারা চাঁদে নভোচারী পাঠাতে চায়৷ এজন্য অচিরেই প্রয়োজনীয় পরীক্ষা-নিরীক্ষা শুরু করা হবে বলে জানানো হয়েছে৷

তবে চাঁদে রোবট পাঠিয়ে গবেষণার কাজ ইতিমধ্যেই করছে চীন৷ যে প্রকল্পের আওতায় এই কাজ চলছে তার নাম ‘চায়না লুনার এক্সপ্লোরেশন প্রোগ্রাম'৷ এই প্রকল্পের লোগোতে মানুষের পায়ের ছাপ রয়েছে৷ সেটা দেখে অস্ট্রেলিয়া ভিত্তিক মহাকাশ বিশেষজ্ঞ মরিস জোনস বলছেন, এই পায়ের ছাপ দিয়েই চীন বুঝিয়ে দিয়েছে যে, তাদের লক্ষ্য কতদূর৷

ইতিমধ্যে চীন বিশ্বকে জানিয়ে দিয়েছে যে, তারা ২০২০ সালের মধ্যে একটা মনুষ্য স্পেস স্টেশন নির্মাণ করতে চায়৷ তবে, শুধু ঘোষণাই নয়, সেটা যে তারা সম্ভব করে তুলবে তার একটা আভাস দিয়েছে গত বছর নভেম্বরে৷ সেসময় প্রথমবারের মতো পৃথিবী থেকে প্রায় ৩৪০ কিলোমিটার উপরে দুটো মহাকাশযানের সফল ‘ডকিং' করায় চীন৷ উল্লেখ্য, রেল স্টেশনে যেমন ট্রেনের যাতায়াত নিশ্চিত করতে লাইন ও প্ল্যাটফর্ম ঠিকমতো তৈরি করতে হয়, মহাকাশ স্টেশনেও মহাকাশযানের ডকিং ব্যবস্থা নিখুঁত হতে হয়৷ তা না হলে মহাশূন্যে দ্রুত গতিতে ছুটতে থাকা স্টেশন ও যান – দুইয়েরই মারাত্মক ক্ষতি হতে পারে৷

ছবি: picture-alliance/dpa

তারও আগে ২০০৩ সালে মহাকাশে নভোচারী পাঠিয়েছিল চীন৷ সেটা ছিল অ্যামেরিকা ও রাশিয়ার পর তৃতীয় কোনো দেশের সফলতা৷

এছাড়া অ্যামেরিকা যেমন তার ‘গ্লোবাল পজিশনিং সিস্টেম' জিপিএস'এর মাধ্যমে সমস্ত পৃথিবীর ওপর নজর রাখে চীনও তেমন একটি ব্যবস্থা চালু করেছে গত বছর৷ যার নাম ‘বাইডু স্যাটেলাইট নেভিগেশন সিস্টেম'৷ আপাতত এটা এশিয়ার উপর নজর রাখছে৷ ২০২০ সালের মধ্যে পুরো পৃথিবীটাই এর আওতায় আনতে চায় চীন৷ ফ্রান্সের এক মহাকাশ বিশেষজ্ঞ ইসাবেল সোর্বস-ভের্গার বলছেন, এক্ষেত্রে ইউরোপের চেয়ে এগিয়ে আছে চীন৷ তিনি বলছেন, এই পর্যবেক্ষণ ব্যবস্থা সামরিক বাহিনীর জন্যও গুরুত্বপূর্ণ৷ চীন যদি সফলভাবে পুরো পৃথিবীটাকে আয়ত্বে আনতে পারে তাহলে তারা মহাকাশ বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের প্রায় সমান অবস্থায় চলে যেতে পারবে বলে মনে করেন ভের্গার৷

চীন সব সময় বলে এসেছে যে, মহাকাশ নিয়ে তাদের যত গবেষণা তার লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য শান্তিপূর্ণ৷ এর মাধ্যমে তারা মহাকাশে কোনো যুদ্ধ পরিস্থিতি তৈরি করতে চান না৷ সাম্প্রতিক পরিকল্পনা প্রকাশের সময়ও এ কথাটা আবারও বলা হয়েছে৷ কিন্তু তাদের এই মনোভাব যে আসলে কতটা সত্য, তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে অনেকের৷ তার কারণও আছে৷ ২০০৯ সালে চীনের বিমানবাহিনীর এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেছিলেন, মহাকাশে সামরিকীকরণ অবশ্যম্ভাবী এবং এজন্য সবাইকে প্রস্তুত থাকার আহ্বান জানিয়েছিলেন তিনি৷ তবে সঙ্গে সঙ্গেই তাঁর এই বক্তব্য চীন সরকারের নয় বলে জানিয়ে দিয়েছিলেন প্রেসিডেন্ট হু জিনতাও৷

ছবি: dapd

এরও আগে চীন ২০০৭ সালে অ্যান্টি-স্যাটেলাইট, মানে কৃত্রিম উপগ্রহবিরোধী যন্ত্রের সফল পরীক্ষা চালিয়েছিল৷

অস্ট্রেলিয়ার মহাকাশ বিশেষজ্ঞ জোনস'ও মনে করেন, মহাকাশ গবেষণা পুরোপুরি শান্তিপূর্ণ হওয়া সম্ভব নয়৷ কেননা আজকাল সামরিক যোগাযোগের অনেকটা হয় মহাকাশ প্রযুক্তি ব্যবহার করে৷ এছাড়া মহাশূন্যে যে গোয়েন্দা স্যাটেলাইটগুলো ঘুরে বেড়াচ্ছে সেগুলোও এই প্রযুক্তিরই অবদান৷ সুতরাং চীনও এর ব্যতিক্রম নয়৷

পরবর্তী প্রজন্মের রকেটও তৈরি করছে চীন৷ ‘লং মার্চ-৫' নামের এই রকেট ২৫ টন পর্যন্ত ভর বহন করতে সক্ষম হবে৷ ইউরোপের ‘আরিয়েন-৫' রকেট ২০ টন পর্যন্ত ভর বহন করতে পারে৷

এসব দেখেশুনে ফ্রান্সের বিশেষজ্ঞ ভের্গার'এর মন্তব্য, যেভাবেই হোক মহাকাশ গবেষণায় চীন একটা সম্মানজনক অবস্থানে পৌঁছাতে চাইছে বলে মনে হচ্ছে৷ যেখানে গেলে সবাই তাকে সমীহ করবে৷

প্রতিবেদন: জাহিদুল হক

সম্পাদনা: হোসাইন আব্দুল হাই

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ