দূরত্ব আজ কোনো সমস্যাই নয়৷ মোবাইল, ফেসবুক, চ্যাট দূরের মানুষকেও কাছে এনে দেয়৷ কিন্তু দূরের মানুষের স্পর্শও কি পাওয়া সম্ভব? ঠিক সেই কাজটাই করে দেখাচ্ছে ‘স্পেস-জাস্টিন'৷
বিজ্ঞাপন
আন্তর্জাতিক স্পেস স্টেশনে ঢুকে পড়লে সব কিছুই হাতের নাগালের বাইরে৷ মেরামতির কাজে স্পেস ওয়াকে বেরোনো সম্ভব, যদিও তা বেশ ঝুঁকিপূর্ণ কাজ৷ কিন্তু পৃথিবীতে চেনাজানা মানুষের স্পর্শ থেকে বঞ্চিত হতে হয়৷
এবার সেই ব্যবধান কিছুটা হলেও কমিয়ে আনছে ‘স্পেস-জাস্টিন'৷ জার্মান এয়ারোস্পেস এজেন্সি ডিএলআর-এর বিজ্ঞানীরা এই রোবট তৈরি করেছেন, যার মাধ্যমে মহাকাশচারীদের স্পর্শের ‘প্রতিফলন' ঘটানো সম্ভব৷ অর্থাৎ আইএসএস-এ বসে করমর্দনের জন্য হাত বাড়িয়ে দিলে পৃথিবীর বুকে সেই হাত স্পর্শ করতে পারবে অন্য কেউ৷
শুধু তাই নয়, স্পেস স্টেশনে বসেই বাইরে মেরামতির কাজ সারা যাবে ‘স্পেস-জাস্টিন'-এর মাধ্যমে৷
অর্থাৎ ‘স্পেস-জাস্টিন'-এর মাধ্যমে প্রয়োজনীয় কাজ সারার পাশাপাশি আবেগ-অনুভূতিও দেখানো সম্ভব৷ সিলিকন, প্লাস্টিক আর ইন্টারনেটের মাধ্যমে মহাকাশচারী পৃথিবীতে তার প্রিয় মানুষকে চুম্বনও করতে পারে৷ তবে ‘স্পেস-জাস্টিন'-এর হাত বা ঠোঁট তেমন পেলব না হওয়ায় তার স্পর্শ তেমন আরামদায়ক নাও হতে পারে৷ আরেকটা সমস্যা হলো সিগনাল পৌঁছনোয় বিলম্ব৷ দূরত্ব যত বেশি হবে, সংকেতের যাতায়াতে ততো সময় লাগবে৷ মঙ্গলগ্রহ থেকে হাত বাড়িয়ে দিলে কয়েক মিনিট পর পৃথিবীতে সেই হাত সম্প্রসারিত হবে৷
চিকিৎসাশাস্ত্রেও এমন রোবটের উপযোগিতা নিয়ে ভাবনা-চিন্তা চলছে৷ যেমন দূরে বসে সার্জেন থ্রিডি ভিডিও দেখে প্রত্যন্ত এলাকায় রোবটের মাধ্যমে অপারেশন চালাতে পারবেন বলে ধরে নেওয়া হচ্ছে৷
মানুষের মতো রোবট
আজকাল কিছু কিছু রোবট দেখতে অনেকটা মানুষের মতো হয়৷ আবার যারা দেখতে মানুষের মতো নয়, তারা আবার কাজে পুরোপুরি মানুষের মতো৷ সেরকম কয়েকটি রোবটের কথাই থাকছে আজকের ছবিঘরে৷
ছবি: picture-alliance/dpa
হাত মেলায়, কথাও বলে রোবট
এই রোবটটির নাম ‘রোবয়’৷ এর ত্বক এবং মাংসপেশি মসৃণ৷ রোবয় হ্যান্ডশেক করলে মনে হয় যেন কোনো মানুষের সঙ্গেই হাত মেলানো হলো৷ এই রোবট কথা বলতে পারে এবং অনেক ক্ষেত্রে মানুষের মতো আবেগও প্রকাশ করে৷
ছবি: Getty Images/Afp/John MacDougall
যে রোবট জানালা পরিষ্কার করে
জার্মানির তৈরি এই রোবটটির নাম ‘জাস্টিন’৷ ওকে তৈরি করা হয়েছিল মহাকাশযানের জন্য৷ ইন্টারন্যাশনাল স্পেস স্টেশনে পাঁচ বছর ছিল সে৷ পৃথিবীতে ফিরে তাকে মানুষের মতো অনেক কাজই করতে হয়৷ ঘরের জানালা পরিষ্কার করায় সে ওস্তাদ৷
ছবি: DW/F. Schmidt
‘লেখক’ রোবট
‘বায়োস’ নামের এই রোবটটি পেশাদার লেখকদের চেয়েও দ্রুত লিখতে পারে৷ তার বাহুর সঙ্গে লাগানো আছে কলম৷ সেই কলমে প্রয়োজন মতো কালি জোগান দেয়ার ব্যবস্থাও আছে৷ কালি-কলম হাতে সদাপ্রস্তুত ‘বায়োস’ ৮০ মিটার কাগজে মাত্র দশ সপ্তাহে হিব্রুতে ৩ লাখ ৪ হাজার ৮০৫টি অক্ষর লিখে দেখিয়েছে৷
ছবি: robotlab
রেস্তোরাঁয় অর্ডার নেয়ার কাজও রোবটের
চীনের রেস্টুরেন্টে এ ধরনের রোবট ইতিমধ্যে কাজে নেমে পড়েছে৷ কয়েকটি রেস্টুরেন্টে খাবারের ‘অর্ডার’ নেয় এমন রোবট৷
ছবি: picture-alliance/epa/P. Hilton
খাবার পরিবেশনে মানুষের চেয়েও দক্ষ
এই রোবটগুলো রেস্টুরেন্টে ঘণ্টার পর ঘণ্টা খাবার পরিবেশন করতে পারে৷ ‘ওয়েটার’ মানুষ হলে এক সময় তো ক্লান্ত হয়, কিন্তু রোবট কখনোই ক্লান্ত হয় না৷
ছবি: picture-alliance/dpa/ChinaFotoPress/MAXPPP
খাবার গরম করে রোবট
রেস্টুরেন্ট বা ঘরে রান্নার কাজটুকু একবার করে দিলে তারপর যতবার খুশি সেই খাবার গরম করতে পারবে রোবট৷ খাবার গরম করার কাজে এই রোবট আসলেই খুব দক্ষ৷