শুক্রবারেরর নামাজের পরই ভারতের বিভিন্ন শহরে রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ দেখান মুসলিমরা। মহানবীকে(সা:)নিয়ে বিজেপি মুখপাত্র নূপুর শর্মার বিতর্কিত মন্তব্যের প্রতিবাদে এই বিক্ষোভ। বিক্ষোভকারীদের দাবি ছিল, নূপুর শর্মাকে গ্রেপ্তার করতে হবে।
দিল্লিতে জামে মসজিদের সামনে, কলকাতা ও হাওড়ার কয়েকটি জায়গায়, উত্তরপ্রদেশের লখনউ, সাহারানপুর, প্রয়াগরাজ, কানপুর, মোরাদাবাদ এবং তেলেঙ্গানার হায়াদ্রাবাদে বিক্ষোভ দেখানো হয়। জম্মু ও কাশ্মীরের শ্রীনগরে দোকানপাট পুরোপুরি বন্ধ ছিল। উত্তরপ্রদেশের কয়েকটি জায়গায় বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ হয়। বিক্ষোভকারীরা পাথর ছোড়ে। পুলিশ কাঁদানে গ্যাসের শেল ফাটায়।
দিল্লিতে নামাজের পরই জামে মসজিদের সিঁড়িতে প্রথমে বিক্ষোভ শুরু হয়। প্ল্যাকার্ড হাতে বিক্ষোভকারীরা দাঁড়িয়ে পড়েন। তারা স্লোগান দিতে শুরু করেন। সেখানে ভিড় হয়ে যায়। কিছুক্ষণ পরে জামে মসজিদের সামনে বিক্ষোভ শুরু হয়। জামে মসজিদের শাহি ইমাম বলেছেন, ''আমি জানি না, কখন বিক্ষোভ শুরু হয়। কিছু মানুষ স্লোগান দিতে থাকেন। প্রচুর মানুষ সেখানে ছিলেন। তবে তারা দ্রুত চলে যান।''
দিল্লি পুলিশের পক্ষ থেকে এএনআই-কে জানানো হয়েছে, ''মানুষ বিক্ষোভ দেখাচ্ছিলেন। আমরা তাদের সরিয়ে দিয়েছি। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে।''
মহানবী(সা:) বিতর্ক: ১২ ঘণ্টা রাস্তা অবরোধ হাওড়ায়
মহানবী(সা:)-কে নিয়ে বিজেপি মুখপাত্রের বিতর্কিত মন্তব্যের প্রতিবাদে রাস্তায় নেমে প্রতিবাদ হাওড়ার ডোমজুড়ে। ১২ ঘণ্টা ধরে রাস্তা অবরোধ। বিশাল যানজট।
ছবি: Satyajit Shaw/DW
ডোমজুড়ে রাস্তা অবরোধ
বিক্ষোভকারীরা ডোমজুড়ে ১১৬ নম্বর জাতীয় সড়ক অবরোধ করে। তারা প্রচুর টায়ারে আগুন ধরিয়ে দেয়। রাস্তার মাঝখানে দাউদাউ করে জ্বলতে থাকে টায়ার। বিশাল পুলিশ বাহিনী ঘটনাস্থলে পৌঁছায়।
ছবি: Satyajit Shaw/DW
আটকে পড়ে হাজার হাজার গাড়ি
রাস্তা অবরোধ শুরু হওয়ার পরেই যানজট দেখা দেয়। হাজার হাজার গাড়ি আটকে পড়ে। এই জাতীয় সড়কটি খুবই ব্যস্ত রাস্তা। ফলে গোটা এলাকায় ভয়ংকর যানজট হয়। দ্বিতীয় হুগলি সেতু পর্যন্ত যানজটের কবলে পড়ে।
ছবি: Satyajit Shaw/DW
বিতর্কিত মন্তব্যের প্রতিবাদে
অবরোধকারীরা জানিয়েছেন, মহানবী(সা:)-র বিরুদ্ধে বিজেপি মুখপাত্র নূপুর শর্মার আপত্তিকর মন্তব্যের প্রতিবাদে তারা রাস্তা অবরোধ করেছেন।
ছবি: Satyajit Shaw/DW
মুখ্যমন্ত্রীর আবেদন
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সাংবাদিক সম্মেলন করে বলেন, ''আমি অবরোধকারীদের হাতজোড় করে অনুরোধ করছি, তারা যেন রাস্তা খালি করে দেন।'' কিন্তু তার সেই আবেদনে কাজ হয়নি। অবরোধ চলতে থাকে। মমতা বলেন, ''তিনি চাইলে পুলিশ দিয়ে উঠিয়ে দিতে পারতেন। কিন্তু স্পর্শকাতর বিষয় বলে তা করছেন না।'' মুখ্যমন্ত্রীর প্রশ্ন, ''দিল্লির ঘটনার প্রতিবাদ এভাবে বাংলায় কেন হবে? প্রতিবাদ করতে চাইলে এফআইআর করুন।''
ছবি: DW/S. Bandopadhyay
ক্ষুব্ধ মুখ্যমন্ত্রী
মমতার সঙ্গে ছিলেন ফিরহাদ হাকিম। মমতা জানান, ''একজন ব্যক্তি ওই অবরোধের ডাক দিয়েছেন। তিনি নিজেকে ইমাম বলছেন।'' মমতা বলেন, ''নাখোদা মসজিদের ইমাম ভিডিয়োবার্তায় অবরোধ সরিয়ে নেয়ার অনুরোধ করেছেন।'' তিনি বলেছেন, ''ক্ষোভ হওয়া সঙ্গত। কিন্তু রাস্তা ছেড়ে বিক্ষোভ দেখান।'' মমতা বলেন, ''অবরোধের ফলে অ্যাম্বুলেন্সও আটকে গেছে।'' মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্য, বিজেপি-র অপশাসন থেকে নজর ঘোরাতে এখানে এরকম করা হচ্ছে।
ছবি: Getty Images/AFP/D. Dutta
১২ ঘণ্টা ধরে
প্রায় ১২ ঘণ্টা ধরে অবরোধ চলে। তারপর তা তুলে নেয়া হয়। এর ফলে ঘণ্টার পর ঘণ্টা ধরে যানজটে প্রচুর গাড়ি আটকে পড়ে। অনেক মানুষ, বিশেষ করে বাচ্চারা দুর্দশায় পড়েন।
ছবি: Satyajit Shaw/DW
6 ছবি1 | 6
কলকাতায় পার্ক সার্কাস মোড়ে প্রচুর মানুষ জড়ো হয়ে বিক্ষোভ দেখান। হাওড়াতেও বিক্ষোভ দেখানো হয়।
তবে উত্তরপ্রদেশের পরিস্থিতি বেশ উত্তেজনাপূর্ণ হয়ে ওঠে। সাহারানপুর, প্রয়াগরাজ, মোরাদাবাদে পুলিশের সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের সংঘর্ষ হয়েছে।