1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

মহারাজ সাধু হলে আমি চোর বটে

৩০ এপ্রিল ২০২০

মুগদা জেনারেল হাসপাতালের পরিচালক শহিদ মো. সাদিকুল ইসলামকে তার পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে৷ দাপ্তরিক ভাষায় বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওএসডি) করা হয়েছে তাকে৷

যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে মার্কিন থ্রিএম কোম্পানির এন৯৫ মাস্কছবি: picture-alliance/NurPhoto/Y. Cao

যার সরল মানে এইরকম যে, এই মুহূর্তে তার কোনো দায়িত্ব নেই৷ দায়িত্বশীল কাউকে তার দায়িত্ব পালনের সময়ে সরিয়ে দেওয়া যে একরকম শাস্তি, এটা নিশ্চয়ই যে কেউ বুঝতে পারছেন৷

এখন প্রশ্ন উঠতে পারে, কোন অপরাধের শাস্তি পেলেন, সাদিকুল ইসলাম? আমরা জানি না৷ কারণ, আমাদের কনটেন্ট পার্টনার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম জানাচ্ছে, সাদিকুল ইসলামের চাকরির মেয়াদ আছে আর সাত মাস৷ বৃহস্পতিবার সকালে তিনি বলেন, ‘‘গতকাল ওএসডির চিঠি পেয়েছি৷ এখন আপাতত স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে যোগদান করতে হবে৷’’

তাকে ওএসডি করার কারণ জানতে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মিডিয়া সেলের আহ্বায়ক ও স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব (প্রশাসন) মো. হাবিবুর রহমান খানকে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি ধরেননি৷

আমরা যা জানি তা হলো, ডা. ইসলাম যে হাসপাতালের পরিচালক ছিলেন তা কেন্দ্রীয় ঔষধাগার থেকে দেওয়া মাস্কের মান নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিল৷ প্রথম আলো পড়ে জানতে পারি, ১ এপ্রিল সাদিকুল ইসলাম স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালককে একটি চিঠি দিয়েছিলেন৷ সেখানে তিনি সরবরাহ করা মাস্ক এন নাইনটি ফাইভ কিনা জানতে চেয়েছেন৷ বিডিনউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম আরেকটু বিশদ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে উদ্ধৃত করেছে, ‘‘এন-৯৫ লেখা আপনাদের বক্সে৷ কিন্তু ভিতরের যে জিনিসটা, সেটা সঠিক থাকে কিনা, এটা একটু আপনাদের দেখা দরকার৷’’

আমরা নিজেরাও প্রধানমন্ত্রীকে ওই কথা বলতে শুনেছি৷ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দেখেছি, অনেককে খুশি হতে৷ কারণ, এবার কর্তাব্যক্তিরা ধরা খেয়েছে৷ যারা এই জালিয়াতি করেছে তাদের মুখোশ আজ উন্মোচিত হবে৷

সরকারে থাকা আমার ঘনিষ্ঠ লোকের মারফতে শুনলাম, কেমন বুঝছি? শেখ হাসিনার সরকার, কাউকে মাফ করে না৷ আমি আশা করেছি, হতেও পারে৷ নিশ্চয়ই সাদিকুল ইসলামও এরকম কিছুই ভেবেছিলেন৷ জানি না, ওএসডি নির্দেশ করা চিঠিটা পেয়ে তার কেমন লেগেছিল? তিনি কি ভেবেছেন, মাস্কের বিষয়টা না তুললেই ভালো হতো? তিনি না ভাবলেও আরো অনেক সরকারি চাকুরে যে এরকম ভাবেন বা ভবিষ্যতে ভাববেন, তাতে কোনো আর সন্দেহ নাই৷

খালেদ মুহিউদ্দীন, ডয়চে ভেলে বাংলা বিভাগের প্রধানছবি: DW/P. Böll

দুইদিন পরে আন্তর্জাতিক মুক্ত গণমাধ্যম দিবস৷ প্রায়ই শুনি, আমরা নিন্দা করে নাকি সরকারসহ সবাইকে বিপাকে ফেলি, ঠিক করে কাজ করতে দেই না৷ কয়েকদিন আগে দেখেছি, টকশোগুলোতে যেন সরকারের কার্যক্রমের নিন্দা না করা হয়৷ আমরা যেন ইতিবাচক খবর করে উৎসাহ দেই এত কষ্ট করে রাষ্ট্র পরিচালনা করা সরকারকে৷ এক কথায় আমরা যেন আদর্শ মানি বিটিভিকে!

সরকারে থাকা নীতিনির্ধারকদের কারো চোখে পড়তে পারে এ আশায় বলি, কোনো বিপদ থেকে সাবধান করা সাংবাদিকদের কাজ৷ জালিয়াতচক্র আসলের বদলে নকল চিকিৎসা উপকরণ দিচ্ছে একথা বলার জন্য আপনি যদি কোনো ডাক্তারকে দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দিয়ে বাড়িতে পাঠিয়ে দেন, তবে আপনার বা আপনাদের কথা জানি না, আমাদের সামনে বিপদ, মহাবিপদ৷

অবশ্য বিপদের কথা শুনতে না চাইলে আমাদের হাত, মুখ বেঁধে দিতে পারেন বা নিজেদের কানে দিতে পারেন তুলো অথবা হেডফোন, যেখানে হাই ভলিউমে বাজতে থাকবে আপনাদের নিয়ে রচিত অমর শংসাগীত৷

খালেদ মুহিউদ্দীন জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক ও টিভি উপস্থাপক৷ ডয়চে ভেলে বাংলা বিভাগের সাবেক প্রধান।
স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য
স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ