1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

দরকার স্থায়ী পুনর্বাসন

সমীর কুমার দে, ঢাকা১৮ মে ২০১৩

ঘূর্ণিঝড় ‘মহাসেন’ চলে যাওয়ার পর এখন উপকূলজুড়ে ভেসে উঠছে ধ্বংসযজ্ঞের ক্ষতচিহ্ন৷ এসব এলাকার আশ্রয়হারা মানুষগুলোকে এখন পুনর্বাসন করাই সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ৷ হাজার হাজার ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত হয়েছে৷

A family travels on a trishaw to a safe place from Cyclone Mahasen at a Rohingya internally displaced persons (IDP) camp outside of Sittwe, May 16, 2013. REUTERS/Soe Zeya Tun (MYANMAR - Tags: ENVIRONMENT SOCIETY)
ছবি: Reuters

কিভাবে আবার নতুন করে ঘর তৈরি করবেন, উঠে দাঁড়াবেন তা নিয়েই দুঃচিন্তায় আশ্রয়হীন উপকূলের এসব মানুষ৷ যদিও সরকার ও বেসরকারি অনেক প্রতিষ্ঠান তাদের পাশে দাঁড়িয়েছে৷ বাড়ি-ঘর তৈরি করতে প্রয়োজনীয় সহায়তারও আশ্বাস দিচ্ছেন তারা৷

প্রতিবছর এক একটি ঝড় আসবে আর বাড়ি-ঘর নিয়ে যাবে, পরে বিভিন্ন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের সাহায্য সহযোগিতা নিয়ে ঘর-বাড়ি তৈরি করে বেঁচে থাকবে উপকূলের মানুষ – এভাবে ভাবতে রাজি নন রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির চেয়ারম্যান ডা. এম এস আকবর এমপি৷ তিনি ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘আশ্রয়হীন এসব মানুষের জন্য প্রয়োজন স্থায়ী পুনর্বাসন৷ সরকার বা বিভিন্ন বেসরকারি প্রতিষ্ঠান তাদের যে সাহায্য-সহযোগিতা করছে, তা অস্থায়ী না হয়ে স্থায়ী হলে মাঝে মধ্যেই এসব মানুষকে ঘর ছাড়তে হবে না৷''

স্থায়ী পুনর্বাসনের ব্যাখা করতে গিয়ে তিনি বলেন, এমন ঘরবাড়ি তাদের নির্মাণ করে দেয়া দরকার যে, এই ধরনের ঝড়ে তাদের আর আশ্রয়কেন্দ্রে যেতে হবে না৷ আসল কথা পাকা দালান কোঠা নয়, এমন কিছু করা দরকার যা ঝড়ে অন্তত উড়ে যাবে না৷ নিজের ঘরেই যেন তারা নিশ্চিন্তে থাকতে পারেন, তেমন ব্যবস্থা করতে হবে৷ সেটা করা গেলে জীবনহানি ও ক্ষয়ক্ষতিও কমবে৷

ডা. এম এস আকবর বলেন, রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির পক্ষ থেকে সাতক্ষীরার কলারোয়া উপজেলার একটি গ্রামে ২শ'ঝড় প্রতিরোধক ঘর নির্মাণকরা হয়েছে৷ এবারও এই ধরনের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে৷ তবে রেড ক্রিসেন্ট করলেইতো আর হবে না, সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে৷ তিনি বলেন, উপকূলের মানুষ সব সময় প্রকৃতির সঙ্গে যুদ্ধ করে বেঁচে আছেন৷ আসলে এই ধরনের দুর্যোগে তারা শেষ সম্বল গরু-ছাগল, হাস-মুরগি ফেলে আশ্রয়কেন্দ্রে যেতে চান না৷ ফলে ক্ষয়ক্ষতি অনেক বেড়ে যায়৷ তাই এসব মানুষের নিজের ঘরবাড়ি শক্ত হলে জীবনহানি যেমন কমবে, তেমনি তাদের শেষ সম্বলটুকুও আর হারাতে হবে না৷

প্রতিবছরই কোনো না কোনো নামে ঝড় আঘাত হানছে৷ আর ঝড় শেষে পুনর্বাসনের পেছনে প্রতি বছর সরকারকে বিপুল পরিমাণ অর্থ ব্যয় করতে হয়৷ তবে একবারেই সবাইকে স্থায়ী পুনর্বাসন করা যাবে এমনটি নয়৷ কিছু কিছু করে শুরু করলে এক সময় পুরো উপকূলের সব মানুষকেই স্থায়ী কিছু করে দেয়া যাবে৷

‘মহাসেন' চলে গেছে, কিন্তু উপকূলের কয়েক হাজার ঘর-বাড়ি, রাস্তা ঘাট বিধ্বস্ত করে রেখে গেছে৷ বরগুনা, পটুয়াখালি ও ভোলায় ক্ষতি হয়েছে বেশি৷ ভয়াবহ ক্ষতি হয়েছে উঠতি রবি ফসলের৷ বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে উপকূলের অনেক এলাকা৷ ঘূর্নিঝড়ের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির পর তা নিরূপণের কাজ শুরু করেছে প্রশাসন৷ শুক্রবারও দেখা গেছে, কয়েকটি আশ্রয় কেন্দ্রে এখনও মানুষের ভিড় রয়েছে৷ প্রশাসনের পক্ষ থেকে এসব আশ্রয় কেন্দ্রে শুকনো খাবারের ব্যবস্থা করা হয়েছে৷ কিন্তু বাড়ি-ঘর না থাকায় এসব মানুষ আশ্রয়কেন্দ্র ছাড়ছেন না৷

ঘূর্ণিঝড় ‘মহাসেন’ চলে যাওয়ার পর এখন উপকূলজুড়ে ভেসে উঠছে ধ্বংসযজ্ঞের ক্ষতচিহ্নছবি: Munir Uz Zaman/AFP/Getty Images

নোয়াখালির হাতিয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার মাহিদুর রহমান টেলিফোনে ডয়চে ভেলেকে জানান, উপজেলার নিঝুম দ্বীপের কয়েকটি চর ও নদীর পাড়ের নলের চর, কেয়ারিং চর, নঙ্গলিয়ার চর, চর বাসার, চর কিংসহ ১২টি ইউনিয়নে শতশত কাঁচাঘর, কয়েক হাজার কিলোমিটার রাস্তাঘাট বিধ্বস্ত হয়েছে৷ উপড়ে পড়েছে শত শত গাছপালা৷ এর বাইরে কয়েক হাজার হেক্টর জমির বাদাম, সয়াবিন ও অন্যান্য রবিশস্যের ক্ষেতে পানি জমে ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে৷ তিনি বলেন, নদীর পাড়ের ও ঝুঁকিপূর্ণ এলাকার প্রায় লক্ষাধিক নারী-পুরুষ ও শিশুদের বিভিন্ন আশ্রয় কেন্দ্রে সরিয়ে নেয়া হয়েছিল৷ এখনও অনেকে আশ্রয়কেন্দ্রে আছেন৷ তাদের সবাইকে শুকনো খাবার দেয়া হচ্ছে৷ তিনি বলেন, ক্ষয়ক্ষতির পুরোটা নিরূপণ করার পর ক্ষতিগ্রস্থদের সরকারিভাবে ত্রাণ দেয়া হবে৷

এছাড়া স্থায়ী পুনর্বাসনের ব্যাপারে তিনি বলেন, এটা সরকারি সিদ্ধান্ত৷ সরকার যেভাবে চাইবে সেভাবেই হবে৷ তবে বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ইচ্ছে করলে এই ধরনের উদ্যোগ নিতে পারে বলে মনে করেন তিনি৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য
স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ