1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

মহিলা মুক্তি ফৌজের অন্যতম সংগঠক নিবেদিতা

৫ সেপ্টেম্বর ২০১২

সিলেট অঞ্চলের বীর নারী মুক্তিযোদ্ধাদের অন্যতম সংগঠক নিবেদিতা দাস৷ পাঁচ নম্বর সেক্টরে মহিলা মুক্তি ফৌজের সম্পাদিকা হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন তিনি৷ অস্ত্র হাতে যুদ্ধ না করলেও মুক্তিযোদ্ধাদের সহযোগিতা করেছেন নিবেদিতা৷

ছবি: Rupak Das

সিলেটে ১৯৫৪ সালের ৭ই নভেম্বর জন্ম গ্রহণ করেন নিবেদিতা দাস৷ পিতা নলিনী কান্ত দাস এবং মাতা স্নেহলতা দাস৷ ১৯৭১ সালের ২৬শে মার্চ মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে ছাতক হয়ে পরে ভারতের চেলা শিবিরে যান নিবেদিতা দাস এবং তাঁর পরিবারের সদস্যরা৷

এসময়ের ভয়ঙ্কর দিনগুলোর কথা স্মরণ করে নিবেদিতা জানান, ‘‘আমরা সিলেট থেকে প্রথমে ছাতক যাই৷ সিলেট থেকে যেসময় নদীর তীরে অবস্থিত কারিগরি বিদ্যালয়ের কাছে গিয়েছি, তখন সেখানে খুব গোলাগুলি শুরু হয়েছিল৷ এর মধ্যেই আমরা কোনমতে এক রাত কাটিয়েছি ঐ বিদ্যালয়টিতে৷ পরের দিন আমরা নৌকায় করে ছাতকে সিমেন্ট কারখানায় চলে যাই৷ কিন্তু পাঞ্জাবিরা হামলা চালিয়ে সেখানকার সেতুটি ভেঙে ফেলে৷ এরপর আমরা দোয়ারা বাজার চলে যাই৷ কিন্তু দোয়ারা বাজারে আমরা যে বাড়িতে উঠেছিলাম সেখানে ডাকাত ছিল৷ ফলে আমাদের সাথে থাকা প্রায় সবকিছুই তারা নিয়ে নেয়৷ এভাবে মাত্র তিন মাসের শিশুপুত্রকে নিয়ে দৌড়ে দৌড়ে শেষ পর্যন্ত চেলা শিবিরে পৌঁছি৷'' তবে শরণার্থী শিবিরে শুধু বসে বসে দিন পার না করে দেশমাতৃকার মুক্তির জন্য কাজ করার কথা ভাবতে থাকেন নিবেদিতা দাস৷

Week 36/12 Women 1: Nibedita Das - MP3-Mono

This browser does not support the audio element.

কিছুদিন পর জাতীয় পরিষদ সদস্য আব্দুল হক এবং আওয়ামী লীগ নেতা হেমেন্দ্র দাস পুরকায়স্থের সহায়তায় সিলেটের নারীদের নিয়ে মহিলা মুক্তি ফৌজ গঠন করেন তাঁরা৷ বীর নারীদের নিয়ে গঠিত এই বাহিনীর প্রধান ছিলেন প্রীতিলতা দাস পুরকায়স্থ এবং সম্পাদিকা ছিলেন নিবেদিতা দাস৷

তাঁরা পাঁচ নম্বর সেক্টরের আওতায় থেকে মুক্তিযুদ্ধের জন্য কাজ করেন৷ মহিলা মুক্তি ফৌজের কাজে প্রত্যক্ষ সহযোগিতা করেন ভারতের সমাজসেবী নারী অঞ্জলি লাহিড়ী৷ এছাড়া মুক্তিযুদ্ধের প্রধান সেনাপতি জেনারেল এম এ জি ওসমানী এবং প্রবাসী সরকারের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এ এইচ এম কামরুজ্জামান মহিলা মুক্তি ফৌজের কার্যক্রম পরিদর্শন করেন এবং অর্থ সহায়তা করেন৷ নিবেদিতা দাস এবং তাঁর সঙ্গীরা মুক্তিযুদ্ধে যোগ দেওয়ার জন্য তরুণদের উৎসাহিত করতেন এবং প্রশিক্ষণের জন্য পাঠাতেন৷ আহত মুক্তিসেনাদের চিকিৎসা সেবা দিয়েছেন, মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য খাবার তৈরি ও সরবরাহ এবং মহিলাদের কুটির শিল্পের প্রশিক্ষণ দিয়েছেন৷ এছাড়া মহিলাদের তৈরি হস্তশিল্প বিক্রি করে যুদ্ধের জন্য অর্থ সংগ্রহ করতেন তাঁরা৷

বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার চার দশক পেরিয়ে গেলেও এখনও সরকারিভাবে স্বীকৃতি ও কোন সুযোগ-সুবিধা পাননি নিবেদিতা দাস৷ তাঁর ভাষায়, ‘‘সরকারের কাছ থেকে কিছুই পাইনি৷ মুক্তিযুদ্ধের সময় আমার কাজের দলিল-পত্র রয়েছে৷ সেসব কাগজসহ আমি মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে তালিকাভুক্তির জন্য আবেদন করেছি৷ এছাড়া আল আজাদ রচিত মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক বইয়েও আমার কাজের কথা উল্লেখ রয়েছে৷ অথচ এখন পর্যন্ত সরকারিভাবে স্বীকৃতি পাইনি৷ তবে বর্তমান সরকারের অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিত সাহেব একটি সাময়িকী থেকে আমার কাজের কথা জানার পর নির্দেশ দিয়েছিলেন যে, এই মহিলাকে খুঁজে বের করো৷ ফলে সমাজ কল্যাণ দপ্তরের জেলা কর্মকর্তা আনোয়ারা বেগম আমার সাথে যোগাযোগ করে সভা-সমিতিতে আমন্ত্রণ জানান৷ কিন্তু শুধু সভা আর বৈঠকে গিয়ে কী হবে৷ তারা তো মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে আমাকে স্বীকৃতি দেননি৷''

প্রতিবেদন: হোসাইন আব্দুল হাই

সম্পাদনা: আরাফাতুল ইসলাম

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য
স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ