1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

মাইন অপসারণে বাংলাদেশ-মিয়ানমার একমত

৬ এপ্রিল ২০১৭

বাংলাদেশ ও মিয়ানমার যার যার সীমান্ত এলাকা থেকে পুঁতে রাখা স্থলমাইন ও আইআইডি (ইমপ্রোভাইস্ড এক্সপ্লোসিভ ডিভাইস)  অপসারণে সম্মত হয়েছে৷ বলা হয়ে থাকে, বিদ্রোহীরাই নো-ম্যান্স ল্যান্ডে দীর্ঘদিন ধরে এ সব পুঁতে রেখেছে৷

Jemen Regierungstruppen erobern Hafenstadt Mocha am Roten Meer
ল্যান্ডমাইন বিস্ফোরণের দৃশ্যছবি: Getty Images/AFP/S. Al-Obeidi

বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের মধ্যে সাতদিনের সীমান্ত বৈঠক শেষে বৃহস্পতিবার, বাংলাদেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিজিবি-র অতিরিক্ত মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. আনিসুর রহমান এক সংবাদ সম্মেলনে জানান, ‘‘বাংলাদেশ ও মিয়ানমার সীমান্তে শূন্য লাইনের আশেপাশে পুঁতে রাখা মাইন ও আইইডি অপসারণে সম্মত হয়েছে৷ এতদিন এসব মাইন বিস্ফোরণে বহু হতাহতের ঘটনা ঘটেছে৷''

তিনি আরো বলেন, ‘‘মাইন ও বিস্ফোরক পুঁতে রাখার কারণে বাংলাদেশের সীমান্তের কিছু জায়গায় আমরা এখনও যেতে পারি না৷ বিচ্ছিন্নতাবাদী বা অন্য কোনো গ্রুপ এসব মাইন বা বিস্ফোরক পুঁতে রেখেছে৷ বিজিবি এখন মিয়ানমার কর্তৃপক্ষের সম্মতি নিয়ে ঐ মাইন ও বিস্ফোরক সরানোর চেষ্টা করছে৷''

সংবাদ সম্মেলনে মিয়ানমারের চিফ অফ পুলিশ জেনারেল স্টাফ (মিয়ানমার পুলিশ ফোর্স) মেয়োসেও উইন উপস্থিত ছিলেন৷ জানাগেছে, মাইনের পাশাপাশি সীমান্তে হাতে তৈরি বোমা এবং গ্রেনেডও পুঁতে রাখা হয়েছিল৷ বিভিন্ন সময় এই সব মাইন ও বিস্ফোরক উদ্ধারও করা হয়৷ এখন বিদ্রোহীদের কথা বলা হলেও, গত কয়েক বছরে সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত খবর অনুযায়ী, মিয়ানমারের সীমান্তরক্ষী বাহিনী এ সব মাইন পুঁতে রেখেছে বলে অভিযোগ রয়েছে৷ তবে গ্রেনেড বিষ্ফোরক বিদ্রোহীরা লুকিয়ে রাখার জন্য পুঁতেছে বলেই জানিয়েছে স্থানীয় সূত্রগুলো৷

ফজলুল কাদের চৌধুরী

This browser does not support the audio element.

২০১৫ সালের ৭ জানুয়ারি বাংলাদেশের নাইক্ষ্যংছড়ি-মিয়ানমার সীমান্তবর্তী ৪৯ নম্বর পিলারের নো-ম্যান্স ল্যান্ড থেকে ১২টি স্থলমাইন উদ্ধার করে বিজিবি৷ গতবছরের ৬ নভেম্বর বাংলাদেশ-ভারত-মায়ানমার সীমান্তে স্থলমাইন বিস্ফোরণে তিনজন আহত হন৷ রাঙ্গামাটির বিলাইছড়ি উপজেলার বড়থলি ইউনিয়নের জারুল্যাছড়ি পয়েন্টে এই বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে৷ ২০১৪ সালে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে সীমান্তে মাইন স্থাপনের প্রতিবাদ এবং বন্ধের দাবি করা হয়৷ একাধিক সূত্র জানায়, গত পাঁচবছরে সীমান্তে মাইন বিস্ফোরণে অনন্ত সাতজন নিহত হয়েছেন৷ নিহত হয়েছে হাতিসহ বন্যপ্রাণীও৷

বাংলাদেশের সঙ্গে মিয়ানমারের ২৭১ কিমি. সীমান্ত রয়েছে৷ এর মধ্যে ২০৮ কিমি. স্থল সীমান্ত এবং ৬৪ কিমি. নৌ সীমান্ত৷ কক্সবাজারের প্রবীণ সাংবাদিক এবং দৈনিক রূপালী সৈকতের সম্পাদক ফজলুল কাদের চৌধুরী ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘১৯৯১ সাল থেকে সীমান্তের নো-ম্যান্স ল্যান্ড এলাকায় ব্যাপকভাবে মাইন পোতা হয়৷ আমরা তখন প্রায়ই মাইন বিস্ফোরণে সাধারণ মানুষ নিহত হওয়ার খবর পেতাম৷ এঁদের অধিকাংশই ছিল কাঠুরিয়া৷ শুধু মানুষ নয়, বন্য হাতিসহ আরো অনেক প্রাণী মাইন বিষ্ফোরণে মারা যায়৷''

তাঁর কথায়, ‘‘মাইন পুঁতে রাখার জন্য এখন বিদ্রোহীদের দায়ী করা হলেও, তার যৌক্তিকতা দুর্বল৷ কারণ বিদ্রোহী, চোরাচালানকারী বা অবৈধ ব্যবসায়ীরা সীমান্তে মাইন পুঁতলে তাদেরই সমস্যা৷ কারণ এতে তাদের যাতায়াতে অসুবিধা হয় বা ঝুঁকি বেড়ে যায়৷''

তিনি আরো বলেন, ‘‘এ সব মাইন পোঁতা হয়েছে নো-ম্যন্স ল্যান্ডে সীমানা পিলারের আশেপাশে৷ নাইক্ষ্যংছড়ি থেকে ঘুমঘুম সীমান্ত এলকা সবচেয়ে বিপজ্জনক৷ ঐ সব এলকার সীমান্তে যাঁরা থাকেন তাঁদের মধ্যে মাইন আতঙ্ক একটি বড় আতঙ্ক৷''

তবে তিনি জানান, ল্যান্ড মাইন বিস্ফোরণে আগের চেয়ে এখন মৃত্যুর হার কমেছে৷ বিস্ফোরণও আগের মতো হয় না, যেটা হতো এখন থেকে ১০-১৫ বছর আগে৷

ইন্টারন্যাশনাল ক্যাম্পেইন টু ল্যান্ড মাইন্স বা আইসিবিএলএম-এর হিসাব অনুযায়ী, ২০০১ থেকে ২০০৩ সাল পর্যন্ত ল্যান্ডমাইন বিস্ফোরণে বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের ৬৪ জন প্রাণ হারিয়েছে৷ এঁরা মূলত কাঠুরিয়া বা বনজীবী৷ আহত হয়েছে আরো ৮৭ জন৷

জানা গেছে, সীমান্তে পুঁতে রাখা স্থলমাইন ভূমিক্ষয়সহ নানা কারণে সরে গিয়ে কৃষিভূমি বা লোকালয়েও চলে যায়৷ এ রকম বেশ কিছু মাইন বাংলাদেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিভিন্ন সময় অপসারণ করেছে৷

প্রতিবেদনটি নিয়ে আপনার মন্তব্য জানান, নীচের ঘরে৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য
স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ