কয়েক দশক ধরে বাণিজ্যিক আরোহণের ফলে মাউন্ট এভারেস্ট পরিণত হয়েছে আবর্জনার পাহাড়ে৷ এর পরিমাণ এতটাই বেশি যে, এভারেস্টকে পৃথিবীর সর্বোচ্চ ভাগাড়ও বলা হয়ে থাকে৷ দু্র্নাম ঘুচাতে দায়িত্ব নিয়েছে বিশেষ একটি দল৷
বিজ্ঞাপন
নেপালের সরকার ১৪ সদস্যের এ দলটি গঠন করেছে৷ এরই মধ্যে টিনের ক্যান, প্লাস্টিক ও ফেলে দেয়া পর্বতারোহণের যন্ত্রপাতি মিলিয়ে তিন টন অবর্জনা সংগ্রহ করেছেন দলের সদস্যরা৷
নেপালের পর্যটন বিভাগের প্রধান ডান্ডু রাজ ঘিমিরে জানান, ‘‘বিশ্বের সর্বোচ্চ পর্বতশৃঙ্গ পরিষ্কার করতে আসছে মৌসুমেও এই অভিযান অব্যাহত থাকবে৷ এটি আমাদের দায়িত্ব৷’’
দশকের পর দশক ধরে মাউন্ট এভারেস্ট নানা ধরনের দূষণের শিকার হয়েছে৷ মানববর্জ্য তো রয়েছেই, পর্বতারোহীরা নানা ধরনের আবর্জনা, এমনকি ফ্লুরোসেন্ট তাঁবু, গ্যাসের ক্যানও ফেলে যান৷
সুন্দর এভারেস্টের ভয়ংকর গল্প
বিশ্বের সর্বোচ্চ চূড়া মাউন্ট এভারেস্টে উঠা একদিকে যেমন রোমাঞ্চকর, অন্যদিকে ভয়ানকও বটে৷ ছবিঘরে থাকছে অভিযাত্রীদের সাথে এভারেস্টে ঘটে যাওয়া ভয়ংকর সব ঘটনা৷
ছবি: DW/Jasvinder Sehgal
মৃত্যুর সংখ্যা কম নয়
হিমালয়ের বিভিন্ন চূড়ায় আরোহণ নিয়ে তথ্য সংগ্রহকারী অলাভজনক সংস্থা ‘দ্য হিমালয়ান ডাটাবেজ’ বলছে, ১৯০০ সাল থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত মাউন্ট এভারেস্টে উঠতে গিয়ে ২৮০ জনের বেশি পর্বতারোহী মারা গেছেন৷
ছবি: Imago
বেশি মৃত্যু নেপাল অংশে
এভারেস্টে উঠার জন্য বেশিরভাগ পর্বতারোহী নেপাল ও তিব্বতের অংশ বেছে নেন৷ দ্য হিমালয়ান ডাটাবেজ বলছে, নেপালের অংশটি দিয়ে এভারেস্টে উঠতে গিয়ে এ পর্যন্ত মৃত্যুর সংখ্যা প্রায় এক’শ ৮০ জন৷
ছবি: Imago
কিছুটা কম তিব্বতে
একই সময়ে তিব্বতের অংশ দিয়ে এভারেস্টে উঠতে গিয়ে নিহতের সংখ্যা ছিল একশ জনের উপরে৷
ছবি: picture alliance/Joker
কেউ মারা যাননি যে বছর
এভারেস্টে উঠত গিয়ে প্রায় প্রতিবছরই নিহতের ঘটনা ঘটে৷ এদিক থেকে ভাগ্যবান বলা যেতে পারে ২০১৬ সালকে, কেননা সে বছর তিব্বত অংশে প্রাণহানির কোনো খবর পাওয়া যায়নি৷ এ হিসেবে, নেপাল অংশের জন্য শুভ সালটি ছিল ২০১০৷ আর ১৯৮১ সালে তিব্বত ও নেপাল- কোনো অংশেই নিহতের ঘটনা ঘটেনি বলে জানিয়েছে দ্য হিমালয়ান ডাটাবেজ৷
ছবি: picture alliance/dpa/N. Shrestha
প্রাণহানির কারণ
পর্বতারোহীদের অভিজ্ঞতা বলছে, প্রাণহানির কারণগুলোর মধ্যে রয়েছে হিমবাহ ও বরফ ধস, পড়ে যাওয়া, পর্বতারোহণজনিত অসুস্থতা, শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যাসহ নানা রকমের দুর্যোগ৷
ছবি: DW/Jasvinder Sehgal
5 ছবি1 | 5
পরিবেশ বিপর্যয়
এপ্রিলের ১৪ তারিখ শুরু হয়েছে এই ‘এভারেস্ট পরিষ্কার অভিযান’৷ ভারতের পত্রিকা দ্য হিন্দু জানিয়েছে, এ অভিযান ৪৫ দিন ধরে চলবে৷ প্রাথমিকভাবে ১০ টন আবর্জনা সংগ্রহের লক্ষ্য বিশেষ দলটির৷
বর্জ্য সংগ্রহে ক্যাম্প ৪ পর্যন্ত যাবে দলটি৷ এই ক্যাম্পটি সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ৭,৯৫০ মিটার বা ২৬ হাজার ৮০ ফুট ওপরে অবস্থিত৷
বসন্তকালীন আরোহণ মৌসুমের শুরুতেই এ অভিযান শুরু হলো৷ ৮,২৪৮ মিটার উচ্চতার এই পর্বতশৃঙ্গে শত শত আরোহী চূড়ায় পোঁছানোর চেষ্টা করবেন৷ তাঁদের সঙ্গে থাকবেন আরো হাজারখানেক সাহায্যকারী৷ গত বছর রেকর্ড ৮০৭ জন আরোহী চূড়ায় পৌঁছাতে সক্ষম হন৷ ১৯৫৩ সালে প্রথম এভারেস্ট জয় করেছিলেন নেপালের শেরপা তেনজিং নোরগে এবং নিউজিল্যান্ডের এডমুন্ড হিলারি৷
আবর্জনার দূষণেই শুধু এভারেস্ট ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে না, বিজ্ঞানীরা সতর্ক করে দিয়েছেন, বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধিও এর চেহারা ধীরে ধীরে পালটে দিচ্ছে৷ নেপালের দিকে অবস্থিত খুম্বু আইসফল কয়েক দশকের মধ্যে হারিয়ে যাবে৷
হিমবাহ গলে যাওয়ার ফলে দশকের পর দশক ধরে বরফের নীচে চাপা পড়ে থাকা আবর্জনা, এমনকি মৃত পর্বতারোহীদের দেহও বের হয়ে আসতে পারে৷
এডিকে/এসিবি (এএফপি, রয়টার্স)
২০১৫ সালের ছবিঘরটি দেখুন...
সাত চূড়ায় ওয়াসফিয়া: কবে, কোনটি
প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে বিশ্বের সাত মহাদেশের সাতটি সর্বোচ্চ শৃঙ্গ জয় করেছেন ওয়াসফিয়া নাজরীন৷ চার বছর আগে ‘বাংলাদেশ অন সেভেন সামিট’ নামে অভিযান শুরু করেছিলেন তিনি৷
ছবি: picture-alliance/dpa/R.Naar
ক্যাম্পেইন সমাপ্ত
চার বছর আগে স্বাধীনতার ৪০ বছর উদযাপনের জন্য ‘বাংলাদেশ অন সেভেন সামিট’ ক্যাম্পেইন শুরু করেছিলেন ওয়াসফিয়া নাজরীন৷ এই সাফল্য তিনি মুক্তিযুদ্ধে যাঁরা প্রাণ দিয়েছেন তাঁদের উৎসর্গ করেছেন৷
ছবি: DW/M. Mamun
আফ্রিকা
নাম: কিলিমানজারো, উচ্চতা: ৫,৮৯৫ মিটার, আরোহণের সময়: ২০১১ সালের ২ অক্টোবর
ছবি: cc-by-Evan Forester
দক্ষিণ অ্যামেরিকা
নাম: আকনকাগুয়া, উচ্চতা: ৬,৯৬১ মিটার, আরোহণের সময়: ২০১১ সালের ১৬ ডিসেম্বর
ছবি: picture-alliance/dpa
এশিয়া
নাম: এভারেস্ট, উচ্চতা: ৮,৮৪৮ মিটার, আরোহণের সময়: ২০১২ সালের ২৬ মে
ছবি: AFP/Getty Images/R. Schmidt
অ্যান্টার্কটিকা
নাম: মাউন্ট ভিনসন, উচ্চতা: ৪,৮৯২ মিটার, আরোহণের সময়: ২০১৩ সালের ৪ জানুয়ারি
ছবি: picture-alliance/dpa/R.Naar
ইউরোপ
নাম: মাউন্ট এলব্রুস, উচ্চতা: ৫,৬৪২ মিটার, আরোহণের সময়: ২০১৩ সালের ২৮ মার্চ
ছবি: Fotolia/julialine802
উত্তর অ্যামেরিকা
নাম: ডেনালি, মাউন্ট ম্যাককিনলে নামেও পরিচিত, উচ্চতা: ৬,১৯৪ মিটার, আরোহণের সময়: ২০১৪ সালের ২৩ জুন
ছবি: Getty Images/AP Photo/B. Bohrer
ওশেনিয়া
নাম: কার্সটেসনস পিরামিড, পুঞ্জাক জায়া নামেও পরিচিত, উচ্চতা: ৪,৮৮৪ মিটার, আরোহণের সময়: ২০১৫ সালের ১৮ নভেম্বর