মাগুরায় এবার সাড়ে ৭ কিলোমিটার দীর্ঘ জার্মান পতাকা
১৮ নভেম্বর ২০২২
আমজাদ হোসেন দুরারোগ্য রোগ থেকে মুক্তি পেয়েছিলেন জার্মানি থেকে আনা ওষুধ খেয়ে৷ তারপর থেকেই তিনি ফুটবলে জার্মানিকে সমর্থন জানিয়ে আসছেন৷
আমজাদ হোসেনের সাড়ে ৭ কিলোমিটার দীর্ঘ জার্মান পাতাকাছবি: bdnews24.com
বিজ্ঞাপন
সেইবার ভয়ঙ্কর ব্যাধিকে হার মানানো আমজাদের বয়স ৭০- এ ঠেকেছে৷ বয়সের ভার জাঁকিয়ে বসলেও ফুটবল আর জার্মান দলের প্রতি ভালোবাসা কমেনি এক বিন্দু৷ ফুটবল বিশ্বকাপের উন্মাদনার মধ্যে এবার প্রিয় দলের সাড়ে ৭ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের পতাকা বানিয়ে সবাইকে চমকে দিয়েছেন আমজাদ হোসেন ৷
সদর উপজেলার চাউলিয়া ইউনিয়ন পরিষদের নিশ্চিন্তপুর স্কুল মাঠে শুক্রবার বেলা ১১টায় দীর্ঘ এ পতাকা প্রদর্শন করে এটিকে বিশ্বের ‘সবচেয়ে বড়' পতাকা বলে দাবি করেছেন তিনি ৷
একই ইউপির ঘোড়ামরা গ্রামের দরিদ্র কৃষক আমজাদ ২০০৬ সালে প্রথম জার্মানির দেড় কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের পতাকা তৈরি করেন ৷ সেই পতাকা ২০১০ সালের বিশ্বকাপে আড়াই কিলোমিটারে গিয়ে দাঁড়ায় ৷
এর সঙ্গে আরও এক কিলোমিটার দৈর্ঘ্য যুক্ত করে ২০১৪ সালে আমজাদ তৈরি করেন সাড়ে তিন কিলোমিটার দীর্ঘ পতাকা; সবশেষ ২০১৮ সালে পতাকার দৈর্ঘ্য দাঁড়িয়েছিল সাড়ে পাঁচ কিলোমিটারে ৷ গতবারের চেয়ে পতাকার দৈর্ঘ্য দুই কিলোমিটার বাড়াতে প্রায় এক লাখ টাকা খবচ হয়েছে বলে আমজাদ জানালেন৷
জার্মানি দলের প্রতি ভালোবাসার কারণ জানতে চাইলে আমজাদ বলেন, ১৯৮৭ সালে একটি কঠিন রোগে আক্রান্ত হন তিনি৷ জার্মানির ওষুধ খেয়েই সেই রোগ থেকে মুক্তি পান৷ এরপর থেকেই তিনি জার্মানের ভক্ত৷ একইভাবে জার্মান ফুটবল দলকেও তিনি ভালোবাসেন৷
প্রিয় দলের সবচেয়ে বড় পতাকা বানিয়ে ভালোবাসার সেই প্রকাশ ঘটান দাবি করে আমজাদ আরো বলেন, এবার নতুন দুই কিলোমিটার পতাকা তৈরি করতে কাপড়ে খরচ হয়েছে ৭০ হাজার টাকা ৷ বাকি ৩০ হাজার গেছে দর্জির মজুরি আর যাতায়াতে৷
স্থানীয়রা জানান, আমজাদ দরিদ্র হলেও জার্মানির পতাকা বানানোর জন্য এর আগে তিনি বাড়ির তিন শতক জমিও বিক্রি করেছেন৷ ২০১৪ সালে জার্মান রাষ্ট্রদূত মাগুরায় তার বাড়িতে ওই পতাকা দেখতে গিয়েছিলেন৷
সে সময় তাকে জার্মান দূতাবাসের পক্ষ থেকে সংবর্ধনাও দেওয়া হয়; একই সঙ্গে জার্মান ফুটবল দলের ফ্যান ক্লাবের আজীবন সদস্যপদ দেওয়া হয়েছে বলেও জানিয়েছেন আমজাদ৷
এবারের বিশ্বকাপে জার্মান চ্যাম্পিয়ন হলে বাড়িতে কয়েকশ' লোককে খাওয়ানোসহ গোটা পতাকা নিয়ে মাগুরা শহরে মিছিল করবেন বলে জানান৷
মাগুরা ফুটবল অ্যাকাডেমির পরিচালক সৈয়দ বারিক আনজাম বার্কি বলেন, ‘‘আমজাদ জার্মান-পাগল মানুষ ৷ দরিদ্র কৃষক হলেও বিশ্বকাপ ফুটবল এলে তিনি জার্মানির দীর্ঘ পতাকা বানিয়ে চমক সৃষ্টি করেন৷ প্রতি বছর তার পতাকার দৈর্ঘ্য বৃদ্ধি পায়৷”
চাউলিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হাফিজার রহমান বলেন, ‘‘আমজাদ এ বছর সাড়ে ৭ কিলোমিটার পতাকা তৈরি করে চমক সৃষ্টি করেছে৷ তার এ জন্য বিশ্বের দরবারে বাংলাদেশসহ তার নিজ এলাকা পরিচিতি লাভ করছে৷”
এনএস/এসিবি (বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম)
ঢাকায় ফুটবল বিশ্বকাপের যত আনন্দ-উন্মাদনা
মরুভূমির দেশ কাতারে শুরু হয়েছে ২২তম ফিফা বিশ্বকাপ। ফুটবলের এই আসরকে ঘিরে ঢাকায় দেখা যাচ্ছে নানা ধরনের উন্মাদনা। তার কিছু চিত্র থাকছে এই ছবিঘরে।
ছবি: Rajib Paul/DW
দেয়ালে বিশ্বকাপ
বিশ্বকাপ উদযাপনের অংশ হিসেবে পুরান ঢাকার টিকাটুলির কেএম দাস লেনের একটি গলি দেয়ালচিত্রে রঙিন হয়ে উঠেছে। এখানে দেখা যাচ্ছে, সাত দেশের বিশ্বখ্যাত ফুটবলারদের চোখ রয়েছে বিশ্বকাপ ট্রফিতে।
ছবি: Rajib Paul/DW
তরুণদের আবেগ
টিকাটুলির স্থানীয় তরুণরা নিজ উদ্যোগে তারকা ফুটবলারদের মুখাবয়ব এঁকেছেন। বর্তমান ফুটবলারদের পাশাপাশি প্রয়াত কিংবদন্তি ডিয়েগো ম্যারাডোনা ও সাবেক ব্রাজিলিয়ান তারকা রোনালদিনিয়োকেও সম্মান জানিয়েছেন তারা।
ছবি: Rajib Paul/DW
ছবি তোলার স্পট
কেএম দাস লেনের গলিতে আর্জেন্টিনা ও ব্রাজিলের পতাকার রঙে পাখির ডানা ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। দেয়ালচিত্রের এই অংশটি এখন স্থানীয়দের কাছে ছবি তোলার আকর্ষণীয় স্পটে পরিণত হয়েছে। চাইলে সেলফিও তোলা যেতে পারে কিন্তু!
ছবি: Rajib Paul/DW
ঢাবিতে বিশ্বকাপের আমেজ
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলে ঝুলছে আর্জেন্টিনা-ব্রাজিলসহ বিভিন্ন দেশের পতাকা। মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউর রহমান হলে এই সাজ সাজ রব চোখে পড়ার মতো।
ছবি: Rajib Paul/DW
রঙিন করিডোর
মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউর রহমান হলের অভ্যন্তরেও বিশ্বকাপের আমেজ। নিজেদের প্রিয় দল আর্জেন্টিনা ও ব্রাজিলের পতাকায় করিডোর সাজিয়ে রেখেছেন শিক্ষার্থীরা।
ছবি: Rajib Paul/DW
মাঠের দেয়ালচিত্র
মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউর রহমান হলের পাশের একটি মাঠে বিশ্বকাপের ম্যাচ দেখানো হবে বড় পর্দায়। এজন্য এখানকার দেয়ালে ব্রাজিল ও বাংলাদেশের পতাকা আঁকা হয়েছে। মাঠের গাছে আর্জেন্টিনার পতাকা ঝুলিয়ে রেখেছেন সমর্থকরা।
ছবি: Rajib Paul/DW
বেচাকেনা জমজমাট
গুলিস্তানে ফুটপাত মার্কেটে বিভিন্ন দেশের জার্সির বেচাকেনার রীতিমতো জমজমাট আয়োজন চোখে পড়েছে। দোকানিরা ডয়চে ভেলেকে জানালেন, আর্জেন্টিনা ও ব্রাজিলের জার্সি কেনার দিকেই ক্রেতাদের আগ্রহ বেশি।
ছবি: Rajib Paul/DW
শিশু-কিশোরদের আনন্দ
বড়দের পাশাপাশি ফিফা বিশ্বকাপ যেন আলাদা আনন্দ যোগ করেছে শিশু কিশোরদের মনে। প্রিয় দলের জার্সি কিনতে চায় তারাও। গুলিস্তান বেলপট্টিতে সন্তানের আবদার মেটাতে কেনাকাটা করতে এসেছেন একজন মা।
ছবি: Rajib Paul/DW
দর্জিদের ব্যস্ততা
বিশ্বকাপকে সামনে রেখে পতাকা সেলাইয়ে ব্যস্ত দর্জিরা। শনির আখড়ার কদমতলীতে একটি কারখানায় বিভিন্ন দেশের পতাকা তৈরি করতে দেখা গেছে।
ছবি: Rajib Paul/DW
ভ্রাম্যমাণ বিক্রেতা
কারখানা থেকে পতাকা সংগ্রহ করে অনেকে ভ্যানে করে ঘুরে ঘুরে বিক্রি করেন। শনির আখড়া এলাকায় এই ছবিটি তোলা।
ছবি: Rajib Paul/DW
ক্রেতাদের ভিড়
বিশ্বকাপের আনন্দে মাততে পতাকা কিনতে দোকানে দোকানে ভিড় করছেন ক্রেতারা। আর্জেন্টিনা ও ব্রাজিলের পতাকার চাহিদা বেশি বলে জানিয়েছেন বিক্রেতারা। বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে এমনই ছবি ধরা পড়েছে আলোকচিত্রীর ক্যামেরায়।
ছবি: Rajib Paul/DW
শহরের ফেরিওয়ালা
ঢাকায় এখন এদিক-সেদিক পতাকা হাতে ফেরিওয়ালাদের দেখা যাচ্ছে। নবাবপুরের কাপ্তানবাজারে তাদেরই একজন আর্জেন্টিনা-ব্রাজিলকে সঙ্গে নিয়ে ঘুরছেন যেন!
ছবি: Rajib Paul/DW
বড় পতাকার প্রতিযোগিতা
কে কার চেয়ে বড় পতাকা রাখবে তা নিয়ে সমর্থকদের মধ্যে প্রতিযোগিতা চলে। গুলিস্তানে বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ের চার তরুণ প্রিয় দলের পতাকা কেনার আগে মাপ দেখে নিচ্ছে। কারণ, বিশ্বকাপে প্রিয় দলের পতাকাটি নিখুঁত হওয়া চাই।
ছবি: Rajib Paul/DW
সব শ্রেণির মানুষের আগ্রহ
নিম্ন-আয়ের মানুষরাও বিশ্বকাপ জ্বরে ভুগছেন। আফতাব নগরে একজন রিকশাচালক প্রিয় দলের তিনটি পতাকা সাজিয়েছেন নিজের বাহনে।
ছবি: Rajib Paul/DW
ছোট পর্দায় খেলা
বিশ্বকাপের ম্যাচ সরাসরি দেখতে অনেকে টেলিভিশন কিনছেন। ঢাকার পুরানা পল্টনে ক্রেতাদের আকর্ষণের জন্য বিভিন্ন দলের জার্সি ও ফুটবল দিয়ে দোকানঘর সাজানো হয়েছে ।