1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

মাছের নিরামিষ খাদ্য

ইঙ্গা ভেগেমান / এসবি২৮ ডিসেম্বর ২০১৩

বাঙালি মানেই মাছ পাগল৷ তবে আমরা যে মাছ খাই, সেই মাছ কী খায়? যেমন ট্রাউট মাছ অন্য মাছ খেতেই ভালবাসে৷ এবার চেষ্টা চলছে তাদের নিরামিষভোজী করে তোলার৷ তাহলে কি ট্রাউটের স্বাদ বদলে যাবে? মাছকে নিরামিষ খাইয়ে লাভই বা কী?

Bildergalerie : Forellen
ছবি: Shabestan.ir

ট্রাউট আসলে শিকারি মাছ৷ এমন মাছ চাষের সময় খাদ্য হিসেবে তাদের প্রায়ই ছোট সামুদ্রিক মাছের শুকনা টুকরা দেওয়া হয়৷ কিন্তু সমুদ্রে অতিরিক্ত মাছ শিকার বন্ধ করতে বিজ্ঞানীরা ভেড়ির ট্রাউট মাছকে নিরামিষভোজী করে তুলতে চান৷ তবে মাছ-চাষীদের মনে এ বিষয়ে সন্দেহ রয়েছে৷

মাছ ব্রিডার গুনার রেসে বলেন, ‘‘ট্রাউট মাছ নিরামিষ খাবার খেয়ে নিশ্চয় বাঁচতে পারে৷ কিন্তু ভবিষ্যতেও এতে কাজ হবে কি না, তা নিয়ে আমার মনে সন্দেহ রয়েছে৷ যে শিকারি মাছ চিরকাল অন্য মাছ খেয়ে বেঁচে থাকে, এনজাইম ছেড়ে তাকে পুরোপুরি নিরামিষ প্রোটিনের উপর নির্ভর করানো খুবই কঠিন বলে মনে হয়৷''

কঠিন, তবে অসম্ভব নয়৷ মেরিন অ্যাকোয়াকালচার সংস্থার কার্স্টেন শুলৎস অন্তত তাই মনে করেন৷ মূলত রেপসিড ও সয়া-বিনস-এর মতো তেল থেকে প্রোটিন দিয়েই মাছের জন্য নিরামিষ খাদ্য তৈরি করেন তিনি৷ উদ্দেশ্য, খাবার সুস্বাদু হতে হবে, খেয়ে তারা মোটা হবে, যাতে মাছের স্বাদও ভালো হয়৷ কিন্তু মাছেরা সেই খাদ্য পছন্দ করছে কি? শুলৎস বলেন, ‘‘দেখতে পাই, মাছ কীভাবে লুটেপুটে খাচ্ছে৷ হোমওয়ার্ক ভালই করেছি বলে মনে হয়৷''

এই পরীক্ষার পেছনে শুধু মাছের কল্যাণের কথা ভাবা হচ্ছে না, অর্থনৈতিক স্বার্থও জড়িয়ে রয়েছে৷ ছাল মোটা হলেই মাছ ভালো বিক্রি হয়৷ কার্স্টেন শুলৎস আগে আলুর প্রোটিন নিয়ে পরীক্ষা করেছেন৷ তবে ট্রাউট মাছের কাছে সেই খাদ্য ছিল বেশ তিতা৷ শুলৎস বলেন, ‘‘খাদ্যের কোনো বিশেষ মিশ্রণ যদি পছন্দ না হয়, খেতে ভালো না হয়, তখন মাছ সেটা কিছুতেই খাবে না, দিনের পর দিন ধরে গোঁ ধরে বসে থাকবে৷ আমাদের এমন অভিজ্ঞতাও হয়েছে, যে দরকার হলে মাছ ২ মাসেরও বেশি সময় জুড়ে কিছু না খেয়ে থাকবে, কিন্তু অপছন্দের খাবার কিছুতেই খাবে না৷''

নিরামিষাশী ট্রাউট মাছ মানুষের খাদ্য হিসেবে কতটা পুষ্টিকর, তা জানতে আরও পরীক্ষা চলছে৷ অন্যান্য মাছখেকো মাছের সঙ্গেও তুলনা চলে আসবে৷ এটা জানতে হলে মাছ মেরে, টুকরোগুলি ফ্রিজে রেখে, শুকিয়ে মিক্সারে মেশাতে হবে৷ তারপর সেই ট্রাউট মাছের পেস্ট পেট্রোলিয়ামে মেশালে মাছের ফ্যাট আলাদা হয়ে যাবে৷ সেই ফ্যাট পরীক্ষা করলেই মাছের স্বাস্থ্য সম্পর্কে জানা যায়৷ শুলৎস বলেন, ‘‘বেশি ফ্যাট সহ মাছ থাকলেই দেখা যায়, কাঁচামাল ঠিকমতো ব্যবহার করা হয় নি৷ এ কারণেই বিষয়টি আমাদের কাছে খুব গুরুত্বপূর্ণ৷''

নিরামিষাশী ট্রাউট মাছ মানুষের খাদ্য হিসেবে কতটা পুষ্টিকর, তা জানতে আরও পরীক্ষা চলছেছবি: Shabestan.ir

গবেষকরা একই পদ্ধতিতে মাছের শরীরে প্রোটিনের পরিমাপ করেন৷ তাঁরা জানতে চান, নতুন নিরামিষ খাদ্যের প্রোটিনের কতটা অংশ মাছের শরীরে প্রোটিন হিসেবে রূপান্তরিত হয়েছে৷ তবে এখানেই পরীক্ষার শেষ নয়৷ শুলৎস বলেন, ‘‘আমরাও তো এই মাছ খাই৷ তাই কী হচ্ছে, আমাদেরও সেটা জানতে হবে৷ তবে আশার কথা, মাছের খাদ্য বদলানো হলেও সেই মাছের স্বাদে কোনো পরিবর্তন দেখা যায় না৷''

আপাতত ট্রাউট মাছগুলি রেপসিড মেশানো খাদ্য খেয়ে খুশি৷ আলু ও অ্যালজি বা সামুদ্রিক উদ্ভিদ মেশানো খাবার নিয়েও পরীক্ষা চলছে৷ তবে নিরামিষ খাদ্য খাওয়ালে মাছগুলি বড় হতে একটু বেশি সময় লাগে, অর্থাৎ তাদের পরে কাটতে হচ্ছে৷ আগামী ১৫ বছরের মধ্যে বিজ্ঞানীরা এই সমস্যারও সমাধান করতে চান৷ এই গবেষণা মাছপালনকারীদেরও কাজে লাগছে৷ কারণ নিরামিষ খাদ্য মাছ মেশানো খাদ্যের চেয়ে সস্তা৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ