1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

মাঠে নেমেছে যৌথবাহিনী

সমীর কুমার দে, ঢাকা১৭ ডিসেম্বর ২০১৩

মাঠে নেমে পড়েছে যৌথবাহিনী৷ পুলিশ, র‌্যাব ও বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) সমন্বয়ে গঠিত এই বাহিনী দেশের বিভিন্ন জায়গায় অভিযান পরিচালনা করবে৷

Proteste gegen Wahl in Bangladesh
ছবি: Reuters/Andrew Biraj

বিশেষ করে জামায়াত-শিবির দেশের যেসব এলাকায় বেশি ‘তাণ্ডব' চালিয়েছে সেই সব জায়গায় জোরেশোরেই অভিযান চালানোর ঘোষণা দিয়েছে সরকার৷

রবিবার বিকেলে এই ঘোষণার পর রাত থেকেই অভিযান শুরু করে যৌথবাহিনী৷ সোমবার সারাদিনই তাদের অভিযান চলেছে৷ প্রথমদিন সাতক্ষীরার বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালায় তারা৷ এতে ৫ জন নিহত হয়েছে বলে ডয়চে ভেলের কাছে স্বীকার করেছেন সদ্য যোগ দেয়া সাতক্ষীরার এসপি চৌধুরী মঞ্জুরুল করিম৷ তিনি বলেন, ‘সব সন্ত্রাসী' গ্রেফতার না হওয়া পর্যন্ত অভিযান চলবে৷ তবে স্থানীয় জামায়াত নেতাদের দাবি, অভিযানে একজন নিহত হয়েছে৷ এদিকে মঙ্গলবার থেকে আবার ৭২ ঘণ্টার অবরোধের ডাক দিয়েছে ১৮ দলীয় জোট৷ অবরোধের মধ্যেই যৌথবাহিনীর অভিযান পুরোদমে চলবে বলে জানান মঞ্জুরুল করিম৷

যৌথ বাহিনীর অভিযান পুরোদমে চলবেছবি: Reuters/Andrew Biraj

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, দেশের বিভিন্ন স্থানে যৌথবাহিনীর এই অভিযান পর্যায়ক্রমে চলবে৷ সাতক্ষীরার পর চট্টগ্রাম, ফেনী, বগুড়া, সিরাজগঞ্জ, রাজশাহী, লালমনিরহাট, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, লক্ষীপুর, কুমিল্লা, মেহেরপুর ও দিনাজপুরে এই অভিযান চালানো হবে৷ পুলিশ ও স্থানীয়রা জানিয়েছে, যৌথবাহিনীর পৃথক দল রবিবার মধ্যরাতে সাতক্ষীরার বিভিন্ন এলাকায় অভিযানে নামে৷ ভোর সাড়ে চারটার দিকে সাতক্ষীরা সদর উপজেলার আগরদাড়ী এলাকায় গেলে জামায়াত-শিবিরের কর্মীরা একজোট হয়ে যৌথবাহিনীর ওপর হামলা চালায়৷ তারা যৌথবাহিনীর সদস্যদের লক্ষ্য করে বোমা, ককটেল ও ইটপাটকেল ছোড়ে৷ এ সময় যৌথ বাহিনীও গুলি ছোড়ে৷ এতে আগরদাড়ী এলাকার সাতানি গ্রামের জাহাঙ্গীর হোসেন (২৫) নিহত হন৷ তিনি শিবিরের কর্মী বলে জানা গেছে৷

যৌথবাহিনীর অপর একটি দল সদর উপজেলার পদ্মশাঁখরা এলাকায় রাত দুইটার দিকে অভিযানে যায়৷ সেখানেও জামায়াত-শিবিরের নেতা-কর্মীরা যৌথ বাহিনীর সদস্যদের ওপর হামলা চালায়৷ যৌথবাহিনী পাল্টা প্রতিরোধ গড়ে তুললে গুলিতে দু'জন নিহত হয়৷ নিহত দু'জনের নাম-পরিচয় জানা যায়নি৷ এরপর দেবহাটা উপজেলার সখীপুর এলাকায় রাত চারটার দিকে অভিযানে যায় যৌথবাহিনী৷ সখীপুর বলফিল্ড এলাকায় পৌঁছলে একই কায়দায় যৌথবাহিনীর ওপর হামলা চালান জামায়াত-শিবিরের নেতা-কর্মীরা৷ এ সময় যৌথবাহিনীর গুলিতে অজ্ঞাত দু'জন নিহত হন৷ এছাড়া আবদুর রউফ (৩২) ও রিয়াজুল ইসলাম (৩৫) নামের দু'জন গুলিবিদ্ধ হন৷

এর আগে রবিবার বিকেলে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে নির্বাচনকালীন সরকারের আইন-শৃঙ্খলা সংক্রান্ত একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়৷ ওই বৈঠকেই যৌথবাহিনী নামানোর সিদ্ধান্ত নেয়া হয়৷ বৈঠক শেষে তথ্য এবং সংস্কৃতি মন্ত্রী হাসানুল হক ইনু বলেন, দেশের মানুষের জানমাল ও সম্পত্তি রক্ষায় সরকারের পক্ষে যা যা উদ্যোগ গ্রহণ করার দরকার তাই করা হবে৷ বিদ্যমান আইন-শৃংখলা পরিস্থিতির অগ্রগতিতে আশু করণীয় সম্পর্কে কতিপয় সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে৷ এসব সিদ্ধান্ত সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়, বিভাগ ও সংস্থাকে জানিয়ে দেয়া হয়েছে৷ ওই বৈঠকেই সাতক্ষীরায় প্রথম যৌথবাহিনীর অভিযান চালানোর সিদ্ধান্ত হয় বলে একাধিক মন্ত্রী স্বীকার করেন৷

গত ২৬ নভেম্বর থেকে বিএনপির নেতৃত্বাধীন ১৮ দলীয় জোটের তিন দফায় ডাকা অবরোধ কর্মসূচি চলাকালে সাতক্ষীরা এক ‘আতঙ্কের জনপদে' পরিণত হয়৷ ওই সময় থেকে সোমবার পর্যন্ত সেখানে আওয়ামী লীগ ও জামায়াতের নেতাসহ ১৭ জন নিহত হন৷ তাদের মধ্যে নয়জন আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত৷ বিভিন্ন সড়কে গাছের গুঁড়ি ফেলে জেলা শহরের সঙ্গে বিভিন্ন উপজেলার সড়কপথে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেয়া হয়৷ আইন-শৃঙ্খলা রক্ষায় প্রশাসন কার্যকর ভূমিকা পালন করেনি বলে অভিযোগ ওঠে৷ এ অবস্থায় ১১ ডিসেম্বর ব্যর্থতার অভিযোগে জেলার পুলিশ সুপার মোল্যা জাহাঙ্গীর হোসেনকে প্রত্যাহার করা হয়৷

প্রসঙ্গত, গত ১২ ডিসেম্বর রাতে মানবতাবিরোধী অপরাধে জামায়াত নেতা কাদের মোল্লার ফাঁসি কার্যকরের পর থেকে সাতক্ষীরায় শুরু হয় জামায়াত-শিবিরের ‘তাণ্ডব'৷ আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মী-সমর্থক এবং হিন্দু সম্প্রদায়ের বাড়ি ও বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে ব্যাপক ভাঙচুর ও আগুন দেয়ার ঘটনা ঘটে৷ চার দিনে হিন্দু সম্প্রদায়ের ৩০টিসহ ৬০টি বাড়িঘর ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা, ভাঙচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ করা হয়৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য
স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ