মাথা ছোট হচ্ছে, বুদ্ধি কিন্তু বেড়েই চলেছে
৭ ফেব্রুয়ারি ২০১১বিগত ৩০ হাজার বছরে মানুষের মস্তিষ্কের আকার ছোট হয়েছে প্রায় ১০ শতাংশ৷ বিজ্ঞানের ভাষায়, হোমো স্যাপিয়েন্স নামের এই আধুনিক মানুষের মস্তিষ্ক ১,৫০০ থেকে ১,৩৫৯ ঘন সেন্টিমিটার কমেছে৷ অর্থাৎ একটি টেনিস বলের সমান ঘনত্ব হ্রাস পেয়েছে৷ আর মস্তিষ্কের এই পরিবর্তন শুধু পুরুষদের ক্ষেত্রেই নয়৷ বরং নারীদের মস্তিষ্কেও ঘটেছে একই ধরণের পরিবর্তন৷ এমনিতেই গড়ে পুরুষদের চেয়ে মেয়েদের মস্তিষ্ক ছোট, তার উপর বিবর্তনের ধারায় একই হারে ছোট হয়ে আসছে৷ ফলে মেয়েরা কি তাহলে আরো বিচক্ষণ আরো দক্ষ হয়ে উঠছে? এসব প্রশ্নের উত্তর অবশ্য এখনও অমীমাংসিত৷ চলছে তা নিয়ে বিজ্ঞানীদের মধ্যে বিতর্ক৷
তবে মস্তিষ্ক ছোট হয়ে আসার বিষয়টি প্রমাণিত হয়েছে ইউরোপ, মধ্যপ্রাচ্য এবং এশিয়ায় পাওয়া পুরনো দিনের মাথার খুলিগুলো নিয়ে বিস্তর পরীক্ষা নিরীক্ষা চালিয়ে৷ ‘ডিসকভার' নামক সাময়িকীকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে মিশিগান বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক জন হকস বলেন, ‘‘বিবর্তনের দৃষ্টিতে বেশ উচ্চ মাত্রায় ক্ষুদ্রতর হওয়ার ঘটনা ঘটছে৷'' তবে অপর কিছু নৃতত্ত্ববিদ মস্তিষ্ক ছোট হওয়ার ঘটনায় আশ্চর্য নন৷ তাঁরা বলছেন, দেহের আকার যতো বড়ো এবং শক্তি যতো বেশি হবে, তা নিয়ন্ত্রণের জন্য ততো বেশি বড়ো মস্তিষ্কের প্রয়োজন হওয়াটাই স্বাভাবিক৷
মিসৌরি বিশ্ববিদ্যালয়ের মনোবিজ্ঞানের অধ্যাপক ডেভিড গিয়েরি বলছেন, প্রতিকূল পরিবেশে নিজেদের বেঁচে থাকার জন্যই আকার-আকৃতির বিশালতা প্রয়োজন ছিল৷ তিনি ১০ হাজার বছর আগের মাথার খুলির বিবর্তন নিয়ে পরীক্ষা নিরীক্ষা চালিয়েছেন৷ গিয়েরি এবং তাঁর নেতৃত্বাধীন গবেষক দল মনে করেন, মানুষের ঘনত্ব বৃদ্ধির সাথে মস্তিষ্কের আকার হ্রাসের সম্পর্ক রয়েছে৷ অবশ্য, ডিউক বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ব্রায়ান হেয়ার এর মতে, মস্তিষ্কের আকার ছোট হলেও তাতে মানুষ আরো নির্বোধ হয়েছে এমনটি নয়৷ বরং মানুষের বুদ্ধিমত্তা আরো প্রখর হয়েছে৷
প্রতিবেদন: হোসাইন আব্দুল হাই
সম্পাদনা: সুপ্রিয় বন্দ্যোপাধ্যায়