‘কাওয়শগর’ ক্যাপসুলটি একটি অপরিচিত স্থানে ভ্রাম্যমাণ লঞ্চ-প্যাডে দাঁড়িয়ে, যাত্রা শুরুর অপেক্ষায়৷ যাত্রী হিসেবে একটি বানরের ভিতরে থাকার কথা৷

যাত্রা শুরুর আগে বানরযাত্রীর ছবি৷ তার নাম রাখা হয়েছে আফতাব বা সূর্য৷

নভোচারীর পোশাকে আফতাব৷ বেঁধেছেদে রাখায় তাকে খুব খুশি দেখানোর কথা নয়৷ ডান চোখের উপর আঁচিল কিংবা জরুলটা খেয়াল করবেন৷

২৮শে জানুয়ারি ইরানের সংবাদ সংস্থাগুলি মহাকাশযানের সফল যাত্রা শুরুর খবর দেয়৷

মহাশূন্যে ১৬ মিনিটের যাত্রার পর আফতাব বহাল তবিয়তে ধরাধামে প্রত্যাবর্তন করেছে, বলে ইরানি সংবাদ সংস্থাগুলি জানায়৷ ইরানের মহাকাশ অভিযান কর্তৃপক্ষ একটি সংবাদ সম্মেলন আহ্বান করেন, যেখানে আফতাব নাকি সাংবাদিকদের হাসির খোরাক জুটিয়েছে, বলে সরকারি ইসনা সংবাদ সংস্থা জানিয়েছে৷

অতো বড় মহাকাশযাত্রার পরেও আফতাব টপ ফর্মে, সেটা কি করে সম্ভব? বানর নভোচারীকে একটু ভালো করে দেখা দরকার...

সত্যিই, মহাকাশযাত্রার ফলে যেন আফতাবের বয়স কমে গেছে৷ ডানচোখের ওপর জরুলটা উধাও হয়েছে৷ গোঁফদাড়ি আগে সাদাটে ছিল, এখন ঘন বাদামি হয়ে দাঁড়িয়েছে৷

ইরানের মহাকাশযাত্রা সংক্রান্ত গবেষণা প্রতিষ্ঠানের প্রধান মোহাম্মেদ ইব্রাহিমি (ডানদিকে; বাঁয়ে রয়েছেন হামিদ ফাজেলি, মহাকাশযাত্রা কর্তৃপক্ষের প্রধান) যেন নিজেই সেটা পুরোপুরি বিশ্বাস করে উঠতে পারছেন না...

বিভিন্ন সময় নানা ধরনের শিল্পে স্থান পেয়েছে গোরিলা বা বানর৷ ই.টি.এ হফমান, ভিলহেল্ম হাউফ এবং ফ্রানৎস কাফকার মতো লেখকরা বনমানুষদের সাহিত্যে স্থান দিয়েছেন৷ সত্তরের দশকে নারী ‘টকিং গোরিলা’ কোকো বেশ সাড়া জাগিয়েছিল৷

বার্লিনের একটি মিউজিয়াম ‘হাউস ডেয়ার কুলটুরেন ডেয়ার ভেল্ট’ শিল্পকলায় বনমানুষদের অবস্থান নিয়ে গবেষণা করছে৷ এখানে একজন কূটনীতিকের স্ত্রী একটি শিম্পাঞ্জিকে বেছে নিয়েছেন প্রেমিক হিসেবে৷ ১৯৮৬ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত কমেডি ছবি ‘মাক্স, মন আমোর’ বা ‘মাক্স, আমার প্রেমিক’-এর দৃশ্য এটি৷

২০০৮ সালে শিল্পি ক্লাউস ভেবারের তৈরি এই ফটো কোলাজে একটি প্লাস্টিকের তৈরি বনমানুষকে ‘ভাবুক’ হিসেবে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে৷ আর তার চারপাশে কমিক বাবলসের মতো রয়েছে বিভিন্ন বিখ্যাত ব্যক্তির মুখাবয়ব৷

ইন্দোনেশিয়ায় জাভার সংস্কৃতিতে ভগবান হনুমান অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ চরিত্র৷ ২০১৪ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ‘দ্য মাস্কড মাংকিস’ ছবিতে জাভার বানর ও তাদের মালিকদের মধ্যকার ক্ষমতার দ্বন্দ্ব এবং কর্মপরিবেশের বিভিন্ন দিক তুলে ধরা হয়েছে৷

নিজের স্বল্প দৈর্ঘ্যের ছবিটি তৈরির ক্ষেত্রে ইউটিউব-এর একটি ভিডিও ছিল ফরাসি শিল্পী পিয়ের উইঘের প্রেরণা৷ ভিডিও-র ‘ফুকু-চান মাংকি ইন উইগ, মাস্ক, ওয়ার্কস রেস্টুরেন্ট’ ক্লিপে একটি পুরুষ বানরকে দেখানো হয়েছে, যে কিনা মুখোশ এবং পরচুলা পরে ছোট একটি মেয়ের রূপ নিয়ে একটা রেস্তোরাঁয় থাকে৷ এই ক্লিপটি দেখেই সেই বানরটি খুঁজে বের করেন উইঘ এবং তৈরি করেন ১৯-মিনিট দৈর্ঘ্যের ছবি ‘হিউম্যান মাস্ক৷’

এরিক স্টাইনব্রেশার ‘মাল্টিলেয়ার্ড ইমেজ’ বা বিভিন্ন ধরনের, নানা স্তরের ছবি ও ‘স্যাটায়ার’ বা ব্যঙ্গরচনা, তথা হাস্যরস নিয়ে কাজ করেন৷ তাঁর তৈরি ইনস্টলেশন আর্ট ‘এএফএফই’ বিভিন্ন প্রাকৃতিক এবং অজৈব উপাদান দিয়ে তৈরি৷ এই শিল্পবস্তুটির অর্থ নানারকম হতে পারে, অর্থাৎ দর্শকের চোখে তা ধরা পড়তে পারে ভিন্ন ভিন্নভাবে৷ বার্লিনে এই প্রদর্শনীটি চলবে আগামী ৬ জুলাই পর্যন্ত৷