বিদেশে ভালো চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে একটি চক্র ১০০ জনকে পাচার করে আট কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে৷ সেই মানবপাচার চক্রের দুই সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব৷
বিজ্ঞাপন
সোমবার রাতে ঢাকার রমনা এলাকায় অভিযান চালিয়ে ৩৮ বছর বয়সি ইফতাফ শাহীন ও ৩২ বছর বয়সি মো. মিজানুর রহমানকে গ্রেপ্তার করা হয় বলে র্যাব-৩ এর কর্মকর্তা এএসপি মো. খায়রুল কবীর জানান৷
ডয়চে ভেলের কনটেন্ট পার্টনার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম জানায়, সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিকে এই দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে৷ এই চক্রের ‘হোতা’ মো. সজিবুল ইসলাম (৩৫) বর্তমানে তুরস্কে রয়েছেন৷
র্যাবের কাছে অভিযোগ আসে, এই চক্র ৬ লাখ টাকার বিনিময়ে নানা প্রলোভন দেখিয়ে এক ব্যক্তিকে সার্বিয়াতে পাঠায় গত বছরের ১৭ নভেম্বর৷ ওই ব্যক্তিকে বলা হয়, ওই দেশে তিনি বছরে দুটি বোনাসসহ ৬০ হাজার টাকা বেতনের চাকরি পাবেন এবং সেখানে তার থাকা-খাওয়ার জন্য নিজের অর্থ খরচ করতে হবে না৷ সার্বিয়ায় কোনো সমস্যা হলে দেশে ফিরিয়ে আনা হবে বলেও তাকে আশ্বাস দেওয়া হয়৷
ওই ব্যক্তি গত বছর ১৭ নভেম্বর সার্বিয়া যেতে দেশ ছাড়েন এবং সেখানে পৌঁছনোর পর প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী কাজ না পেয়ে মানবেতর জীবন যাপন করতে থাকেন৷এক পর্যায়ে তিনি মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েন৷
র্যাব জানায়, ওই অবস্থায় মানবপাচার চক্র তাকে অবৈধ পথে ইতালি যাওয়ার প্রস্তাব দেয়; এবং মার্চের ৭ তারিখে ভুক্তভোগীর স্ত্রী জানতে পারেন যে, তার স্বামী সার্বিয়াতে মারা গেছেন৷
খায়রুল কবীর বলেন, ‘‘এ চক্র দীর্ঘদিন যাবত সামাজিকভাবে পিছিয়ে পড়া মানুষকে থাকা-খাওয়াসহ উচ্চ বেতনে উন্নত জীবন-যাপনের প্রলোভন দেখিয়ে প্রতারণামূলকভাবে দেশি-বিদেশি পাচারকারীদের সহায়তায় মানবপাচার অপরাধ করে আসছে৷’’
র্যাব কর্মকর্তা জানান, মানবপাচার চক্রের সদস্য গ্রেপ্তার শাহীন ও মিজানুরের বিরুদ্ধে সাভার থানায় মামলা হয়েছে৷
এনএস/এসিবি (বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম)
বসনিয়ার লিপা ক্যাম্পে যেমন আছেন অভিবাসীরা
বসনিয়ার লিপায় নতুন অভিবাসী কেন্দ্র চালু হয়েছে গত নভেম্বরে৷ সেখানে নানা দেশের অভিবাসীদের মধ্যে রয়েছেন বাংলাদেশিরাও৷ বসনিয়ার লিপা ক্যাম্প ঘুরে জানাচ্ছেন ডয়চে ভেলে বাংলার প্রতিবেদকেরা। এক্সক্লুসিভ ছবি দেখুন ছবিঘরে..
ছবি: Anupam Deb Kanunjna/DW
আগুন আর মানবেতর জীবনধারণ
২০২০ সালে ডিসেম্বরে আগুনে পুড়ে ছাই হয়ে গিয়েছিল বসনিয়ার লিপা অভিবাসী কেন্দ্র৷এরপর একটি অস্থায়ী শিবির তৈরি করা হয়, যেখানে ছিল না জীবনধারণের ন্যূনতম ব্যবস্থাও৷ অবশেষে গত নভেম্বরে চালু হয়েছে নতুন ক্যাম্প৷
ছবি: Anupam Deb Kanunjna/DW
শীতে বরফে ঢাকা ক্যাম্পের আশপাশ
দূর পাহাড়ের গায়ে ক্যাম্পগুলি দেখা যাচ্ছে৷ এখানেই অভিবাসীরা রয়েছেন৷ মূল সড়ক থেকে দুই তিন দূরে অবস্থিত এই কেন্দ্রটি৷ শীতের সময় প্রায়ই বরফে ঢাকা থাকে৷ তবে ক্যাম্পের অভিবাসীদের জন্য গরম পোশাক এবং হিটার ইত্যাদির পর্যাপ্ত ব্যবস্থা রয়েছে৷
ছবি: Anupam Deb Kanunjna/DW
‘অভিভাবকহীন অপ্রাপ্তবয়স্ক’দের বিশেষ ব্যবস্থা
লিপা মাইগ্রান্ট ক্যাম্পে ‘অভিভাবকহীন অপ্রাপ্তবয়স্ক’ দের জন্য আলাদা জোন রয়েছে৷ সেখানে জাতিসংঘের শিশুবিষয়ক সংস্থা ইউনিসেফ-সহ বিভিন্ন সংস্থা শিশুদের জন্য বই খেলাধূলার সামগ্রী থেকে নানা সরঞ্জাম সরবরাহ করে৷
ছবি: Anupam Deb Kanunjna/DW
গেম শপ
লিপা ক্যাম্পের বাইরে গড়ে উঠেছে বেশ কিছু দোকান৷ সেখানে গেমে যাওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম বিক্রি করা হয়৷ অনিয়মিত পথে সীমান্ত পাড়ি দিয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়নে ঢোকার চেষ্টাকে গেম নামে অভিহিত করে থাকেন অভিবাসীরা৷ এই গেম শপ চালান স্থানীয় বাসিন্দারা৷
ছবি: Anupam Deb Kanunjna/DW
লিপা ক্যাম্পে বাংলায় সাইনবোর্ড
লিপা ক্যাম্পের এই জোনে ক্যাম্পে আসা নতুন অভিবাসীদের আলাদা করে রাখা হয়৷ করোনা-সহ অন্যান্য স্বাস্থ্য পরীক্ষার পর তাদের পাঠানো হয় ক্যাম্পের অন্য জোনে৷ বিভিন্ন ভাষাভাষীর বোঝার সুবিধার জন্য একাধিক ভাষায় লেখা রয়েছে সাইনবোর্ড৷ এর মধ্যে রয়েছে বাংলা ভাষাও৷
ছবি: Anupam Deb Kanunjna/DW
লিপা ক্যাম্পে সেলুন
পাকিস্তান থেকে আসা এক অভিবাসী নিজের উদ্যোগে ক্যাম্পে তার ঘরের বাইরে চুল, দাড়ি কাটার সেলুন খুলেছেন৷ ক্যাম্পে আনুষ্ঠানিক সেলুন থাকলেও অভিবাসীদের অনেকেই তার কাছে আসেন৷
ছবি: Anupam Deb Kanunjna/DW
ক্যাম্পে অভিবাসনপ্রত্যাশী
বসনিয়ার লিপা ক্যাম্পে ভারত, পাকিস্তান, আফগানিস্তান-সহ বিভিন্ন দেশের প্রায় তিনশ জন অভিবাসনপ্রত্যাশী রয়েছেন৷
ছবি: Anupam Deb Kanunjna/DW
ক্যাম্পের ব্যবস্থাপনা
লিপা ক্যাম্প পরিচালনা করে বসনিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়৷ অভিবাসীদের ব্যবস্থাপনার জন্য আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা (আইওএম ) সহায়তা করে৷ ক্যাম্পটি জার্মানি-সহ ইউরোপের চারটি দেশ এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের অর্থায়নে তৈরি করা হয়েছে৷