1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

‘প্রয়োজন যৌথ নজরদারি'

হারুন উর রশীদ স্বপন, ঢাকা১০ সেপ্টেম্বর ২০১৪

বাংলাদেশ থেকে ভারতে মানবপাচার রোধে যৌথ নজরদারির ওপর জোর দিয়েছেন মানবাধিকার কর্মী এবং বিশ্লেষকরা৷ দু'দেশের মধ্যে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরকে তাই ইতিবাচক হিসেবে গণ্য করেছেন তাঁরা৷ বলেছেন, এতে দু'দেশই লাভবান হবে৷

Symbolbild Human Trafficking
ছবি: AFP/Getty Images

গত সপ্তাহে ঢাকায় বাংলাদেশ-ভারত পররাষ্ট্রসচিব পর্যায়ের বৈঠকে মানবপাচার রোধে একটি সমঝোতা স্মারক সই হয়েছে৷ এটা ছিল বাংলাদেশের সাধারণ মানুষ ও মানবাধিকার কর্মীদের দীর্ঘদিনের দাবি৷ কারণ বাংলাদেশ থেকে পাচার হয়ে যাওয়া নারী ও শিশুদের প্রধান গন্তব্য এখনও ভারত৷

বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান ড. মিজানুর রহমান ডয়চে ভেলেকে বলেন, এই চুক্তি সইয়ের মধ্য দিয়ে দুই দেশেই মানবপাচার কমে আসবে৷ চুক্তির আওতায় তথ্য বিনিময় এবং পারষ্পরিক সহযোগিতা বাড়লে পাচারকারী চক্রকে চিহ্নিত করা সহজ হবে৷

তিনি বলেন, ‘‘বাংলাদেশ থেকে ভারতে মানবপাচারের জন্য সেখানে যেমন সংঘবদ্ধ চক্র কাজ করে, তেমনি বাংলাদেশেও তাদের সহযোগী গ্রুপ রয়েছে৷ এই দুই গ্রুপ এক হয়েই মানবপাচার সিন্ডিকেট গড়ে তুলেছে৷ সুতারাং দুই দেশ তথ্য বিনিময় করলে চক্রগুলোকে চিহ্নিত ও আইনের আওতায় আনা সম্ভব হবে৷''

তাঁর কথায়, ‘‘বাংলাদেশ থেকে পাচার হওয়া নারী ও শিশুদের প্রধান গন্তব্য ভারত৷ এছাড়া বাংলাদেশ-ভারত স্থল সীমান্তই পাচারের প্রধান রুট৷ তাই সমঝোতা স্মারকের মাধ্যমে রুটগুলোতে নজরদারি যেমন বাড়বে, তেমনি পাচারের সংখ্যাও কমে আসবে৷ এবং তার সঙ্গে সঙ্গে পাচার হওয়া নারী ও শিশু উদ্ধারের তত্‍পরতায় গতি আসবে৷''

অন্যদিকে বাংলাদেশ মানবাধিকার ফাউন্ডেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা অ্যাডভোকেট এলিনা খান ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘এই চুক্তিটি অভিনন্দনযোগ্য৷ শুধু যে বাংলাদেশ থেকে পাচার হয় তা নয়, ভারত থেকেও নারী ও শিশু পাচার হয়ে বাংলাদেশে আসে৷ আর এই পাচারকৃত নারী ও শিশুদের গন্তব্য ভারত ও দুবাইসহ মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশ৷ তাদের নানা প্রলোভন দেখিয়ে পাচার করা হয়৷ এখন প্রধান কাজ হলো, দুই দেশেরই নজরদারি জোরদার করা৷ বিশেষ করে সীমান্তে যৌথ নজরদারির ব্যবস্থা করা গেলে তা বেশ ভালো ফল দেবে৷''

তিনি বলেন, মানবপাচারের এই ঘৃণ্য কাজে সীমান্ত রক্ষাকারী বাহিনীর কেউ কেউ জড়িত থাকার অভিযোগ আছে৷ এ ব্যাপারেও অনুসন্ধান করে আইনি ব্যবস্থা নিতে হবে৷

উল্লেখ্য, সংবাদমাধ্যমের তথ্য অনুযায়ী প্রতিবছর বাংলাদেশ থেকে প্রায় ৫০ হাজার নারী ও শিশু ভারত, পাকিস্তান ও মধ্যপ্রাচ্যে পাচার হয়ে থাকে৷ তার ওপর বাংলাদেশের ১৮টি রুট দিয়ে প্রতিবছর প্রায় ২০ হাজার নারী ও শিশু অবৈধ পথে ভারতে পাচার হয়ে চলেছে৷

ছবি: DW

বাংলাদেশের সাথে ভারতের ৪ হাজার ২'শ ২২ কিলোমিটার এবং মিয়ানমারের সাথে ২৮৮ কিলোমিটার সীমান্ত এলাকা রয়েছে৷ পাচারকারীরা বিভিন্ন সীমান্ত এলাকা ব্যবহার করে নারী ও শিশুদের পাচার করে৷ উত্তরের দিনাজপুর, পঞ্চগড়, কুড়িগ্রাম, রংপুর, রাজশাহী ও চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার সীমান্ত পথ দিয়ে নারী ও শিশুদের পাচার করা হয়৷ ঐ অঞ্চলের সীমান্ত এলাকার ১১টি রুট দিয়ে নারী ও শিশু পাচার হয়ে থাকে৷

জাতিসংঘ জনসংখ্যা তহবিলের (ইউএনএফপিএ) তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশ থেকে প্রতিবছর গড়ে প্রায় ১৫ হাজার মানব পাচার হয়, যাদের অধিকাংশই নারী ও শিশু৷ তাদের হিসাব অনুযায়ী, গত ১০ বছরে বাংলাদেশ থেকে তিন লাখের বেশি নারী ও শিশু পাচার হয়েছে ভারতে৷ তবে বেসরকারি বিভিন্ন এনজিও-র দাবি, পাচারের সংখ্যা পাঁচ লাখের বেশি৷

মানবপাচার প্রতিরোধে ২০১২ সালে বাংলাদেশ সরকার একটি আইন করে, যাতে সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড৷ এর আওতায় জেলা পর্যায়ে ট্রাইব্যুনাল গঠন করে মামলা পরিচালনার কথাও বলা হয়েছে৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ