1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

মানবসম্পদ সূচক এবং ‘দক্ষ’ বাংলাদেশ

১১ অক্টোবর ২০১৮

বিশ্বব্যাংকের নতুন ধারণার ‘মানবসম্পদ সূচকে’ বাংলাদেশ এগিয়ে আছে ভারত ও পাকিস্তানের চেয়ে৷ শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাতে উন্নয়ন বাংলাদেশকে এই অগ্রগতি দিয়েছে৷ তবে বিশ্বের বিবেচনায় আরো অনেক দূর যেতে হবে বলে মনে করেন বিশ্লেষকরা৷

ছবি: DW

বিশ্বব্যাংকের নতুন এই সূচক অনুযায়ী, দক্ষিণ এশিয়ার  দেশগুলোর মধ্যে শ্রীলঙ্কা ও নেপাল ছাড়া আর সব দেশের চেয়ে বাংলাদেশের অবস্থান উপরে৷

বিশ্বব্যাংকের ১৫৭টি সদস্য রাষ্ট্রের ওপর জরিপ করে এই তালিকাটি করা হয়েছে৷ এতে স্বাস্থ্য, শিক্ষা, দক্ষতা ও বেঁচে থাকার অন্য বিষয়গুলোকে বিবেচনায় নেয়া হয়েছে৷ এর মাধ্যমে জন্ম নেওয়া একজন শিশু বড় হয়ে কর্মক্ষেত্রে উৎপাদনশীল হওয়ার সম্ভাবনা কতভাগ তাই দিয়ে সূচকটি তৈরি করা হয়েছে৷ বিশ্বব্যাংক সিঙ্গাপুর তালিকার শীর্ষে রয়েছে৷ এরপর দক্ষিণ কোরিয়া, জাপান ও হংকং৷ আর তালিকার সবশেষে আফ্রিকার দেশ চাড ও দক্ষিণ সুদান৷ ইন্দোনেশিয়ার বালিতে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের বার্ষিক বৈঠকে এই প্রতিবেদন প্রকাশ করে বিশ্বব্যাংক৷

বাংলাদেশে জন্ম নেওয়া একজন শিশু বড় হয়ে কর্মক্ষেত্রে উৎপাদনশীল হওয়ার সম্ভাবনা ৪৮ শতাংশ৷ ভারতে এই হার ৪৪ শতাংশ আর পাকিস্তানে ৩৯ শতাংশ৷ শ্রীলঙ্কা ও নেপালে এই হার ৫৮ ও ৪৯ শতাংশ৷

বাংলাদেশে ১০০ জনের মধ্যে ৯৭ জন শিশুই ৫ বছর পর্যন্ত বেঁচে থাকে৷ ভারত ও পাকিস্তানে এই হার  ৯৬ ও ৯৩ শতাংশ৷ শ্রীলঙ্কায় ৯৯৷ বাংলাদেশে চার বছর বয়সি শিশু স্কুল শুরু করলে ১৮ বছর হওয়ার আগে স্কুলজীবনের ১১ বছর শেষ করতে পারে৷ ভারতে শেষ হয় ১০ দশমিক ২ বছর৷ পাকিস্তানে ৮ দশমিক ৮ বছর৷ শ্রীলঙ্কায় ১৩ বছর৷

মানবসম্পদ সূচকে বাংলাদেশের নারীরা পুরুষের চেয়ে এগিয়ে৷ প্রাপ্তবয়স্কদের বেঁচে থাকার হার বাংলাদেশ ৮৭ শতাংশ৷ ১৫ বছর বয়সিদের মধ্যে ৮৭ শতাংশই ৬০ বছর পর্যন্ত বেঁচে থাকেন৷ ৬৪ শতাংশ শিশুই স্বাভাবিকভাবে বেড়ে ওঠে৷

প্রতিবেদনে বলা হয়, এখন জন্ম নেয়া বিশ্বের ৫৬ শতাংশ শিশু কর্মক্ষেত্রে তাদের পূর্ণ বিকাশ ঘটাতে পারবে না৷ আর এজন্য সংশ্লিষ্ট দেশের সরকারই দায়ী৷ স্বাস্থ্য, শিক্ষাসহ অন্যান্য প্রয়োজনীয় ক্ষেত্রে তাদের পর্যাপ্ত বরাদ্দ নেই৷

বিশ্ব ব্যাংকের প্রেসিডেন্ট জিম ইয়ং কিম বলেন, ‘‘এই তালিকার মাধ্যমে বিভিন্ন দেশের সরকার প্রয়োজনীয় খাতে বরাদ্দ বাড়ানোর ব্যাপারে উৎসাহী হয়ে উঠবে৷ এটা নিয়ে বিতর্ক হতে পারে৷ তবে কোথায় বরাদ্দ বাড়ানো দরকার সে তথ্য প্রকাশ করা দরকার৷ বিশ্বনেতাদের দৃষ্টি আকর্ষণের জন্যই আমরা এটা করেছি৷ কারণ, এর সঙ্গে উৎপাদন হার, অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি জড়িত৷’’

শিক্ষা এবং স্বাস্থ্য খাতে বাংলাদেশের অগ্রগতি অনেক বেশি: ড. আহমেদ

This browser does not support the audio element.

বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠান (বিআইডিএস)-এর অর্থনীতিবিদ ড. নাজনীন আহমেদ ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘শিক্ষা এবং স্বাস্থ্য খাতে বাংলাদেশের অগ্রগতি অনেক বেশি৷ আমরা ইউনিভার্সাল এডুকেশন যেভাবে বাড়িয়েছি এবং স্বাস্থ্যবার মান যেভাবে বাড়ছে তার প্রতিফলন হয়েছে এই সূচকে৷ আমাদের গড় আয়ু নারী-পুরুষ উভয়ের বেড়েছে৷ আমাদের মাথাপিছু আয় খুব বাড়ছে৷ এটা এখন সাড়ে ১৭শ' ডলারে উন্নীত হয়েছে৷ শিক্ষার হার বেড়েছে৷ মানব সম্পদ উন্নয়ন সূচকে যে বিষয়গুলো বিবেচনায় নেয়া হয়, সবগুলোতে আমাদের অগ্রগতি হচ্ছে৷’’

তিনি বলেন, ‘‘ভারতের চেয়ে আমরা যে সবক্ষেত্রে ভালো করছি, তা নয়৷ আমরা দ্রুত গ্যাপগুলো কমিয়ে আনছি৷ পাকিস্তানের চেয়ে সব বিচেনায়ই আমরা ভালো করছি৷ তবে বিশ্বের সবদেশের সঙ্গে তুলনা করলে আমাদের অবস্থান এখনো নিচের দিকেই আছে৷ মধ্যম মানের দেশগুলোর মধ্যে আমাদের অবস্থা ভালো৷ তাই পাকিস্তানের চেয়ে ভালো আছি সেই চিন্তা করলে হবে না৷ আমরা যেহেতু উন্নয়নশীল দেশ হতে যাচ্ছি৷ মানব সম্পদ উন্নয়নেও আমরা বিশ্বের শীর্ষ দেশগুলোর কাতারে যাবো সেই লক্ষ্যেই আমাদের কাজ করতে হবে৷’’

পাকিস্তান, ভারতের চেয়ে এগিয়ে থাকলেও বাংলাদেশ আদর্শ অবস্থা থেকে দূরে অবস্থান করছে: ড. মোয়াজ্জেম

This browser does not support the audio element.

আর সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি)'র অর্থনীতিবিদ ড. খন্দকার গোলাম মেয়াজ্জেম ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘বিশ্বব্যাংকের এটা নতুন সূচক৷ এখানে বৈশ্বিক দক্ষতাকে গুরুত্ব দেয়ার জন্য শিক্ষা, স্বাস্থ্যতে গুরুত্ব দিয়ে এই সূচক তৈরি করা হয়েছে৷ বাংলাদেশের শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাতে বাংলাদেশ যে সম্মিলিত প্রচেষ্টায় যে এগিয়ে যাচ্ছে তা এই সূচক প্রমাণ করে৷ আয় বৃদ্ধির কারণে শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাতে তা বিনিয়োগ হচ্ছে৷’

তিনি বলেন, ‘‘পাকিস্তান ভারতের চেয়ে এগিয়ে থাকলেও বাংলাদেশ আদর্শ অবস্থা থেকে দূরে অবস্থান করছে৷ তবে আমাদের অনেক দূরবর্তী লক্ষ্যে যাওয়ার সুযোগ আছে৷ বেসিক এডুকেশন বা অ্যাডভান্স  স্কিল এডুকেশনে আমাদের আরো অনেক বিনিয়োগ করতে হবে৷ সেটা কিন্তু বিশ্বব্যাংকের প্রতিবেদনেই বলা আছে৷ আমাদের সার্বিকভাবে দক্ষতা বাড়াতে হবে৷ তাহলেই মানব সম্পদ সূচকে আরো অগ্রগতি হবে৷’’

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য
স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ