মানবাধিকার প্রশ্ন দূরে রেখে ইউ-চীন বিনিয়োগ চুক্তি
৩১ ডিসেম্বর ২০২০
দীর্ঘ সাত বছরের আলোচনাকে সার্থক করে চীনের সঙ্গে মাল্টি-বিলিয়ন ইউরোর বিনিয়োগ চুক্তিতে সম্মতি জানিয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন৷ ব্রাসেলসের আশা, এর মাধ্যমে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যের সুযোগ ব্যাপকভাবে বাড়বে৷
বিজ্ঞাপন
বুধবার জার্মানির চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেল, ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ফন ডেয়ার লাইয়েন এবং ইইউ-র সিনিয়র কর্মকর্তারা চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং-এর সঙ্গে এক টেলিকনফারেন্সে অংশ নেন৷ চুক্তি সম্পর্কে বিস্তারিত জানানো হয় তখন৷
পরে এক টুইট বার্তায় জার্মানির সাবেক প্রতিরক্ষা মন্ত্রী ফন ডেয়ার লাইয়েন বলেন, ‘‘ বিশ্বের সবচেয়ে বড় একক বাজার রয়েছে ইইউ-র৷ ব্যবসার জন্য আমরা উন্মুক্ত, তবে সুষম প্রতিযোগিতার ক্ষেত্র এবং মূল্যবোধের বিষয়েও আমরা সম্পৃক্ত৷''
ইরান-চীন সম্ভাব্য চুক্তি: সরকার খুশি, জনগণ অখুশি?
চীনের সঙ্গে ২৫ বছরের এক চুক্তি করতে চলেছে ইরান৷ মানবাধিকার লঙ্ঘনের জন্য সদা সমালোচিত এই দুই দেশের চুক্তি ইরানের জনগণ সানন্দে গ্রহণ করবে কিনা সেটাও এখন প্রশ্ন৷ ছবিঘরে বিস্তারিত...
ছবি: Getty Images/AFP/T. A. Clary
চুক্তির খুব কাছাকাছি
কয়েকদিন আগে ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোহাম্মাদ জাভেদ জারিফ জানান, চীনের সঙ্গে ইরানের ২৫ বছরের একটা কৌশলগত চুক্তির বিষয়ে আলোচনা চলছে৷ তবে যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক টাইমসের দাবি, তারা চীন-ইরান আলোচনার কিছু ডকুমেন্ট পেয়েছে৷ ফার্সি ভাষায় লেখা সেই কাগজপত্রের তথ্য অনুযায়ী, দেশ দুটি এখন চুক্তি সম্পাদনের দ্বারপ্রান্তে৷
ছবি: picture-alliance/dpa/T. Hase
কী থাকবে চুক্তিতে?
নিউইয়র্ক টাইমসের প্রতিবেদন বলছে, শুধু অর্থনৈতিক বিষয় নয়, সামরিক সহযোগিতার বিষয়াদিও থাকবে দ্বিপাক্ষিক এই চুক্তিতে৷
ছবি: picture-alliance/zumapress.com/R. Fouladi
পারস্পরিক স্বার্থ
চীন ইরানকে দেখছে নিজস্ব পণ্যের গুরুত্বপূর্ণ বাজার এবং তেলের উৎস হিসেবে৷ ইরান মনে করে, এই চুক্তির ফলে ইরানে চীনের বিনিয়োগ বাড়বে এবং দেশটির অর্থনীতিতে যুক্তরাষ্ট্রের আরোপ করা অর্থনৈতিক অবরোধের চাপ কমবে৷
ছবি: Reuters/T. Peter
পারস্পরিক মিল
মানবাধিকারের প্রশ্নে চীন আর ইরান সবসময়ই সমালোচিত৷ ধারণা করা হয়, সারা বিশ্বে সবচেয়ে বেশি মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হয় চীনে, বিরোধীদের কণ্ঠরোধেও সে দেশের সরকার সবসময় তৎপর৷ সাম্প্রতিক সময়ে উইগুর মুসলমানদের ব্যাপক নির্যাতনের অভিযোগের মুখেও রয়েছে চীন৷ ইরানেও মানবাধিকার পরিস্থিতি খুব খারাপ৷ রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের দমন-পীড়ন সেখানে প্রায় স্বাভাবিক ঘটনা৷
ছবি: Reuters/F. Bensch
চীনের প্রতি ইরানি জনগণের মনোভাব
চীনের পণ্য ইরানি শিল্পোদ্যোগকে ব্যর্থ করে দিচ্ছে৷ এছাড়া করোনা ভাইরাস সারা বিশ্বে ছড়ানোর জন্য চীনকে দায়ী মনে করেন অনেক ইরানী৷ ট্যুবিঙ্গেন বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যপ্রাচ্য ও তুলনামূলক রাজনীতির সিনিয়র প্রভাষক আলী ফাতোল্লাহ-নেজাদ মনে করেন, এসব কারণে চীনের সঙ্গে চুক্তিকে ইরানের জনগণের বড় একটা অংশ ভালো চোখে না-ও দেখতে পারে৷ এর ফলে ইরান সরকারের সঙ্গে জনগণের সম্পর্কের অবনতি হতে পারে বলেও মনে করেন তিনি৷
ছবি: Getty Images/AFP/T. A. Clary
5 ছবি1 | 5
অন্যদিকে জিনহুয়ার খবর অনুযায়ী শি জিনপিং-এর আশা, এই চুক্তির মাধ্যমে ইইউ চীনএবং ইউরোপের বিনিয়োগকারীদের জন্য বৃহত্তর বাজার খুলে দেবে৷
সাত বছর ধরে এমন একটি বিনিয়োগ চুক্তি নিয়ে চীন এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের মধ্যে আলোচনা চলছিল৷ চীনে মানবাধিকার পরিস্থিতি দীর্ঘদিন ধরেই প্রশ্নবিদ্ধ৷ এর মাঝেই দেশটির সঙ্গে এমন একটি চুক্তি হলো৷ তবে চুক্তিটি এখনো আইনে পরিণত হওয়ার অপেক্ষায়৷ আগামী বছর ইউরোপীয় পার্লামেন্টে অনুমোদন পেলে তা আইন হিসেবে গণ্য হবে৷