মানবাধিকার রিপোর্টে সমালোচিত ইসরায়েল, হামাস
১৫ জানুয়ারি ২০০৯২০০৭ সালের জুন মাস থেকেই ইসরায়েল গাজা ভূখন্ডের সীমান্তগুলি সিল করে রেখেছে৷ যার ফলে গাজার বাসিন্দারা বারবার চরম মানবিক বিপর্যয়ের মুখোমুখি হতে থাকেন৷ ব্যাহত হয় তাঁদের দৈনন্দিন জীবন, বিপর্যস্ত হয় অর্থনীতি, কর্ম ও খাদ্যসংগ্রহের মৌলিক অধিকারগুলি৷ ওয়েস্ট ব্যাঙ্কে ইসরায়েলের বেআইনি বসতি স্থাপনও মানবাধিকার লঙ্ঘন, মনে করে হিউম্যান রাইটস ওয়াচ৷
গাজায় হামাস-জঙ্গীদের সন্ধানে ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর খানাতল্লাশি এবং নিরীহ নাগরিক হত্যা, এসব কিছুই নজর এড়িয়ে যায় নি যুক্তরাষ্ট্র ভিত্তিক আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচের৷ ২০০৮ সালে বিশ্ব মানবাধিকার পরিস্থিতির ওপর এই ৫৬৪ পৃষ্ঠার রিপোর্ট যখন তৈরি হয়, গাজায় ইসরায়েলি সেনা আগ্রাসন তখনও শুরু হয় নি৷ সেক্ষেত্রে মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচের বক্তব্য, গাজার সাধারণ নাগরিকের ওপর ইসরায়েলি এই হামলা বরদাস্ত করা যায় না৷ গত বছরের জানুয়ারি থেকে জুন, প্রথম এই ছয়মাসে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী গাজায় ৩৮৮ জন সাধারণ নাগরিকে হত্যা করেছে, বলছে রিপোর্ট৷ হামাসবিরোধী যুদ্ধ ঘোষণা তার অনেক পরের ঘটনা৷
ইসরায়েলি ভূখন্ডের ওপর হামাসের নিয়মিত রকেট হামলাও সমালোচিত হয়েছে হিউম্যান রাইটস ওয়াচের রিপোর্টে৷ গাজা এবং অন্যত্র ফাতা আর হামাস সদস্যদের অভ্যন্তরীণ লড়াইতেও ঘটেছে মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা, বলছে রিপোর্ট৷
গাজা বা মধ্যপ্রাচ্যের বাইরে মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা ঘটেছে যু্ক্তরাষ্ট্রের গুয়ান্তানামো বে বন্দী শিবিরে৷ বলছে হিউম্যান রাইটস ওয়াচ৷ বিনা বিচারে বন্দীদের আটকে রেখেছে সেখানে যু্ক্তরাষ্ট্র৷ বুশ প্রশাসনকে এই পর্বে একহাত নিয়েছে হিউম্যান রাইটস ওয়াচ৷ বলেছে, বহুক্ষেত্রেই ঘটেছে নানাবিধ মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা, নতুন ওবামা প্রশাসন এই ভুল যেন আর না করে৷
বিশ্বের মোট নব্বইটি দেশে নানান মানবাধিকার লঙ্ঘনের হিসাবনিকাশ দিয়েছে এই বিস্তারিত রিপোর্ট৷ বাদ যায় নি তিব্বতীদের ওপর এবং অন্যত্র চীনের প্রশাসনিক আচরণ কিংবা উজবেকিস্তান এবং ইরানের অভ্যন্তরীণ প্রসঙ্গগুলি৷ রাশিয়ার বিভিন্ন ঘটনা তো আছেই, উঠে এসেছে জিম্বাবোয়ে, দক্ষিণ আফ্রিকার প্রসঙ্গও৷ তবে ল্যাটিন আমেরিকার ছোট এবং মাঝারি মাপের কিছু দেশ, যেমন আর্জেন্তিনা, চিলি, কোস্টারিকা, মেক্সিকো প্রভৃতি দেশের প্রশাসন মানবাধিকার রক্ষায় উল্লেখযোগ্য ভূমিকা নেওয়ায় তাদের প্রশংসা করেছে হিউম্যান রাইটস ওয়াচ৷ পাশাপাশি, রাশিয়া বনাম জর্জিয়ার অসম যুদ্ধ থামাতে ইউরোপিয় ইউনিয়নের ইতিবাচক মধ্যস্থতাও প্রশংসিত হয়েছে এই রিপোর্টে৷