মানবিক আহ্বান ছিল জ্যাকসনের গানে
৫ জুলাই ২০০৯
পপ সম্রাট মাইকেল জ্যাকসন হঠাৎ করে মারা যাওয়ায় তার মৃত্যুর কারণ নিয়ে সকলের মনেই প্রশ্ন জেগেছে৷ যদিও গত সপ্তাহে লস এঞ্জেলেস করোনার অফিস প্রাথমিক তদন্ত শেষে জানিয়েছিলো যে তাঁর মৃত্যুর পেছনে তেমন খারাপ কিছু নেই৷ তবে জ্যাকসনের টক্সিকোলজি টেস্ট এর ফলাফল পেতে আরো বেশ কয়েক সপ্তাহ লাগবে৷ এরপরও কিন্তু তার পরিবার নিজ উদ্যোগে আরেকবার ময়না তদন্ত করেছে৷ কিন্তু সেই তদন্ত প্রতিবেদনে কি বলা হয়েছে তা এখনো জানানো হয় নি৷ তবে সর্বশেষ মার্কিন গণমাধ্যমগুলো জানিয়েছে, লস এঞ্জেলেসে মাইকেল জ্যাকসনের বাড়ি থেকে সেডাটিফ প্রপোফল পাওয়া গেছে৷ প্রপোফল হচ্ছে অত্যন্ত কড়া ঘুমের ওষুধ যা সাধারণত ডাক্তাররা প্রেসক্রাইব করেন না৷ কেবলমাত্র কোন বড় অপারেশন করার আগে রোগীকে এই ওষুধ দেওয়া হয়৷ মনে করা হচ্ছে অতিরিক্ত ওষুধই জ্যাকসনের মৃত্যুর কারণ৷ জ্যাকসনের মৃত্যুর আগের দিন তিনি যে রিহার্সাল করেছিলেন সেটার ভিডিও ইতিমধ্যে প্রকাশিত হয়েছে৷ সে ভিডিওতে জ্যাকসনকে দেখে কিন্তু মনে হয়নি যে তিনি অসুস্থ্য৷ তাই তাঁর মৃত্যুর কারণ নিয়ে আরো বেশী করে সন্দেহ তৈরী হয়েছে৷
স্মরণসভার টিকিট পেতে ভক্তদের হুমড়ি
এটা আসলে কেবল স্মরণসভা নয়, মাইকেল জ্যাকসনকে শেষবারের মত দেখতে পারারও একটি সুযোগ৷ তাই সেধরণের সাড়াই পড়েছে ভক্তদের মধ্যে৷ লস এঞ্জেলেস এর স্ট্যাপলস সেন্টারে মঙ্গলবার মাইকেল জ্যাকসনের লাশ নিয়ে আসা হবে৷ সেখানে ভক্তরা শেষ শ্রদ্ধা জানাবেন এই পপ সম্রাটকে৷ এই স্মরণসভার ১১ হাজার টিকিট বিতরণ করা হবে ইন্টারনেটের মাধ্যমে৷ এই ঘোষনা আসার পর মাত্র একদিনের মধ্যেই ১২ লাখ লোক টিকিট পাওয়ার জন্য আবেদন করেছে৷ এখন লটারির মাধ্যমে এই টিকিট বিতরণ করা হবে৷ তবে যুক্তরাষ্ট্রে বসবাস করছেন এমন লোকেরাই টিকিট পাবেন৷ এছাড়া এবিসি, সিএনএন, এমএসএনবিসি, ই এন্টারটেইনমেন্ট এর মত চ্যানেলগুলো সরাসরি সম্প্রচার করবে মাইকেল জ্যাকসনের এই স্মরণসভা অনুষ্ঠান৷
কেবল গায়ক নন মাইকেল
১৯৮৫ সালে উই আর দ্য ওয়ার্ল্ড নামে একটি বিখ্যাত গানে অংশ নেন ৪৫ জন গায়ক গায়িকা যাদের মধ্যে ছিলেন লাওনেল রিচি, টিনা টার্নার, কেনি রজার্স এর মত বিখ্যাত মিউজিশিয়ানরা৷ মাত্র দেড়দিনে এই গানটি লিখেছিলেন মাইকেল জ্যাকসন৷ তখন তাঁর বয়স মাত্র ২৭৷ আফ্রিকার দুর্ভিক্ষ পীড়িত মানুষদের জন্য এই গানটি লেখেন জ্যাকসন৷ গানটি কিভাবে গাওয়া হবে সেটিও তিনি দেখিয়ে দিয়েছিলেন তার চেয়ে বয়স ও অভিজ্ঞতায় সিনিয়র সহশিল্পীদের৷ গানটির সোলো অ্যালবাম বিক্রি হয়েছিলো সাড়ে সাত মিলিয়ন কপি যার পুরো টাকাটা গিয়েছিলো দুর্ভিক্ষপীড়িত মানুষদের খাদ্য কেনার জন্য৷ জ্যাকসনের প্রায় সব গানেই থাকে কোন না কোন আহ্বান৷ হতে পারে সেটা প্রকৃতিকে রক্ষা করার, যুদ্ধ থামানোর কিংবা দুর্গতদের সাহায্যে এগিয়ে আসার৷ তাই মাইকেল জ্যাকসনকে শুধু গায়ক বললে ভুল হবে, কারণ মানবতা সবসময়ই কাজ করেছে তাঁর মধ্যে৷
প্রতিবেদক: রিয়াজুল ইসলাম, সম্পাদনা: সুপ্রিয় বন্দোপাধ্যায়