মানসিকভাবে সুস্থ ছিল বেলজিয়ান হামলাকারী: পুলিশ
১৪ ডিসেম্বর ২০১১মঙ্গলবার লিজ'এর ব্যাস্ততম বড়দিনের বাজারে হামলা চালায় নোরদিন আমরানি৷ প্রথমে গ্রেনেড নিক্ষেপ এবং পরে একটি একে-৪৭ রাইফেল বের করে চারদিকে গুলি ছুঁড়তে থাকে সে৷ শেষ পাওয়া খবর অনুযায়ী, ঐ ঘটনায় চারজন নিহত এবং অন্তত ১২৫ জন আহত হয়৷ নিহতদের মধ্যে একটি ২৩ মাসের শিশু এবং ১৫ ও ১৭ বছরের দু'জন ছাত্রও ছিল৷ এরপরই অবশ্য আমরানি নিজের মাথায় গুলি করে আত্মহত্যা করে, জানান লিজ শহরের সরকারি আইনজীবী ডানিয়েল রেন্ডার্স৷
জানা যায়, ঐ দিন দুপুর সাড়ে ১২টা নাগাদ লিজ'এর ‘সেইন্ট ল্যামব্যার্ট স্কয়ার'-এর অদূরে একটি বাসস্টপের কাছে আমরানি তার তাণ্ডব শুরু করে৷ লিজ'এর প্রধান বিপণী বিতানগুলোর অবস্থান এ জায়গাটিতেই৷ সেসময় সেখানে বড়দিনের কেনাকাটায় ব্যস্ত ছিল মানুষজন৷ গুলির শব্দে তারা আতঙ্কে এদিক-সেদিক দৌড়াদৌড়ি শুরু করে৷ এক প্রত্যক্ষদর্শী জানান, ‘‘আমরানি একটা ভ্যান গাড়িতে করে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়৷ তার সঙ্গে একটা ব্যাগ ছিল৷ মুহূর্তের মধ্যে সে একটি রুটির দোকানের ছাদে লাফিয়ে ওঠে এবং ব্যাগটি থেকে একটা গ্রেনেড বের করে বাসস্টপের দিকে ছুঁড়ে মারে৷''
হামলার পর আহতদের আর্তনাদে এলাকাটিতে করুণ পরিবেশের সৃষ্টি হয়৷ কাঁধে ও হাতে গুলি লাগা অনেককেই দেখা যায় ঘটনাস্থলে পড়ে থাকতে৷ লিজ'এর এক বাসিন্দা বলেন, ‘‘ঘটনাস্থলে আবারো যাওয়ার কথা ভাবলে এখনো আমার ভয় করছে৷ অথচ ওখানে আমি হামেশাই যেতাম৷ গতকালের ঐ ঘটনা যে কিরকম মারাত্মক ছিল এখানকার মানুষদের জন্য – তা বুঝিয়ে বলতে পারবো না৷''
ঘটনায় ৭৫ বছর বয়স্ক এক বৃদ্ধা নিহত হয়েছেন – প্রথমে এ কথা বলা হলেও, বুধবার তিনি ভালো আছেন বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ৷ আহত হওয়ার পরপরই তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল৷
এদিকে, হামলাকারীর উদ্দেশ্য পরিষ্কার না হলেও, ঐ ঘটনা কোনো সন্ত্রাসী হামলা নয় বলে নিশ্চিত করেছে বেলজিয়ান পুলিশ৷ তাদের কথায়, অস্ত্র ও মাদক মামলায় দোষী সাব্যস্ত আমরানি এক বছর আগে জেল থেকে ছাড়া পায়৷ তবে তার মানসিক ভারসাম্যতা ছিল বলে জানায় পুলিশ৷ ঘটনার দিনও নাকি তার হাজিরা দেওয়ার কথা ছিল৷
ইতিমধ্যেই এই ঘটনায় শোক প্রকাশ করেছেন বেলজিয়ামের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জোলি মিলকুয়েত এবং প্রধানমন্ত্রী এলিও দি রুপো৷
এ মুহূর্তে হামলাস্থলটিতে সর্বসাধারণের প্রবেশ নিধিদ্ধ করে দিয়েছে পুলিশ৷ ‘সেইন্ট ল্যামব্যার্ট স্কয়ার'-এ আজ নিহতদের স্মরণে কয়েক মিনিট নিরবতা পালন করা হয়৷ অর্পণ করা হয় পুষ্পস্তবকও৷ আর এতে করে স্থবির হয়ে পড়েছে বেলজিয়ামের পঞ্চম বৃহত্তম শহরটির কেন্দ্রস্থল৷
প্রতিবেদন: দেবারতি গুহ
সম্পাদনা: আব্দুল্লাহ আল-ফারূক